Ajker Patrika

অস্বীকৃতি

বিচারপতি বি এ সিদ্দিকী
আপডেট : ০৯ মার্চ ২০২২, ১০: ০১
অস্বীকৃতি

একাত্তরের মার্চ মাসের সেই দিনগুলোয় পূর্ব পাকিস্তান প্রদেশটি মূলত চলছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে। এই প্রদেশের গভর্নর ছিলেন তখন সাহেবজাদা ইয়াকুব খান। তাঁর কার্যক্রমে সন্তুষ্ট ছিল না ইয়াহিয়ার সামরিক সরকার। মার্চের শুরুতেই গভর্নর ইয়াকুব খানকে অপসারিত করে জেনারেল টিক্কা খানকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করা হয়। টিক্কা খান হন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর।

টিক্কা খান তত দিনে পরিচিতি পেয়েছেন বেলুচিস্তানের বিদ্রোহ দমনের জন্য। বেলুচিস্তানে তিনি এতটাই নৃশংসতা চালিয়েছিলেন যে তাঁর নাম হয়ে গিয়েছিল ‘বেলুচিস্তানের কসাই’।

সেই টিক্কা খানকে গভর্নর করার পরপরই আদেশ এল এখন থেকে গভর্নর তো বটেই, সেই সঙ্গে টিক্কা খান ইস্টার্ন কমান্ডের কমান্ডার এবং সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করবেন; অর্থাৎ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান প্রদেশের মূল কর্তা বনে গেলেন টিক্কা খান।

এবার তো তাঁকে শপথ নিতে হবে। শপথবাক্য পড়ানোর কথা পূর্ব পাকিস্তান হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি বি এ সিদ্দিকীর (বদরুদ্দীন আহমদ সিদ্দিকী)। মার্চের ৯ তারিখে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। কিন্তু প্রধান বিচারপতি বি এ সিদ্দিকী বেঁকে বসলেন। তিনি বললেন, শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে দেশ চলছে। এই হরতালে সব বন্ধ। অতএব তিনি নতুন গভর্নরের শপথবাক্য পাঠ অনুষ্ঠান পরিচালনা করতে পারবেন না।

ওই দিনই পাকিস্তানি সৈন্যরা ঘেরাও করল প্রধান বিচারপতির বাড়ি। প্রেসিডেন্টের আদেশ মেনে চলার জন্য বি এ সিদ্দিকীকে জোর করতে লাগল। তারা কথা দিল, টিক্কা খানকে শপথবাক্য পাঠ করানোর পর বি এ সিদ্দিকীকে পরিবার-পরিজনসহ নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া হবে পশ্চিম পাকিস্তানে। এখানে কেউই তাঁর কেশাগ্র স্পর্শ করতে পারবে না।

প্রধান বিচারপতি বি এ সিদ্দিকী কোনো ধরনের দোদুল্যমানতায় না ভুগে বললেন, ‘আমি এই শপথবাক্য পাঠ করাতে অপারগতা প্রকাশ করছি।’

সূত্র: পঁচিশে মার্চের আগে ও পরে: মঞ্চে নেপথ্যে, পৃষ্ঠা ২৯-৩২

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত