রানা আব্বাস, কলম্বো থেকে
সকাল থেকেই কলম্বোর আকাশ মেঘলা। কিছুক্ষণ পরপর ঝেঁপে নামছে বৃষ্টি। এই মেঘমল্লার উপেক্ষা করে টুকটুকে করে শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দক্ষিণে মোরাতুয়ায় যাওয়া। একটা জরাজীর্ণ সবুজাভ ক্রিকেটীয় অবকাঠামো দাঁড়িয়ে। সবিস্ময়ে দেখতে হয়, তাহলে এই সেই মাঠ—যেখানে বাংলাদেশের পথ চলা শুরু।
১৯৮৬ সালের ৩১ মার্চ। যে এশিয়া কাপ দিয়ে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথ চলা শুরু, ইমরান খানের সেই তারকাখচিত পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটা বাংলাদেশ খেলেছিল মোরাতুয়ার এই টিরন ফার্নান্ডো স্টেডিয়ামে। টস হেরে আগে ব্যাটিং করে বাংলাদেশ অলআউট ৯৪ রানে। পাকিস্তান সেটি টপকে যায় ৭ উইকেট হাতে রেখে। জয়-পরাজয় ছাপিয়ে এই ম্যাচ, এই মোরাতুয়া বাংলাদেশের কাছে হয়ে রয়েছে নিজেদের প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার আনন্দ-রোমাঞ্চের এক টুকরো ভিটেমাটি হয়ে।
ঢুকতেই পড়ে ছোট্ট ড্রেসিংরুম। ড্রেসিংরুমের পাশে মোরাতুয়া স্পোর্টস ক্লাব। মাঠ ঘিরে সিমেন্টের গ্যালারি। এই ছোট্ট স্টেডিয়ামেই কি না একসময়ে পা পড়েছে বড় দল আর বড় বড় তারকার। এই মাঠ থেকেই উঠে এসেছে শ্রীলঙ্কার বড় বড় ক্রিকেটার। একসময় শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটের হাবই ছিল এই মাঠ।
ঐতিহাসিক সেই ম্যাচে পাকিস্তান অধিনায়ক ইমরানের সঙ্গে বাংলাদেশ অধিনায়ক গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর টস করার গল্পটা বাংলাদেশ ক্রিকেটেই এক কিংবদন্তি হয়ে গেছে। ট্র্যাকস্যুট পরা ইমরান লিপুকে বলেছেন, ‘অত দূর আর যাওয়ার দরকার কী, এখানেই (রোপের পাশে) করে ফেললেই তো হয়।’ গতকাল লিপুকে আবারও মনে করিয়ে দেওয়া হলো সেই স্মৃতি। বাংলাদেশ দলের প্রথম ওয়ানডে অধিনায়ক ঢাকা থেকে ফোনে জানতে চাইলেন, ‘মাঠটা ঠিকঠাক আছে এখনো?’ তিনি ফিরে গেলেন ৩৭ বছর আগে, ‘তখন গ্যালারি তেমন ছিল না। ছোট্ট একটা ড্রেসিংরুম ছিল। তখন ক্রিকেট নিয়ে এত প্রত্যাশা ছিল না। ছোট মাঠেই বড় ম্যাচ হয়েছে। একটা ছবি তোলার অফিশিয়াল ফটোগ্রাফারই ছিল না, বুঝুন।’
সেই ম্যাচ খেলা রকিবুল হাসানকে ফোনে ধরা হলো মোরাতুয়া স্টেডিয়ামে দাঁড়িয়েই। বাংলাদেশ দলের সাবেক এই অধিনায়ক ফিরে গেলেন এক মজার স্মৃতিতে, ‘ওই সময় পাকিস্তান সফর করছিল শ্রীলঙ্কায়। তখন জাভেদ মিয়াঁদাদ একটা ঘটনা ঘটিয়েছিল। ওকে গ্যালারি থেকে দর্শকেরা যেন কী বলেছিল, সে প্যাভিলিয়নে ফেরার সময় দর্শকদের দিকে ব্যাট দিয়ে তেড়ে গিয়েছিল মারতে! এর পর থেকে সে কলম্বোয় খলনায়ক হয়ে গেল।’
মিয়াঁদাদের ঘটনা বলতে গিয়ে হাসেন রকিবুল, ‘মোরাতুয়ায় পাকিস্তানের বিপক্ষে আমাদের ম্যাচে যে এক-দেড় হাজার দর্শক এসেছিল, সবাই বাংলাদেশের সমর্থন দিচ্ছিল জাভেদের ওপর খেপে গিয়ে। জাভেদ দর্শকের দুয়ো শুনে আমার কাছে একটা পরামর্শ চাইল। তাকে বললাম, তুমি ব্যাটিং শুরু করার আগে স্টেডিয়ামের সব দিকে ঘুরে হাত জোড় করে ক্ষমা চাইবে। সেটা সে করল। এবং কাজ হলো। দর্শকের দুয়ো থেমে গেল। এবার সবাই তালি দিতে শুরু করল।’
গত ৩৭ বছরে শ্রীলঙ্কার প্রায় সব ভেন্যুতেই পা পড়েছে বাংলাদেশ দলের। তবে ওই ম্যাচের পর মোরাতুয়ায় আর আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেনি। ১৯৯৩ সালের পর এ মাঠে আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটও হয়নি। ধীরে ধীরে মরচে পড়েছে ঐতিহাসিক মাঠের ক্রিকেটীয় কার্যক্রমেও। এ মাঠের বেশ কাছেই বাড়ি বর্তমান বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের কোচ ও সাবেক লঙ্কান অধিনায়ক হাশান তিলকারত্নের। এখানেই ৪টি টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা আছে তাঁর। এর মধ্যে আছে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৮২ আর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৯২ রানের ইনিংস।
বাংলাদেশ নারী দলের কন্ডিশনিং ক্যাম্প নিয়ে সিলেটে ব্যস্ত হাশান হোয়াটসঅ্যাপে মাঠের ছবি দেখে বেশ স্মৃতিকাতর হয়ে পড়লেন, ‘মোরাতুয়া থেকে আমার বাড়ি মাত্র ২০ মিনিট দূরত্বে। অনেক শ্রীলঙ্কান জাতীয় দলের ক্রিকেটার উঠে এসেছে এখান থেকে। আমাদের মেজর ক্রিকেটিং হাবই ছিল এই মাঠ।’
এরপরই হাশানের বুক চিরে যেন একটা দীর্ঘশ্বাসই বেরিয়ে এল, ‘মাঠটা এখন অবহেলিত। আগে প্রধান ক্লাব ছিল দেশের। নোংরা রাজনীতির কবলে পড়ে এখন নিচের স্তরে খেলে।’
বাংলাদেশের সঙ্গে জড়িয়ে কলম্বোর ঐতিহ্যবাহী মাঠ দেখে হাশানের কথাই ঠিক মনে হলো, উজ্জ্বল ইতিহাস পেছনে ফেলে এখন শুধু এর কঙ্কালটাই পড়ে আছে।
সকাল থেকেই কলম্বোর আকাশ মেঘলা। কিছুক্ষণ পরপর ঝেঁপে নামছে বৃষ্টি। এই মেঘমল্লার উপেক্ষা করে টুকটুকে করে শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দক্ষিণে মোরাতুয়ায় যাওয়া। একটা জরাজীর্ণ সবুজাভ ক্রিকেটীয় অবকাঠামো দাঁড়িয়ে। সবিস্ময়ে দেখতে হয়, তাহলে এই সেই মাঠ—যেখানে বাংলাদেশের পথ চলা শুরু।
১৯৮৬ সালের ৩১ মার্চ। যে এশিয়া কাপ দিয়ে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথ চলা শুরু, ইমরান খানের সেই তারকাখচিত পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটা বাংলাদেশ খেলেছিল মোরাতুয়ার এই টিরন ফার্নান্ডো স্টেডিয়ামে। টস হেরে আগে ব্যাটিং করে বাংলাদেশ অলআউট ৯৪ রানে। পাকিস্তান সেটি টপকে যায় ৭ উইকেট হাতে রেখে। জয়-পরাজয় ছাপিয়ে এই ম্যাচ, এই মোরাতুয়া বাংলাদেশের কাছে হয়ে রয়েছে নিজেদের প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার আনন্দ-রোমাঞ্চের এক টুকরো ভিটেমাটি হয়ে।
ঢুকতেই পড়ে ছোট্ট ড্রেসিংরুম। ড্রেসিংরুমের পাশে মোরাতুয়া স্পোর্টস ক্লাব। মাঠ ঘিরে সিমেন্টের গ্যালারি। এই ছোট্ট স্টেডিয়ামেই কি না একসময়ে পা পড়েছে বড় দল আর বড় বড় তারকার। এই মাঠ থেকেই উঠে এসেছে শ্রীলঙ্কার বড় বড় ক্রিকেটার। একসময় শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটের হাবই ছিল এই মাঠ।
ঐতিহাসিক সেই ম্যাচে পাকিস্তান অধিনায়ক ইমরানের সঙ্গে বাংলাদেশ অধিনায়ক গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর টস করার গল্পটা বাংলাদেশ ক্রিকেটেই এক কিংবদন্তি হয়ে গেছে। ট্র্যাকস্যুট পরা ইমরান লিপুকে বলেছেন, ‘অত দূর আর যাওয়ার দরকার কী, এখানেই (রোপের পাশে) করে ফেললেই তো হয়।’ গতকাল লিপুকে আবারও মনে করিয়ে দেওয়া হলো সেই স্মৃতি। বাংলাদেশ দলের প্রথম ওয়ানডে অধিনায়ক ঢাকা থেকে ফোনে জানতে চাইলেন, ‘মাঠটা ঠিকঠাক আছে এখনো?’ তিনি ফিরে গেলেন ৩৭ বছর আগে, ‘তখন গ্যালারি তেমন ছিল না। ছোট্ট একটা ড্রেসিংরুম ছিল। তখন ক্রিকেট নিয়ে এত প্রত্যাশা ছিল না। ছোট মাঠেই বড় ম্যাচ হয়েছে। একটা ছবি তোলার অফিশিয়াল ফটোগ্রাফারই ছিল না, বুঝুন।’
সেই ম্যাচ খেলা রকিবুল হাসানকে ফোনে ধরা হলো মোরাতুয়া স্টেডিয়ামে দাঁড়িয়েই। বাংলাদেশ দলের সাবেক এই অধিনায়ক ফিরে গেলেন এক মজার স্মৃতিতে, ‘ওই সময় পাকিস্তান সফর করছিল শ্রীলঙ্কায়। তখন জাভেদ মিয়াঁদাদ একটা ঘটনা ঘটিয়েছিল। ওকে গ্যালারি থেকে দর্শকেরা যেন কী বলেছিল, সে প্যাভিলিয়নে ফেরার সময় দর্শকদের দিকে ব্যাট দিয়ে তেড়ে গিয়েছিল মারতে! এর পর থেকে সে কলম্বোয় খলনায়ক হয়ে গেল।’
মিয়াঁদাদের ঘটনা বলতে গিয়ে হাসেন রকিবুল, ‘মোরাতুয়ায় পাকিস্তানের বিপক্ষে আমাদের ম্যাচে যে এক-দেড় হাজার দর্শক এসেছিল, সবাই বাংলাদেশের সমর্থন দিচ্ছিল জাভেদের ওপর খেপে গিয়ে। জাভেদ দর্শকের দুয়ো শুনে আমার কাছে একটা পরামর্শ চাইল। তাকে বললাম, তুমি ব্যাটিং শুরু করার আগে স্টেডিয়ামের সব দিকে ঘুরে হাত জোড় করে ক্ষমা চাইবে। সেটা সে করল। এবং কাজ হলো। দর্শকের দুয়ো থেমে গেল। এবার সবাই তালি দিতে শুরু করল।’
গত ৩৭ বছরে শ্রীলঙ্কার প্রায় সব ভেন্যুতেই পা পড়েছে বাংলাদেশ দলের। তবে ওই ম্যাচের পর মোরাতুয়ায় আর আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেনি। ১৯৯৩ সালের পর এ মাঠে আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটও হয়নি। ধীরে ধীরে মরচে পড়েছে ঐতিহাসিক মাঠের ক্রিকেটীয় কার্যক্রমেও। এ মাঠের বেশ কাছেই বাড়ি বর্তমান বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের কোচ ও সাবেক লঙ্কান অধিনায়ক হাশান তিলকারত্নের। এখানেই ৪টি টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা আছে তাঁর। এর মধ্যে আছে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৮২ আর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৯২ রানের ইনিংস।
বাংলাদেশ নারী দলের কন্ডিশনিং ক্যাম্প নিয়ে সিলেটে ব্যস্ত হাশান হোয়াটসঅ্যাপে মাঠের ছবি দেখে বেশ স্মৃতিকাতর হয়ে পড়লেন, ‘মোরাতুয়া থেকে আমার বাড়ি মাত্র ২০ মিনিট দূরত্বে। অনেক শ্রীলঙ্কান জাতীয় দলের ক্রিকেটার উঠে এসেছে এখান থেকে। আমাদের মেজর ক্রিকেটিং হাবই ছিল এই মাঠ।’
এরপরই হাশানের বুক চিরে যেন একটা দীর্ঘশ্বাসই বেরিয়ে এল, ‘মাঠটা এখন অবহেলিত। আগে প্রধান ক্লাব ছিল দেশের। নোংরা রাজনীতির কবলে পড়ে এখন নিচের স্তরে খেলে।’
বাংলাদেশের সঙ্গে জড়িয়ে কলম্বোর ঐতিহ্যবাহী মাঠ দেখে হাশানের কথাই ঠিক মনে হলো, উজ্জ্বল ইতিহাস পেছনে ফেলে এখন শুধু এর কঙ্কালটাই পড়ে আছে।
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১৪ দিন আগেভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫