রাত পোহালেই ভোটের লড়াই

তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আগামীকাল রোববার তারাগঞ্জে নির্বাচন হবে। গতকাল শুক্রবার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে প্রার্থীদের প্রচার ও গণসংযোগ। এখন রাত পোহালেই অনুষ্ঠিত হবে ভোট।

এই নির্বাচনে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করার অপেক্ষায় রয়েছেন পাঁচ ইউনিয়নের ১ লাখ ১১ হাজার ভোটার। রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে ভোট নেওয়ার জন্য প্রস্তুতিতে কোনো কমতি রাখা হচ্ছে না বলে জানিয়েছে প্রশাসন।

গতকাল শেষ মুহূর্তের প্রচার বেশ জমে উঠেছিল। পুরো উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তৎপর দেখা গেছে। ভোটকেন্দ্রগুলোর আশপাশে জমে উঠে কর্মী, সমর্থক ও ভোটারদের ভিড়। সড়ক ও মহাসড়কে টহল দিতে দেখা গেছে বিজিবি, পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়িবহর।

প্রার্থীরা গতকাল এজেন্ট বাছাই ও শেষ মুহূর্তের প্রচারে ব্যস্ত সময় পার করেন। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত প্রার্থীদের প্রচারের গানে গানে মুখর ছিল পাড়ামহল্লা। তাঁরা ১২ নভেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে প্রচার চালিয়ে আসছিলেন। এলাকায় তেমন কোনো সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। বাধাহীনভাবে প্রচার চালিয়েছেন বলে জানিয়েছেন অনেক প্রার্থী।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, তারাগঞ্জে ৫৫ হাজার ৮৫২ জন পুরুষ এবং ৫৫ হাজার ১৫৬ জন নারী ভোটার আছেন। পাঁচটি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ৩০, সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৭১ ও সাধারণ সদস্য পদে ১৭৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পাঁচ ইউনিয়নের ৪৯টি ভোটকেন্দ্রে ভোট নেওয়া হবে।

ভোটের দিন এগিয়ে আসায় ভোটারদের মনেও ফিরেছে স্বস্তি। তাঁরা নিজ নিজ পছন্দের প্রার্থীকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করার অপেক্ষায় আছেন। ভোট বিষয়ে কথা হয় মাটিয়ালপাড়া গ্রামের আবু মিয়ার সঙ্গে। তরুণ এই ভোটার বলেন, ‘ভোটটা হস্তান্তর করতে পারলে বাঁচি। একটি ভোট কিন্তু দাবিদার অনেকে। কাউকে মুখে না বলতে পারি না। তাই ভোটের দিন সৎ যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দেব।’

ভোটের দিন সকালেই কেন্দ্রে যাবেন বলে জানান ইকরচালী ইউনিয়নের ছুট মেনানগর গ্রামের মনোয়ারা বেগম। তিনি বলেন, ‘ভোটের দিন সকালে ভোট কেন্দ্রোত যায়া ভোট দেইম। দেরি করি গেইলে লাইনোত দাঁড়ে থাকির নাগে। নিজের খেয়া সারাটা দিন যাইবে। এই ভোট গেইলে আর কায়ও হামার বাড়িত ঘুর ঘুর পাক পারির নেয়, খোঁজও নিবার নেয়, রাইতোত মাইক বাজির নেয়। শান্তিতে ঘুমার পামো।’

নির্বাচনী নিরাপত্তা সম্পর্কে জানতে চাইলে তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক আহম্মদ বলেন, ‘চার ধাপে আমরা নিরাপত্তা জোরদার করেছি। ইতিমধ্যে ভোটকেন্দ্রগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গিয়েছেন। এলাকায় টহল বাড়ানো হয়েছে। এলাকায় যাতে কোনো সহিংসতা না ঘটে সে বিষয়ে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। ভোটের দিন মাঠে পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, ম্যাজিস্ট্রেট টহলে থাকবেন।’

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে। নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। প্রচারণার সময় দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া তেমন কোনো সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। নির্বাচনের সময়ও যেন না ঘটে সেদিকে আমরা বিশেষ খেয়াল রাখছি।’