ভারতজুড়ে তোলপাড় যে সিনেমায়

ভারতে এক দশক ধরে প্রোপাগান্ডা সিনেমার নির্মাণ বেড়েছে। কোনো বিশেষ ঘটনা বা ব্যক্তিকে নিয়ে এমন অনেক সিনেমা তৈরি হচ্ছে, যার পেছনে আছে রাজনৈতিক ইন্ধন। এসব সিনেমা মুক্তির আগে ও পরে প্রবল সমালোচনার মুখেও পড়ছে। গত বছর বিবেক অগ্নিহোত্রীর ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ নিয়েও জল কম ঘোলা হয়নি। এ সিনেমায় দেখানো হয়, নব্বইয়ের দশকে কাশ্মীরের মুসলমান সমাজ ব্রাহ্মণ পণ্ডিতদের ওপর আক্রমণ করে তাদের কাশ্মীর ছাড়তে বাধ্য করে।

সিনেমাটির বিষয় নিয়ে ভারতের সুশীল সমাজ বারবার প্রতিবাদ জানিয়েছে। এবার এমন আরেকটি সিনেমা নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে কেরালায়।

সিনেমাটির নাম ‘দ্য কেরালা স্টোরি’, বানিয়েছেন বাঙালি পরিচালক সুদীপ্ত সেন। আদা শর্মা, যোগিতা বিহানি, সোনিয়া বালানি ও সিদ্ধি আদানি অভিনীত সিনেমাটি চারটি ভাষায় মুক্তি পাবে ৫ মে। বিতর্ক দানা বেঁধেছে এ সিনেমার গল্প নিয়ে। দ্য কেরালা স্টোরির ট্রেলারে দেখানো হয়েছে, কেরালা থেকে ৩২ হাজার নারীকে জোর করে ধর্মান্তরিত করে তাদের সিরিয়া ও আফগানিস্তানে আইএসআইয়ের প্রশিক্ষণ শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, এতে সন্ত্রাসবাদীদের আস্তানা হিসেবে দেখানো হয়েছে কেরালাকে।

সিনেমাটি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজায়ন। এ সিনেমার মাধ্যমে কেরালার ধর্মনিরপেক্ষ পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা চলছে, এমনই অভিযোগ তাঁর। তবে শুধু সিপিআইএম নয়, সিনেমাটির মুক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে সরব হয়েছে কংগ্রেসও। দলের সাংসদ শশী থারুর বলেন, ‘এ সিনেমার অনেকটাই মিথ্যে। এর ফলে সংখ্যালঘু শ্রেণির ভাবাবেগে আঘাত লাগতে পারে।’ কেরালার মুসলিম বডির তরফ থেকেও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। দ্য কেরালা স্টোরির মুক্তি আটকাতে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হয়েছে। গতকাল সেই আবেদন খারিজ করেছেন আদালত।

তবে দ্য কেরালা স্টোরি নিয়ে সব ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করছেন পরিচালক সুদীপ্ত সেন। তিনি বলেন, ‘ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলার পর, মাসের পর মাস বিষয়টি নিয়ে পড়াশোনা করে তবেই সিনেমাটি বানিয়েছি।’

প্রযোজক বিপুল শাহ বলেন, ‘কেরালা রাজ্যের বিরুদ্ধে আমাদের কোনো রাগ নেই। কোনো অবমাননাকর বিষয় আনা হয়নি সিনেমায়। এ সিনেমা সন্ত্রাসবাদীদের টার্গেট করে নির্মাণ হয়েছে, মুসলিমদের নয়। আমরা চাই, কেরালার মুখ্যমন্ত্রীও সিনেমাটি দেখুন।’