Ajker Patrika

দশ মাসেও সংস্কার হয়নি বীর বাঘা যতীনের ভাস্কর্য

কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২১, ১৫: ৩৫
দশ মাসেও সংস্কার হয়নি বীর বাঘা যতীনের ভাস্কর্য

দুর্বৃত্তদের ভেঙে দেওয়ার পর দশ মাস পার হলেও কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অগ্রনায়ক বিপ্লবী বীর বাঘা যতীনের ভাস্কর্যটি সংস্কার করা হয়নি। চিঠি চালাচালির মাঝেই আটকে রয়েছে ভাস্কর্যটির সংস্কারকাজ। মুখে ক্ষতচিহ্ন নিয়েই এখনো দাঁড়িয়ে আছে বিপ্লবী বীর বাঘা যতীনের সেই ভাস্কর্যটি। ভাস্কর্যটি কয়া মহাবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অবস্থিত।

গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর রাতে দুর্বৃত্তরা উপজেলার কয়া ইউনিয়নের কয়া মহাবিদ্যালয়ের সামনে নির্মিত বাঘা যতীনের ভাস্কর্যটি ভেঙে রেখে যায়। হামলায় ভাস্কর্যটির মুখ ও নাকের একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

ঘটনার পরদিন কলেজের অধ্যক্ষ হারুন অর রশীদ বাদী হয়ে কুমারখালী থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার পর গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর কয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আনিসুর রহমানকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরবর্তীতে তার দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আনিসুরের সহযোগী দুই যুবলীগ কর্মী সবুজ হোসেন ও হৃদয় আহমেদকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।

কুমারখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাকিবুল ইসলাম জানান, কয়া কলেজের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধের জের ধরে অন্য নেতাদের ফাঁসাতে যুবলীগ সভাপতি আনিসুর রহমানের নেতৃত্বে তাঁরা পরিকল্পিতভাবে বাঘা যতীনের ভাস্কর্যটি ভাঙচুর করেন।

ভাস্কর্যটি সংস্কারের বিষয়ে কয়া মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হারুন অর রশীদ জানান, আদালতের নিকট থেকে সংস্কারের অনুমতি পেয়ে তিনি ওই দিনই ভাস্কর্যটি সংস্কারের জন্য কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে আবেদন করেছেন। কিন্তু পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামলার চার্জশিট না দেওয়া পর্যন্ত ভাস্কর্যটি সংস্কার না করায় জন্য অনুরোধ করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

তবে অধ্যক্ষের দাবি অস্বীকার করে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষকে এ ধরনের লিখিত বা মৌখিক কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।

ভাস্কর্য সংস্কারের অগ্রগতি জানতে চাওয়া হলে কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) এসিল্যান্ড তামান্না তাসনিম বলেন, ‘মামলাটি যেহেতু আদালতে বিচারাধীন রয়েছে সে কারণে ভাস্কর্য সংস্কার করা নিয়ে আইনি কোনো জটিলতা আছে কি না এ বিষয়টি আমার জানা নেই।’

এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. সাইদুল ইসলাম জানান, ‘ভাস্কর্যটি এত দিনেও কেন সংস্কার করা হলো না তা খতিয়ে দেখা হবে এবং যত দ্রুত সম্ভব সংস্কার করা হবে।’

এদিকে দীর্ঘসময় পার হলেও ভাস্কর্যটি সংস্কার না হওয়ায় জেলার সংস্কৃতিকর্মীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। কুষ্টিয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম বলেন, এটি খুব লজ্জা এবং দুঃখজনক ঘটনা। কুষ্টিয়ার কৃতি সন্তান যে বীরের নাম শুনলে এক সময় ব্রিটিশ শাসক পর্যন্ত ভয়ে কাঁপত সেই বীরের ভাস্কর্যটি দুর্বৃত্তদের হামলার ক্ষত নিয়ে এভাবে দিনের পর দিন দাঁড়িয়ে থাকবে এটি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত