Ajker Patrika

ট্রাক্টরের চাকায় নষ্ট সড়ক

সখীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ এপ্রিল ২০২২, ১২: ১৭
ট্রাক্টরের চাকায় নষ্ট সড়ক

নিষিদ্ধ ট্রাক্টরের দৌরাত্ম্যে প্রতিনিয়ত নষ্ট হচ্ছে সখীপুর উপজেলার কাঁচা-পাকা রাস্তা। এ ছাড়া ট্রাক্টরের বেপরোয়া চলাচলে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। সড়কে চলাচলকারী জনসাধারণ অবৈধ ট্রাক্টরের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এ যানবাহন বন্ধের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

গত ২১ মার্চ উপজেলা মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায়ও এ দাবি জানান উপস্থিত সদস্যরা।

জানা গেছে, চাষাবাদের জন্য আমদানি করা ট্রাক্টরের পেছনে ট্রলি লাগিয়ে ইট, মাটি, গাছসহ নানা ভারী পণ্য পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে এসব পরিবহন। এসব বাহনের নেই কোনো বৈধ অনুমোদন (রোড পারমিট)। এ ছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রয়োজন না হওয়ায় ১৫ থেকে ২০ বছরের কিশোর-তরুণেরাও চালাচ্ছেন এসব যানবাহন।

উপজেলার আঞ্চলিক মহাসড়ক ও গ্রামীণ সড়কে অবাধে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এই যন্ত্রদানব। ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ রাস্তা কিংবা সড়ক।

এদিকে এ যন্ত্রদানবের বিরামহীন চলাচল ও শব্দদূষণে গ্রামের মানুষ, পথচারী ও শিক্ষার্থীরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।

এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির উপদেষ্টা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জুলফিকার হায়দার বলেন, সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে রাস্তা নির্মাণ করছে। আর নষ্ট করছেন গুটিকয়েক ইটভাটার মালিক ও কাঠ ব্যবসায়ী। তাঁরা মাটি ও কাঠ পরিবহনের জন্য ব্যবহার করছেন এসব ট্রাক্টরচালিত পরিবহন। এসব গাড়ির চাকায় নষ্ট হচ্ছে গ্রামের কাঁচা-আধা পাকা রাস্তাগুলো।

উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শফিউল ইসলাম বলেন, উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে কমপক্ষে দুই শতাধিক ট্রাক্টর চলাচল করে। জ্বালানির খরচ কম হওয়ায় মাটি, কাঠ ও ভারী মালামাল পরিবহনে ব্যবসায়ীরা সাধারণত এ যানবাহন ভাড়া নেন। এ গাড়ি চলাচলের সময় আশপাশের এলাকা ধুলায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। ধুলার মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করায় সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এলাকাবাসী।

এ নিয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিয়ন্তা বর্মন বলেন, ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষ করার কথা থাকলেও এখন তা চলছে সড়কে। ফলে ট্রাক্টরের বড় বড় চাকায় নষ্ট হচ্ছে গ্রামের রাস্তা।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বলেন, এসব ট্রাক্টরচালিত পরিবহন যেন সড়কে চলতে না পারে, এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সখীপুর হেভি ইকুইপমেন্ট ও মাটি কাটা সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন মুঠোফোনে বলেন, সবার ধারণা ট্রাক্টর সড়কে চলাচল করলে সড়কের ক্ষতি হয়, কিন্তু এমন ধারণা ঠিক নয়। একটি ট্রাক ৫ টন মালামাল নিয়ে চলার কথা থাকলেও ১০ টন বা তাঁর চেয়েও বেশি মালামাল নিয়ে চলাচল করে সড়কের ক্ষতি করছে। কিন্তু একটি ট্রাক্টর সর্বোচ্চ দুই টন মাল নিয়ে চলাচল করে। সে ক্ষেত্রে সড়কের তেমন ক্ষতি হয় না বললেই চলে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আলম বলেন, ট্রাক্টরচালিত পরিবহনের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা সভায় আলোচনা হয়েছে। শিগগিরই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত