Ajker Patrika

ছিল খাল, খননের পর হয়ে গেল নালা

মধুপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২২, ০৯: ৪৭
ছিল খাল, খননের পর  হয়ে গেল নালা

খাল খননের কাজ শেষ করেছেন ঠিকাদার, বুঝে নিয়েছেন তদারক কর্মকর্তা। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ জানেন না খাল খননকাজের বরাদ্দ কত। এমনকি এই প্রকল্প সম্পর্কে অবগত নয় উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি)। অভিযোগ উঠেছে, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) ক্ষুদ্র সেচ বিভাগের একজন কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের মধ্যে যোগসাজশের। এই প্রকল্পের মাধ্যমেই খননের পর নালা পরিণত হয়েছে টাঙ্গাইলের মধুপুরের শাইপাখালি খাল।

জানা যায়, মধুপুরের কালামাঝি ও হবিবপুরের নিম্নাঞ্চলের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ এবং আশপাশের এলাকার ফসলি জমির সেচব্যবস্থা নিশ্চিত করার প্রয়োজনে শাইপাখালি খাল খননের উদ্যোগ নেয় বিএডিসি। আঠালিয়াবাড়ী বিল থেকে হবিবপুর ও পচিশা গ্রাম ভেদ করে চলে যাওয়া বংশাই নদ পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার শাইপাখালি খালটির খননকাজ বাস্তবায়নের জন্য দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদার নির্বাচন করা হয়।

ময়মনসিংহের অলি এন্টারপ্রাইজ প্রাক্কলিত দরের চেয়ে শতকরা ১০ ভাগ কম দরে কাজ পায়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি কাজ বাস্তবায়ন না করে উপঠিকাদার নিয়োগ করে খাল খনন কার্যক্রম শেষ করেছে। খনন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছেন উপঠিকাদার রুহুল আমিন রুবেল। আর কাজ তদারকি করেছেন বিএডিসি (ক্ষুদ্র সেচ) মধুপুরের প্রকৌশলী মো. আব্দুর রহমান।

উপঠিকাদার রুহুল আমিন রুবেল জানান, দেড় কিলোমিটার খাল খননের কাজ তিনি অলি এন্টারপ্রাইজের আলতাফ হোসেন বাচ্চুর কাছ থেকে কিনে নিয়েছেন। প্রতি কিলোমিটার খননকাজে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা চুক্তি করেছেন তিনি। খালের বটম বা তলি, টপ, বক্সার কতটুকু, তার কিছুই তিনি জানেন না।

ঠিকাদারের সঙ্গে থেকে খাল খননের সব কার্যক্রম বুঝে নিয়ে কাজ শেষ করেছেন তদারক কর্মকর্তা প্রকৌশলী আব্দুর রহমান। তিনি বলেন, ‘খননের নকশা শুধু হাতে পেয়েছি। সেই অনুসারে কাজ বুঝে নিয়েছি। কিন্তু এই কাজের বরাদ্দ কত, কত ফুট তলি, কত ফুট বক্সার—এসব তথ্য আমার কাছে নেই।’

শাইপাখালি খাল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, খননের মাধ্যমে খালটির বটম বা তলি স্থানভেদে সাড়ে পাঁচ ফুট থেকে সাত ফুট প্রশস্ত করা হয়েছে। টপ করা হয়েছে ২০ থেকে ২৪ ফুট। বক্সার করা হয়েছে মাত্র চার ফুট এবং তার সঙ্গে পাড় বাঁধা হয়েছে চার ফুট উচ্চতায়। এ ছাড়া মধুপুর-গোপালপুর সড়কের শাইপাখালী খালের ব্রিজের নিচে মাটি খনন করতে গিয়ে ব্রিজের বেসমেন্ট ভেঙে ইট তুলে ফেলা হয়েছে। এতে বর্ষার ঢল নামলে ব্রিজটি বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, খালে পানি না থাকায় অনেকেই ধান আবাদ করেছিলেন। প্রভাবশালীরা যোগসাজশে সেই ধান নষ্ট করে খাল খনন করেছেন। কিন্তু খননের নামে করেছেন ভেলকিবাজি।

এদিকে উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত না করে খাল খনন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছরোয়ার আলম খান আবু।

খাল খননের অনিয়মের ব্যাপারে বিএডিসি সেচের নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার আহমেদ মুন্সী বলেন, ‘ক্ষুদ্র সেচ মধুপুরের প্রকৌশলী আব্দুর রহমানের কাজটি তদারক করে বুঝে নেওয়ার কথা। তারপরও আমরা কর্ম এলাকায় গিয়ে পরিমাপ করে কাজ বুঝে নেব। কাজ অনুসারে বিল পরিশোধ করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফোন-ইন্টারনেট ভাতা পাচ্ছেন মাঠ প্রশাসনের সব কর্মচারী

এস আলমের জামাতার পেটে ৩৭৪৫ কোটি টাকা

ভাড়া বাড়িতে চলা ১৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিসহ সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ

পিপির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব ৪৯ জন সহকারী পিপির

জোবাইদার নিরাপত্তার নামে প্রতিবেশীদের বিরক্ত না করার নির্দেশ তারেক রহমানের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত