Ajker Patrika

উদাসীনতায় করোনা ঝুঁকি বাড়ছে

সাখাওয়াত ফাহাদ, ঢাকা
আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২২, ১০: ২৯
উদাসীনতায় করোনা ঝুঁকি বাড়ছে

দেশে ফের বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। গত পাঁচ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে গত মঙ্গলবার। দেশের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জেলাগুলোর তালিকায় সবার ওপরে জায়গা করে নিয়েছে ঢাকা। এদিকে সংক্রমণ রোধে জারি করা হয়েছে সরকারি বিধিনিষেধ। সেগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন না হওয়ায় করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এসব নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার সকাল আটটা থেকে গতকাল বুধবার সকাল আটটা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৮ হাজার ৪০৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে, যা গত বছরের ১৩ আগস্টের পর থেকে সর্বোচ্চ শনাক্ত। রাজধানীতে করোনা সংক্রমণের হার সর্বোচ্চ ২৮ দশমিক ১১ শতাংশ। গত বছরের ৯ ডিসেম্বর দেশে করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর থেকেই করোনা সংক্রমণ বেড়েই চলেছে।

করোনার ওমিক্রন ধরন নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক অধ্যাপক বে-নজীর আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওমিক্রন অত্যন্ত ছোঁয়াচে, যা খুব দ্রুত ছড়ায়। ইতিমধ্যেই অনেক পরিবারের সবাই আক্রান্ত। আক্রান্তের যে রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে প্রকৃতভাবে তার চেয়ে ৮ থেকে ১০ গুণ বেশি হওয়াটাও অস্বাভাবিক নয়। মানুষ যে পরিমাণে আক্রান্ত হচ্ছে এর ক্ষুদ্র পরিমাণও যদি হাসপাতালে ভর্তি হয় এবং জীবন ঝুঁকিতে পড়ে, তাহলে সেই সংখ্যাটাও খুব কম হবে না।’

এদিকে গতকাল বুধবার সরেজমিনে নগরীর বিভিন্ন স্থানে দেখা যায়, যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না অনেকেই। মাস্ক ছাড়াই ঘুরছেন রাস্তায়। মাস্ক নিয়ে বের হলেও কেউ রাখছেন পকেটে, কেউ রাখছেন থুতনিতে। বাজারে, গণপরিবহনে কিংবা অলিগলির আড্ডায় সামাজিক দূরত্বের বালাই নেই।

যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না অনেকেই, মাস্ক ছাড়াই ঘুরছেন রাস্তায়মতিঝিলের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী মাহফুজ চৌধুরী বলেন, ‘সকালে অফিসে আসছি। মাঝেমধ্যে একটু বাইরে আসি। তখন মাস্ক খুলে রাখি। সব সময় মাস্ক পরে থাকতে অস্বস্তি লাগে।’ ফুটপাতের দোকানি রিয়াজুল আলম বলেন, ‘মাস্ক পইড়া আর কি হইব? টিকা তো নিসিই।’

ম্যাজিস্ট্রেটরা  মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা করছেন, সতর্ক করছেন। তারপরও অনেকে সচেতন হচ্ছেন না। এভাবে সংক্রমণ ঠেকানো কঠিন।
মো. ফারুক হোসেন, মিডিয়া বিভাগের ডিসি, ডিএমপি 

ওমিক্রন মোকাবিলায় আসনের অর্ধেক যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন চলাচলের কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। প্রায় সব বাসেই গাদাগাদি করে যাত্রী তোলা হচ্ছে। চালক-হেলপার থেকে শুরু করে বেশির ভাগ যাত্রীর মুখেই মাস্ক নেই। গাবতলী-মতিঝিল রুটের ৮ নম্বর বাসের হেলপার মো. রবিন বলেন, ‘সারা দিন মাস্ক মুখে রেখে কথা বলা কষ্ট। তাই মাস্ক খুলে রাখি।’

স্বাস্থ্যবিধি এবং মাস্কের যথাযথ ব্যবহার নেই হাসপাতালগুলোতেও। ঢাকা মেডিকেলে রোগী নিয়ে এসেছেন ফরিদ উদ্দীন। তিনি বলেন, ‘রোগীর চিন্তায় অবস্থা খারাপ। মাস্ক নিয়ে কখন চিন্তা করব?’ স্বাস্থ্যবিধির বালাই ছিল না বাজার, মার্কেট এবং রেস্তোরাঁগুলোতে। চানখাঁরপুলের এক রেস্তোরাঁয় জাভেদ হোসেন নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘এত বাজে দিন আসছে যে টিকা কার্ড দেখায়া খাইতে হবে?’

সার্বিক বিষয়ে ডিএমপির মিডিয়া বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মো. ফারুক হোসেন বলেন, ম্যাজিস্ট্রেটরা প্রতিদিন মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা করছেন, সতর্ক করছেন। তারপরও অনেকে সচেতন হচ্ছেন না। এভাবে সংক্রমণ ঠেকানো কঠিন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ইতিমধ্যে প্রস্তুতি ছাড়া লকডাউন দেওয়ার কারণে দেশের কয়েক কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে। আমরা চাই না তার পুনরাবৃত্তি হোক। সরকারকে এসব নিয়ে যথাযথ প্রস্তুতি নিতে হবে। সবার জন্য টিকা নিশ্চিত করতে হবে। জনগণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে পরিস্থিতি কিছুটা হলেওt বদলাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

মানিকগঞ্জে রাতের আঁধারে স্থানান্তর করা বিদ্যালয় ভবন পরিদর্শনে কর্মকর্তারা

পরিপাকতন্ত্রের ওষুধের পেছনেই মানুষের ব্যয় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত