Ajker Patrika

কেউ খুশি, কেউ অসন্তুষ্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৪ এপ্রিল ২০২২, ১৪: ২৩
কেউ খুশি, কেউ অসন্তুষ্ট

পবিত্র রমজান উপলক্ষে গতকাল থেকে ভ্রাম্যমাণ বিপণন ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে শুরু হয়েছে সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংস বিক্রির কার্যক্রম। রাজধানীর ১০টি স্থান থেকে এ কার্যক্রমের আওতায় প্রত্যেক ক্রেতা দিনে সর্বোচ্চ ১ কেজি মাংস, ৩০টি ডিম ও ৩ কেজি পর্যন্ত দুধ কিনতে পারছেন। গতকাল এ কার্যক্রম শুরুর প্রথম দিনেই ভালো সাড়া ফেলেছে। সরকারের এমন উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন অনেকেই। তবে জনপ্রতি গরুর মাংসের বরাদ্দ কম হওয়ায় এ নিয়ে অসন্তোষও জানিয়েছেন কেউ কেউ।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, ২৮ রমজান পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলবে এ কার্যক্রম। ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে দুধ প্রতি লিটার ৬০ টাকা, ডিম প্রতি হালি ৩০ টাকা, ড্রেসিং করা ব্রয়লার মুরগি ২০০ টাকা কেজি, খাসির মাংস ৮০০ টাকা কেজি এবং গরুর মাংস প্রতি কেজি ৫৫০ টাকায় বিক্রি হবে।

গতকাল সকালে রাজধানীর খামারবাড়িতে অবস্থিত প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর চত্বরে ভ্রাম্যমাণ এ কর্মসূচির উদ্বোধন উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন। তিনি বলেন, ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়ের সব কার্যক্রম নিয়মিত মনিটর করা হবে। কম মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংসের ভ্রাম্যমাণ বিক্রির পদক্ষেপ এর আগে কেউ নেয়নি। চাহিদা ও দ্রব্যের সরবরাহ বিবেচনা করে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়ের পরিসর বৃদ্ধির পরিকল্পনার কথাও জানান মন্ত্রী।

কর্মসূচি উদ্বোধনের পর প্রাথমিকভাবে সচিবালয়সংলগ্ন আব্দুল গণি রোড, খামারবাড়ি গোলচত্বর, মিরপুর ৬০ ফিট রাস্তা, আজিমপুর মাতৃসদন, নয়াবাজার, আরামবাগ, নতুনবাজার, কালশী ও যাত্রাবাড়িতে ভ্রাম্যমাণ বিপণনব্যবস্থায় এসব পণ্য বিক্রি শুরু হয়। গাড়ি নষ্ট থাকায় জাপান গার্ডেন সিটি এলাকায় গতকাল পণ্য বিক্রি হয়নি।

খামারবাড়িতে পণ্য বিক্রি শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যে কড়া রোদ মাথায় নিয়েই ১৫ জন ক্রেতা এসে লাইনে দাঁড়িয়ে যান। কিছুক্ষণের মধ্যেই ক্রেতার সংখ্যা বাড়তে থাকে। এর মধ্যেই শুরু হয় হুড়োহুড়ি। তবে অনেকের সঙ্গে ব্যাগ না থাকায় কিছুক্ষণের জন্য পণ্য বিক্রি বন্ধ হয়ে যায়। এর মধ্যে অনেকে আবার লাইন ভেঙেও পণ্য নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ নিয়ে শুরু হয় আরেক দফা হুল্লোড়।

এসব বিপত্তি পেরিয়ে তাপস দত্ত নামের এক ব্যক্তি মুরগি, খাসির মাংস, ডিম ও দুধ কিনলেন। কথা বলতে গেলে জানালেন, আগে ব্যবসা করতেন। করোনার কারণে অর্থনৈতিকভাবে বেশ অসচ্ছল হয়ে পড়েছেন। তাই জীবনে প্রথমবার এমন লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য কিনছেন। তবে পণ্য কিনে বেশ সন্তুষ্ট তিনি। বললেন, ‘দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতির সময়ে এমন উদ্যোগ আমাদের মতো মধ্যবিত্তের জন্য কতটা স্বস্তির বিষয়, তা বলে বোঝাতে পারব না। দেখে পণ্যের মানও ভালো মনে হয়েছে। রোজার মাসজুড়ে এ কার্যক্রম চালু থাকলে অনেকের খুব উপকার হবে।’

তবে পণ্য কিনে খুশি হলেও পরিমাণ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন অনেকে। জিলানী আহমেদ নামের একজন বললেন, একটা পরিবারে এক দিনের জন্য এক কেজি মাংস কোনোভাবেই পর্যাপ্ত নয়। একেকজনের জন্য দিনে অন্তত দুই কেজি মাংস বরাদ্দ রাখা উচিত ছিল। এমন লাইন ধরে দাঁড়িয়ে পণ্য কিনে যদি চাহিদা পূরণ না হয়, তাহলে আর কী লাভ!

আবার পণ্যের দাম নিয়েও ভিন্ন মত রয়েছে অনেকের। আবির সোহেল নামের একজন ৩০টি ডিম কিনেছেন ৯০ টাকা ডজন হিসেবে। তিনি বললেন, এখানে ডিমের দাম বাজারের চেয়ে প্রায় ২০ টাকা কম। কিন্তু যেহেতু এটি সরকারি উদ্যোগ, তাই চাইলে দাম আরও কম রাখা যেত। কারণ, খামার থেকে একটি ডিম কিনতে তিন টাকার বেশি খরচ হওয়ার কথা নয়। তাই সরকারের সদিচ্ছা থাকলে আরও কম দামে এসব পণ্য পাওয়া যেতে পারে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের এই কার্যক্রম পরিচালনায় সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন। গতকাল প্রথম দিনের কার্যক্রম পরিদর্শনে এসে সংগঠনটির সভাপতি ইমরান হোসেন বলেন, প্রথম দিন হিসেবে প্রস্তুতিতে কিছুটা ঘাটতি ছিল, এটা অস্বীকার করা যাবে না। তবে আগামীকাল থেকে এসব অব্যবস্থাপনা আর থাকবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিজের প্রস্রাব পান করে ‘আশিকি’ অভিনেত্রী অনু আগারওয়াল বললেন, ‘আহা অমৃত’

মে. জে. ফজলুরের সেভেন সিস্টার্স দখলের মন্তব্য সমর্থন করে না সরকার: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

সরকারি মাধ্যমিকের সহকারী শিক্ষকেরা পাচ্ছেন গেজেটেড মর্যাদা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত