Ajker Patrika

শব্দদূষণে দ্বিতীয় কুমিল্লা, শ্রবণশক্তির ক্ষতিতে মানুষ

দেলোয়ার হোসাইন আকাইদ, কুমিল্লা
আপডেট : ০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১২: ২৭
শব্দদূষণে দ্বিতীয় কুমিল্লা, শ্রবণশক্তির ক্ষতিতে মানুষ

রাজধানী ঢাকার পরে সবচেয়ে বেশি শব্দদূষণ কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এলাকায়। অটোরিকশা ও ইজিবাইকের হর্নে শব্দদূষণ বাড়ছে দিনের পর দিন। পরিবেশ অধিদপ্তর ও ট্রাফিক বিভাগ বলছে, শব্দদূষণ কমাতে সমন্বিত সচেতনতা কার্যক্রম প্রয়োজন।

গত নভেম্বরে প্রকাশিত বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেল্থ সায়েন্সের এক জরিপে দেখা গেছে, শব্দদূষণের কারণে রাজধানী ঢাকার পর সবচেয়ে বেশি মানুষ শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন কুমিল্লা নগরীতে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের এক পরীক্ষায় দেখা গেছে, স্বাভাবিক কর্মদিবসে কুমিল্লা নগরীতে প্রতি পাঁচ মিনিটে শব্দের গড় মাত্রা অন্তত ৮০ ডেসিবেল; যা সহনশীলতার দ্বিগুণ মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক হর্ন থেকে সৃষ্টি শব্দ এখন আতঙ্কের নাম। এই শব্দ যন্ত্রণা কুমিল্লা নগরবাসীর শ্রবণশক্তিকে নীরব ঘাতকের মতো ক্ষতিগ্রস্ত করছে দিনের পর দিন।

নগরীর কান্দিরপাড় এলাকার ফল ব্যবসায়ী রিপন মিয়া বলেন, ‘সারা দিন রাস্তাঘাটে এত গাড়ির শব্দের মধ্যে থাকতে হয় যে, রাতে বাসায় গেলেও মাথা ঘুরতে থাকে।’

আরেক মোবাইল বিক্রির দোকানি রাসেল উদ্দিন বলেন, ‘গাড়ির হর্নের উচ্চ শব্দে আমাদের মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকে। মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে কষ্ট হয়।’

সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক রফিক মিয়া বলেন, ‘সারা দিন গাড়ি চালাই। রাতে ঘুমের মধ্যেও যেন শব্দ কানে বাজে।’

ভিক্টোরিয়া কলেজের শিক্ষার্থী আদনান সামিউল বলেন, ‘গাড়িতে হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকলেও, তা মানা হচ্ছে না। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।’

কুমিল্লা জেলা ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক জিয়াউল চৌধুরী টিপু বলেন, ‘যানবাহনের শব্দদূষণ ঠেকাতে পরিবেশ অধিদপ্তর, সিটি করপোরেশনসহ প্রশাসনিক সহযোগিতার প্রয়োজন। আমাদের সদস্যরা সারা দিন সড়কে থাকেন। তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বেশি। আমরাও এ বিষয়ে কাজ করছি।’

পরিবেশ অধিদপ্তর, কুমিল্লার পরিচালক মোসাব্বের হোসাইন মোহাম্মদ রাজিব বলেন, ‘নির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে বেশি শব্দের হর্ন বাজালে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি। আমরা সাধারণত মহাসড়কে হাইড্রোলিক হর্ন বাজানো রোধে নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করি। নির্দেশনা পেলে নগরীতেও কাজ করব। তবে পরিবেশ অধিদপ্তরের একার পক্ষে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব না। সবাইকে আরও সচেতন হতে হবে।’

কুমিল্লার ডেপুটি সিভিল সার্জন নিসর্গ মেরাজ চৌধুরী বলেন, ‘সাধারণত মহাসড়কের পরিবহনে ব্যবহৃত হাইড্রোলিক হর্ন নিয়ে আইনপ্রয়োগ থাকলেও জনাকীর্ণ এলাকায় শব্দদূষণ নিয়ে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেই। স্কুল-কলেজ ও হাসপাতালের মতো স্পর্শকাতর এলাকায় একটানা শব্দদূষণ বধিরতাসহ মানবদেহে নানা রোগের সৃষ্টি করছে।’

এদিকে পরিবেশ অধিদপ্তর কুমিল্লা জেলা কার্যালয়ের উদ্যোগে শব্দদূষণের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার শাসনগাছা এলাকায় কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এই অভিযান চালানো হয়।

শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিতও অংশীদারত্বমূলক প্রকল্পের আওতায় পরিবেশ অধিদপ্তর কুমিল্লার উদ্যোগে ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এই অভিযান চালানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত