Ajker Patrika

টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে

আ. রহিম রেজা, ঝালকাঠি
টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে

ঝালকাঠি সদর উপজেলার শ্রীমন্তকাঠী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কল্পনা রানী ইন্দুর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বিদ্যালয়ের টাকা আত্মসাৎ, বিদ্যালয়ের মালপত্র কেনার নামে অতিরিক্ত ভাউচার, বিদ্যালয়ের সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে ব্যাংক থেকে টাকা তোলা, রেজুলেশন খাতা ফাঁকা রেখে কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর নেওয়াসহ নানা অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। এমনকি তাঁর বিরুদ্ধে ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশে কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়াই ২০০৮ সালে নির্মিত একটি ভবন বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

প্রধান শিক্ষক কল্পনা রানীর আর্থিক দুর্নীতির কারণে ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বিকাশ হাওলাদার তাঁর জরুরি বদলির জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২১ সালের এক সভায় প্রধান শিক্ষকের কাছে বিদ্যালয়ের আর্থিক হিসাব চাওয়া হয়। কিন্তু ২৬ হাজার টাকার হিসাব দিতে ব্যর্থ হন তিনি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বিকাশ হাওলাদারের স্বাক্ষর জাল করে ২০২০-২১ অর্থবছরের বরাদ্দ করা দেড় লাখ টাকা ব্যাংক থেকে তোলেন প্রধান শিক্ষক কল্পনা রানী ইন্দু। এই টাকা দিয়ে বিদ্যালয়ের মাঠের পাশে শিশুদের জন্য মাত্র তিনটি খেলনা নির্মাণ করা হয়। এই খেলনা নির্মাণে অস্বাভাবিক ব্যয়ে ক্ষিপ্ত হন কমিটির সদস্যরা। স্থানীয়দের শান্ত করতে প্রধান শিক্ষক মনগড়া একটি ভাউচার তৈরি করে জমা দেন।

ভাউচারে ঝালকাঠির স্টেশন রোডের সিটি ওয়ার্কশপ অ্যান্ড স্টিল হাউস নামের একটি দোকানের মেমোতে জিআই পাইপের দাম ৭৮ হাজার টাকা, অর্ডিনারি পাইপ চার হাজার আট শ টাকা, এমএস চেইন ১২ হাজার ও রিংপ্লাটি হুক ১৫ হাজার টাকা দেখানো হয়।

পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার মোর্শেদা হার্ডওয়্যার স্টোর নামের একটি দোকান থেকে দুই গ্যালন বার্জার রেড অক্সাইড দুই হাজার টাকা ও দুই গ্যালন বার্জার পেইন্ট তিন হাজার টাকায় কেনার রসিদ দেখানো হয়। বরিশালের বানারীপাড়ার মেসার্স রাফিন এন্টারপ্রাইজ নামের একটি দোকান থেকে ১৫ বস্তা সিমেন্ট ও বালুসহ ১৬ হাজার টাকায় কেনা হয়েছে মর্মে একটি ভাউচারে দেখানো হয়। এ ছাড়া এই তিনটি খেলনা তৈরি বাবদ ঝালকাঠি সদর উপজেলার বাহের রোডের মেসার্স মাহামুদ মেটাল নামের একটি দোকানের নয় হাজার দুই শ টাকার একটি ভাউচার দেখানো হয়। তবে এই সব ভাউচারে হাতের লেখা একই রকমের দেখা গেছে।

স্থানীয় লোকজনের ধারণা, প্রধান শিক্ষক নিজে অথবা তাঁর নির্দেশে কোনো ব্যক্তি এ মনগড়া ভাউচার তৈরি করেছেন।

প্রধান শিক্ষক কল্পনা রানী ইন্দু বলেন, ‘২০২০-২১ অর্থবছরের ২৬ হাজার টাকা আমার কাছে আছে। আমি এই টাকা মাঝে মাঝে স্কুলের কাজে ব্যয় করি। আর দেড় লাখ টাকা ব্যাংক থেকে তোলার সময়ে বিদ্যালয়ের সভাপতির স্বাক্ষর নিইনি। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার স্বাক্ষরে এই টাকা তুলেছি।’

স্কুলের একটি ভবন বিক্রির বিষয়ে প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানি না। এটা উপজেলা শিক্ষা অফিস বলতে পারবে।’

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ওই স্কুল পরিদর্শনের সময় কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর টাকা তোলার ক্ষেত্রে সাধারণত প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির স্বাক্ষর দরকার হয়। কিন্তু সভাপতির স্বাক্ষর ছাড়া টিইওর স্বাক্ষরে টাকা তোলার বিষয়টি আমার বোধগম্য নয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লাহোরে পাল্টা আঘাত হেনে পাকিস্তানকে জবাব দিল ভারত

পাকিস্তানের চীনা জে-১০ দিয়ে ভারতের রাফাল যুদ্ধবিমান ধ্বংস, যুক্তরাষ্ট্রের কড়া নজরে এই টক্বর

একটি দলের ওপর ভরসার বিনিময়ে পেয়েছি অশ্বডিম্ব: মাহফুজ আলম

গতকাল রাতে ৪৮টি ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি পাকিস্তানের

অহনার দাবি, নিজের দোষ ঢাকতে ডাবল টাইমিংয়ের কথা বলেছেন শামীম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত