Ajker Patrika

শিশু নির্যাতন, ১ বছরে কুড়িগ্রামে ২১ মামলা

আরিফুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম
আপডেট : ২৩ জানুয়ারি ২০২২, ১৫: ৩৩
শিশু নির্যাতন, ১ বছরে কুড়িগ্রামে ২১ মামলা

কুড়িগ্রামে শিশু নির্যাতন বেড়েছে। গত বছরে জেলায় যৌনসহ শারীরিক নির্যাতন করার ঘটনায় ২১টি মামলা হয়েছে। অনেক ভুক্তভোগীর পরিবার বিচার পাচ্ছে না বলেও দাবি করা হয়েছে।

জেলা পুলিশের নারী ও শিশু নির্যাতন-বিষয়ক মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ২০২০ সালে বিভিন্ন নির্যাতনে ভুক্তভোগী শিশুর সংখ্যা ছিল ১৫ জন। আর ২০২১ সালে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ জনে। তবে এই পরিসংখ্যান আইনের আশ্রয় নিতে সক্ষম হওয়া ভুক্তভোগীদের মোট সংখ্যা।

এ ছাড়া বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কুড়িগ্রাম জেলা শাখার তথ্যমতে, গত বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত জেলায় প্রায় ৩৪২ জন নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে শিশুর সংখ্যা প্রায় ৪০। যাদের বেশির ভাগ নানা কারণে আইনের আশ্রয় নিতে ব্যর্থ হয়েছে। এই পরিসংখ্যান তুলে ধরে সংগঠনটির কুড়িগ্রাম জেলা সভাপতি রওশন আরা চৌধুরী বলেন, ‘জেলায় গত এক বছরে নারী ও শিশু নির্যাতনের পরিমাণ বেড়েছে। এর সঙ্গে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে বাল্যবিবাহ। শিশু নির্যাতনের যে অভিযোগগুলো পুলিশের কাছে যাচ্ছে, নির্যাতনের প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়েও বেশি। প্রতিপক্ষের হুমকি আর আইনি ঝামেলা এড়াতে অনেকে পুলিশের কাছে যেতে পারছে না।’ এসব নির্যাতন রোধে সামাজিক সচেতনতা ও প্রতিরোধ গড়ে তোলার পরামর্শ দেন তিনি।

এদিকে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় ধরলা নদীর চরাঞ্চলে যৌন নির্যাতনের শিকার হয় ছয় বছরের এক মেয়েশিশু। গত বছরের জুলাই মাসে নির্যাতনের শিকার হলেও এখনো তার পরিবার বিচার পায়নি। অভিযুক্ত কিশোরের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হলেও সে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

নির্যাতনের শিকার শিশুর মা জানান, বাড়িতে ঢুকে অভিযুক্ত কিশোর তাঁর মেয়েকে নির্যাতন করলেও তিনি গত ছয় মাসে বিচার পাননি। এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের হস্তক্ষেপ দাবি করেন তিনি।

রৌমারী উপজেলায় গত বছরের ১৬ জুন ঘুম থেকে দেরিতে ওঠায় এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে প্রহার করে জখম করার অভিযোগ ওঠে ওই মাদ্রাসার এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। বিষয়টি যাতে জানাজানি না হয়, সে জন্য আহত শিক্ষার্থীকে একটি কক্ষে আবদ্ধ করে রাখেন শিক্ষক। পরে শিশুর পরিবার মামলা করলে ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

জেলায় শিশু নিগ্রহের এ ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে জেলা শিক্ষা বিভাগের প্রতিবেদনে। শিক্ষা বিভাগ বলছে, করোনার সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রায় চার হাজার স্কুলশিক্ষার্থী বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছে। নিজেদের অমতে পারিবারিক চাপে পড়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে বাধ্য হওয়া এসব শিক্ষার্থীর বেশির ভাগের বয়স ১৩-১৬ বছর, যাদের কারোরই শারীরিক কিংবা মানসিক বিকাশ ঘটেনি।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রুহুল আমীন বলেন, ‘শিশু নির্যাতনের খবর পাওয়ামাত্রই দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত