Ajker Patrika

লর্ডসের প্রতিশোধ নিয়ে ফাইনালে নিউজিল্যান্ড

রানা আব্বাস, আবুধাবি থেকে
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২১, ০৯: ৩৯
লর্ডসের প্রতিশোধ নিয়ে ফাইনালে নিউজিল্যান্ড

‘নো সুপার ওভার টুডে প্লিজ’—দর্শকের উঁচিয়ে ধরা প্ল্যাকার্ডটা কি চোখে পড়েছিল জিমি নিশামের? লর্ডসে ২০১৯ বিশ্বকাপের রোমাঞ্চকর সেই ফাইনালের দ্বিতীয় সুপার ওভারটা মার্টিন গাপটিলের সঙ্গে ছিলেন নিশাম। নিউজিল্যান্ডের কাছে ফাইনালটা বিয়োগান্ত নাটক হয়ে থাকলেও ইংল্যান্ডের কাছে তা আনন্দদায়ী স্মৃতি।

গতকাল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে দুই বছর আগে লর্ডসের উত্তাপ ফিরে এলে আবুধাবিতেও। সেই ক্ষতে প্রলেপ দিতেই ক্রিস জর্ডানের করা ১৭তম ওভারে নিশাম মারলেন দুই ছক্কা আর এক চার। ওভারে উঠল ২৩ রান। ওই ওভারের চতুর্থ বলে হলো এক প্রস্থ নাটক। লং অনে উড়িয়ে মেরেছিলেন নিশাম। বলটা চকিতে লুফে নিয়েছিলেন বেয়ারস্টো। কিন্তু ভেতরে থাকা ফিল্ডারের হাতে বলটা ছুড়ে দিতে দিতে তাঁর পা ছুঁয়েছিল সীমানায়! আউটের জায়গায় নিশাম পেয়ে গেলেন ৬ রান। ক্ষণে ক্ষণে রং বদলানো ম্যাচটা জর্ডানের এই ওভারেই যেন নিউজিল্যান্ডের দিকে চলে এল।

২৪ বলে ৫৭ রানের সমীকরণটা নেমে এল পরে ১২ বলে ২০ রানে—যেটি কিউইরা অনায়াসে মিলিয়ে ফেলেছে এক ওভার বাকি থাকতেই। ৫ উইকেটের এ জয়ে ‘প্রতিশোধ’ও যেন নেওয়া হলো তাদের। আর তাতে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ অবদান ওপেনার ডেরিল মিচেলের ৪৭ বলে অপরাজিত ৭২ রানের দ্যুতিময় ইনিংসটার। তবে ম্যাচ কিউইরা মুঠোয় নিয়েছে আসলে ছয়ে নামা নিশামের ১১ বলে ২৭ রানের ঝড়টার সৌজন্যেই। নিশাম-মিচেলের পঞ্চম উইকেটে তোলা ১৭ বলে ৪০ রানের জুটিই গতকালকের রোমাঞ্চকর সেমিফাইনালের হাইলাইট।

রাতের শিশির আর আবুধাবিতে পরে ব্যাটিং করে জেতার রেকর্ড (১৪ ম্যাচের ৯টি) বেশি থাকায় গতকাল টস জিতে ফিল্ডিং নিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। দুর্দান্ত ছন্দে থাকা মঈন আলীর ৩৭ বলে ৫১ আর ডেভিড মালানের ৩০ বলে ৪১ রানের সৌজন্যে ইংলিশদের স্কোরটা ভালোই হয়েছিল—৪ উইকেটে ১৬৬।

১৬৭ রান তাড়া করতে নেমে ১৩ রানের মধ্যে কেন উইলিয়ামসন ও মার্টিন গাপটিলকে হারিয়ে নিউজিল্যান্ড এতটাই চাপে পড়ে গেল, প্রথম ১০ ওভারেও মনে হয়নি ম্যাচটা তারা জিততে পারবে। রানরেট ছয়ের নিচে নেমে গেল, ওভারপিছু প্রয়োজনীয় রান তখন দশের ওপরে চলে গেল। জিততে হলে প্রতি ওভারে প্রায় তিনটা করে বাউন্ডারি মারতে হতো নিউজিল্যান্ডকে। কঠিন পথটা পাড়ি দিতে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংসটা খেলতে কঠিন ম্যাচটাই বেছে নিলেন কিউই ওপেনার মিচেল। তৃতীয় উইকেটে সঙ্গী হিসেবে পেলেন ডেভন কনওয়েকে। দুজনের ৬৭ বলে ৮২ রানের জুটিটা জয়ের ভিত গড়ে দিল। মিচেল পরে পেলেন নিশামকে। ১৭তম ওভারে ২৩, ১৮তম ওভারে ১৪, ১৯তম ওভারে ২০—ইনিংসের শেষ ৩ ওভারে ৫৭ রান তুলে দর্শকদের ভরপুর বিনোদন উপহার দিল নিউজিল্যান্ড।

পিছিয়ে পড়ে এই ফিরে আসার গল্পটা টুর্নামেন্টজুড়েই লিখে চলেছে নিউজিল্যান্ড। ক্যারিবীয় কিংবদন্তি ক্লাইভ লয়েড আজকের পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাই নিউজিল্যান্ডকে টুর্নামেন্টের ডার্ক হর্স বলেছেন। ২০১৫, ২০১৯ বিশ্বকাপের পর আরও একটি আইসিসির টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠল নিউজিল্যান্ড। গত জুনে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জেতা কিউইদের সুযোগ এবার আরেকটি শিরোপা ঘরে তোলার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত