Ajker Patrika

অতিরিক্ত পর্যটকের আগমন হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য

আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫: ৩৭
অতিরিক্ত পর্যটকের আগমন  হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে অতিরিক্ত দেশি-বিদেশি দর্শনার্থীর আগমনে হুমকির মুখে পড়েছে জীববৈচিত্র্য। স্বাধীনতার ৫০ বছর ও সাপ্তাহিক ছুটির কারণে গত কয়েক দিন প্রায় সাত হাজার দর্শনার্থী উদ্যানটিতে আসেন। ফলে বন্য প্রাণী পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গেল তিন দিনে প্রায় সাত হাজার দর্শনার্থী লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে ভ্রমণ করেছেন। অনেকে হোটেল-মোটেল না পেয়ে সকাল থেকেই প্রধান ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এখান থেকে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে, তবে বনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অতীতের তুলনায় এ বছর অধিক দর্শনার্থী এসেছেন, যা বন্য প্রাণীর জন্য হুমকিস্বরূপ।

সরেজমিনে দেখা যায়, সারা দেশ থেকে আসা দর্শনার্থীরা উদ্যানের ভেতর ও বাইরে ময়লা-আবর্জনা ফেলছেন। যত্রতত্র প্লাস্টিকের বোতল, চিপস, বিস্কুট, চকলেটর খালি প্যাকেট ফেলছেন। বনের ভেতরে চিৎকার করে বিভিন্ন প্রাণীদের ইশারা করছেন। ধারণক্ষমতার বেশি দর্শনার্থী আসায় বাজারের মতো পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। বনের ভেতরে রেললাইনে বসে অনেককে গান গাইতে দেখা যায়। অতিরিক্ত মানুষের ভয়ে উল্লুক এক গাছ থেকে অন্য গাছে ছোটাছুটি করছে। এ ছাড়াও ঘন ঘন ট্রেনের আশা-যাওয়া, গাড়ির হর্নের শব্দে দিশেহারা বনের প্রাণী।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের মৌলভীবাজার জেলা সমন্বয়ক সালেহ সোহেল বলেন, দর্শনার্থীরা বনের জীববৈচিত্র্যকে কঠিন হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। দর্শনার্থীদের পরিবেশর ক্ষতি না করে প্রবেশ করাতে হবে। নয়তো একদিন এই উদ্যান থেকে জীববৈচিত্র্য হারিয়ে যাবে।

বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের শ্রীমঙ্গল রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, একসঙ্গে এত দর্শনার্থী লাউয়াছড়ায় কখনো দেখেননি তিনি। দর্শনার্থীরা বন বিভাগের নির্দেশনা কিছুই মানছে না। অতিরিক্ত দর্শনার্থীর কারণে বনের ক্ষতি হচ্ছে। তাঁরা সব সময় দর্শনার্থীদের ওপর নজর রাখছেন, যাতে বনের ক্ষতি না হয়।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, দর্শনার্থী আগমন বেশি হওয়ার কারণে বনের ওপর প্রভাব পড়ছে। অতিরিক্ত দর্শনার্থী প্রবেশের কারণে বন্যপ্রাণী লোকালয় থেকে দূরে চলে যাচ্ছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আবার বেড়ে যায়। তবে দু-এক দিনের মধ্যে দর্শনার্থী কমে যাবে বলে আশা করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, দর্শনার্থী আসায় সরকারের রাজস্ব আয় হচ্ছে, তবে বনের ক্ষতি করে এটা দরকার নেই। দর্শনার্থী ধারণক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। এ নিয়ে অনেক বিপদে আছেন তাঁরা।

বাংলাদেশের অন্যতম জাতীয় এ উদ্যানটি ১ হাজার ২৫০ হেক্টর আয়তনের। এখানে ৪৬০ প্রজাতির দুর্লভ উদ্ভিদ ও প্রাণী রয়েছে। এর মধ্যে ১৬৭ প্রজাতির উদ্ভিদ, ৪ প্রজাতির উভচর, ৬ প্রজাতির সরীসৃপ, ২৪৬ প্রজাতির পাখি এবং ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী দেখা যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত