Ajker Patrika

অর্থ ছাড় না হওয়ায় কাজে ধীরগতি

রিমন রহমান, রাজশাহী
আপডেট : ১৭ মে ২০২২, ০৯: ৪৭
অর্থ ছাড় না হওয়ায় কাজে ধীরগতি

হাজরাহাটি, চন্দনশহর, বামনপাড়া হারিয়ে গেছে। এই তিন মৌজা পেটে নিয়ে পদ্মা এগিয়ে এসেছে রাওথায়। অবশেষে সেখানে শুরু হয়েছে নদীর তীর রক্ষার কাজ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে স্লোপ বেড প্রস্তুত করেছে। এখন শুধু কংক্রিটের ব্লক বসানোর কাজ বাকি। কিন্তু সেই কাজটিই আর এগোচ্ছে না। এ অবস্থায় আসছে বর্ষা মৌসুমে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার এই এলাকাটি আবারও ভাঙনের মুখে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। তাঁরা বলছেন, ব্লক বসানোর আগপর্যন্ত যে টাকা খরচ করা হয়েছে, তা চলে যাবে পানিতে।

বর্ষা খুব কাছাকাছি চলে এলেও নদীর তীর রক্ষার কাজে ধীরগতি কেন, জানতে চাইলে অর্থসংকটকেই কারণ হিসেবে দেখাচ্ছেন ঠিকাদারেরা। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারাও বলছেন, অর্থ ছাড় না হওয়ায় পাউবো ঠিকাদারদের টাকা দিতে পারছে না। এ কারণে ঠিকাদারেরাও কাজ এগিয়ে নিতে পারছেন না। ১০ জনের মধ্যে চারজন কাজ বন্ধই রেখেছেন। অন্য ছয় ঠিকাদার কাজ করছেন ধীরগতিতে।

‘রাজশাহী জেলার চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় পদ্মার বাম তীরের স্থাপনাগুলো নদীভাঙন থেকে রক্ষা প্রকল্প’র আওতায় এলাকাটিতে কাজ চলছে। এই প্রকল্পে মোট ১৯টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। এর মধ্যে ১০টি প্যাকেজে ১০ জন ঠিকাদার চারঘাটের রাওথা থেকে পদ্মার ভাটিতে বাঘা উপজেলার গোকুলপুর পর্যন্ত ৪ দশমিক ৩ কিলোমিটার তীর রক্ষার কাজ পেয়েছেন। একজন ঠিকাদার পুরোনো বাঁধ সংস্কারের কাজ পেয়েছেন। আর অন্য আটজন পেয়েছেন ১২ কিলোমিটার নদী খননের কাজ।

পাউবো সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের মোট ব্যয় ৭২২ কোটি ২৪ লাখ ২৬ হাজার টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। নদী খনন ছাড়া অন্য কাজগুলো সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারেরা শুরু করেছেন। তীর রক্ষার কাজ পাওয়া ১০ ঠিকাদার ইতিমধ্যে ১১০ কোটি টাকার কাজ সম্পন্ন করেছেন। কিন্তু তাঁরা বিল পেয়েছেন মাত্র ২২ কোটি টাকা। অর্থ ছাড় না হওয়ায় পাউবো ঠিকাদারদের টাকা দিতে পারছে না।

১১ মে চারঘাটের রাওথা দাউরিপাড়ায় প্রকল্পের ১ নম্বর প্যাকেজ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, হাতেগোনা কয়েকজন শ্রমিক কাজ করছেন। সেখানে ২ নম্বর প্যাকেজেরও কাজ চলছিল ধীরগতিতে। ৪ নম্বর প্যাকেজের ঠিকাদার ব্লক বসানোর জন্য স্লোপের কাজ পর্যন্ত করেছেন। কিন্তু টাকার অভাবে ব্লক বসাতে পারছেন না। বর্ষায় স্লোপ বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মোট ৭২২ কোটি টাকার কাজের মধ্যে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় কিস্তিতে ২২ কোটি টাকা ঠিকাদারেরা পেয়েছেন। চতুর্থ কিস্তিতে আরও ১৭ কোটি টাকা পাওয়ার কথা। কিন্তু কাজের অগ্রগতি প্রায় ৪০ শতাংশ। ঠিকাদারেরা নিজেদের টাকায় কাজ এগিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু এখন টাকা না পেয়ে সমস্যায় পড়েছেন। আরও অর্থ যেন ছাড় করা হয়, তার জন্য আমরা মন্ত্রণালয়ে লিখেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত