Ajker Patrika

ফোন কলে যানবাহন পারাপার

কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১১: ৩২
ফোন কলে যানবাহন পারাপার

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় চাপাইর এলাকায় তুরাগ নদের ওপর নির্মিত বেইলি সেতুর অবস্থা খুবই নাজুক। সেতুটির বিভিন্ন অংশে স্টিলের স্ল্যাব ভেঙে যাচ্ছে। জোড়াতালির মাধ্যমে এ ভাঙা অংশ সংস্কার করে চলে যানবাহন। ধারণক্ষমতার বেশি ভারী যানবাহন চলায় যেকোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।

এদিকে সেতুটি সরু হওয়ায় বড় আকৃতির যানবাহন যেমন বাস, ট্রাক, পিকআপ ভ্যান দ্বিমুখী চলাচল করতে পারে না। এসব যান একমুখী চলায় সেতুর এক অংশে সব সময় লেগে থাকে যানজট। একমুখী এই যান চলাচল ব্যবস্থা সচল রাখতে সেতুর দুই পাশে আছেন দুজন গেটম্যান। এক গেটম্যান অপর গেটম্যানের মোবাইল ফোনে কল করে সিগন্যাল দিতে বলেন। এ সিগন্যাল পেয়ে অপর অংশ থেকে শুরু হয় যান পারাপার।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকার ধামরাই থেকে গাজীপুরের মাওনা আঞ্চলিক সড়কের অত্যন্ত ব্যস্ততম এই চাপাইর সেতু। সেতুটির ধারণক্ষমতা পাঁচ টন হলেও তা দিয়ে প্রায়ই চলছে ১৫-২০ টন পর্যন্ত মালবাহী বাহন। ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে ভেঙে গেছে সেতুটির অনেকগুলো স্ল্যাব।

এদিকে পুরোনো এই বেইলি সেতুর পাশ দিয়ে এক বছর আগে চাপাইর সেতু নির্মাণকাজ শুরু করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। তবে সেতুর পিলারের তলদেশের কাজ শেষ হলেও বর্তমানে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে নির্মাণকাজ।

সরেজমিন দেখা যায়, গাজীপুরের মাওনা চৌরাস্তা, ফুলবাড়িয়া, চাপাইর, টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের আজগানা, ঢাকার ধামরাইসহ আশপাশের কয়েকটি এলাকার যোগাযোগের প্রধান সড়কে অবস্থিত চাপাইর বেইলি সেতু। প্রতিদিন এ সড়কে প্রচুর যানবাহন চলাচল করে।

সম্প্রতি ধামরাই থেকে মাওনা পর্যন্ত সড়কটি নতুন করে সংস্কার করেছে সওজ। দীর্ঘ এ সড়কের পুরোনোর পরিবর্তে নতুন করে সেতু নির্মাণও করা হয়েছে। তবে চাপাইরেই রয়ে গেছে পুরোনো বেইলি সেতু।

সরু এ সেতুটির কারণে সড়কটিতে লেগে থাকে যানজট। যানজট কমাতে সেতুর দুই পাশে দুজন গেটম্যান রেখেছে কালিয়াকৈর উপজেলা প্রশাসন। তবু কমছে না যানজট ও ভোগান্তি। এ অঞ্চলবাসীর যোগাযোগের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে প্রতিদিন এই সেতু দিয়েই চলে যানবাহন। চলাচল করে হাজারো যাত্রী।

অ্যাম্বুলেন্সের চালক সুমন বলেন, গুরুতর অবস্থায় রোগী নিয়ে বেশির ভাগ সময়ই সেতুর যানজটে অপেক্ষা করতে হয়; যা রোগীর স্বজনদের জন্য খুবই কষ্টের।

বাসচালক সাদ্দাম হোসেন বলেন, বেইলি সেতুটি চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সেতুর মাঝখানের বিভিন্ন জায়গায় মাঝেমধ্যেই ভেঙে যায়। ভাঙা অংশ মেরামত করা হলেও ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।

সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক সবুজ বলেন, ‘যাত্রীসহ গাড়ি নিয়ে যখন সেতুতে উঠি, তখন অনেক ভয়ে থাকি, কখন জানি দুর্ঘটনা ঘটে যায়! সরকারের কাছে একটাই দাবি তাড়াতাড়ি যেন নতুন সেতু করে দেয়।’

সেতুতে গেটম্যানের দায়িত্বে থাকা জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘সেতুর ওই পাশে থাকা গেটম্যানের সঙ্গে ফোন কলে কথা বলে গাড়ি পারাপার করি। উপজেলা প্রশাসনের অনুরোধে অনেকটা সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকেই দায়িত্ব পালন করছি। উপজেলা প্রশাসন থেকে এ জন্য কোনো টাকা দেওয়া হয় না। প্রত্যেকটি গাড়ি থেকে কিছু টাকা টাকা পাই। তাই দিয়ে কোনো রকম সংসার চালাই।’

এ বিষয়ে গাজীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. রাশেদ হাসান বলেন, তুরাগ নদের ওপর বেইলি সেতুটিতে ত্রুটি দেখা মাত্রই মেরামত করে দেওয়া হয়। তবে অধিক ধারণক্ষমতার পরিবহন চলাচলের কারণে সেতুটিতে বিভিন্ন সময় সমস্যা হচ্ছে।

চাপাইর সেতুর কাজ দ্রুতগতিতে হচ্ছে দাবি করে রাশেদ হাসান বলেন, ‘প্রকল্পের মেয়াদের সময়সীমার মধ্যেই কাজ শেষ করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তৎপর রয়েছে। আশা করি, আগামী বছরের এপ্রিলের মধ্যে সেতুটি দৃশ্যমান হবে, ডিসেম্বরের মধ্যেই এটি উদ্বোধন করা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হরমুজ প্রণালিতে প্রবেশ করে ইউটার্ন নিল দুটি জাহাজ

ইসরায়েলে ২০ লাখ রুশভাষীর বাস, রাশিয়াকে তাঁদের কথা ভাবতে হয়: পুতিন

গুমে জড়িত ছিল ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা: গুম কমিশনের প্রতিবেদন

ইরানের হামলার তীব্র নিন্দা কাতারের, পাল্টা জবাবের হুঁশিয়ারি

মধ্যপ্রাচ্যের চার দেশে পরবর্তী ঘোষণার আগপর্যন্ত বাংলাদেশি সব ফ্লাইট বাতিল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত