Ajker Patrika

ছুটির দিনেও কাজে জটমুক্তি

আপডেট : ১৭ মে ২০২২, ১২: ৫৩
ছুটির দিনেও কাজে জটমুক্তি

যশোরের মনিরামপুরে সহকারী কমিশনারের (ভূমি) দপ্তরে নামজারির জটিলতায় ভোগান্তির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এ দপ্তরে নামজারির আবেদন করে বছরের পর বছর হাঁটতে হয়েছে আবেদনকারীদের। এবার ব্যতিক্রম নজির দেখিয়েছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) হরেকৃষ্ণ অধিকারী। ২০২১-২২ অর্থবছরে এ দপ্তরে জমা পড়া নামজারির ৭ হাজারের বেশি আবেদনের সব কটি নিষ্পত্তি করেছেন তিনি। এ ছাড়া গত বছরের ঝুলে থাকা ৪ হাজার নামজারির আবেদন নিষ্পত্তি করেছেন তিনি।

শুধু নামজারি নয়, অনলাইনে খাজনা আদায়ে হোল্ডিং সংখ্যার শতভাগ ১ লাখ ৬৯ হাজার ৩৩৯ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছেন তিনি; যা যশোর জেলার মধ্যে প্রথম বলে দাবি এ ভূমি কর্মকর্তার। হোল্ডিং নম্বরের পাশাপাশি চলতি অর্থবছরে ৫ লাখ ৯১ হাজার ৩৯০ টাকা অনলাইনে খাজনা আদায় হয়েছে এ দপ্তরে।

সহকারী কমিশনার হিসেবে গত বছরের ১৯ জুলাই মনিরামপুর উপজেলা ভূমি অফিসে যোগ দেন হরেকৃষ্ণ অধিকারী। এরপর দুই মাস তিনি প্রশিক্ষণের কারণে কার্যালয়ের বাইরে কাটিয়েছেন। ৮ মাস এ দপ্তরে কাজের সময়ে তিনি ৭ হাজার ৩৪৭টি নামজারির আবেদন নিষ্পত্তি করেছেন।

হরেকৃষ্ণ অধিকারী বলেন, ‘২০২১-২২ অর্থবছরে জুলাই প্রথম থেকে গতকাল রোববার পর্যন্ত আমার দপ্তরে ৭ হাজার ৩৪৭টি নামজারির আবেদন পড়েছে। এর মধ্যে মামলার জটিলতা ও আবেদনের ত্রুটি থাকায় ৩ শতাধিক আবেদন বাতিল করা হয়েছে। বাকি আবেদনের সব ক’টি নিষ্পত্তি করা হয়েছে।’

হরেকৃষ্ণ অধিকারী বলেন, ‘আমি আসার পর গত অর্থবছরের ৪ হাজারের বেশি নামজারির আবেদন জমা ছিল সেগুলোও নিষ্পত্তি করেছি। মনিরামপুর ভূমি অফিসে নামজারির জটিলতা দীর্ঘদিনের।’

জানা গেছে, ২০২০ সালের করোনা শুরুর পর থেকে পরপর ৪ জন সহকারী কমিশনার এ দপ্তরে যোগ দেওয়ার পর দ্রুত সময়ে তাঁদের বদলি করা হয়েছে। করোনায় মাস্ক না পরায় তিন বৃদ্ধকে কান ধরানোর ছবি ভাইরাল হওয়ায় তখনকার এসিল্যান্ড সাইয়েমা হাসানকে বদলি করা হয়। এরপর কয়েক মাস পদ শূন্য থাকার পর সহকারী কমিশনার হিসেবে যোগ দেন খোরশেদ আলম। ৩-৪ মাস পর তাঁকে বদলি করা হয়। আবার কয়েক মাস খালি থাকার পর এ দপ্তরে যোগ দেন পলাশ দেবনাথ। তিনিও ৫-৭ মাসের মধ্যে বদলি হয়ে যান। তার পর গত বছরের ১৯ জুলাই এসিল্যান্ড হয়ে আসেন হরেকৃষ্ণ অধিকারী। বারবার এসিল্যান্ড বদলি হওয়ার কারণে এ দপ্তরে নামপত্তনের জটিলতা সৃষ্টি হয়। অনলাইনে আবেদন করে বছরের পর বছর ঘুরতে হয়েছে সেবাগ্রহীতাদের।

মনিরামপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ বাবুল আক্তার বলেন, ‘তিন মাস আগে তিনটি নামজারির আবেদন করেছি। গতকাল সোমবার নামজারির কাগজ হাতে পেয়েছি। দ্রুত নামজারি করতে পেরে আমি সন্তুষ্ট।’

উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) হরেকৃষ্ণ অধিকারী বলেন, ‘‘চলতি অর্থবছরের শুরুতে জমির খাজনা আদায়ের জন্য জমির মালিকদের অনলাইনে তথ্য সংযুক্ত করা শুরু হয়। এ অর্থবছরে মনিরামপুরে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৩৩৯ হোল্ডিং নম্বরের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়। জেলায় আমরাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে খাজনা আদায়ের জন্য জমির মালিকদের শত ভাগ তথ্য অনলাইনে সংযুক্ত করতে পেরেছি। গত ১৫ দিন আগে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। নামজারির জটিলতা কমাতে ও অনলাইনে জমির মালিকদের তথ্য সংযুক্ত করতে বন্ধের দিনও কাজ করেছি। এখন থেকে জমির মালিকেরা নায়েব অফিসে না গিয়ে বাসায় বসে অনলাইনে খাজনা দিতে পারবেন। তখন আর তাঁদের ধোঁকা দিয়ে কেউ বাড়তি টাকা নিতে পারবেন না। ইতিমধ্যে অনলাইনে ৫ লাখ ৯১ হাজার ৩৯০ টাকা খাজনা আদায় হয়েছে।

এদিকে জনবান্ধব এ কর্মকর্তাকে বদলির আদেশ দিয়ে ৫ মাসের জন্য ঢাকায় প্রশিক্ষণে পাঠানো হচ্ছে। ২২ মে থেকে তাঁর প্রশিক্ষণ শুরু হবে। আগামীকাল বুধবার মনিরামপুরে তাঁর শেষ কর্মদিবস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জোবাইদার নিরাপত্তার নামে প্রতিবেশীদের বিরক্ত না করার নির্দেশ তারেক রহমানের

হেফাজতসহ ধর্ম ব্যবসায়ীরা নারীবিদ্বেষী প্রচারণা চালাচ্ছে: ৬৮ মানবাধিকার সংগঠন

মানিকগঞ্জে সালিসে বিএনপি নেতার নির্দেশে পাঁচ ভাইকে জুতাপেটা

রাখাইনে মানবিক করিডর: জান্তার আপত্তিতে সরকারে দ্বিধা

ভারতের ব্ল্যাকআউট মহড়া, সীমান্তে আটার মজুত বাড়াচ্ছে পাকিস্তান, যুদ্ধ কি লেগে যাচ্ছে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত