Ajker Patrika

আ.লীগে ৪ নেতার ৩ গ্রুপ

শাপলা খন্দকার, বগুড়া
আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২: ১৬
আ.লীগে ৪ নেতার ৩ গ্রুপ

বগুড়ায় বিভক্ত হয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগ। চার নেতার হাতেই এখন দলের চাবিকাঠি। দলীয় প্রভাব ও স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ চার নেতা সম্প্রতি তিন গ্রুপে ভাগ হয়েছেন। জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোতে পদ পেতে লাগে এ তিন গ্রুপের যেকোনো একটির আশীর্বাদ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দলীয় অন্তঃকোন্দলে স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে ভরাডুবি হয়েছে নৌকার। জেলায় ১০৬টি ইউনিয়নের মধ্যে নৌকা বিজয়ী হয়েছে ৪০ টিতে। আর ১৬ ইউপিতে বিজয়ী হয়েছেন নৌকার বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী। গ্রুপিং এর ফলে ঘটছে সহিংসতা, খুনোখুনি।

নেতারা বলছেন, সময়ের সঙ্গে প্রতিনিয়তই বদলাচ্ছে দলীয় গ্রুপিং পরিস্থিতি। তবে বর্তমানে মোটাদাগে তিনটি গ্রুপে বিভক্ত আওয়ামী লীগ।

গ্রুপ তিনটি হলো জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু, সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহনের গ্রুপ।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, মমতাজ উদ্দীন ১৯৮২ থেকে ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ছিলেন। এরপর ২০১৯ সালের ৭ ডিসেম্বর সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে মজিবর রহমান মজনু, সহসভাপতি টি জামান নিকেতা, সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে মঞ্জুরুল আলম মোহন, আসাদুর রহমান দুলু, সাগর কুমার রায় ও কোষাধ্যক্ষ মাসুদুর রহমান মিলনের নাম ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে ২০২০ সালের ২৩ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।

জানা যায়, মমতাজ উদ্দীনের সময়ে তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড়ান জেলা যুবলীগের তৎকালীন সভাপতি মঞ্জুরুল আলম মোহন। দুজনের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জেলা আওয়ামী লীগ দুই দলে বিভক্ত হয়ে পড়ে। মমতাজের মৃত্যুর পর তাঁর অনুসারী হিসেবে পরিচিত জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি মজিবর রহমান মজনু, সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু ও যুগ্ম সম্পাদক আসাদুর রহমান দুলু আলাদা গ্রুপ তৈরি করেন। তবে বর্তমানে দুলু রিপুর গ্রুপে যোগ দিয়েছেন। আর বরাবরের মতোই মঞ্জুরুল আলম মোহনের একটি গ্রুপ সক্রিয় আছে বগুড়ায়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মজনু গ্রুপে আছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুল মতিন, সহসভাপতি প্রদীপ কুমার রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন নবাব, দপ্তর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল রাজি জুয়েল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সুলতান মাহমুদ খান রনি, মোটর মালিক গ্রুপের সাবেক সভাপতি প্রয়াত মমতাজ উদ্দিনের শ্যালক শাহ মো. আকতারুজ্জামান ডিউক, সদর থানা আওয়ামী লীগের সম্পাদক এবং জেলা পরিষদ সদস্য মাহফুজুল ইসলাম রাজ।

রিপু গ্রুপে আছেন যুবলীগের সাবেক সম্পাদক ও বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক বাবু সাগর কুমার রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদৎ আলম ঝুনু, ৪ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার আব্দুল মতিন সরকার, শ্রমিক লীগের সম্পাদক শামসুদ্দিন শেখ হেলাল, মোটর মালিক গ্রুপের সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মাশরাফি হিরো।

মোহন গ্রুপে আছেন জেলা যুবলীগের সভাপতি শুভাশীষ পোদ্দার লিটন, সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ডাবলু, ৫ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার আলহাজ্ব শেখ, সদর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আলিম উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শহিদুল ইসলাম দুলু।

এদিকে যুগ্ম সম্পাদক আসাদুর রহমান দুলু ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও দুই দশক ধরে স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি থাকায় ১২টি উপজেলাতেই তৃণমূলে তার প্রভাব আছে। তিনি এখন রিপুর গ্রুপ হয়ে কাজ করছেন।

এ ছাড়া প্রয়াত মমতাজ উদ্দিনের ছেলে মাসুদুর রহমান মিলনকে সামনে রেখে সম্প্রতি রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছেন বহিষ্কৃত নেতা আব্দুল মান্নান আকন্দ।

পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফি নেওয়াজ খান রবিন বলেন, ‘গ্রুপিং হলে সবাই চেষ্টা করে সন্ত্রাসী, অনুপ্রবেশকারীদের দিয়ে নিজেদের গ্রুপ ভারী করতে। এর ফলে সহিংসতা হয়, যা বগুড়ায় দেখা যাচ্ছে।’

জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু বলেন, ‘রাজনীতিতে নিজস্ব সমর্থক বাড়ানোর চেষ্টা থাকে। কিন্তু সেটা যেন বাড়াবাড়ি পর্যায়ে না যায় সেটাই দেখার বিষয়।’

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু বলেন, ‘বগুড়া আওয়ামী লীগে কোনো গ্রুপিং নেই। আমরা এক হয়েই কাজ করছি সবাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কুয়েটে ক্লাস বর্জন নিয়ে শিক্ষক সমিতিতে মতবিরোধ, এক শিক্ষকের পদত্যাগ

২ ম্যাচ খেলেই মোস্তাফিজ কীভাবে ৬ কোটি রুপি পাবেন

দুটি নোবেলের গৌরব বোধ করতে পারে চবি: প্রধান উপদেষ্টা

বিড়াল নির্যাতনের ঘটনায় গ্রামীণফোন ও অ্যারিস্টোফার্মা কেন আলোচনায়

বাগ্‌বিতণ্ডার মধ্যে সাম্যকে ইট ও ধারালো অস্ত্রের আঘাত করা হয়: ডিএমপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত