Ajker Patrika

‘নাই নাই’ আওয়াজেই বাড়ছে চালের দাম?

আয়নাল হোসেন, ঢাকা
আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২২, ১২: ০৩
‘নাই নাই’ আওয়াজেই বাড়ছে চালের দাম?

দেশে চালের কোনো সংকট নেই। দুর্ভিক্ষ হওয়ারও কোনো আশঙ্কা নেই। তারপরও মানুষের মধ্যে শুধু নাই নাই আওয়াজ হচ্ছে। গত রোববার এক অনুষ্ঠানে কথাগুলো বলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।

মন্ত্রী বলেছেন, চালের সংকট নেই। দেশেও আমন কাটার মৌসুম শুরু হয়েছে। নতুন ধান উঠছে কৃষকের ঘরে। তারপরও বাজারে বেড়েই চলেছে চালের দাম। তাহলে কি মন্ত্রীর কথামতো ‘নাই নাই’ আওয়াজের কারণেই বাড়ছে দাম? মন্ত্রী অবশ্য ওই অনুষ্ঠানেই বলেছিলেন, ‘দুর্ভিক্ষ আসছে, এই আতঙ্কে মানুষ যদি ৩-৪ গুণ খাদ্য কিনে মজুত না করে, গ্যারান্টি দিয়ে বলছি, বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ আসবে না, আসবে না, আসবে না।’

চালের খুচরা ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, যাঁদের সামর্থ্য আছে, তাঁরা অনেকে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি চাল কিনে রাখছেন। আর এই বাড়তি চাহিদার কারণেই এই সময়ে চালের দাম লাগামছাড়া। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব ধরনের চালের দাম কেজিতে আরও ২ থেকে ৩ টাকা করে বেড়েছে।  

৯ নভেম্বর রাজধানীর খুচরা বাজারে, প্রতি কেজি মিনিকেট চালের দাম ছিল ৭০-৭৬ টাকা। ছয় দিনের ব্যবধানে গতকাল মঙ্গলবার তা বিক্রি হয়েছে ৭২-৭৬ টাকায়। আর ৬০-৬১ টাকার লতা (বিআর-২৮) চাল বিক্রি হয়েছে ৬৩-৬৪ টাকা। ৫০ টাকার স্বর্ণা চাল গতকাল ৫৩-৫৪ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সব মিলিয়ে গত ১০-১২ দিনের ব্যবধানে কেজিতে চালের দাম সর্বোচ্চ ৬ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

প্রতি দুই মাসে ৫০ কেজি চাল হলে সংসার চলে যায় ঢাকার কেরানীগঞ্জের আগানগর এলাকার বাসিন্দা ফোরকান আলীর। অথচ গতকাল রাজধানীর বাবুবাজার থেকে তিনি ২০০ কেজি চাল কেনেন। হঠাৎ বেশি চাল কেনার কারণ জানতে চাইলে ফোরকান আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সব সময় বাবুবাজারে আসার সময় হয় না, তাই একসঙ্গে চার বস্তা চাল কিনলাম।’

এটা ফোরকান আলীর কথা। তবে বাবুবাজারের মেসার্স রশিদ রাইস এজেন্সির মালিক আবদুর রশিদ জানান, যাঁদের কাছে টাকা আছে, তাঁরা এক বস্তার পরিবর্তে চার-পাঁচ বস্তা চাল কিনে রাখছেন। এই চাল দীর্ঘদিন ঘরে রাখলে নষ্ট হয়ে যাবে। এ কথা জানানোর পরও অনেকেই তা আমলে নিচ্ছেন না।

একই বাজারের মেসার্স মা-বাবার দোয়া রাইস এজেন্সির মালিক মনির হোসেন জমাদার বলেন, ‘ভয়ের কারণে অনেকেই বেশি চাল কিনছেন।’

রাজধানীর কারওয়ান বাজার কিচেন মার্কেটের চাল ব্যবসায়ী মেসার্স হাজি ইসমাইল অ্যান্ড সন্সের মালিক জসিম উদ্দিন জানান, তাঁদের বাজারে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে চালের দাম বেড়েছে ২ টাকা পর্যন্ত। আগে প্রতি কেজি উন্নতমানের মিনিকেট চালের দাম ছিল ৭০-৭৬ টাকা। গতকাল তা ৭২-৭৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর ৫৪-৫৫ টাকার বিআর-২৮ ও ২৯ চাল ৫৬-৫৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। 
দাম বাড়ার পেছনে জসিম উদ্দিনের যুক্তি, ‘ধানের দাম বাড়ার অজুহাতে মিলমালিকেরা চালের দাম বাড়াইয়া দিছে। কিছুদিন আগে মিলে অভিযান চালানো হয়েছিল। তখন দাম কমেছিল। এখন আবার বাড়াইছে।’

কেন বাড়ছে, কীভাবে বাড়ছে তার পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি থাকতে পারে। কিন্তু দাম যে বেড়েই চলেছে, এটাই বাস্তবতা।

রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে মোটা চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৩ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ, মাঝারি মানের ৫ দশমিক ২৬ শতাংশ এবং সরু চালে দশমিক ৬৯ শতাংশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি যে মাপের লোক, আমারে সে মাপের অস্ত্র দিয়া ফাঁসাইতি’

দাম্পত্য কলহের গুঞ্জন, মুখ খুললেন জাহিদ হাসান

অবশেষে ইকবালের পরিবারমুক্ত হলো প্রিমিয়ার ব্যাংক

‘হেল্প, হেল্প’ বলে চিৎকার—শিক্ষক এগিয়ে যেতেই গলায় ছুরি চালাল কিশোরী

‘আপত্তিকর’ ভিডিও: বিএফআইইউ প্রধান শাহীনুলকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠালেন গভর্নর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত