Ajker Patrika

লক্ষ্মীদীঘায় আশা কৃষকের

সিয়াম সাহারিয়া ও জসিম উদ্দিন, নওগাঁ ও নীলফামারী 
লক্ষ্মীদীঘায় আশা কৃষকের

নওগাঁয় বিলবেষ্টিত নিচু ১০০ বিঘা জমিতে বিলুপ্তপ্রায় লক্ষ্মীদীঘা ধানের আবাদ হয়েছে। আর এ ধান পরীক্ষামূলক চাষে ফলনও হয়েছে আশানুরূপ। প্রতি বিঘায় ফলন মিলেছে পাঁচ থেকে আট মণ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একসময় দেশে লক্ষ্মীদীঘা, বালাম, কালোজিরা, হিজলদীঘাসহ নানা রকম স্থানীয় জাতের ধান চাষাবাদ হতো। কিন্তু কালের পরিক্রমায় হাইব্রিড ও উচ্চফলনশীল জাতের ধান চাষের কারণে এসব জাতের ধান এখন বিলুপ্ত হতে চলেছে।

জানা গেছে, বিলুপ্তপ্রায় এই জাতের ধানের আবাদ ফিরিয়ে আনতে নিরলস ও নিরন্তর চেষ্টা করছেন দেশের কয়েকজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন নওগাঁ সদরের পার নওগাঁর বাসিন্দা হাসান জামান সিদ্দিকী ও নীলফামারীর সৈয়দপুরের আহসান-উল হক বাবু।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নওগাঁ সদর উপজেলার দুবইলহাটি ইউনিয়নের হাড়িয়াগাছী এলাকায় বিলবেষ্টিত নিচু জমিতে শুধু ইরি-বোরো ধান চাষ হতো। ফলে এসব জমি ছয় মাসের বেশি অনাবাদি থাকত। এই জমিগুলোকে কাজে লাগানোর চিন্তা থেকেই পানিসহিষ্ণু জাতের লক্ষ্মীদীঘা ধানের আবাদের পরিকল্পনা নেন নওগাঁর হাসান জামান সিদ্দিকী।

এই উদ্যোক্তা বলেন, ২০২১ সালে নীলফামারীর সৈয়দপুরের কৃষি উদ্যোক্তা আহসান-উল হক বাবুর মাধ্যমে গোপালগঞ্জ থেকে ১২০ কেজি লক্ষ্মীদীঘা ধানের বীজ সংগ্রহ করেন। ২০২১ সালে হাড়িয়াগাছী বিলে লক্ষ্মীদীঘা ধানের আবাদ করেন। তাতে আশাতীত সফলতা পান তিনি। ওই বছর স্বল্প পরিসরে জমিতে তা চাষাবাদ করে ১৭ মণ ধান পান তিনি। পরে সেই ধান পুরোটাই বীজ হিসেবে সংরক্ষণ করেন। চলতি মৌসুমে এলাকার ৪০ জন কৃষককে সঙ্গে নিয়ে প্রায় এক শ বিঘা জমিতে লক্ষ্মীদীঘা জাতের ধানের আবাদ করেন তিনি। গত জুন মাসের প্রথম দিকে এক দফা জমি চাষ দিয়েই লক্ষ্মীদীঘা জাতের ধানের ওই বীজ জমিতে বপন করা হয়। সার ও কীটনাশকের কোনো রকম ব্যবহার ছাড়াই এ ধানের চাষাবাদ করা হয়েছে। ফলনও বেশ ভালো হয়েছে।

আরেক উদ্যোক্তা আহসান-উল হক বাবু বলেন, অল্প খরচে নিচু জমিতে বিলুপ্তপ্রায় এই জাতের ধান আবাদ করা সম্ভব। কারণ, কীটনাশকের ব্যবহার ছাড়াই লক্ষ্মীদীঘা ধান চাষ করা যায়। তিনি দেশের বিলুপ্তপ্রায় সব জাতের ধান চাষ ফিরিয়ে আনতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।

এদিকে, গত শুক্রবার বিকেলে নওগাঁয় লক্ষ্মীদীঘা ধানের কর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রাজশাহী অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো. সামসুল ওয়াদুদ।

এ সময় নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. আবু হোসেন, রংপুরের কৃষিবিদ লুৎফুল বারী আল ওসমানী, সৈয়দপুরের কৃষি উদ্যোক্তা আহসান-উল হক বাবু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কৃষিবিদ মো. আবু হোসেন বলেন, ‘বিলুপ্তপ্রায় এই জাতের ধানের আবাদ ফিরিয়ে আনতে নিরলস চেষ্টা করছেন উদ্যোক্তা হাসান জামান সিদ্দিকীসহ কয়েকজন কৃষি উদ্যোক্তা। আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকেও তাঁদের সার্বিক সহযোগিতা করছি। কীটনাশক ও সেচ ব্যবহার না করায় এই ধান চাষে অল্প খরচে অধিক লাভবান হওয়া যায়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আদালতের বিচারকাজে বাধা দেওয়ায় আইনজীবীর দণ্ড, ক্ষমা চেয়ে পার

লাহোরে পাল্টা আঘাত হেনে পাকিস্তানকে জবাব দিল ভারত

পাকিস্তানের চীনা জে-১০ দিয়ে ভারতের রাফাল যুদ্ধবিমান ধ্বংস, যুক্তরাষ্ট্রের কড়া নজরে এই টক্বর

আবদুল হামিদের দেশত্যাগে এবার কিশোরগঞ্জের এসপি প্রত্যাহার

শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করে সংবাদ, খুলনায় পত্রিকা অফিসে আগুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত