Ajker Patrika

সুন্দরী

সম্পাদকীয়
সুন্দরী

হামদি বে ছিলেন খুবই নামকরা সাংবাদিক। কলকাতার দৈনিক স্টেটসম্যান পত্রিকার তুখোড় এই সাংবাদিক পত্রিকাটির সাপ্তাহিক ক্রোড়পত্রে ‘বে অব বেঙ্গল’ নামে নিয়মিত একটি কলাম লিখতেন।

একবার লক্ষ্ণৌ থেকে অ্যাসাইনমেন্ট সেরে কলকাতায় অফিসে বসে আছেন হামদি বে। এ সময় বার্তা সম্পাদক সচ্চিদানন্দ সহায় তাঁকে ডেকে বললেন, ‘তোমার মনের মতো একটা কাজ আছে। জঙ্গল থেকে একটা বাঘ এসে গ্রামে উৎপাত করছে। ভয় হচ্ছে, গ্রামবাসী পিটিয়ে মেরে ফেলবে বাঘটাকে। যাও না, দেখে এসো, ব্যাপারটা কী!’

বারো বছর ধরে স্টেটসম্যানের প্রতিনিধি হয়ে ভারতের পূর্বাঞ্চল ঘুরে বেড়িয়েছেন হামদি। এখন কলকাতার কাচবন্ধ অফিসে তিনি হাঁপিয়ে উঠছিলেন। ব্যস, তৈরি হয়ে রওনা হলেন ঝড়খালির পথে।

স্টেটসম্যানে প্রথম প্রতিবেদন ছাপা হতেই চারদিকে বেশ সাড়া পড়ে গেল। দ্বিতীয় প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পরই দেখা গেল আনন্দবাজার, তৃতীয় রিপোর্টের পর যুগান্তরসহ অন্যান্য পত্রিকার রিপোর্টাররাও আসতে শুরু করল সেখানে। ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ড লাইফ ফান্ডের ওয়ার্ডেন বাঘের পায়ের ছাপ দেখে নিশ্চিত করলেন, ‘এটা বাঘ নয়, বাঘিনী।’

বাঘিনীকে দেখা যাচ্ছিল, কিন্তু যখন বন্দুক দিয়ে ঘুমপাড়ানি গুলি চালিয়ে তার গলায় একটি রেডিওর মতো যন্ত্র ঝুলিয়ে দেওয়া হবে বলে ঠিক করা হলো, তখন থেকেই কীভাবে যেন লাপাত্তা হয়ে গেল সেটা।

বাঘটির গতিপথ আন্দাজ করে পথের মাঝে রাখা হলো একটা ভেড়া। সবাই অপেক্ষা করতে থাকল ঘুমপাড়ানি বন্দুক নিয়ে।

দিনের বেলায় হামদি বে এই পথে চলেন। রাতেও পথ চিনতে সমস্যা হবে না ভেবে পথপ্রদর্শক নেননি। আর কী আশ্চর্য, যে বাঘটি উধাও হয়ে গিয়েছিল, ঠিক কুড়ি মিটার দূরেই দেখা গেল নিঃশব্দে সেটা হাঁটছে! এ কি স্বপ্ন! বাঘিনী সেকেন্ডের অংশভাগ থেমে পেছন ফিরে দেখে নিল হামদিকে। তারপর একেবারে লাপাত্তা! হামদি বে বাঘিনীর নাম দিয়েছিলেন সুন্দরী।

সূত্র: হামদি বে, বে অব বেঙ্গল, পৃষ্ঠা ৫৫-৫৬

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত