Ajker Patrika

পুকুরে বিলীন স্কুলের জমি

কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৫ অক্টোবর ২০২১, ১৪: ১৬
পুকুরে বিলীন স্কুলের জমি

পুকুর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের ৯০ নম্বর ওয়াশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে ভাঙন। বর্তমানে ভাঙন বিদ্যালয়ের মূল ভবনের কাছাকাছি চলে এসেছে। যেকোনো সময় মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। এ ছাড়া বিদ্যালয়টির জরাজীর্ণ ভবনেই চলছে পাঠদান। পুরোনো ভবনের পেছনের আম গাছটিও রয়েছে ঝুঁকিতেই।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৫২ শতক জমির ওপর ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বিদ্যালয়টি। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৩৫। শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন পাঁচজন। ভাঙন কবলিত পুকুরটির অবস্থান বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ ঘেঁষে। এতে দিনে দিনে খেলার মাঠটি পুকুর বিলীন হচ্ছে। ইতিমধ্যে বিদ্যালয়ের দুই-তৃতীয়াংশ জায়গা পুকুরে বিলীন হয়েছে। বর্তমানে ভবনও ভাঙনের ঝুঁকিতে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিশাল আকৃতির এই পুকুরটির মালিক এলাকার প্রায় ১০০ ব্যক্তি। কিন্তু নির্দিষ্ট করে কেউ কারওর নাম বলতে পারেননি। তবে বর্তমানে পুকুরটি ইজারা নিয়েছেন আব্দুল হাই।

বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয় ভবনের পশ্চিম ও উত্তর অংশের খুব কাছাকাছি পুকুরটি। বিদ্যালয়ের খেলার মাঠটি ভেঙে চলে গেছে পুকুরের মধ্যে। খেলার জন্য রয়েছে মাত্র কয়েক হাত জায়গা। বিদ্যালয়ের পুরোনো ভবনটির অবস্থাও ঝুঁকিপূর্ণ। ছাদ ও দেয়াল থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আদালত হোসেন অভিযোগ করেন, ‘এলাকার এক শ্রেণির সুবিধাভোগী মানুষ পুকুরে মাছ চাষ করেন। পুকুরের ভাঙন যত বাড়বে পুকুরের আয়তন তত বাড়বে। এতে লাভবান হবেন মাছ চাষকারীরা। এই কারণে পুকুরের পাড় মেরামত করেন না তাঁরা। অথচ এতে যে কোনো সময় শিক্ষার্থীরা দুর্ঘটনার কবলে পড়তে পারে সেদিকে তাঁদের মাথাব্যথা নেই। বিষয়টি নিয়ে আমি সব সময় আতঙ্কে থাকি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিদ্যালয়ের পুরোনো ভবনসহ নানা সমস্যায় ভুগছি। এ সব নিয়ে শিক্ষা অফিসে অভিযোগ দিয়েও ফল পাইনি।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সহকারী শিক্ষক বলেন, ‘বিদ্যালয়ের প্রায় ৩০ শতক জমি পুকুর ভাঙনে বিলীন হয়েছে। ফলে বিদ্যালয়ের যাতায়াত রাস্তা ও খেলার মাঠের আয়তন হ্রাস পেয়েছে। তা ছাড়া পুকুরটি শিক্ষার্থীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক বলেন, ‘বিদ্যালয়ের সামনে গভীর পুকুর। বাচ্চাদের স্কুলে পাঠিয়ে চিন্তায় থাকি। বিষয়টির সমাধান হওয়া দরকার।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুল হাই বলেন, ‘আমি ইজারা নিয়েছি। মেরামত করার দায়িত্ব আমার না। আর কিছু বলতে চাই না আমি।’

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফিরোজ উদ্দিন বলেন, ‘কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলায় যুগ যুগ ধরে ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে পাঠদান চলে আসছে। সংস্কারের বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিস কে বারবার জানানো হলেও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। ফলে এ সমস্যা আমার জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

পান্টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘এর আগে এ বিষয়ে আমাকে কেউ কিছু বলেননি। আগামী সমন্বয় মিটিং এ বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানানো হবে।’

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের মুখে সমস্যার কথা শুনেছি। সমস্যার সমাধানে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত