Ajker Patrika

বেহাল ৫ সড়কে দুর্ভোগ

 শিপুল ইসলাম, তারাগঞ্জ
বেহাল ৫ সড়কে দুর্ভোগ

তারাগঞ্জে স্থানীয় সড়কগুলো বেহাল হয়ে উঠেছে; বিশেষ করে পাঁচটি সড়ক দীর্ঘদিনেও সংস্কার না করায় হাজারো পথচারীর জন্য সেগুলো এখন গলার কাঁটা। সড়কগুলোর কোথাও ভেঙে পুকুরে বিলীন হয়েছে, কোথাও বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে, আবার কোথাও কার্পেটিং উঠে গিয়ে ইটের খোয়া বেরিয়ে গেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, নিম্নমানের কাজ করায় সড়কগুলো দ্রুত চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

তারাগঞ্জ বাজারের বুক চিরে চলে যাওয়া তারাগঞ্জ-কিশোরগঞ্জ সড়কের পাশাপাশি খিয়ারজুম্মা-আলমপুর, ইকরচালী বাজার-ডাঙ্গাপাড়া, বামনদীঘি-পারঘাট ও ইকরচালী-বিড়াবাড়ী সড়ক ঘুরে পথচারীদের দুর্ভোগ চোখে পড়েছে।

তারাগঞ্জ-কিশোরগঞ্জ সড়কের চৌপথী থেকে কেল্লাবাড়ী মোড় পর্যন্ত এক কিলোমিটার অংশ খানাখন্দে ভরা। কার্পেটিং উঠে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। ভ্যানচালক ভুট্ট মিয়া জানান, গ্রীষ্মের সময় এই রাস্তায় সাবধানে গাড়ি চালান। কিন্তু বর্ষার সময় পানির নিচে কিছু বোঝা যায় না। একটু এদিক-সেদিক হলেই ভ্যান উল্টে যায়। যাত্রী ও মালামাল ভিজে যায়, গাড়ি ভাঙে। বছরের পর বছর এমন ভাঙা সড়ক দিয়ে তাঁদের গাড়ি চালাতে হচ্ছে।

উপজেলা সদরসহ, রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের সঙ্গে যোগাযোগ সহজ করার জন্য খিয়ারজুম্মা থেকে আলমপুর ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত চার কিলোমিটার রাস্তাটি আট বছর আগে পাকা করা হয়। এই সড়কে পরিষদের আগ পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার অংশের অবস্থা খুবই খারাপ। বেশির ভাগ অংশে কার্পেটিং উঠে গেছে।

খিয়ারজুম্মা গ্রামের রিয়াদুল ইসলাম জানান, নিম্নমানের কাজ যে হয়েছে, তা সড়কটির অবস্থা দেখেই বোঝা যায়। সংস্কারের ছয় মাস পর থেকে কার্পেটিং ওঠা শুরু হয়। এখন পুরো সড়ক ছাল ওঠা গাছের মতো হয়ে গেছে। রিকশা-ভ্যান তো দূরের কথা, হেঁটে যেতেও কষ্ট হয়।

তকেয়া গ্রামের রিকশাচালক নুর হোসেন বলেন, ‘রাস্তার এই অবস্থা জানলে এদিক দিয়ে আসতাম না। এইটা পাকা রাস্তা নোয়ায়, যত দূর আসছু মনে হইল পাহাড়ি সড়ক।’

ইকরচালী বাজার-ডাঙ্গাপাড়া সড়কের দোলাপাড়ায় ৪০০ মিটার অংশের অবস্থা এখন খুবই খারাপ। এ অংশে সড়ক দুই দিকে পুকুরে ভেঙে সংকীর্ণ হয়ে গেছে। বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। চলাচল করতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে যানবাহন।

পথচারী আব্দুল হাকিম বলেন, ‘এটা সড়ক নয়, মৃত্যুফাঁদ। পুকুরের কাছে ভেঙে আলের মতো হয়ে গেছে। বর্ষাকালে দোলাপাড়ার কাছে এটি আল মনে হবে। এখানে রিকশা-ভ্যান প্রায়ই উল্টে যায়।’

হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের প্রধান সড়ক বামনদীঘি-পারঘাট সড়কটির দুই কিলোমিটার অংশ খানাখন্দে ভরা। সড়কে কথা হয় হাতিবান্দা গ্রামের গৃহবধূ লাকী বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘পিচঢালাই উঠি লাল খোয়া বের হইছে। চলাচলে খুব অসুবিধা হচ্ছে। রাস্তাটা দেখলে মনে হচ্ছে চাষ করা খাওনা জমি।’

একই বেহালদশা ইকরচালী-বিড়াবাড়ী সড়কেও। পোদ্দারপাড়া থেকে পারুল মেম্বারের বাড়ি পর্যন্ত সড়কের ৩০০ মিটার অংশে খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়ায় যান চলাচল দূরের কথা, সাধারণ মানুষের পায়ে হেঁটে চলাচল করাও দুষ্কর।

যোগাযোগ করা হলে ইকরচালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী বলেন, ‘ইকরচালী-বিড়াবাড়ী ও ইকরচালী বাজার-ডাঙ্গাপাড়া সড়ক দুটি সংস্কারের জন্য উপজেলা প্রকৌশলীকে বলব। এগুলো নিয়ে উপজেলা সমন্বয় কমিটিতেও আলোচনা করব, যাতে দ্রুত সংস্কার করে দেয়।’

তারাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বায়েজিদ বোস্তামী জানান, সড়কগুলোর অবস্থা খুবই করুণ। এগুলো সংস্কার না করায় যাতায়াতের ক্ষেত্রে মানুষের কষ্ট বাড়ছে। সড়কগুলো সংস্কারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী আহমেদ হায়দার জামান বলেন, ‘সড়কগুলো পরিদর্শন করেছি। এগুলোর বেহাল অবস্থার কথা জানা আছে। ইতিমধ্যে খিয়ারজুম্মা-আলমপুর সড়কটি সংস্কারের পরিকল্পনা করা হয়েছে। বাকি সড়কগুলোও পর্যায়ক্রমে সংস্কার করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইসরায়েলে ২০ লাখ রুশভাষীর বাস, রাশিয়াকে তাঁদের কথা ভাবতে হয়: পুতিন

হরমুজ প্রণালিতে প্রবেশ করে ইউটার্ন নিল দুটি জাহাজ

লাইভ-২ (২৩ জুন, ২০২৫) ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কাঁপল ইসরায়েল, তেহরানে ভয়াবহ বিস্ফোরণ

চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি থেকে বিদায় নিচ্ছে সাইফ পাওয়ারটেক

গুমে জড়িত ছিল ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা: গুম কমিশনের প্রতিবেদন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত