Ajker Patrika

সৈয়দপুরে স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত রেলের বগি

রেজা মাহমুদ, সৈয়দপুর (নীলফামারী)
সৈয়দপুরে স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত রেলের বগি

নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা। প্রধান ফটকের সামনেই দেখা গেল রেলগাড়ির একটি বগি। ছবি তুলছেন দর্শনার্থীরা। রেলওয়ে কারখানায় এ ধরনের বগি থাকবে, এটাই তো স্বাভাবিক! এতে মুগ্ধ হওয়ার কী আছে!

কিন্তু আসল ব্যাপার জানা গেল পরে। সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার শ্রমিকেরা কোনো ধরনের খরচ ছাড়াই পুরোনো অব্যবহৃত কাঁচামাল দিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে এই বগি বানিয়েছেন। আর তা বসানো হয়েছে এমন এক জায়গায়, যার কারণে কারখানাকে এখন মনে হচ্ছে নান্দনিক রেলের রাজ্য। দূর থেকে দেখেই মুগ্ধ অনেকে।

কেমন যেন হাতছানি দিয়ে ডাকে বগিটা। ভেতরে গিয়ে বসলে মনে হয় এই বুঝি ‘ঝিকঝিক ঝিকঝিক’ শব্দ আসবে। এই বুঝি হুইসেল দিয়ে ছুট দেবে ট্রেন। 

রেলওয়ে কারখানা সূত্রে জানা গেছে, ১৮৭০ সালে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা স্থাপিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর এখানে নতুন কোচ তৈরি হতো। কিন্তু ১৯৯৩ সালে রেল সংকোচন নীতির আওতায় কোচ নির্মাণ কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখন কারখানাটিতে যাত্রীবাহী ক্যারেজ ও মালবাহী ওয়াগন মেরামতের কাজ করা হয়। 
রেলওয়ের ১ হাজার ২০০ ধরনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ তৈরি হয় এই কারখানায়। কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) সাদেকুর রহমান যোগদানের পর দর্শনার্থীদের জন্য কারখানার সৌন্দর্য বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরই অংশ হিসেবে গত ১৫ নভেম্বর রেলওয়ে দিবসে প্রতীকী বগিটি স্থাপন করা হয়েছে। 
বগিটি মিটারগেজ ট্রেনের, দৈর্ঘ্য ১২ ফুট, প্রস্থ ১১ ও উচ্চতা ৭ ফুট। রেলওয়ে কারখানার শ্রমিক জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘অবসর সময়ে স্বেচ্ছাশ্রমে আমরা ছয় আসনের বগিটি তৈরি করেছি। ব্যবহার করা হয়েছে অব্যবহৃত পুরোনো লোহার যন্ত্রাংশ।’

বগি দেখতে আসা সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিন বলেন, বগিটির মাধ্যমে এ পথে যাতায়াতকারীরা সহজেই বুঝতে পারবে কারখানায় ট্রেনের এ ধরনের বগির কাজ করা হয়। সত্যিই প্রশংসনীয় উদ্যোগ।

কারখানা কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রয়োজনীয় জনবল ও অন্যান্য সুবিধা পেলে শুধু মেরামতই নয়, এখানে নতুন বগি তৈরি করাও সম্ভব। পরবর্তী সময়ে এখানে ট্রেনের একটি রেপ্লিকা স্থাপনের চিন্তাও রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত