রাজশাহী প্রতিনিধি
প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে একেবারে বটতলার শ্মশানে গিয়ে থামলেন সাংবাদিক স্বপন। সেখানে মধ্যবয়সী অদ্ভুত এক নারীর সঙ্গে তাঁর দেখা। নাম কুমারী। ভালো বাংলা, হিন্দি তো বলেনই, শুদ্ধভাবে বলেন ইংরেজিও। তাঁকে নিয়ে কৌতূহল বাড়ে সাংবাদিকের। জানতে চান পরিচয়। কুমারী বলেন, ‘আমি ডোম। মড়া পোড়ানোর ডোম। ভালো ভাষায় লোকে যাকে বলে ‘গঙ্গাপুত্র’। কিন্তু আমি তো পুত্র না, পুত্রী। তাই ‘গঙ্গাপুত্রী’।
ভারতের মাখলা শিল্পকের ‘গঙ্গাপুত্রী’ নাটকের একটি দৃশ্য এটি। রাজশাহী থিয়েটার আয়োজিত ষষ্ঠ অক্ষয় কুমার মৈত্রেয় নাট্যোৎসবের পঞ্চম দিনে নাটকটি মঞ্চস্থ হয়। গত রোববার রাতে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে নাটকটি মঞ্চায়নের মধ্য দিয়েই পাঁচ দিনের এই নাট্যোৎসবের পর্দা নামে। নাটকে সাংবাদিক চরিত্রে কলকাতার তিমির বরণ রায় এবং কুমারী চরিত্রে ঋতু গুপ্তা অভিনয় করেন। নাটকটির জন্য ভারত থেকে শুধু তাঁরা দুজনই এসেছিলেন। তিমির বরণ নাটকের নির্দেশনা দেন।
এই নাটকে দেখানো হয় কুমার জাতের মেয়ে কুমারী কীভাবে ডোম হয়ে গেলেন। সাংবাদিককে বলেন, ‘জাতে আমরা চাড়াল নই গো। মড়া পোড়ানোর কাজ আমাদের ঘরে বাপের জন্মেও কেউ করেনি। এই কাজ ডোম ছাড়া কেউ করে? ছিঃ! আমরা যে উঁচু জাত গো। উঁচু!’ অথচ ১১টি বছর ধরে ডোমের কাজ করছেন কুমারী। পরিবারের চোখে তিনি এখন মৃত। ডোমের ঘরের এক ছেলেকে ভালোবেসে ডোম হতে হয়েছে তাঁকে। মাতন নামের ছেলেটি এখন বেঁচে নেই। পিটিয়ে মারা হয়েছিল তাঁকে।
কুমারী বলেন, ‘মেডিকেল স্টুডেন্ট হে হাম দোনো। একই কলেজ মে। লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট। কিন্তু মাতন ছিল সত্যিকারের গঙ্গাপুত্র। জাতে ডোম। ওদের চৌদ্দপুরুষের মড়া পোড়ানোর কাজ। মাতন অন্য রকম হতেই চেয়েছিল। কোনো দিন করেনি মড়া পোড়ানোর কাজ। কিন্তু তাতে কি? চাড়ালের ছেলে তো! কর্ম না করুক, জাত-ধর্ম যাবে কোথায়? শালে ছোটা জাতকি ইতনি হিম্মত! মারদিয়া মাতনকো।’
টুঁ শব্দটি না করে সাংবাদিক অপলক চেয়ে রইলেন। কুমারী বলেন, ‘ডোমের ঘরের ছেলে হাত বাড়াবে কুমোরের বাড়ির মেয়ের দিকে? যারা শুধুই মাটির জিনিস নয়, ঠাকুর দেবতার মুখ-মূর্তি গড়ে। যে পুজো মানুষ মাথায় তোলে, প্রণাম করে তার মাটিকে লাথিয়ে লাথিয়ে বানায় কুমোর। তাঁদের মেয়ের দিকে হাত বাড়াবে চাড়ালপুত্র! কেউ কি মানতে পারে? সর্বনাশ হয়ে যাবে না? তার চেয়ে ভালো মরে যাক। পিটিয়ে মারা হলো তাঁকে। এরপর ছিল ওর মরার শরীরটার মরণ। গাঁয়ের বিধান-গঙ্গাপুত্রের ঘরের ছেলে এমনিভাবেই পড়ে থাকবে। চিল-শকুনে ঠোকরা-ঠুকরি করবে।’
ডুকরে কেঁদে উঠে কুমারী বলেন, ‘না, গঙ্গাপুত্রের ছেলের মড়া এভাবে পড়ে থাকবে না। বংশ পরম্পরায় যার চৌদ্দ পুরুষ মানুষের শেষ কাজ করে এসেছে, তারই শেষ কাজটা হবে না? আগুন পাবে না? পাবে না শেষ জলটুকুও? না, এটা হবে না। হতে দেবে না এ কুমারী। মাটি ছুঁয়ে শাপ দিচ্ছি, যে আটকাতে আসবে ধ্বংস হয়ে যাবে। আমি কুমারী গঙ্গাপুত্রী।’ সেই থেকে শ্মশানে লাশ পুড়িয়ে যাচ্ছেন কুমারী।
সনাতন ধর্মের জাতের ভেদাভেদ নিয়ে এই নাটকটি মঞ্চায়ন করা হয়। এর আগে উৎসব সমাপনী অনুষ্ঠিত হয়। এই অনুষ্ঠানে নাট্যোৎসব উপলক্ষে আয়োজিত শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রাজশাহীর ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনের সহকারী হাইকমিশনার সঞ্জিব কুমার ভাটি।
বিশেষ অতিথি ছিলেন নাট্যজন মলয় ভৌমিক ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার। আরও বক্তব্য দেন নাট্যজন তিমির বরণ রায় ও রাজশাহী থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম।
প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে একেবারে বটতলার শ্মশানে গিয়ে থামলেন সাংবাদিক স্বপন। সেখানে মধ্যবয়সী অদ্ভুত এক নারীর সঙ্গে তাঁর দেখা। নাম কুমারী। ভালো বাংলা, হিন্দি তো বলেনই, শুদ্ধভাবে বলেন ইংরেজিও। তাঁকে নিয়ে কৌতূহল বাড়ে সাংবাদিকের। জানতে চান পরিচয়। কুমারী বলেন, ‘আমি ডোম। মড়া পোড়ানোর ডোম। ভালো ভাষায় লোকে যাকে বলে ‘গঙ্গাপুত্র’। কিন্তু আমি তো পুত্র না, পুত্রী। তাই ‘গঙ্গাপুত্রী’।
ভারতের মাখলা শিল্পকের ‘গঙ্গাপুত্রী’ নাটকের একটি দৃশ্য এটি। রাজশাহী থিয়েটার আয়োজিত ষষ্ঠ অক্ষয় কুমার মৈত্রেয় নাট্যোৎসবের পঞ্চম দিনে নাটকটি মঞ্চস্থ হয়। গত রোববার রাতে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে নাটকটি মঞ্চায়নের মধ্য দিয়েই পাঁচ দিনের এই নাট্যোৎসবের পর্দা নামে। নাটকে সাংবাদিক চরিত্রে কলকাতার তিমির বরণ রায় এবং কুমারী চরিত্রে ঋতু গুপ্তা অভিনয় করেন। নাটকটির জন্য ভারত থেকে শুধু তাঁরা দুজনই এসেছিলেন। তিমির বরণ নাটকের নির্দেশনা দেন।
এই নাটকে দেখানো হয় কুমার জাতের মেয়ে কুমারী কীভাবে ডোম হয়ে গেলেন। সাংবাদিককে বলেন, ‘জাতে আমরা চাড়াল নই গো। মড়া পোড়ানোর কাজ আমাদের ঘরে বাপের জন্মেও কেউ করেনি। এই কাজ ডোম ছাড়া কেউ করে? ছিঃ! আমরা যে উঁচু জাত গো। উঁচু!’ অথচ ১১টি বছর ধরে ডোমের কাজ করছেন কুমারী। পরিবারের চোখে তিনি এখন মৃত। ডোমের ঘরের এক ছেলেকে ভালোবেসে ডোম হতে হয়েছে তাঁকে। মাতন নামের ছেলেটি এখন বেঁচে নেই। পিটিয়ে মারা হয়েছিল তাঁকে।
কুমারী বলেন, ‘মেডিকেল স্টুডেন্ট হে হাম দোনো। একই কলেজ মে। লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট। কিন্তু মাতন ছিল সত্যিকারের গঙ্গাপুত্র। জাতে ডোম। ওদের চৌদ্দপুরুষের মড়া পোড়ানোর কাজ। মাতন অন্য রকম হতেই চেয়েছিল। কোনো দিন করেনি মড়া পোড়ানোর কাজ। কিন্তু তাতে কি? চাড়ালের ছেলে তো! কর্ম না করুক, জাত-ধর্ম যাবে কোথায়? শালে ছোটা জাতকি ইতনি হিম্মত! মারদিয়া মাতনকো।’
টুঁ শব্দটি না করে সাংবাদিক অপলক চেয়ে রইলেন। কুমারী বলেন, ‘ডোমের ঘরের ছেলে হাত বাড়াবে কুমোরের বাড়ির মেয়ের দিকে? যারা শুধুই মাটির জিনিস নয়, ঠাকুর দেবতার মুখ-মূর্তি গড়ে। যে পুজো মানুষ মাথায় তোলে, প্রণাম করে তার মাটিকে লাথিয়ে লাথিয়ে বানায় কুমোর। তাঁদের মেয়ের দিকে হাত বাড়াবে চাড়ালপুত্র! কেউ কি মানতে পারে? সর্বনাশ হয়ে যাবে না? তার চেয়ে ভালো মরে যাক। পিটিয়ে মারা হলো তাঁকে। এরপর ছিল ওর মরার শরীরটার মরণ। গাঁয়ের বিধান-গঙ্গাপুত্রের ঘরের ছেলে এমনিভাবেই পড়ে থাকবে। চিল-শকুনে ঠোকরা-ঠুকরি করবে।’
ডুকরে কেঁদে উঠে কুমারী বলেন, ‘না, গঙ্গাপুত্রের ছেলের মড়া এভাবে পড়ে থাকবে না। বংশ পরম্পরায় যার চৌদ্দ পুরুষ মানুষের শেষ কাজ করে এসেছে, তারই শেষ কাজটা হবে না? আগুন পাবে না? পাবে না শেষ জলটুকুও? না, এটা হবে না। হতে দেবে না এ কুমারী। মাটি ছুঁয়ে শাপ দিচ্ছি, যে আটকাতে আসবে ধ্বংস হয়ে যাবে। আমি কুমারী গঙ্গাপুত্রী।’ সেই থেকে শ্মশানে লাশ পুড়িয়ে যাচ্ছেন কুমারী।
সনাতন ধর্মের জাতের ভেদাভেদ নিয়ে এই নাটকটি মঞ্চায়ন করা হয়। এর আগে উৎসব সমাপনী অনুষ্ঠিত হয়। এই অনুষ্ঠানে নাট্যোৎসব উপলক্ষে আয়োজিত শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রাজশাহীর ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনের সহকারী হাইকমিশনার সঞ্জিব কুমার ভাটি।
বিশেষ অতিথি ছিলেন নাট্যজন মলয় ভৌমিক ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার। আরও বক্তব্য দেন নাট্যজন তিমির বরণ রায় ও রাজশাহী থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম।
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
৬ দিন আগেপাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
৬ দিন আগেভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
৬ দিন আগেঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫