Ajker Patrika

অবৈধ দখলদারির অবসান হোক

সম্পাদকীয়
অবৈধ দখলদারির অবসান হোক

আজকাল প্রায়ই ‘প্রভাবশালী ব্যক্তি’দের দাপটের খবর সংবাদপত্রে ছাপা হয়। কারা এই প্রভাবশালী ব্যক্তি? একটি দেশে তো প্রভাবশালী হওয়ার কথা জনগণের, অর্থাৎ সাধারণ  মানুষের। আমাদের সংবিধানেও জনগণকেই দেশের মালিক বলা হয়েছে। কিন্তু জনগণ যে দাপট দেখায় না, তারা যে কোনো খারাপ কাজের সঙ্গে জড়িত হয় না, তা-ও তো ওই সব খবর পড়েই বোঝা যায়। এখন ‘প্রভাবশালী’ বলতে তাদেরই বোঝানো হয়, যারা যা খুশি তা-ই করতে পারে এবং যাদের আইন স্পর্শ করতে পারে না। শুধু তা-ই নয়, যারা প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সহায়তায় আইনকে নিজেদের মতো পরিচালনা করে, তারাই প্রভাবশালী।

এই প্রভাবশালী ব্যক্তিদের জন্য এখন দুর্ভোগ পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকে। আজকের পত্রিকায় বৃহস্পতিবার ‘দূষণে-দখলে অস্তিত্ব সংকটে নদী-খাল’ শিরোনামে প্রকাশিত খবরেও এই প্রভাবশালীদের প্রসঙ্গ এসেছে।

খবরে বলা হয়েছে, লক্ষ্মীপুর সদর, রায়পুর, রামগতি, কমলনগর ও রামগঞ্জ উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া রহমতখালী খাল এবং ডাকাতিয়া ও মেঘনা নদী ছিল প্রায় ১০০ কিলোমিটারজুড়ে। কিন্তু ইট-বালু আর মাটি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে নদী ও খালের দুই পাড়। একই অবস্থায় ভুলুয়া, জারিদোনা, চরঠিকা খালসহ ছোট-বড় অর্ধশতাধিক খাল।

খবরে বলা হয়েছে, প্রভাবশালী ব্যক্তিরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে নদী ও খালের ওপর দখলদারি চালানোর ফলে দিন দিন ছোট হয়ে যাচ্ছে নদী ও খালগুলো। এ ছাড়া খালে ময়লা-আবর্জনার স্তূপের কারণে বৃষ্টির পানি সহজে সরতে না পারায় অল্প বৃষ্টিতে এসব এলাকায় দেখা দিচ্ছে জলাবদ্ধতা।

এলাকাবাসী জানিয়েছে, এসব নদী ও খাল দিয়ে একসময় বড় বড় পালতোলা নৌকা, মালবাহী ট্রলার চলাচল করত। এ ছাড়া ভোলা-বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ধান-চাল-গমসহ নানা পণ্য নিয়ে আসা-যাওয়া করতেন ব্যবসায়ীরা। এসব খালের পানি সেচ দিয়ে খালপাড়ে সবজির আবাদ করতেন চাষিরা। কিন্তু এখন বেশির ভাগ খাল মৃতপ্রায়। তাই এখন আর নৌযান চলাচল করতে পারে না, ফসলি জমিতে সেচ দেওয়াও সম্ভব হয় না।

ক্ষমতাসীন দলের একজন নেতা সঙ্গী-সহযোগীদের নিয়ে অবৈধভাবে এসব খাল দখল করে গড়ে তুলছেন বহুতল ভবন। এসব স্থানে পাকা দোকানঘর নির্মাণ করে ভাড়াও দিচ্ছেন।

লক্ষ্মীপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলীর বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, ‘অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে কাজ করা হচ্ছে। সার্ভে করা হচ্ছে। অবৈধ দখলদারদের তালিকার কাজও এগিয়ে যাচ্ছে। এসব খাল খননের কাজ প্রক্রিয়াধীন। খাল খনন হলে ইরিগেশন থেকে শুরু করে ব্যাপক উন্নয়নের পাশাপাশি খাল বা নদীর অস্তিত্ব ফিরে পাবে এই অঞ্চলের মানুষ।’

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আশার কথা শোনালেও মানুষ কি আশাবাদী হতে পারছে? ক্ষমতাশালী ব্যক্তিদের আশীর্বাদপুষ্ট ক্যাডার, প্রভাবশালী টাকাওয়ালা, জোতদার-মহাজন, ধর্মীয় নেতা, বিভিন্ন সংগঠনের নেতা ইত্যাদি পরিচয় দিয়ে যারা রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিয়মবহির্ভূতভাবে দখলদারি চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে সাধারণ মানুষ একসময় প্রতিবাদী হয়ে উঠবেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকারের খোঁজ মিলছে না

সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নতুন বেতন নির্ধারণে কমিটি

চাকরির নামে মিরপুর-শেওড়াপাড়ায় বাসায় ডেকে নারীর সঙ্গে ভিডিও ধারণের পর টাকা হাতিয়ে নিত ‘হানি ট্র্যাপ’ চক্র

দুস্থদের ৩৪ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা মোহনগঞ্জ সমাজসেবা কর্মকর্তা

৫ দুর্বল ব্যাংক একীভূতকরণে অর্থায়ন নিয়ে শঙ্কা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত