Ajker Patrika

নদীর বাঁকে বাঁকে ডুবোচর ঝুঁকিতে নৌ চলাচল

আপডেট : ২৫ মে ২০২২, ১২: ৩৬
নদীর বাঁকে বাঁকে ডুবোচর ঝুঁকিতে নৌ চলাচল

পটুয়াখালীর বাউফল-ঢাকা নৌপথের নদীর বাঁকে বাঁকে ও প্রবেশমুখে জেগে উঠেছে অসংখ্য ডুবোচর। এ ডুবোচরের কারণে লঞ্চ, কার্গোসহ নৌযানগুলো ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। বাউফল-ঢাকাগামী ডাবল ডেকার লঞ্চগুলো ভাটার সময় প্রায়ই চরে আটকে যায়। আবার কোনো কোনো সময় এ নৌপথে জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভর করে নৌযানগুলো চলাচল করতে হয়।

ডুবোচরের কারণে যথাসময়ে যাত্রীরা গন্তব্যে পৌঁছাতে না পেরে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। অন্যদিকে মালবাহী কার্গোতে পরিবহন করা মালামাল নিয়ে উপজেলায় সময়মতো না পৌঁছানোর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

জানা গেছে, উপজেলার নদীবন্দর কালাইয়া, বগা, নুরাইনপুর, ধুলিয়া থেকে প্রতিদিন ১০-১২টি ডাবলডেকার লঞ্চ ঢাকা রুটে, প্রায় ১৮টি সিঙ্গেল ডেকার অভ্যন্তরীণ ও শতাধিক মালবাহী কার্গো জাহাজ ঢাকা রুটে ছাড়াও স্থানীয় নৌপথে ট্রলার চলাচল করে।

কালাইয়া বন্দর আড়তদার সমিতির সভাপতি সহিদুল ইসলাম শাহিন বলেন, এই অঞ্চলের যাত্রী ও ব্যবসায়ীরা নৌপথে যাতায়াত ও মালামাল পরিবহনে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করায় নৌরুট বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবসায়ীরা তাঁদের মালামাল রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে লঞ্চ কার্গো ব্যবহার করতেন। কিন্তু কয়েক বছর ধরে নদীর বিভিন্ন স্থানে ডুবোচরের কারণে ব্যবসায়ীরা ধীরে ধীরে নদীপথ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। এ কারণে সড়কপথে ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ভোক্তাপর্যায়ে দাম বাড়ছে।

এ রুটের একাধিক লঞ্চের সুকানি জানান, বগার লোহালিয়া নদীর চরগরবদী, ঝিলনা কারখানা, বগা লঞ্চঘাটের উত্তর পাশে প্রায় এক কিলোমিটার, বাহেচরচর, নাজিরপুর, ধুলিয়া, নিমদি, কালাইয়া লঞ্চঘাটের প্রবেশমুখে অসংখ্য ডুবোচর জেগে উঠেছে। এ সব ডুবোচরের কারণে চ্যানেলগুলো ছোট হয়ে গেছে। প্রায়ই ডুবোচরে নৌযান আটকে যায়। তাই ঘণ্টার পর ঘণ্টা জোয়ারের জন্য অপেক্ষা করে নৌযান ছাড়তে হয়।

উপজেলার কালাইয়া লঞ্চঘাট থেকে নিয়মিত ঢাকা আসা-যাওয়া করে এমভি ধুলিয়া লঞ্চের শাহজাহান মিয়া বলেন, এই রুটে অসংখ্য ডুবোচরের কারণে প্রায়ই লঞ্চ নদীতে আটকে থাকে। যাত্রীরা জোয়ারের জন্য অপেক্ষা না করে লঞ্চের ভাড়া না দিয়েই জেলেদের কিংবা অন্যান্য ট্রলারের মাধ্যমে নেমে যায়। এতে লোকসানের মুখে পড়তে হয় লঞ্চ কর্তৃপক্ষের।

উপজেলার পরিবেশক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম সিদ্দিকি বলেন, একসময় নুরাইনপুরের আলোকি নদী দিয়ে সহজে কালিশুরী হয়ে ধুলিয়া চ্যানেল দিয়ে ঢাকা, কাঠপট্টি, চাঁদপুর, বরিশাল, ঝালকাঠি থেকে মালামাল ক্রয় করে নৌযান দিয়ে দ্রুত চলাচল করা যেত। কিন্তু সেই উত্তাল আলোকি নদী এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। তাই নৌযান নিয়ে প্রায় ৩০ কিলোমিটার পথ অতিরিক্ত ঘুরে আসতে হয়। এতে করে পরিবহন খরচও বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় উপজেলার নৌপথের গুরুত্ব বিবেচনা করে অবিলম্বে পরিকল্পিত খননের মাধ্যমে নদীতে নৌ চলাচলের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবি করছি।

পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. কাইছার আলম বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এই নৌরুটের নাব্যতা ফিরিয়ে আনার জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত