চাঁপাইয়ের মেয়র মোখলেসুর

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার নতুন মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. মোখলেসুর রহমান। গতকাল মঙ্গলবার এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে গতকাল ভোটগ্রহণ চলাকালে চার মেয়র প্রার্থীর মধ্যে দুজন এই নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মেয়র পদে মোট চারজন প্রার্থী হন। এর মধ্যে বেসরকারিভাবে পাওয়া ফলাফলে নৌকার প্রার্থী মোখলেসুর রহমান বিজয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৪৭ হাজার ৪১৫ ভোট। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী (মোবাইল ফোন) সামিউল হক লিটন, ২১ হাজার ৫৭৯ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী (নারিকেল গাছ) মো. নজরুল ইসলাম ১২ হাজার ২৬২ ভোট ও স্বতন্ত্র (জগ) মো. মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল ২ হাজার ৫৮ ভোট পেয়েছেন। মোট ভোট পড়েছে ৫৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ।

এদিকে ভোট শুরুর পর থেকেই অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এই প্রেক্ষাপটে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম ও বেলা আড়াইটার দিকে আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী সামিউল হক লিটন আনুষ্ঠানিকভাবে এ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী নজরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘পুলিশি সহায়তায় সব কেন্দ্র দখলে নেয় বহিরাগতরা। আমি নিজে কয়েকটি কেন্দ্রে গিয়ে টেকনিশিয়ান, অডিটর কার্ডধারী বহিরাগত কয়েকজনকে শনাক্ত করে প্রিসাইডিং অফিসার ও পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বললেও, কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি। তাই আমি ভোট বর্জনের সিদ্ধান্ত নিই।’

অন্যদিকে দুপুরে শহরের রামকৃষ্টপুরের নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে করে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী সামিউল হক লিটন। তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় তাঁর ছয়জন সমর্থককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মারধর করা হয়েছে আরও পাঁচ সমর্থককে। এ ছাড়া ভোটকেন্দ্র থেকে তাঁর এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। এ কারণে তিনি ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।

লিটন বলেন, ‘আমি সকাল থেকে কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে দেখেছি। সেখানে নৌকার লোকজন কেন্দ্র দখল করে রেখেছে। ভোটার শনাক্তের পর নৌকার কর্মীরা নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে দিচ্ছে। পুলিশ নীরবে দাঁড়িয়ে এসব দৃশ্য দেখছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি।’

নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পাঠানপাড়ার নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আসনের সাংসদ ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হারুনুর রশিদ। তিনি বলেন, সকাল ৮টা থেকে ভোট শুরু হওয়ার পর পর্যায়ক্রমে কেন্দ্রের প্রতিটি বুথে কাউকে টেকনিশিয়ান, কাউকে অপারেটর, কাউকে অডিটর নাম দিয়ে হলুদ গেঞ্জি পরে নৌকা প্রতীকের লোকজন কেন্দ্র দখলে নেয়। কাউন্সিলরের ভোট অনেকে দিতে পারলেও, মেয়রের ভোট দিতে পারেননি অনেক ভোটার। অনেক জায়গায় ভোটারদের মেয়রের ভোট দিতে দেওয়া হয়নি।

তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার এইচ এম আবদুর রাকিব বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। পরাজিত প্রার্থীরা দু/একটি অভিযোগ তুলবেনই।

এ প্রসঙ্গে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মোতাওয়াক্কিল রহমান বলেন, ‘কোনো প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেছেন কি-না আমি জানি না।’