Ajker Patrika

করোনায় ২৮২৭ বাল্যবিবাহ

ফয়সাল পারভেজ, মাগুরা
আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০২১, ১৬: ৫৯
করোনায় ২৮২৭ বাল্যবিবাহ

করোনাকালীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের মধ্যে মাগুরা জেলায় বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছে ২ হাজার ৮২৭ জন। এর মধ্যে অধিকাংশই জেলার মফস্বলের প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থী। জেলা শিক্ষা অফিসের এক জরিপে এ চিত্র উঠে এসেছে।

জরিপে উল্লেখ করা হয়েছে, জেলার চার উপজেলার প্রায় তিন শতাধিক মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই বিপুল পরিমাণ বাল্যবিবাহের ঘটনা ঘটেছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৬ষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির ৪২ হাজার ৬৭৪ ছাত্রীর মধ্যে করোনায় বাল্যবিবাহ হয়েছে ২ হাজার ৮২৭ জনের। এর মধ্যে জেলা সদরে ১৯ হাজার ৩২৬ ছাত্রীর মধ্যে রয়েছে ১ হাজার ২০৫ জন।

জরিপে আরও উল্লেখ করা হয়, শ্রীপুরে ৭ হাজার ৩৩১ ছাত্রীর মধ্যে ৪১৫, শালিখায় ৬ হাজার ১৯২ ছাত্রীর মধ্যে ৫২৭ এবং মহম্মদপুর উপজেলায় ৯ হাজার ৮২৫ ছাত্রীর মধ্যে ৬৮০ জনের বাল্যবিবাহ হয়েছে।

জরিপে উচ্চমাধ্যমিকে পড়াকালীন শিক্ষার্থীর বিবাহের তথ্য প্রকাশ করেছে। যেখানে বেশির ভাগ ছাত্রী এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসছেন না বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সদর উপজেলায় ৬ হাজার ৯৫২ ছাত্রীর মধ্যে ১৫৫, শালিখায় ৯৬৯ জনের মধ্যে ৪৬, মহম্মদপুরে ১ হাজার ৩৩৪ জনে মধ্যে ১৪০ এবং শ্রীপুর উপজেলায় ১ হাজার ৫৫৩ জনের মধ্যে বিবাহ হয়েছে ১১৩ জনের।

এর আগে মাগুরা জেলা প্রাথমিক স্কুলেও এমন একটা জরিপে ঝড়েপড়া শিক্ষার্থীদের তালিকা উঠে এলেও সেখানে জানা গেছে বাল্যবিবাহের কথা। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে জেলার ৫০৩টি সরকারি প্রাথমিক স্কুলে অন্তত ১৫ জন পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী বাল্যবিবাহের শিকার। যার অন্যতম কারণ ছিল দারিদ্র্য।

এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আলমগীর কবীর জানান, জরিপটি আমরা সরকারি নির্দেশনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর শুরু করেছি। এখানে জেলা সদরে সব থেকে বেশি বাল্যবিবাহের শিকার দেখা গেছে।

আলমগীর কবীর বলেন, বাল্যবিবাহের শিকার অনেক শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে না বলে জেনেছি। এর একটা প্রধান কারণ বেশির ভাগ শিক্ষার্থীর বিয়ে হয়েছে জেলার বাইরে অথবা শ্বশুরবাড়ি থেকে তাদের আর পড়াশোনা করতে দিচ্ছে না।

এ শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, যাদের বাল্যবিবাহ হয়েছে তাদের সবার বিষয়ে আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। তবে বেশ কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি করোনাকালীন শিক্ষা জীবন নিয়ে সংশয়ে ছিল তাদের পরিবার। আবার অনেকে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়েও মেয়েকে ভালো পাত্রের কাছে বিয়ে দিয়েছেন পড়াশোনা বন্ধ করে।

বাল্যবিবাহরে শিকার এসব মেয়েরা আর বিদ্যালয়ে ফিরবে কি না তা নিয়ে খোঁজ–খবর চলছে। তবে বেশির ভাগ সাংসারিক জীবনে ব্যস্ত থাকায় আমাদের তথ্য জোগাড় করা কঠিন হয়ে গেছে বলেও জানান এই শিক্ষা কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত