Ajker Patrika

যশোরে জামায়াত আমিরের মেয়ে নাগরিক ঐক্যের সদস্যসচিব

­যশোর প্রতিনিধি
মেহজাবিন জান্নাত অনন্যা। ছবি: সংগৃহীত
মেহজাবিন জান্নাত অনন্যা। ছবি: সংগৃহীত

নাগরিক ঐক্যের যশোরের বাঘারপাড়ার উপজেলা কমিটির সদস্যসচিব হয়েছেন মেহজাবিন জান্নাত অনন্যা। তিনি জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক গোলাম রসূলের মেয়ে। তবে এর মধ্যে নিজের বাবার মতাদর্শের বাইরে রাজনীতি নিয়ে সমালোচনার মুখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে কমিটি থেকে অব্যাহতি নেন তিনি।

নাগরিক ঐক্যের জেলার শীর্ষ নেতারা বলছেন, সমালোচনার ‍মুখে বাবার নির্বাচনী আসন থেকে অব্যাহতি নিলেও তিনি (মেহজাবিন জান্নাত অনন্যা) সদর উপজেলার নাগরিক ঐক্যের কমিটিতে থাকার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

এর আগে ১৮ আগস্ট উপজেলা নাগরিক ঐক্যের ১৯ সদস্যের কমিটির অনুমোদন দেন সংগঠনটির জেলার আহ্বায়ক ফেরদৌস পরশ ও সদস্যসচিব মাসুম বিল্লাহ। কমিটিতে সদস্যসচিব হয়েছেন মেহজাবিন জান্নাত অনন্যা, আর আহ্বায়ক হয়েছেন শামীম পারভেজ। এ ছাড়া ১৭ জনকে সদস্য করা হয়েছে।

পোস্টে মেহজাবিন জান্নাত লেখেন, ‘সদ্য প্রকাশিত নাগরিক ঐক্য বাঘারপাড়া কমিটির সদস্যসচিব পদ থেকে অব্যাহতি নিলাম। এ বিষয়ে মিথ্যা এবং বানোয়াট কথা বলা থেকে বিরত থাকার জন্য সবাইকে অনুরোধ করছি। আমাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ থেকে অন্যান্য দলের নেতা কর্মীরা যদি কোন কমেন্ট বা পোস্ট করে তাহলে আমি আইনি সহায়তা নিব।’

জানা যায়, মেহজাবিন জান্নাত অনন্যা যশোর আদ্ দ্বীন উইমেন্স মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। এ ছাড়া স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন যশোর কমিউনিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। জুলাই আন্দোলনে অনন্যা সক্রিয় অংশ নেন।

গণ-অভ্যুত্থানের পরে যশোর কমিউনিটি থেকে কেউ কেউ নাগরিক পার্টিতে (এনসিপি) যোগ দেন। পরে কয়েকজন এনসিপি থেকে সরে এসে নাগরিক ঐক্যে যোগ দেন। এর ধারাবাহিকতায় মেহজাবিন জান্নাত অনন্যা বাঘারপাড়া কমিটির সদস্যসচিবের দায়িত্ব পান।

এ বিষয়ে মেহজাবিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নই। আমি জামায়াতের অঙ্গসংগঠন ছাত্রী সংস্থা করতাম। সেখান থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সম্পৃক্ত হই। কমিটি অনুমোদনের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। অনুমোদন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফেসবুকে আমি আমার স্টেটমেন্ট দিয়েছি।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে মেহজাবিন বলেন, ‘ভুলবশত তাঁরা আমাকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। তাঁদের জানিয়ে দিয়েছি, আমি কোনো রাজনৈতিক দলে থাকব না আপাতত। যদি কখনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হই, তাহলে সেটা হবে জামায়াত। কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়া ভুল-বোঝাবুঝি, মিস ইনফরমেশন ছাড়া কিছুই নয়।’ তবে এটা নিয়ে ফেসবুকে সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।

নাগরিক ঐক্য যশোর জেলার আহ্বায়ক ফেরদৌস পরশ বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ধারা সবাই ফিরিয়ে আনতে চাই। যে দল পছন্দ হবে, সে দলের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে। এটাকে গণতন্ত্র বলে। সেই জায়গা থেকে চিন্তা করলে এটা তাঁর গণতান্ত্রিক অধিকার। তিনি তাঁর চিন্তাচেতনায় যে দলকে ভালোবেসেছেন, সেই জায়গা থেকে এ দলে এসেছেন। তাঁর সম্মতি না থাকলে আমরা কীভাবে তাঁকে কমিটিতে রাখলাম।’

ফেরদৌস পরশ আরও বলেন, ‘কমিটি হওয়ার আগে তাঁকে সময় দেওয়া হয় ভাবার জন্য, যেহেতু তিনি জামায়াতের আমিরের মেয়ে। তাঁর সম্মতির পরে তাঁকে কমিটিতে রাখা হয়েছে। কমিটি পাবলিশ হওয়ার পরে সমালোচনা ও তাঁর বাবার রাজনীতিতে সমস্যা হবে—এমনটি ভেবে আমাদের কাছে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করেন। আমরা তাঁকে সময় দিই।

‘পরে অনন্যা আমাদের জানান, তাঁর বাবা যেহেতু বাঘারপাড়া আসনে জামায়াতের সংসদ সদস্য প্রার্থী, তাই বাঘারপাড়াতে তাঁর কাজ করা সম্ভব নয়। তাই তিনি নাগরিক ঐক্য সদরের কমিটিতে আসতে চান। যেহেতু এখনো সদরের কমিটি দেওয়া হয়নি; তাই তাঁকে আমরা বাঘারপাড়া থেকে সদরের কমিটিতে স্থানান্তর করার বিষয়ে চিন্তাভাবনা রেখেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মালয়েশিয়ায় স্থায়ী বসবাসের সুযোগ, আবেদন ফি মাত্র ১৪ হাজার টাকা

বিএসএফের হাতে আটক বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তার পরিচয় মিলেছে

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কাইরান কাজীর বিষয়ে ইলন মাস্কের মন্তব্যে বিস্ময়

অমীমাংসিত বিষয় সমাধানে পাকিস্তানের দাবি নাকচ করল সরকার

যুক্তরাষ্ট্রের কৌশল বোঝার ভুলের খেসারত দিচ্ছে ভারত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত