Ajker Patrika

বীজের দামে দুশ্চিন্তায় কৃষক

শামিমুজ্জামান, খুলনা
আপডেট : ২২ নভেম্বর ২০২১, ১৬: ১১
বীজের দামে দুশ্চিন্তায় কৃষক

সামনে বোরো ধান চাষের মৌসুম। কৃষকেরা ইতিমধ্যে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। তবে উৎপাদন খরচ নিয়েই তাদের যত দুশ্চিন্তা। কারণ সম্প্রতি বেড়েছে ডিজেলের দাম যা সেচকাজে ব্যবহার করতে হয়। পাশাপাশি বেড়েছে ধানবীজের দামও। ডিজেল ও সরকারি বীজের দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন দিশেহারা চাষি।

জানা গেছে, খুলনা জেলার সর্বত্র বোরোর প্রস্তুতি চলছে। এ প্রস্তুতি নিতে গিয়ে কৃষকেরা শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে। এখন আমন ফসল কাটার মাঝামাঝি সময় চলছে। জেলায় এবার ৫৪ হাজার হেক্টরের বেশি বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। জমিতে গত ১৫ নভেম্বর থেকে চারা প্রস্তুত মৌসুমি শুরু হয়েছে। চলবে ডিসেম্বর পর্যন্ত।

ডিজেলের দাম লিটার প্রতি বেড়েছে ১৫ টাকা। এখন প্রতি লিটার ডিজেল বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা। আবার গতবারের তুলনায় সরকারি বীজের দাম কেজিপ্রতি একলাফে ১১ থেকে ১৫ টাকা বাড়ল। কৃষক পর্যায়ে প্রতিকেজি বীজ ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

জেলার ফুলতলা বীজ গুদামে বিআর-২৮, ৫৫, ৬৩, ৬৭, ৮১, ৮৪, ৮৬, ৮৮, ৮৯, বিনা-৮, ৫, ১০, ১৪, বিআর-৩, ১৪, ১৬, ২৬ জাতের বীজ এসেছে। বৃহত্তর খুলনায় বিআর ২৮ জাতের চাহিদা বেশি। গত ১২ নভেম্বর পর্যন্ত বীজ গুদামে দুই হাজার ৭০৭ মেট্রিক টন বীজ এসেছে। ইতিমধ্যেই ৪৩০ জন ডিলারের কাছে ১ হাজার ২১১ মেট্রিক টন বীজ বিক্রি হয়েছে। এ মাসের শেষ দিকে গুদামে আরও ৮০০ মেট্রিক টন বীজ আসবে। ২০১৯ সালে ২ হাজার ২৬৩ মেট্রিক টন এবং গত বছর ২ হাজার ৫৬২ মেট্রিক টন বীজ বিক্রি হয়। করোনাকালীন ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকার ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে প্রকারভেদে প্রতি কেজি বীজ ১০ টাকা মূল্য কমায়।

২০২০ সালে বিআর ২৮, ৫৫ ও ৬৩ জাতের বীজের মূল্য ছিল কেজিপ্রতি ৩৯ টাকা। এ বছরের মূল্য ৫০ টাকা। বিনা জাতের বীজ ৩৮ টাকার পরিবর্তে ৫৩ টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। হাইব্রিড বীজ প্রতিকেজি ২২৫ টাকার স্থলে এবার ৫ টাকা কমানো হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ডুমুরিয়া উপজেলার সাহস ইউনিয়নের কৃষক ফজর গাজি বলেন, ডিজেলের দাম বেড়েছে লিটারে ১৫ টাকা, বীজের দাম কেজিতে বেড়েছে ১১-১৫ টাকা। বীজের দাম বৃদ্ধির কারণে তিনি এখনো পাতা ফেলতে (বীজ বুনতে) পারেননি। অপরদিকে বোরো চাষে সেচ গুরুত্বপূর্ণ। ডিজেলের দাম বৃদ্ধির কারণে সেচে খরচ বাড়বে।

সেচের টাকা কীভাবে সংগ্রহ হবে সেই চিন্তায় রয়েছেন কৃষক আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, শ্যালো কিংবা সেচ মেশিন চালাতে ডিজেলের প্রয়োজন। ডিজেলের দাম বৃদ্ধির কারণে সেচ খরচও বাড়বে। সব মিলিয়ে ধান উৎপাদনে এবার বৃদ্ধি পাবে খরচ। সেই হিসেবে দাম না পেলে কৃষক সর্বস্বান্ত হবে।

ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোসাদ্দেক হোসেন জানান, কৃষকের সমস্যা লাঘবে কৃষি বিভাগ কৃষকদের ভর্তুকি দিচ্ছে। বিনা মূল্যে বীজ এবং সার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এদিকে বিএডিসি (বীজ) খুলনার উপ-সহকারী পরিচালক আনোয়ার হোসেন জানান, বীজতলার শুরুর আগেই জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের ডিলারদের কাছে চাহিদামতো বীজ পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় এবার বীজের দাম বেড়েছে। কোনো অবস্থাতেই বীজের সংকট হবে না। সরকার চাহিদামতো বীজ সরবরাহ করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত