Ajker Patrika

শহরে অবৈধ হাসপাতাল ক্লিনিক চলছেই

যশোর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২১, ১৬: ৫৩
শহরে অবৈধ হাসপাতাল ক্লিনিক চলছেই

যশোরের ২৫৬টি বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের হালনাগাদ লাইসেন্স নেই। শুধু আবেদনের ওপর ভিত্তি করে অবৈধভাবে চলছে এসব প্রতিষ্ঠান। এদিকে বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে ৫৫টি প্রতিষ্ঠানকে সিলগালা করা হয়েছে। সিলগালা করা সত্ত্বেও এসব প্রতিষ্ঠানের বেশ কয়েকটি আবার চালু করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, লাইসেন্স হালনাগাদ করতে না পারলে পর্যায়ক্রমে সব প্রতিষ্ঠানই বন্ধ করে দেওয়া হবে।

সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় মোট ২৮৮টি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এর মধ্যে ৩২টি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে হালনাগাদ লাইসেন্স নিয়ে কার্যক্রম চলছে। এগুলোর মধ্যে যশোর শহরে ২০টি এবং বাকি ১২টি রয়েছে বিভিন্ন উপজেলায়।

সূত্রটি জানায়, লাইসেন্স হালনাগাদ করতে গত ২৩ সেপ্টেম্বর একযোগে ১৬৩টি প্রতিষ্ঠানকে ১৫ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে চিঠি পাঠান সিভিল সার্জন। পরে আরও ৭০টি প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয় কারণ দর্শানো নোটিশ। অনেকেই নোটিশের জবাব দেওয়ার পাশাপাশি হালনাগাদ লাইসেন্স পাওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন করেছেন। তবে নিজস্ব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক-নার্স, প্যাথলজিস্ট ও উন্নত চিকিৎসাসেবা পরিবেশ না থাকায় কোনো প্রতিষ্ঠান হালনাগাদ লাইসেন্স পাচ্ছে না।

সূত্রটি আরও জানায়, নিজস্ব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, সেবিকা না থাকা, নিম্নমানের অস্ত্রোপচার কক্ষ, নোংরা প্যাথলজি বিভাগ, রোগীদের জিম্মি করে অর্থ আদায়সহ সরকারি নানা বিধিনিষেধ না মানায় ইতিমধ্যেই ৫৫টি বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধুমাত্র আবেদনের ওপর ভিত্তি করেই নিয়মবহির্ভূতভাবে জেলার ২৫৬টি প্রতিষ্ঠান পুরোপুরি চালু রয়েছে। যার অর্ধেকেরও বেশি রয়েছে যশোর শহর ও সদর উপজেলায়।

প্রকাশ্যে এসব প্রতিষ্ঠান চালু থাকলেও নানা কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এমনকি সিলগালাকৃত প্রতিষ্ঠানগুলোও অনেকটা অবাধ্য। প্রকাশ্যে কিংবা গোপনে তাঁরাও চালু রেখে কার্যক্রম।

সিলগালা করার পরও চালু রয়েছে এমন প্রতিষ্ঠানগুলো হলো ল্যাব জোন ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নিউ মাতৃসেবা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মেডিল্যাব ডায়াগনস্টিক সেন্টার, হাসনা আকবর মেমোরিয়াল, আলিফ ট্রমা সেন্টার, হেলথ ফোরটিস, রজনী ক্লিনিক, পল্লী ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার, জোহরা ক্লিনিক, মা-মণি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মুক্তি ক্লিনিক, বাঁকড়া সার্জিক্যাল ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সায়রা সার্জিক্যাল, ছুটিপুর প্রাইভেট ক্লিনিক, সালেহা ক্লিনিক, সীমান্ত ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মায়ের দোয়া প্রাইভেট ক্লিনিক।

অভিযোগ রয়েছে, এসব প্রতিষ্ঠানে নানা অনিয়ম ও ত্রুটির মধ্যে রোগীর অস্ত্রোপচার, চিকিৎসা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। অথচ মানসম্মত যন্ত্রপাতি, ল্যাব, চিকিৎসক, প্যাথলজিস্ট, টেকনোলজিস্ট নেই কারও। একই অবস্থা আবেদন করা ২০১টি প্রতিষ্ঠানের।

সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স পাওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন করেছে, সেগুলো যাচাই বাছাইয়ের পর পর্যায়ক্রমে পরিদর্শন করা হচ্ছে। পরিদর্শনের পর প্রতিষ্ঠানের পুরো চালচিত্র জানানো হচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে।

তিনি আরও বলেন, ‘নিজস্ব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স ও প্যাথলজিস্ট ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠান হালনাগাদ লাইসেন্স পাবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত