Ajker Patrika

বাঁওড়ের মাটি কেটে ঘের

আপডেট : ১৪ মে ২০২২, ০৯: ২৪
বাঁওড়ের মাটি কেটে ঘের

যশোরের মনিরামপুরের ঝাঁপা বাঁওড় দখল করে স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তি মাছের ঘের তৈরি করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ঝাঁপা ইউনিয়নের ভাসমান সেতুর পশ্চিম পাড়ের পার্ক-সংলগ্ন এলাকায় ঈদের ছুটির সুযোগে তিনি মাটিকাটা যন্ত্র বসিয়ে ১৩ বিঘা জমিজুড়ে ঘের তৈরি শুরু করেছেন।

পরে খবর পেয়ে গত শনিবার উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) হরেকৃষ্ণ অধিকারী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মাটি কাটার কাজ বন্ধ করে দেন। তবে গতকাল শুক্রবার আবারও কাজ শুরু করেন অভিযুক্ত ব্যক্তি। পরে আবারও কাজ বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রশাসনের নিষেধ উপেক্ষা করে রাতে মাটি কাটার যন্ত্র বসিয়ে ঘের তৈরির কাজ চালাচ্ছেন ঝাঁপা এলাকার হাদিউজ্জামান দোলন। প্রশাসনের নজর এড়াতে রাতের বেলায় কাজ করে দিনে বাঁওড়ের পাড়ে যন্ত্র তুলে রাখা হয়।

দোলনের দাবি, বাঁওড়ের তীরঘেঁষা তাঁর কয়েকজন আত্মীয়ের জমি রয়েছে। সে জমির ১৩ বিঘাজুড়ে তিনি ঘের তৈরি করছেন। সহকারী কমিশনারের (ভূমি) আদেশের পর আর মাটি কাটার কাজ হয়নি বলে দাবি করেন দোলন।

জানা গেছে, দর্শনার্থীদের জন্য ঝাঁপা বাঁওড়ের ভাসমান সেতুর পশ্চিম পাড়ে একটি ছোট্ট পার্ক রয়েছে।

পার্কের নিচে বাঁওড়ের জমি দখলে নিয়ে বড় করে ঘের কাটছেন দোলন। ঈদের বন্ধের সুযোগে তিনি কাজ শুরু করেন।

 পরে বাঁওড়ের ইজারাদার মৎস্যজীবী সমিতির দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা বিষয়টি স্থানীয় ভূমি কার্যালয়ের নায়েবকে জানান। পরে গত শনিবার উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজ বন্ধ করে দেন। এরপর দিনের বেলায় কাজ বন্ধ রাখলেও রাতের আঁধারে মাটি কাটার কাজ অব্যাহত রাখা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার সকালে আবার ঘের কাটা শুরু হয়। তখন অভিযোগ পেয়ে কাজ থামিয়ে দেন নায়েব আব্দুর রাজ্জাক।

বাঁওড়ের ইজারাদার মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি শ্যামল বিশ্বাস বলেন, ‘বাঁওড়ের পশ্চিম পাড় দিয়ে লম্বা আয়তনের ৮-১০ হাত করে ব্যক্তি মালিকানা জমি রয়েছে। বড় করে ঘের কাটতে দেখে আমরা নায়েবকে জানিয়েছি। পরে এসিল্যান্ড (সহকারী কমিশনার-ভূমি) এসে কাজ বন্ধ করে দেন।’

শ্যামল বিশ্বাস বলেন, ‘আমাদের মেয়াদ আর এক বছর আছে। এ সময়ের মধ্যে আমরা কোনো ঝামেলায় জড়াতে চাচ্ছি না।’

অভিযুক্ত হাদিউজ্জামান দোলন বলেন, ‘আমার আত্মীয়দের ১৩ বিঘা জমি নিয়ে বাঁওড় পাড়ে ঘের কাটছি। এসিল্যান্ড কাজ বন্ধ করে আমাদের অফিসে দেখা করতে বলেছেন। আমরা এসিল্যান্ডের অফিসে গিয়েছি। তিনি সরকারি আমিন এনে জমি মাপামাপি করতে বলেছেন।’

দোলন বলেন, ‘এরপর কাজ বন্ধ ছিল। রাতে মাটি কাটা কাজ চলেনি। শুক্রবার সকালে আবার কাজ শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। নায়েব নিষেধ করায় কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। আগেও দুবার আমিন এনে জমি মাপিয়েছি। আমাদের অংশ থেকে বাঁওড়ের ভেতরে ৮-১০ ফুট ছেড়ে দিয়ে আমরা কাজ করাচ্ছিলাম।’

ঝাঁপা ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমি নতুন এসেছি। জমিটি বাঁওড়ের নাকি মালিকানা না মেপে বলা যাচ্ছে না। আপাতত কাজ বন্ধ আছে।’

মনিরামপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হরেকৃষ্ণ অধিকারী বলেন, ‘আকস্মিকভাবে গিয়ে বাঁওড়ের ভেতরে ঘের কাটতে দেখে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।’

হরেকৃষ্ণ অধিকারী বলেন, ‘স্থানীয় ভূমি কার্যালয়ের নায়েবকে বিষয়টি নজরে রাখতে বলা হয়েছে। জমির মালিকানা দাবিদারদের বলা হয়েছে, আমিন এনে মেপে তারপর কাজ করতে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত