Ajker Patrika

বাতিল ওষুধ

সম্পাদকীয়
বাতিল ওষুধ

বাতিল ওষুধ খাচ্ছে রোগীরা। তৈরি করছে ওষুধ কোম্পানি। ব্যবস্থাপত্রে লিখে দিচ্ছেন চিকিৎসকেরাও। এভাবেই দীর্ঘদিন ধরে বাতিল হওয়া ওষুধ দিয়েই চিকিৎসার কাজ চলছে। যাদের এসব দেখভাল করার কথা, তারা হয়তো নাকে তেল দিয়ে ঘুমোচ্ছেন। স্বাস্থ্যসেবার এহেন অবস্থা দেখে মনে হতেই পারে উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ। 

যেকোনো ধরনের অসুস্থতায় আমরা চিকিৎসকের কাছে যাই। চিকিৎসকেরা যেভাবে রোগের চিকিৎসা দেন, সেই পরামর্শ মেনে চলার চেষ্টা করি। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুয়ায়ী ওষুধ সেবন করি। কিন্তু ওষুধের মান যদি ঠিক না থাকে তাহলে তা কি আর উপকার আনতে পারবে?

আর বাতিল ওষুধ চিকিৎসকেরা কীভাবে লিখে দেন? এ নিয়ে আজকের পত্রিকায় ‘বাতিল হওয়া ওষুধ চার বছর পরও বাজারে’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। 

অথচ এই ওষুধগুলোর কম্বিনেশন অপ্রয়োজনীয় বলেই বাতিল করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ২০১৯ সালের ৩০ এপ্রিল ‘ঔষধ নিয়ন্ত্রণ কমিটি’র ২৫০তম সভায় ৮২টি ব্র্যান্ডের ওষুধের কম্বিনেশন বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়। এরপরও কীভাবে এসব বাতিল ওষুধ বাজারে বিক্রি হয়? দেশের গুরুত্বপূর্ণ এই প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি এ ঘটনায় স্পষ্ট হয়। তাহলে তাদের জবাবদিহি কার কাছে? ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর যে ওষুধগুলো বাতিল করেছে, সেগুলো উৎপাদিত হচ্ছে কীভাবে? এই অপরাধে ঔষধ প্রশাসন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কেন আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়নি? 

অধিক মুনাফার লোভে মানহীন ওষুধ তৈরি করার অভিযোগ নতুন নয়। গত বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে নাপা সিরাপ খেয়ে দুই শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছিল। প্রশ্ন জাগে, ওষুধ কোম্পানির মালিক থেকে কর্মকর্তাদের পরিবারের কেউ কি তাদের তৈরি এসব মানহীন ওষুধ খান? আমাদের মনে হয় নিজ পরিবারের সঙ্গে অন্তত অসৎ পন্থা অবলম্বন করবেন না তাঁরা। এ দেশের আপামর জনগণকে ‘মানুষ’ মনে করেন না বলেই কি এ রকম পৈশাচিক উপায়ে টাকা কামাতে চান? 

কোন ওষুধ বাতিল করা হয়েছে, তা একজন চিকিৎসক না-ও জানতে পারেন। তাঁদের জানানোর ব্যবস্থা তো ঔষধ প্রশাসনেরই করা উচিত ছিল।

এমনিতেই স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে নানা ধরনের নেতিবাচক খবরাখবর প্রকাশিত হয়। এ রকম একটি স্পর্শকাতর বিষয়ে এ ধরনের গাফিলতি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। জনগণকে যারা ‘গিনিপিগ’ হিসেবে ব্যবহার করতে চান, তাঁদের কঠোর শাস্তিই হওয়া উচিত।

জনগণের মৌলিক অধিকার হলো চিকিৎসা। এই মৌলিক অধিকার নিশ্চিতের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। তাই বাতিল হওয়া ওষুধ নতুন করে যেসব কোম্পানি উৎপাদন ও বাজারজাত করছে, তাদের আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে। অপরাধের শাস্তিই একমাত্র অপরাধ কমাতে পারে। তাহলে সাধারণ মানুষ অন্তত চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী মানসম্পন্ন ওষুধ পাওয়ার নিশ্চয়তা পাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১টা বাজলেই আর স্কুলে থাকে না শিক্ষার্থীরা, ফটকে তালা দিয়েও ঠেকানো গেল না

আসামে ‘দেখামাত্র গুলির নির্দেশ’ বহাল থাকবে দুর্গাপূজা পর্যন্ত

ভিকারুননিসায় হিজাব বিতর্ক: বরখাস্ত শিক্ষককে পুনর্বহালের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

জম্মু-কাশ্মীরে ধ্বংস করা হলো ৪৪ হাজার কেজি রসগোল্লা

সরকারের কমিটি পছন্দ হয়নি, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা ‎প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত