Ajker Patrika

নির্বাচনের তফসিল

সম্পাদকীয়
নির্বাচনের তফসিল

৭ জানুয়ারি নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করেছেন নির্বাচন কমিশন। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন নিষ্ঠাবান থাকবে—এমনটাই জানালেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। বুধবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সিইসি নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেন। সবকিছু ঠিক থাকলে ৭ জানুয়ারি দেশের জনগণ ভোট দিতে যাবেন।

‘সবকিছু ঠিক থাকলে’ বলা হলো যদিও, আসলে এই মুহূর্তে সবকিছু ঠিক নেই। তফসিল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগ আনন্দ মিছিল বের করেছে, অন্যদিকে তফসিলের ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করেছে বিরোধী দল। দেশ সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে জনগণের মনে। প্রতিদিনই নতুন নতুন ঘটনা ঘটছে আর তাতে নির্বাচন নিয়ে সংশয় বাড়ছে বৈ কমছে না। বুধবারই জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞরা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বাংলাদেশের ওপর চাপ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। বুধবার মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর লেখা একটি চিঠি পৌঁছে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের হাতে। সেই চিঠিতে নির্বাচনের আগে সংলাপের প্রয়োজনীয়তার কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বোঝা যাচ্ছে, নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করলেও দেশের চলমান পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান করার জন্য দলগুলোর পরস্পরের প্রতি যে বিশ্বাস, আন্তরিকতা ও উদারতার প্রয়োজন, তার ঘাটতি রয়েছে। বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বিদেশি কূটনীতিকেরাও অবাধে তাঁদের মতামত জানাচ্ছেন। এ রকম এক পরিস্থিতিতে অস্থির হয়ে আছে রাজনৈতিক মঞ্চ। জনগণ আদৌ জানে না, সামনের দিনগুলো কেমন যাবে এবং আদৌ এই সময়ের মধ্যে নিজের ভোট নিজে দিয়ে পছন্দের কোনো দলকে নির্বাচিত করার পরিবেশ সৃষ্টি হবে কি না।

ট্র্যাজেডি হলো, যে রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন নিয়ে তৎপর আছে, তাদের দেহভাষায় এখনো জনগণের প্রতি তাদের দায়ের পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে না। উন্নয়নের রাজনীতির কথা বলছে সরকার, অথচ নানাভাবে যে লুটপাট চলছে, সিন্ডিকেট ব্যবসা চলছে, ডলারের বিনিময়মূল্য যে হারে বাড়ছে, সেগুলো ঠেকাতে সরকারি কোনো দৃঢ় পদক্ষেপ আছে কি না, সেটা বোঝা যাচ্ছে না। অন্যদিকে বিরোধী দলগুলোও সরকারের ব্যর্থতার কথা বড় গলায় বললেও সেই ব্যর্থতা থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য তারা কী পদক্ষেপ নেবে, সে বিষয়েও ঝেড়ে কাশছে না। অতীতে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য যে দলগুলো ক্ষমতার স্বাদ পেয়েছে, সেই দলগুলোও যে ধোয়া তুলসী পাতা নয়, সে কথাও জনগণ জানে। আর তাই নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টিই শুধু জনগণের আরাধ্য নয়, নির্বাচনের পর সত্যিই জনগণের জন্য উপকারী শাসনব্যবস্থা চালু হবে কি না, সেটা নিয়েও তারা শঙ্কিত।

আপাতত সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হলে জনগণের মনে কিছুটা স্বপ্নের সঞ্চার হবে, যা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য একটা ইতিবাচক উদাহরণ হয়ে উঠতে পারে। নইলে ভবিষ্যতের অন্ধকার কাটবে কখন, তা কেউ বলতে পারবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে না নেওয়ার প্রস্তাব র‍্যাব ডিজির

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

পরিপাকতন্ত্রের ওষুধের পেছনেই মানুষের ব্যয় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত