Ajker Patrika

নানা প্রকল্পে ঘুচে যাচ্ছে গ্রাম-শহরের ব্যবধান

সাজন আহম্মেদ পাপন, কিশোরগঞ্জ 
নানা প্রকল্পে ঘুচে যাচ্ছে গ্রাম-শহরের ব্যবধান

কিশোরগঞ্জের গ্রামীণ জনপদ বদলে গেছে প্রশাসনের নানামুখী উদ্যোগে। জেলার সব স্তরেই লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া, এতে দিন দিন কমে আসছে গ্রাম-শহরের ব্যবধান। সেই সঙ্গে পাল্টে যাচ্ছে জেলার গ্রামীণ মানুষের জীবনযাত্রার মান। এর পেছনে কিশোরগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নানামুখী প্রকল্প অবদান রেখেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জেলা বিভিন্ন স্তরের মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমান সরকারের ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে উন্নত সমৃদ্ধ দেশের মর্যাদা অর্জনের লক্ষ্যে এলজিইডির মাধ্যমে আর্থসামাজিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া আধুনিক শহর ও গ্রাম উন্নয়নের মাধ্যমে নাগরিক সুবিধার অংশ হিসেবে সরকারঘোষিত কর্মসূচির বাস্তবায়নে কাজ করছে অধিদপ্তর। এসব কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়েই গ্রামীণ জনপদের দৃশ্যপট পাল্টে গেছে।

এলজিইডি কিশোরগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্ব পালন করছেন মো. আমিরুল ইসলাম। গত বছরের ৭ নভেম্বর তিনি কিশোরগঞ্জে যোগদান করেছেন।

এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ মাসে বিভিন্ন উপজেলা পর্যায়ে নির্মিত পাকা সড়ক প্রায় ২০ কিলোমিটার, ইউনিয়ন পর্যায়ে নির্মিত পাকা সড়ক প্রায় ১৩ কিলোমিটার, গ্রামীণ পাকা সড়ক প্রায় ২৮ কিলোমিটার, নির্মিত সেতু ও কালভার্ট প্রায় ৫৬৮ মিটার, উপজেলা কমপ্লেক্স ভবন একটি, বৃক্ষ রোপণ করা হয়েছে প্রায় ৭ হাজার ৫০০টি, রক্ষণাবেক্ষণ করা পাকা সড়ক প্রায় ২১৩ কিলোমিটার, রক্ষণাবেক্ষণ করা সেতু ও কালভার্ট প্রায় ৫৪১ মিটার, খনন করা সেচ খাল প্রায় ৩৩ কিলোমিটার, নির্মিত ও সংস্কার করা বাঁধ প্রায় ১১ কিলোমিটার, নির্মিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ২০। এ ছাড়া ৬টি পৌর ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কাজ সম্পন্ন করাসহ নানা কর্মকাণ্ড হয়েছে।

ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে দীর্ঘদিন আটকে থাকা হোসেনপুর টু পাকুন্দিয়ার প্রায় ৪ কিলোমিটার সড়ক, হোসেনপুর টু বাকচান্দার প্রায় ১০ কিলোমিটার জিসি সড়ক, যশোদল মধ্যপাড়া টু যশোদল ইশাসুরের প্রায় দুই কিলোমিটার সড়ক। নীলগঞ্জ জিসি সড়কের ওপর আটকে থাকা ৬৬ মিটার দীর্ঘ আরসিসি গার্ডার ব্রিজের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। এ ছাড়া বাজিতপুর উপজেলার আটকে থাকা সরারচর ভূমি কার্যালয় ও দিঘীরপাড় ভূমি কার্যালয়ের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সড়ক, সেতু, কালভার্ট খাল নির্মিত হওয়ায় সড়ক যোগাযোগে সচ্ছলতার পাশাপাশি কৃষিক্ষেত্রে হয়েছে কল্পনাতীত উন্নয়ন। নিকলীতে ২ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে সাড়ে আট কিলোমিটার দৈর্ঘ্য বুরুলিয়া খালটি হাওরের ৫ হাজার হেক্টর ফসলি জমিকে সেচের আওতায় এনেছে। বদলে দিয়েছে নিকলীর কৃষির চিত্র। এতে গ্রামীণ জীবনযাত্রার উন্নয়নের পাশাপাশি ফিরে এসেছে গ্রামবাংলার মানুষের প্রাণ। পল্লি অঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ ও গ্রামীণ অর্থনীতিকে গতিশীল করতে কিশোরগঞ্জ এলজিইডি যে অবদান রাখছে, তা আজ দৃশ্যমান। এ ছাড়া কিশোরগঞ্জ এলজিইডির কার্যালয়ের সৌন্দর্যবর্ধন করা হয়েছে।

মিঠামইন উপজেলার বৈরাটি ইউনিয়নের বাসিন্দা এইচ আর স্বপন বলেন, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন হওয়াতে নাগরিক সুবিধা গ্রামে থেকেই পাচ্ছি। রাস্তাঘাটের উন্নয়নের কারণে মানুষের পেশায় উন্নতি হয়েছে।  মানুষের ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসার ঘটেছে। ছেলে-মেয়েদের স্কুলে যাওয়া নিশ্চিত হয়েছে।

জেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি উপজেলার যোগাযোগব্যবস্থার মান বাড়ানো হয়েছে। সরকারের ভিশন ২০৪১ অনুযায়ী ‘আমার গ্রাম, আমার শহর’ হবে। আগে হাওর এলাকায় একসময় ধান কেটে কৃষকেরা বাসায় নিয়ে যেতে পারতেন না, আমরা সেখানে সাবমার্সিবল রোড করেছি। এখন কৃষকেরা পানি আসার আগেই ধান কেটে তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত