Ajker Patrika

মোকামে বেড়েছে ধানের দাম, কৃষকের মুখ মলিন

নওগাঁ প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ আগস্ট ২০২২, ১২: ৪৩
মোকামে বেড়েছে ধানের দাম, কৃষকের মুখ মলিন

ধান কাটা ও মাড়াই শেষে প্রয়োজনের তাগিদে বা দেনা-পাওনা মেটাতে আগেই ধান বিক্রি করে দেন অনেক কৃষক। তবে ভালো দামের আশায় অনেক কৃষক মৌসুমের শেষ সময় পর্যন্ত ধান মজুত রাখার চেষ্টা করেন। কিন্তু এবার বোরো মৌসুমে বৈরী আবহাওয়ার কারণে ধান বিক্রি করতে হয়েছে তাঁদের। তাই অধিকাংশ কৃষকের ঘরে এখন ধান নেই। এ জন্য হাটেও কমেছে সরবরাহ। হঠাৎ বেড়েছে ধানের দাম। আর ধানের ঊর্ধ্বমুখী দর দেখে কৃষকদের মুখ মলিন।

গত বুধবার নওগাঁর বৃহত্তর ধানের হাট রাণীনগরের আবাদ পুকুর হাটে গিয়ে দেখা গেছে, হাটে ধান কেনার জন্য দূরদূরান্ত থেকে মিলারদের প্রতিনিধি ও ব্যবসায়ীরা এসেছেন। কিন্তু হাটে ধানের সরবরাহ কম। এতে বাড়তি দামে হলেও প্রতিযোগিতা করে ধান কিনছেন ব্যবসায়ীরা। এ জন্য হু হু করে বাড়ছে দাম।

হাটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এদিন প্রতি মণ জিরা ধান ১ হাজার ৬৮০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা ১৫-২০ দিন আগেও ১ হাজার ৩৫০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সম্পা কাটারি ধান প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৬৪০ থেকে ১ হাজার ৬৮০ টাকায়। অথচ কয়েক দিন আগেও এই ধান বিক্রি হয়েছিল ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৩৫০ টাকায়।

কৃষকেরা বলছেন, গত বোরো মৌসুমে ঝোড়ো বাতাস ও অতিবৃষ্টির ফলে ঠিকমতো ধান ঘরে তুলতে পারেননি অনেকে। এর আগে ধান চাষ করতে অনেককে ঋণ নিতে হয়েছে। কোনো কোনো কৃষক দোকান থেকে বাকিতে সার ও কীটনাশক কিনেছেন। এ জন্য আগেভাগেই ধান বিক্রি করেছেন তাঁরা। এখন চাষিদের গোলা অনেকটাই শূন্য হয়ে পড়েছে। এতে বাজারে ধানের দাম বাড়লেও চাষিদের লাভ কিছুই হয়নি।

রাণীনগরের কৃষক গোলাম মস্তফা বলেন, ‘যে সময় ধান বিক্রি করেছি, সে সময় বর্তমান বাজারের মতো দাম ছিল না। এখন বাজারে চড়া দামে ধান বিক্রি হচ্ছে, অথচ আমাদের ঘরে আর ধান নেই।’ তিনি আরও বলেন, বুধবার সকালে ১০ মণ ধান হাটে নিয়ে এসে ১ হাজার ৭০০ টাকা দরে বিক্রি করেন তিনি। তাঁর ঘরে আর মজুত করা ধান নেই। যদি কিছু ধান রাখতে পারতেন, তাহলে লাভবান হতেন।

এ বিষয়ে আবাদ পুকুর হাটের আড়তদার শাহজাহান বলেন, হাটে এক হাজার মণ ধান কেনার চাহিদা ছিল, কিন্তু বাজারে ধানের সরবরাহ কম হওয়ায় মাত্র ৫০০ মণ ধান কিনতে পেরেছেন তিনি। সরবরাহ কমে যাওয়ায় দামও বেড়ে গেছে।

আবাদপুকুর ধান-চাল আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দীন মণ্ডল জানান, প্রতিবছর এই সময় হাটে ৭ থেকে ৮ হাজার মণ ধানের সরবরাহ হতো। কিন্তু কৃষকেরা বৈরী আবহাওয়া কারণে ও দেনা মেটাতে আগেভাগেই ধান বিক্রি করেছেন। ফলে মোকামে ধানের চাহিদা থাকলেও বাজারে ধান পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে চাহিদাও পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

চাল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বেলকন গ্রুপের ব্যবস্থাপক আবু ওয়াহিদ হোসেন আলাল বলেন, সরবরাহ কমে যাওয়ায় বাজারে ধানের দামও বেড়েছে। হাটে গিয়ে চাহিদামতো ধান পাওয়া যাচ্ছে না। তাই এর প্রভাব চালের বাজারে পড়েছে।

এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে বোরো ধানের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় শুরু থেকেই এবার বাজারে ধানের দাম চড়া ছিল। তবে মৌসুমের শেষ দিকে এখন বাজারে সরবরাহ কমে গেছে। তাই মিলারদের মধ্যে ধান কেনার প্রতিযোগিতা বাড়ায় বোরো ধানের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে; যে কারণে চালের দাম বাড়াতে হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত