Ajker Patrika

বাদলের হাত

সম্পাদকীয়
বাদলের হাত

‘ঢেউয়ের পরে ঢেউ’ নামে একটি নাটক হয়েছিল বিটিভিতে। ভীষণ জনপ্রিয়ও হয়েছিল। সেটা দেশ স্বাধীন হওয়ার আগের কথা। এই নাটকে ফেরদৌসী মজুমদারের সঙ্গে ছিলেন সৈয়দ আহসান আলী সিডনী। যে সময়ের কথা বলা হচ্ছে, তখন এই দুজন অভিনয়শিল্পীই জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। টেলিভিশনে অভিনয় করেই এ দুজন প্রথম জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন।

সে সময় আর এ সময়কে মেলানো যাবে না। তখন ছেলেরা যত দূর সম্ভব মেয়েদের ছুঁতো না। আর মেয়েরা? সে তো আরও বেশি অসম্ভব কাজ। যতটা দূরে থাকা যায়, ততই ভালো। প্রেমের অভিনয়ের ক্ষেত্রে মেয়েটি অবিবাহিত হলে দূরত্ব আরও বেড়ে যেত। এ রকম কঠিন অবস্থায় নানা গল্পের জন্ম দিয়ে নাটকের মহড়া, রেকর্ডিং চলত।

যে নাটকটির কথা বলা হচ্ছে, সেটির নির্দেশক বা প্রযোজক ছিলেন আবদুল্লাহ ইউসুফ ইমাম। সেখানে শেষ দৃশ্যটির শুটিং হয়েছিল গ্রামীণ এক নদীর পাড়ে। নির্দেশক ফেরদৌসী আর সিডনীকে বোঝালেন, তাঁরা দুজন দূর থেকে ধীরে ধীরে কাছে আসবেন এবং তারপর একজনের হাতের সঙ্গে মিশে যাবে অন্যজনের হাত। সব ঠিকঠাক। এ সময় ফেরদৌসী মজুমদার বেঁকে বসলেন। না, সিডনীর হাত তিনি ধরতে পারবেন না। জানিয়ে রাখি, ফেরদৌসীর তখনো বিয়ে হয়নি। তো এ অবস্থায় নির্দেশক পড়লেন বিপদে। কী করা যায়! এই প্রতীকী দৃশ্যটি ছিল নাটকের মূল জায়গা।

এরপর যেভাবে সমস্যার সমাধান করা হলো, তা ভাবলে এখন হাসি পাবে। সেই নাটকে বাদল রহমান ছিলেন প্রযোজকের সহকারী। দেখা গেল, বাদল রহমানের হাতটাও ফেরদৌসীর হাতের মতো সরু। তখন বাদল রহমানের হাত সাবান দিয়ে ধোয়া হলো। তাতে পরিয়ে দেওয়া হলো কাচের চুড়ি। শটটা ছিল ছেলেটার হাতের ওপর এসে স্পর্শ করবে মেয়েটার হাত। শুধু হাত দুটোই দেখা যাবে। বাদল রহমান তাঁর হাতটি রাখলেন সিডনীর হাতে। প্রযোজক হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন। 

সূত্র: ফেরদৌসী মজুমদার, অভিনয়জীবন আমার, পৃষ্ঠা ১৩৬-১৩৭  

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত