Ajker Patrika

আত্মহত্যা নয়, হত্যা করা হয় কারিশমাকে

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২১, ১৫: ৩৭
আত্মহত্যা নয়, হত্যা করা হয় কারিশমাকে

ঝিনাইদহ পৌর এলাকার উদয়পুর গ্রামের বাসিন্দা তৃতীয় লিঙ্গের লিয়াকত ওরফে কারিশমা আত্মহত্যা করেননি। তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে জেলা পিবিআই। প্রায় ১৪ মাস পর এই হত্যার উদ্দেশ্য ও কুল-কিনারা ঠাহর করে পিবিআই।

পিবিআই সাংবাদিকদের জানান, গত ৯ সেপ্টেম্বর সকালে উদয়পুরের বাড়ি থেকে লিয়াকত ওরফে কারিশমার মরদেহ ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। প্রথমে এটিকে আত্মহত্যা বলে অনুমান করা হলেও ময়নাতদন্তের রিপোর্টে হত্যার আলামত পায় চিকিৎসকেরা। একইদিন ঝিনাইদহ সদর থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা করেন নিহতের ভাই মো. আইয়ুব আলী।

এক বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেলেও পুলিশ হত্যার উদ্দেশ্য বের করতে পারছিল না। পরে মামলাটির হাত বদল হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কাছে। তথ্য প্রযুক্তি ও আলামত কাজে লাগিয়ে মামলার খুঁটিনাটি বের করতে শুরু করে পিবিআই।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, লিয়াকত ওরফে কারিশমা সদর উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের মৃত সুলতান মাস্টারের সন্তান। ৬ ভাই ২ বোনের মধ্যে লিয়াকত ওরফে কারিশমা সবার ছোট। ১৬ বছর আগেসে হিজড়ার দলে নাম লেখান তিনি। ১৩ বছর আগে জনৈক কামাল মণ্ডলের নিকট থেকে জমি কিনে পৌর এলাকার উদয়পুর গ্রামে বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করে আসছিলেন কারিশমা।

বছর দু-এক আগে সদর উপজেলার গোয়ালপাড়া বাজারে একটি জমি কিনে একতলা বাড়ি নির্মাণ করেন। এবং উদয়পুর গ্রামের বাড়িটি বিক্রি করতে গোবিন্দপুরের কামরুল ইসলামের স্ত্রী কাজলের থেকে ৫০ হাজার টাকাও নেন কারিশমা। হিজড়াদের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে কারিশমা মানসিকভাবে চাপে ছিলেন বলে তাঁর বোন শাহানারা জানান।

এরই মধ্যে ঝুলন্ত অবস্থায় ৯ সেপ্টেম্বর সকালে উদয়পুরের বাড়ি থেকে লিয়াকত ওরফে কারিশমার মরদেহ ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। থানায় মামলা রেকর্ড হওয়ার পরে প্রথমে মামলাটি তদন্ত করেন পরিদর্শক শেখ আবুল খায়ের। পুলিশ কোনো কুল কিনারা করতে না পেরে মামলাটি পিবিআইয়ের হাতে হস্তান্তর করা হয়। পিবিআইয়ের পরিদর্শক একেএম মনিরুজ্জামান গত ২৭ অক্টোবর সন্দেহভাজন ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেন।

পরে তথ্য যাচাই করে ৩ জনকে ছেড়ে দেন এবং বাকি তিনজনকে আদালতে পাঠান। তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতের কাছে তাদের ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

তিন আসামিরা হলেন উদয়পুরের বিশ্বাস পাড়ার মো. রাজন মিয়া (৩৫), একই গ্রামের আনোয়ার হোসেন শাহ (৪০) এবং মিন্টু মিয়া। ৩ দিনের রিমান্ড শেষে তাঁদের পুনরায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

কারিশমার ভাই আইয়ুব হোসেন অভিযোগ করেন, ‘রাজনৈতিক কিছু নেতা আসামিদের বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। তাঁরাই আসামিদের পালিয়ে থাকতে সাহায্য করছেন।’

এ বিষয়ে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এটি একটি ঘোলাটে ও সূত্রহীন হত্যা ছিল। কিন্তু পিবিআইয়ের তদন্তে মামলার অগ্রগতি করেছে। এই ঘটনায় ৩ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরও কয়েকজন পলাতক আসামি রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তাঁদের ব্যাপারে আমরা বলতে পারছি না। তবে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তাঁদের গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারলে হত্যার পুরো রহস্য জানা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিখোঁজ সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকারের লাশ মিলল মেঘনায়, শোকাহত আজকের পত্রিকা

‘সামনে চমকপ্রদ বেশ কিছু ঘটনা ঘটবে, অনেক বিষয় আমি জানি’

‘মব’ সৃষ্টি করে ৩ কিশোরকে সেতুর সঙ্গে বেঁধে রাতভর পিটুনি, নিহত ১

সনদ জালিয়াতি: ব্যাংকের চাকরি যাওয়া জাহাঙ্গীরের স্কুল সভাপতির পদও গেল

এনসিটিবি: পাঠ্যবইয়ে আবার পরিবর্তন আসছে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত