ইশতিয়াক হাসান

এক যুগেরও আগের একটি গল্প দিয়ে শুরু করছি। হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার একটি গ্রামীণ তিন রাস্তার মোড়। চারপাশে বেশ কয়েকটা টংঘর। যখনকার কথা বলছি, তখনই মোটামুটি ছোটখাটো একটা বাজারে রূপ নিয়েছে জায়গাটি। রাস্তা তিনটার একটা এসেছে ধর্মঘর বাজার থেকে। দক্ষিণেরটা চলে গেছে একেবারে ভারতীয় সীমান্তবর্তী গ্রাম মোহনপুরের দিকে। আর উত্তরেরটার গন্তব্য দেবনগর নামের এক গ্রাম ।
সীমান্তের দিকে চলে যাওয়া পথটা ধরে একটু গেলেই বাঁয়ে বেশ কয়েকটা ঘর। এর একটার সামনে ছোট একটা চৌবাচ্চা। বর্ষার সময় বেশ পানি জমে। কুকুর-বিড়াল, গরু-বাছুর তৃষ্ণা মিটিয়ে নেয় এখানে। রাতে হয়তোবা শিয়াল-বনবিড়ালেরাও পান করে। অবশ্য এখন ওই চৌবাচ্চাটা সেখানে আর আছে কি না, বলতে পারব না।
প্রচণ্ড উত্তপ্ত একটা রাত পার হয়ে কেবল ভোর হয়েছে সেদিন। গরম কমেনি একটুও। দিনের কর্মব্যস্ততা শুরু হয়নি। চুপি চুপি আশ্রয় থেকে বের হয়ে এসেছে একটা বনবিড়াল। বেচারা জানে, একবার কেউ দেখে ফেললে আর রেহাই নেই। পিটিয়ে হাড়গোড় এক করবে। কিন্তু গরমে গলাটা শুকিয়ে কাঠ। অন্তত দু-এক ঢোক জল পান না করলেই নয়। ওই তো কাছেই চৌবাচ্চাটা দেখা যাচ্ছে। এক দৌড়ে গিয়ে কয়েক ঢোক পানি পান করে আসবে।
দ্রুত চৌবাচ্চার কাছে চলে এসে চারদিকে একবার দেখে নিয়ে উবু হয়ে মুখ ডুবিয়ে দিল পানিতে। এ সময়ই অঘটনটা ঘটল। হঠাৎ করেই কীভাবে যেন পিছলে পড়ে গেল ভেতরে। কিন্তু চৌবাচ্চার ধারগুলো পানি থেকে কিছুটা উঁচুতে। শত চেষ্টা করেও উঠতে পারছে না।
হয়তো বনবিড়ালটার তখন নিজের জন্য না, পেটের বাচ্চাগুলোর জন্যই মনটা কেঁদে উঠেছিল। আহহা! এরা যে পৃথিবীর আলো-বাতাসই দেখল না এখনো। এরই মধ্যে কোনো কারণে রাস্তায় বের হয় এক লোক। চৌবাচ্চায় পানির মধ্যে হাঁসফাঁস করতে দেখলেন প্রাণীটিকে। তার ‘টলা টলা’ চিৎকারে কাছেধারের বাড়িগুলো থেকে দৌড়ে এল মানুষ। অনেক দিন পর মনের সুখে পিটিয়ে ভূত বানানো যাবে একটা টলাকে।
এখানকার লোকদের কাছে বনবিড়ালের পরিচয় টলা। প্রথমে পানি থেকে তোলা হলো ওটাকে। তারপর শুরু হলো লাঠির বাড়ি। একপর্যায়ে রক্ত ঝরতে শুরু করল শরীর থেকে। আরও কিছুক্ষণ এভাবে পেটালে হয়তো পৃথিবীর মায়াই কাটাতে হতো ওটাকে। তার পরই কীভাবে যেন তার ফুলে ওঠা পেটটা চোখে পড়ল একজনের। হায় হায়, এটার পেটে তো বাচ্চা! লোকটা চেঁচিয়ে উঠতেই অন্যদেরও নজরে পড়ল বিষয়টা। যা হোক, থামল লাঠির বাড়ি। একজনের পরামর্শে টংঘরগুলোর ধারে এনে বেঁধে রাখা হলো । কিছুটা চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হলো। কোনোভাবে রক্তাক্ত শরীরটা টেনে টেনে হারিয়ে গেল ঝোপঝাড়ের রাজ্যে।
পরে বনবিড়ালটির ভাগ্যে কিংবা ওটার পেটের বাচ্চাগুলোর ভাগ্যে কী ঘটেছিল, তা জানা সম্ভব হয়নি। একটা সময় নানার বাড়ি দেবনগরে যেতাম প্রচুর। আর যখনই যেতাম, শুনতাম টলার নানা কাহিনি। হয়তো পরিচিত এক বড় ভাই এসে বলল, ‘তুষার, ওইদিন আমাদের পুকুরের ধারে একটা টলা পিটায়ে মাইরা ফেলছি সবাই মিলা। হাঁস-মুরগি খেয়ে বহুত জ্বালাতন করছিল ওটা।’ আবার মামাতো ভাই অর্ণব হয়তো এসে বলল, ‘তুষার ভাইয়া, ওই দিন বড় সাইজের একটা টলা দেখছি। প্রায় কুকুরের কাছাকাছি হইব।’ কিংবা পাশের বাড়ির মামি বললেন, ‘দেখছ, তুমি টলা টলা করো আর আমার সাধের চারটা হাঁসরে মাইরা রাইখা গেছে শয়তানটা।’
ব্যস্ততায় কিংবা ব্যস্ততার অজুহাতে এখন নানার বাড়িতে আগের মতো যাওয়া হয় না। তবে হঠাৎ হঠাৎ মানে পড়ে দেবনগরের বনবিড়ালদের কথা, আর মনে পড়ে টলা নিয়ে গ্রামবাসীর সঙ্গে তর্কের কথা। তাঁদের কথা, ইতানে হাঁস-মুরগি খাইয়া সাফ কইরা লায়। দাম দিতে পারবা? তাইলে আর মারতাম না। অভাবের সংসারে একটা-দুটো মুরগি-হাঁস হারানোও তো তাদের জন্য অনেক ক্ষতি। তাই মরতে হবে টলা বা বন বিড়ালদের। আর তাই দেবনগর আর আশপাশের এলাকায় বন বিড়ালদের এখন দেখা যায় কম। কেবল রাতে মাঝে মাঝে দূর থেকে ভেসে আসা ডাক ক্রমেই হারাতে বসা অস্তিত্বের জানান দিয়ে যায়।
খুব স্বাস্থ্যবান একটা বনবিড়াল আবার দেখেছিলাম নরসিংদীর চরসিন্দুরে সরওয়ার পাঠান ভাইদের ওখানে বেড়াতে গিয়ে। ওখানে বন বিড়ালকে বলে বাওরাল। তবে সরওয়ার ভাইদের বাড়ির পাশের একটু নিচে বেশ ঝোপঝাড়ে এখনো বনবিড়ালদের আস্তানা। কখনো-সখনো মুরগি লোপাট হলেও তাঁদের বাড়িতে বনবিড়াল মারা নিষিদ্ধ। সরওয়ার ভাই একবার মেছো বিড়ালের বাচ্চা মনে করে বন বিড়ালের বাচ্চা নিয়ে এসেছিলেন। ওটাকে পুষেছিলেন। তার খুব বাধ্য ওই বনবিড়ালটার নাম ছিল এলসা। তবে ওটা অন্তত দুই যুগের বেশি আগের কাহিনি। আবার তাঁর নার্সারির ধারের একটা বড় গাছের গুঁড়িতে নিয়মিত নখের ধার পরীক্ষা করে প্রমাণ সাইজের একটার বনবিড়াল।
বনবিড়াল সম্পর্কে দু-চারটি তথ্য জানিয়ে রাখছি। আকারে, ওজনে পোষা বিড়ালের দ্বিগুণ বলতে পারেন একে। গায়ে ডোরা নেই, তবে লেজে কালো বলয়ের মতো থাকে। গায়ের রং ধূসর, বাদামি। মুরগি চুরির অপবাদ থাকলেও ওটা কালেভদ্রেই করে, প্রধান খাবার ইঁদুর, পাখি, ব্যাঙ। গাছে চড়ায় দারুণ পারদর্শী হওয়ায় পাখি শিকারেও ওস্তাদ। যদ্দুর জানা যায়, বছরে দুবার বাচ্চা দেয় এরা। জংলি বিড়াল, খাগড়া বিড়াল, জলাভূমির বিড়াল নামেও পরিচিত।
গোটা বাংলাদেশের বেশির ভাগ গ্রামে এখন এমনই বিপদে বনবিড়ালরা। কিন্তু আগেও তো মুরগি চুরির অপরাধে বন বিড়াল মারা যেত মানুষের হাতে। তখন তো এরা এতটা কমেনি সংখ্যায়। কারণ তখন এদের থাকার পরিবেশ ছিল, এরা সংখ্যায়ও ছিল বেশি। আর এখন আমরা ইচ্ছামতো গ্রামীণ বন ধ্বংস করে বনবিড়ালদের থাকার এমনকি প্রজননের পরিবেশও ধ্বংস করে দিয়েছি। তখন গ্রামের লোকজন নিজেরাই ইট পোড়াত। আর এই ইটের পাঁজায় বাসা বানাত বনবিড়ালেরা, বাচ্চা দিত। এখন তো আর মানুষ এভাবে ইট তৈরি করে না। ফলে নেই টলাদের থাকার জায়গাও। নেই আগের সেই গ্রামীণ বনও। গাছের কোটর, জলার তীরের ঝোপঝাড়েও বাসা বানায় এরা।
এদিকে একবার বড় হয়ে গেলে বনবিড়ালদের নাগাল পাওয়া দুঃসাধ্য হলেও বাচ্চাগুলো ধরতে তেমন বেগ পেতে হয় না। লুকানোর জায়গা কমে যাওয়ায় মা বনবিড়ালদের শত সতর্কতা সত্ত্বেও সহজেই খোঁজ পেয়ে যাচ্ছে দুষ্ট ছেলের দল। পরিণতি নিশ্চিত মৃত্যু।
এভাবেই যদি চলে, তাহলে একসময় মেছো বিড়ালদের মতো গ্রামীণ বন থেকে অদৃশ্য হয়ে যাবে এরাও, তখন বনবিড়াল দেখতে কিংবা এর মউপ মউপ ডাক শুনতেও আমাদের পাড়ি জমাতে হবে দূরের কোনো অরণ্যে। প্রায়ই বাংলাদেশের বিভিন্ন গ্রামে বনবিড়াল পিটিয়ে মারার আর এদের বাচ্চা ধরা পড়ার ঘটনা চোখে পড়ে পত্রিকায়।
অবশ্য সুন্দরবন, সাঙ্গু-মাতামুহুরি, লাউয়াছড়া থেকে শুরু করে বাংলাদেশের সব অরণ্যেই বনবিড়াল এখনো আছে মোটামুটি। মনে পড়ে, বহু বছর আগে হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের রেমার জঙ্গলে গিয়ে ওখানকার বিট অফিসের পাশেই ছোট্ট এক গোরস্থান দেখেছিলাম। বিট কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, ওখানে বন বিড়ালের আড্ডাখানা।
আশ্চর্য ঘটনা, ঢাকা শহরের সীমানার মধ্যেও খুব অল্প-বিস্তর হলেও এখনো টিকে আছে এরা। তবে ওই সব ঝোপঝাড়ময় জায়গাগুলোও খুব বেশি দিন খালি পড়ে থাকবে না। তখন ঢাকা শহর কিংবা এর আশপাশের জায়গার বনবিড়ালদেরও মানুষের পিটুনি খেয়ে মরতে হবে সন্দেহ নেই। শহর থেকে একটু দূরে সাভারের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো মোটামুটি ভালোভাবেই টিকে আছে এরা।
আজ বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস। এই দিনে আমার চাওয়া—ভালো থাকুক গ্রামীণ বন, পাহাড়ি বন ও ঢাকা শহরের বনবিড়ালেরা। তেমনি ভালো থাকুক গোটা পৃথিবীর বনবিড়ালেরা। আমরা মানুষ যদি একটু সদয় হই, একটু ভালোবাসা দেখাই সুন্দর এই প্রাণীর প্রতি, তাহলেই কেবল এটা সম্ভব হবে।

এক যুগেরও আগের একটি গল্প দিয়ে শুরু করছি। হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার একটি গ্রামীণ তিন রাস্তার মোড়। চারপাশে বেশ কয়েকটা টংঘর। যখনকার কথা বলছি, তখনই মোটামুটি ছোটখাটো একটা বাজারে রূপ নিয়েছে জায়গাটি। রাস্তা তিনটার একটা এসেছে ধর্মঘর বাজার থেকে। দক্ষিণেরটা চলে গেছে একেবারে ভারতীয় সীমান্তবর্তী গ্রাম মোহনপুরের দিকে। আর উত্তরেরটার গন্তব্য দেবনগর নামের এক গ্রাম ।
সীমান্তের দিকে চলে যাওয়া পথটা ধরে একটু গেলেই বাঁয়ে বেশ কয়েকটা ঘর। এর একটার সামনে ছোট একটা চৌবাচ্চা। বর্ষার সময় বেশ পানি জমে। কুকুর-বিড়াল, গরু-বাছুর তৃষ্ণা মিটিয়ে নেয় এখানে। রাতে হয়তোবা শিয়াল-বনবিড়ালেরাও পান করে। অবশ্য এখন ওই চৌবাচ্চাটা সেখানে আর আছে কি না, বলতে পারব না।
প্রচণ্ড উত্তপ্ত একটা রাত পার হয়ে কেবল ভোর হয়েছে সেদিন। গরম কমেনি একটুও। দিনের কর্মব্যস্ততা শুরু হয়নি। চুপি চুপি আশ্রয় থেকে বের হয়ে এসেছে একটা বনবিড়াল। বেচারা জানে, একবার কেউ দেখে ফেললে আর রেহাই নেই। পিটিয়ে হাড়গোড় এক করবে। কিন্তু গরমে গলাটা শুকিয়ে কাঠ। অন্তত দু-এক ঢোক জল পান না করলেই নয়। ওই তো কাছেই চৌবাচ্চাটা দেখা যাচ্ছে। এক দৌড়ে গিয়ে কয়েক ঢোক পানি পান করে আসবে।
দ্রুত চৌবাচ্চার কাছে চলে এসে চারদিকে একবার দেখে নিয়ে উবু হয়ে মুখ ডুবিয়ে দিল পানিতে। এ সময়ই অঘটনটা ঘটল। হঠাৎ করেই কীভাবে যেন পিছলে পড়ে গেল ভেতরে। কিন্তু চৌবাচ্চার ধারগুলো পানি থেকে কিছুটা উঁচুতে। শত চেষ্টা করেও উঠতে পারছে না।
হয়তো বনবিড়ালটার তখন নিজের জন্য না, পেটের বাচ্চাগুলোর জন্যই মনটা কেঁদে উঠেছিল। আহহা! এরা যে পৃথিবীর আলো-বাতাসই দেখল না এখনো। এরই মধ্যে কোনো কারণে রাস্তায় বের হয় এক লোক। চৌবাচ্চায় পানির মধ্যে হাঁসফাঁস করতে দেখলেন প্রাণীটিকে। তার ‘টলা টলা’ চিৎকারে কাছেধারের বাড়িগুলো থেকে দৌড়ে এল মানুষ। অনেক দিন পর মনের সুখে পিটিয়ে ভূত বানানো যাবে একটা টলাকে।
এখানকার লোকদের কাছে বনবিড়ালের পরিচয় টলা। প্রথমে পানি থেকে তোলা হলো ওটাকে। তারপর শুরু হলো লাঠির বাড়ি। একপর্যায়ে রক্ত ঝরতে শুরু করল শরীর থেকে। আরও কিছুক্ষণ এভাবে পেটালে হয়তো পৃথিবীর মায়াই কাটাতে হতো ওটাকে। তার পরই কীভাবে যেন তার ফুলে ওঠা পেটটা চোখে পড়ল একজনের। হায় হায়, এটার পেটে তো বাচ্চা! লোকটা চেঁচিয়ে উঠতেই অন্যদেরও নজরে পড়ল বিষয়টা। যা হোক, থামল লাঠির বাড়ি। একজনের পরামর্শে টংঘরগুলোর ধারে এনে বেঁধে রাখা হলো । কিছুটা চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হলো। কোনোভাবে রক্তাক্ত শরীরটা টেনে টেনে হারিয়ে গেল ঝোপঝাড়ের রাজ্যে।
পরে বনবিড়ালটির ভাগ্যে কিংবা ওটার পেটের বাচ্চাগুলোর ভাগ্যে কী ঘটেছিল, তা জানা সম্ভব হয়নি। একটা সময় নানার বাড়ি দেবনগরে যেতাম প্রচুর। আর যখনই যেতাম, শুনতাম টলার নানা কাহিনি। হয়তো পরিচিত এক বড় ভাই এসে বলল, ‘তুষার, ওইদিন আমাদের পুকুরের ধারে একটা টলা পিটায়ে মাইরা ফেলছি সবাই মিলা। হাঁস-মুরগি খেয়ে বহুত জ্বালাতন করছিল ওটা।’ আবার মামাতো ভাই অর্ণব হয়তো এসে বলল, ‘তুষার ভাইয়া, ওই দিন বড় সাইজের একটা টলা দেখছি। প্রায় কুকুরের কাছাকাছি হইব।’ কিংবা পাশের বাড়ির মামি বললেন, ‘দেখছ, তুমি টলা টলা করো আর আমার সাধের চারটা হাঁসরে মাইরা রাইখা গেছে শয়তানটা।’
ব্যস্ততায় কিংবা ব্যস্ততার অজুহাতে এখন নানার বাড়িতে আগের মতো যাওয়া হয় না। তবে হঠাৎ হঠাৎ মানে পড়ে দেবনগরের বনবিড়ালদের কথা, আর মনে পড়ে টলা নিয়ে গ্রামবাসীর সঙ্গে তর্কের কথা। তাঁদের কথা, ইতানে হাঁস-মুরগি খাইয়া সাফ কইরা লায়। দাম দিতে পারবা? তাইলে আর মারতাম না। অভাবের সংসারে একটা-দুটো মুরগি-হাঁস হারানোও তো তাদের জন্য অনেক ক্ষতি। তাই মরতে হবে টলা বা বন বিড়ালদের। আর তাই দেবনগর আর আশপাশের এলাকায় বন বিড়ালদের এখন দেখা যায় কম। কেবল রাতে মাঝে মাঝে দূর থেকে ভেসে আসা ডাক ক্রমেই হারাতে বসা অস্তিত্বের জানান দিয়ে যায়।
খুব স্বাস্থ্যবান একটা বনবিড়াল আবার দেখেছিলাম নরসিংদীর চরসিন্দুরে সরওয়ার পাঠান ভাইদের ওখানে বেড়াতে গিয়ে। ওখানে বন বিড়ালকে বলে বাওরাল। তবে সরওয়ার ভাইদের বাড়ির পাশের একটু নিচে বেশ ঝোপঝাড়ে এখনো বনবিড়ালদের আস্তানা। কখনো-সখনো মুরগি লোপাট হলেও তাঁদের বাড়িতে বনবিড়াল মারা নিষিদ্ধ। সরওয়ার ভাই একবার মেছো বিড়ালের বাচ্চা মনে করে বন বিড়ালের বাচ্চা নিয়ে এসেছিলেন। ওটাকে পুষেছিলেন। তার খুব বাধ্য ওই বনবিড়ালটার নাম ছিল এলসা। তবে ওটা অন্তত দুই যুগের বেশি আগের কাহিনি। আবার তাঁর নার্সারির ধারের একটা বড় গাছের গুঁড়িতে নিয়মিত নখের ধার পরীক্ষা করে প্রমাণ সাইজের একটার বনবিড়াল।
বনবিড়াল সম্পর্কে দু-চারটি তথ্য জানিয়ে রাখছি। আকারে, ওজনে পোষা বিড়ালের দ্বিগুণ বলতে পারেন একে। গায়ে ডোরা নেই, তবে লেজে কালো বলয়ের মতো থাকে। গায়ের রং ধূসর, বাদামি। মুরগি চুরির অপবাদ থাকলেও ওটা কালেভদ্রেই করে, প্রধান খাবার ইঁদুর, পাখি, ব্যাঙ। গাছে চড়ায় দারুণ পারদর্শী হওয়ায় পাখি শিকারেও ওস্তাদ। যদ্দুর জানা যায়, বছরে দুবার বাচ্চা দেয় এরা। জংলি বিড়াল, খাগড়া বিড়াল, জলাভূমির বিড়াল নামেও পরিচিত।
গোটা বাংলাদেশের বেশির ভাগ গ্রামে এখন এমনই বিপদে বনবিড়ালরা। কিন্তু আগেও তো মুরগি চুরির অপরাধে বন বিড়াল মারা যেত মানুষের হাতে। তখন তো এরা এতটা কমেনি সংখ্যায়। কারণ তখন এদের থাকার পরিবেশ ছিল, এরা সংখ্যায়ও ছিল বেশি। আর এখন আমরা ইচ্ছামতো গ্রামীণ বন ধ্বংস করে বনবিড়ালদের থাকার এমনকি প্রজননের পরিবেশও ধ্বংস করে দিয়েছি। তখন গ্রামের লোকজন নিজেরাই ইট পোড়াত। আর এই ইটের পাঁজায় বাসা বানাত বনবিড়ালেরা, বাচ্চা দিত। এখন তো আর মানুষ এভাবে ইট তৈরি করে না। ফলে নেই টলাদের থাকার জায়গাও। নেই আগের সেই গ্রামীণ বনও। গাছের কোটর, জলার তীরের ঝোপঝাড়েও বাসা বানায় এরা।
এদিকে একবার বড় হয়ে গেলে বনবিড়ালদের নাগাল পাওয়া দুঃসাধ্য হলেও বাচ্চাগুলো ধরতে তেমন বেগ পেতে হয় না। লুকানোর জায়গা কমে যাওয়ায় মা বনবিড়ালদের শত সতর্কতা সত্ত্বেও সহজেই খোঁজ পেয়ে যাচ্ছে দুষ্ট ছেলের দল। পরিণতি নিশ্চিত মৃত্যু।
এভাবেই যদি চলে, তাহলে একসময় মেছো বিড়ালদের মতো গ্রামীণ বন থেকে অদৃশ্য হয়ে যাবে এরাও, তখন বনবিড়াল দেখতে কিংবা এর মউপ মউপ ডাক শুনতেও আমাদের পাড়ি জমাতে হবে দূরের কোনো অরণ্যে। প্রায়ই বাংলাদেশের বিভিন্ন গ্রামে বনবিড়াল পিটিয়ে মারার আর এদের বাচ্চা ধরা পড়ার ঘটনা চোখে পড়ে পত্রিকায়।
অবশ্য সুন্দরবন, সাঙ্গু-মাতামুহুরি, লাউয়াছড়া থেকে শুরু করে বাংলাদেশের সব অরণ্যেই বনবিড়াল এখনো আছে মোটামুটি। মনে পড়ে, বহু বছর আগে হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের রেমার জঙ্গলে গিয়ে ওখানকার বিট অফিসের পাশেই ছোট্ট এক গোরস্থান দেখেছিলাম। বিট কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, ওখানে বন বিড়ালের আড্ডাখানা।
আশ্চর্য ঘটনা, ঢাকা শহরের সীমানার মধ্যেও খুব অল্প-বিস্তর হলেও এখনো টিকে আছে এরা। তবে ওই সব ঝোপঝাড়ময় জায়গাগুলোও খুব বেশি দিন খালি পড়ে থাকবে না। তখন ঢাকা শহর কিংবা এর আশপাশের জায়গার বনবিড়ালদেরও মানুষের পিটুনি খেয়ে মরতে হবে সন্দেহ নেই। শহর থেকে একটু দূরে সাভারের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো মোটামুটি ভালোভাবেই টিকে আছে এরা।
আজ বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস। এই দিনে আমার চাওয়া—ভালো থাকুক গ্রামীণ বন, পাহাড়ি বন ও ঢাকা শহরের বনবিড়ালেরা। তেমনি ভালো থাকুক গোটা পৃথিবীর বনবিড়ালেরা। আমরা মানুষ যদি একটু সদয় হই, একটু ভালোবাসা দেখাই সুন্দর এই প্রাণীর প্রতি, তাহলেই কেবল এটা সম্ভব হবে।
ইশতিয়াক হাসান

এক যুগেরও আগের একটি গল্প দিয়ে শুরু করছি। হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার একটি গ্রামীণ তিন রাস্তার মোড়। চারপাশে বেশ কয়েকটা টংঘর। যখনকার কথা বলছি, তখনই মোটামুটি ছোটখাটো একটা বাজারে রূপ নিয়েছে জায়গাটি। রাস্তা তিনটার একটা এসেছে ধর্মঘর বাজার থেকে। দক্ষিণেরটা চলে গেছে একেবারে ভারতীয় সীমান্তবর্তী গ্রাম মোহনপুরের দিকে। আর উত্তরেরটার গন্তব্য দেবনগর নামের এক গ্রাম ।
সীমান্তের দিকে চলে যাওয়া পথটা ধরে একটু গেলেই বাঁয়ে বেশ কয়েকটা ঘর। এর একটার সামনে ছোট একটা চৌবাচ্চা। বর্ষার সময় বেশ পানি জমে। কুকুর-বিড়াল, গরু-বাছুর তৃষ্ণা মিটিয়ে নেয় এখানে। রাতে হয়তোবা শিয়াল-বনবিড়ালেরাও পান করে। অবশ্য এখন ওই চৌবাচ্চাটা সেখানে আর আছে কি না, বলতে পারব না।
প্রচণ্ড উত্তপ্ত একটা রাত পার হয়ে কেবল ভোর হয়েছে সেদিন। গরম কমেনি একটুও। দিনের কর্মব্যস্ততা শুরু হয়নি। চুপি চুপি আশ্রয় থেকে বের হয়ে এসেছে একটা বনবিড়াল। বেচারা জানে, একবার কেউ দেখে ফেললে আর রেহাই নেই। পিটিয়ে হাড়গোড় এক করবে। কিন্তু গরমে গলাটা শুকিয়ে কাঠ। অন্তত দু-এক ঢোক জল পান না করলেই নয়। ওই তো কাছেই চৌবাচ্চাটা দেখা যাচ্ছে। এক দৌড়ে গিয়ে কয়েক ঢোক পানি পান করে আসবে।
দ্রুত চৌবাচ্চার কাছে চলে এসে চারদিকে একবার দেখে নিয়ে উবু হয়ে মুখ ডুবিয়ে দিল পানিতে। এ সময়ই অঘটনটা ঘটল। হঠাৎ করেই কীভাবে যেন পিছলে পড়ে গেল ভেতরে। কিন্তু চৌবাচ্চার ধারগুলো পানি থেকে কিছুটা উঁচুতে। শত চেষ্টা করেও উঠতে পারছে না।
হয়তো বনবিড়ালটার তখন নিজের জন্য না, পেটের বাচ্চাগুলোর জন্যই মনটা কেঁদে উঠেছিল। আহহা! এরা যে পৃথিবীর আলো-বাতাসই দেখল না এখনো। এরই মধ্যে কোনো কারণে রাস্তায় বের হয় এক লোক। চৌবাচ্চায় পানির মধ্যে হাঁসফাঁস করতে দেখলেন প্রাণীটিকে। তার ‘টলা টলা’ চিৎকারে কাছেধারের বাড়িগুলো থেকে দৌড়ে এল মানুষ। অনেক দিন পর মনের সুখে পিটিয়ে ভূত বানানো যাবে একটা টলাকে।
এখানকার লোকদের কাছে বনবিড়ালের পরিচয় টলা। প্রথমে পানি থেকে তোলা হলো ওটাকে। তারপর শুরু হলো লাঠির বাড়ি। একপর্যায়ে রক্ত ঝরতে শুরু করল শরীর থেকে। আরও কিছুক্ষণ এভাবে পেটালে হয়তো পৃথিবীর মায়াই কাটাতে হতো ওটাকে। তার পরই কীভাবে যেন তার ফুলে ওঠা পেটটা চোখে পড়ল একজনের। হায় হায়, এটার পেটে তো বাচ্চা! লোকটা চেঁচিয়ে উঠতেই অন্যদেরও নজরে পড়ল বিষয়টা। যা হোক, থামল লাঠির বাড়ি। একজনের পরামর্শে টংঘরগুলোর ধারে এনে বেঁধে রাখা হলো । কিছুটা চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হলো। কোনোভাবে রক্তাক্ত শরীরটা টেনে টেনে হারিয়ে গেল ঝোপঝাড়ের রাজ্যে।
পরে বনবিড়ালটির ভাগ্যে কিংবা ওটার পেটের বাচ্চাগুলোর ভাগ্যে কী ঘটেছিল, তা জানা সম্ভব হয়নি। একটা সময় নানার বাড়ি দেবনগরে যেতাম প্রচুর। আর যখনই যেতাম, শুনতাম টলার নানা কাহিনি। হয়তো পরিচিত এক বড় ভাই এসে বলল, ‘তুষার, ওইদিন আমাদের পুকুরের ধারে একটা টলা পিটায়ে মাইরা ফেলছি সবাই মিলা। হাঁস-মুরগি খেয়ে বহুত জ্বালাতন করছিল ওটা।’ আবার মামাতো ভাই অর্ণব হয়তো এসে বলল, ‘তুষার ভাইয়া, ওই দিন বড় সাইজের একটা টলা দেখছি। প্রায় কুকুরের কাছাকাছি হইব।’ কিংবা পাশের বাড়ির মামি বললেন, ‘দেখছ, তুমি টলা টলা করো আর আমার সাধের চারটা হাঁসরে মাইরা রাইখা গেছে শয়তানটা।’
ব্যস্ততায় কিংবা ব্যস্ততার অজুহাতে এখন নানার বাড়িতে আগের মতো যাওয়া হয় না। তবে হঠাৎ হঠাৎ মানে পড়ে দেবনগরের বনবিড়ালদের কথা, আর মনে পড়ে টলা নিয়ে গ্রামবাসীর সঙ্গে তর্কের কথা। তাঁদের কথা, ইতানে হাঁস-মুরগি খাইয়া সাফ কইরা লায়। দাম দিতে পারবা? তাইলে আর মারতাম না। অভাবের সংসারে একটা-দুটো মুরগি-হাঁস হারানোও তো তাদের জন্য অনেক ক্ষতি। তাই মরতে হবে টলা বা বন বিড়ালদের। আর তাই দেবনগর আর আশপাশের এলাকায় বন বিড়ালদের এখন দেখা যায় কম। কেবল রাতে মাঝে মাঝে দূর থেকে ভেসে আসা ডাক ক্রমেই হারাতে বসা অস্তিত্বের জানান দিয়ে যায়।
খুব স্বাস্থ্যবান একটা বনবিড়াল আবার দেখেছিলাম নরসিংদীর চরসিন্দুরে সরওয়ার পাঠান ভাইদের ওখানে বেড়াতে গিয়ে। ওখানে বন বিড়ালকে বলে বাওরাল। তবে সরওয়ার ভাইদের বাড়ির পাশের একটু নিচে বেশ ঝোপঝাড়ে এখনো বনবিড়ালদের আস্তানা। কখনো-সখনো মুরগি লোপাট হলেও তাঁদের বাড়িতে বনবিড়াল মারা নিষিদ্ধ। সরওয়ার ভাই একবার মেছো বিড়ালের বাচ্চা মনে করে বন বিড়ালের বাচ্চা নিয়ে এসেছিলেন। ওটাকে পুষেছিলেন। তার খুব বাধ্য ওই বনবিড়ালটার নাম ছিল এলসা। তবে ওটা অন্তত দুই যুগের বেশি আগের কাহিনি। আবার তাঁর নার্সারির ধারের একটা বড় গাছের গুঁড়িতে নিয়মিত নখের ধার পরীক্ষা করে প্রমাণ সাইজের একটার বনবিড়াল।
বনবিড়াল সম্পর্কে দু-চারটি তথ্য জানিয়ে রাখছি। আকারে, ওজনে পোষা বিড়ালের দ্বিগুণ বলতে পারেন একে। গায়ে ডোরা নেই, তবে লেজে কালো বলয়ের মতো থাকে। গায়ের রং ধূসর, বাদামি। মুরগি চুরির অপবাদ থাকলেও ওটা কালেভদ্রেই করে, প্রধান খাবার ইঁদুর, পাখি, ব্যাঙ। গাছে চড়ায় দারুণ পারদর্শী হওয়ায় পাখি শিকারেও ওস্তাদ। যদ্দুর জানা যায়, বছরে দুবার বাচ্চা দেয় এরা। জংলি বিড়াল, খাগড়া বিড়াল, জলাভূমির বিড়াল নামেও পরিচিত।
গোটা বাংলাদেশের বেশির ভাগ গ্রামে এখন এমনই বিপদে বনবিড়ালরা। কিন্তু আগেও তো মুরগি চুরির অপরাধে বন বিড়াল মারা যেত মানুষের হাতে। তখন তো এরা এতটা কমেনি সংখ্যায়। কারণ তখন এদের থাকার পরিবেশ ছিল, এরা সংখ্যায়ও ছিল বেশি। আর এখন আমরা ইচ্ছামতো গ্রামীণ বন ধ্বংস করে বনবিড়ালদের থাকার এমনকি প্রজননের পরিবেশও ধ্বংস করে দিয়েছি। তখন গ্রামের লোকজন নিজেরাই ইট পোড়াত। আর এই ইটের পাঁজায় বাসা বানাত বনবিড়ালেরা, বাচ্চা দিত। এখন তো আর মানুষ এভাবে ইট তৈরি করে না। ফলে নেই টলাদের থাকার জায়গাও। নেই আগের সেই গ্রামীণ বনও। গাছের কোটর, জলার তীরের ঝোপঝাড়েও বাসা বানায় এরা।
এদিকে একবার বড় হয়ে গেলে বনবিড়ালদের নাগাল পাওয়া দুঃসাধ্য হলেও বাচ্চাগুলো ধরতে তেমন বেগ পেতে হয় না। লুকানোর জায়গা কমে যাওয়ায় মা বনবিড়ালদের শত সতর্কতা সত্ত্বেও সহজেই খোঁজ পেয়ে যাচ্ছে দুষ্ট ছেলের দল। পরিণতি নিশ্চিত মৃত্যু।
এভাবেই যদি চলে, তাহলে একসময় মেছো বিড়ালদের মতো গ্রামীণ বন থেকে অদৃশ্য হয়ে যাবে এরাও, তখন বনবিড়াল দেখতে কিংবা এর মউপ মউপ ডাক শুনতেও আমাদের পাড়ি জমাতে হবে দূরের কোনো অরণ্যে। প্রায়ই বাংলাদেশের বিভিন্ন গ্রামে বনবিড়াল পিটিয়ে মারার আর এদের বাচ্চা ধরা পড়ার ঘটনা চোখে পড়ে পত্রিকায়।
অবশ্য সুন্দরবন, সাঙ্গু-মাতামুহুরি, লাউয়াছড়া থেকে শুরু করে বাংলাদেশের সব অরণ্যেই বনবিড়াল এখনো আছে মোটামুটি। মনে পড়ে, বহু বছর আগে হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের রেমার জঙ্গলে গিয়ে ওখানকার বিট অফিসের পাশেই ছোট্ট এক গোরস্থান দেখেছিলাম। বিট কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, ওখানে বন বিড়ালের আড্ডাখানা।
আশ্চর্য ঘটনা, ঢাকা শহরের সীমানার মধ্যেও খুব অল্প-বিস্তর হলেও এখনো টিকে আছে এরা। তবে ওই সব ঝোপঝাড়ময় জায়গাগুলোও খুব বেশি দিন খালি পড়ে থাকবে না। তখন ঢাকা শহর কিংবা এর আশপাশের জায়গার বনবিড়ালদেরও মানুষের পিটুনি খেয়ে মরতে হবে সন্দেহ নেই। শহর থেকে একটু দূরে সাভারের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো মোটামুটি ভালোভাবেই টিকে আছে এরা।
আজ বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস। এই দিনে আমার চাওয়া—ভালো থাকুক গ্রামীণ বন, পাহাড়ি বন ও ঢাকা শহরের বনবিড়ালেরা। তেমনি ভালো থাকুক গোটা পৃথিবীর বনবিড়ালেরা। আমরা মানুষ যদি একটু সদয় হই, একটু ভালোবাসা দেখাই সুন্দর এই প্রাণীর প্রতি, তাহলেই কেবল এটা সম্ভব হবে।

এক যুগেরও আগের একটি গল্প দিয়ে শুরু করছি। হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার একটি গ্রামীণ তিন রাস্তার মোড়। চারপাশে বেশ কয়েকটা টংঘর। যখনকার কথা বলছি, তখনই মোটামুটি ছোটখাটো একটা বাজারে রূপ নিয়েছে জায়গাটি। রাস্তা তিনটার একটা এসেছে ধর্মঘর বাজার থেকে। দক্ষিণেরটা চলে গেছে একেবারে ভারতীয় সীমান্তবর্তী গ্রাম মোহনপুরের দিকে। আর উত্তরেরটার গন্তব্য দেবনগর নামের এক গ্রাম ।
সীমান্তের দিকে চলে যাওয়া পথটা ধরে একটু গেলেই বাঁয়ে বেশ কয়েকটা ঘর। এর একটার সামনে ছোট একটা চৌবাচ্চা। বর্ষার সময় বেশ পানি জমে। কুকুর-বিড়াল, গরু-বাছুর তৃষ্ণা মিটিয়ে নেয় এখানে। রাতে হয়তোবা শিয়াল-বনবিড়ালেরাও পান করে। অবশ্য এখন ওই চৌবাচ্চাটা সেখানে আর আছে কি না, বলতে পারব না।
প্রচণ্ড উত্তপ্ত একটা রাত পার হয়ে কেবল ভোর হয়েছে সেদিন। গরম কমেনি একটুও। দিনের কর্মব্যস্ততা শুরু হয়নি। চুপি চুপি আশ্রয় থেকে বের হয়ে এসেছে একটা বনবিড়াল। বেচারা জানে, একবার কেউ দেখে ফেললে আর রেহাই নেই। পিটিয়ে হাড়গোড় এক করবে। কিন্তু গরমে গলাটা শুকিয়ে কাঠ। অন্তত দু-এক ঢোক জল পান না করলেই নয়। ওই তো কাছেই চৌবাচ্চাটা দেখা যাচ্ছে। এক দৌড়ে গিয়ে কয়েক ঢোক পানি পান করে আসবে।
দ্রুত চৌবাচ্চার কাছে চলে এসে চারদিকে একবার দেখে নিয়ে উবু হয়ে মুখ ডুবিয়ে দিল পানিতে। এ সময়ই অঘটনটা ঘটল। হঠাৎ করেই কীভাবে যেন পিছলে পড়ে গেল ভেতরে। কিন্তু চৌবাচ্চার ধারগুলো পানি থেকে কিছুটা উঁচুতে। শত চেষ্টা করেও উঠতে পারছে না।
হয়তো বনবিড়ালটার তখন নিজের জন্য না, পেটের বাচ্চাগুলোর জন্যই মনটা কেঁদে উঠেছিল। আহহা! এরা যে পৃথিবীর আলো-বাতাসই দেখল না এখনো। এরই মধ্যে কোনো কারণে রাস্তায় বের হয় এক লোক। চৌবাচ্চায় পানির মধ্যে হাঁসফাঁস করতে দেখলেন প্রাণীটিকে। তার ‘টলা টলা’ চিৎকারে কাছেধারের বাড়িগুলো থেকে দৌড়ে এল মানুষ। অনেক দিন পর মনের সুখে পিটিয়ে ভূত বানানো যাবে একটা টলাকে।
এখানকার লোকদের কাছে বনবিড়ালের পরিচয় টলা। প্রথমে পানি থেকে তোলা হলো ওটাকে। তারপর শুরু হলো লাঠির বাড়ি। একপর্যায়ে রক্ত ঝরতে শুরু করল শরীর থেকে। আরও কিছুক্ষণ এভাবে পেটালে হয়তো পৃথিবীর মায়াই কাটাতে হতো ওটাকে। তার পরই কীভাবে যেন তার ফুলে ওঠা পেটটা চোখে পড়ল একজনের। হায় হায়, এটার পেটে তো বাচ্চা! লোকটা চেঁচিয়ে উঠতেই অন্যদেরও নজরে পড়ল বিষয়টা। যা হোক, থামল লাঠির বাড়ি। একজনের পরামর্শে টংঘরগুলোর ধারে এনে বেঁধে রাখা হলো । কিছুটা চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হলো। কোনোভাবে রক্তাক্ত শরীরটা টেনে টেনে হারিয়ে গেল ঝোপঝাড়ের রাজ্যে।
পরে বনবিড়ালটির ভাগ্যে কিংবা ওটার পেটের বাচ্চাগুলোর ভাগ্যে কী ঘটেছিল, তা জানা সম্ভব হয়নি। একটা সময় নানার বাড়ি দেবনগরে যেতাম প্রচুর। আর যখনই যেতাম, শুনতাম টলার নানা কাহিনি। হয়তো পরিচিত এক বড় ভাই এসে বলল, ‘তুষার, ওইদিন আমাদের পুকুরের ধারে একটা টলা পিটায়ে মাইরা ফেলছি সবাই মিলা। হাঁস-মুরগি খেয়ে বহুত জ্বালাতন করছিল ওটা।’ আবার মামাতো ভাই অর্ণব হয়তো এসে বলল, ‘তুষার ভাইয়া, ওই দিন বড় সাইজের একটা টলা দেখছি। প্রায় কুকুরের কাছাকাছি হইব।’ কিংবা পাশের বাড়ির মামি বললেন, ‘দেখছ, তুমি টলা টলা করো আর আমার সাধের চারটা হাঁসরে মাইরা রাইখা গেছে শয়তানটা।’
ব্যস্ততায় কিংবা ব্যস্ততার অজুহাতে এখন নানার বাড়িতে আগের মতো যাওয়া হয় না। তবে হঠাৎ হঠাৎ মানে পড়ে দেবনগরের বনবিড়ালদের কথা, আর মনে পড়ে টলা নিয়ে গ্রামবাসীর সঙ্গে তর্কের কথা। তাঁদের কথা, ইতানে হাঁস-মুরগি খাইয়া সাফ কইরা লায়। দাম দিতে পারবা? তাইলে আর মারতাম না। অভাবের সংসারে একটা-দুটো মুরগি-হাঁস হারানোও তো তাদের জন্য অনেক ক্ষতি। তাই মরতে হবে টলা বা বন বিড়ালদের। আর তাই দেবনগর আর আশপাশের এলাকায় বন বিড়ালদের এখন দেখা যায় কম। কেবল রাতে মাঝে মাঝে দূর থেকে ভেসে আসা ডাক ক্রমেই হারাতে বসা অস্তিত্বের জানান দিয়ে যায়।
খুব স্বাস্থ্যবান একটা বনবিড়াল আবার দেখেছিলাম নরসিংদীর চরসিন্দুরে সরওয়ার পাঠান ভাইদের ওখানে বেড়াতে গিয়ে। ওখানে বন বিড়ালকে বলে বাওরাল। তবে সরওয়ার ভাইদের বাড়ির পাশের একটু নিচে বেশ ঝোপঝাড়ে এখনো বনবিড়ালদের আস্তানা। কখনো-সখনো মুরগি লোপাট হলেও তাঁদের বাড়িতে বনবিড়াল মারা নিষিদ্ধ। সরওয়ার ভাই একবার মেছো বিড়ালের বাচ্চা মনে করে বন বিড়ালের বাচ্চা নিয়ে এসেছিলেন। ওটাকে পুষেছিলেন। তার খুব বাধ্য ওই বনবিড়ালটার নাম ছিল এলসা। তবে ওটা অন্তত দুই যুগের বেশি আগের কাহিনি। আবার তাঁর নার্সারির ধারের একটা বড় গাছের গুঁড়িতে নিয়মিত নখের ধার পরীক্ষা করে প্রমাণ সাইজের একটার বনবিড়াল।
বনবিড়াল সম্পর্কে দু-চারটি তথ্য জানিয়ে রাখছি। আকারে, ওজনে পোষা বিড়ালের দ্বিগুণ বলতে পারেন একে। গায়ে ডোরা নেই, তবে লেজে কালো বলয়ের মতো থাকে। গায়ের রং ধূসর, বাদামি। মুরগি চুরির অপবাদ থাকলেও ওটা কালেভদ্রেই করে, প্রধান খাবার ইঁদুর, পাখি, ব্যাঙ। গাছে চড়ায় দারুণ পারদর্শী হওয়ায় পাখি শিকারেও ওস্তাদ। যদ্দুর জানা যায়, বছরে দুবার বাচ্চা দেয় এরা। জংলি বিড়াল, খাগড়া বিড়াল, জলাভূমির বিড়াল নামেও পরিচিত।
গোটা বাংলাদেশের বেশির ভাগ গ্রামে এখন এমনই বিপদে বনবিড়ালরা। কিন্তু আগেও তো মুরগি চুরির অপরাধে বন বিড়াল মারা যেত মানুষের হাতে। তখন তো এরা এতটা কমেনি সংখ্যায়। কারণ তখন এদের থাকার পরিবেশ ছিল, এরা সংখ্যায়ও ছিল বেশি। আর এখন আমরা ইচ্ছামতো গ্রামীণ বন ধ্বংস করে বনবিড়ালদের থাকার এমনকি প্রজননের পরিবেশও ধ্বংস করে দিয়েছি। তখন গ্রামের লোকজন নিজেরাই ইট পোড়াত। আর এই ইটের পাঁজায় বাসা বানাত বনবিড়ালেরা, বাচ্চা দিত। এখন তো আর মানুষ এভাবে ইট তৈরি করে না। ফলে নেই টলাদের থাকার জায়গাও। নেই আগের সেই গ্রামীণ বনও। গাছের কোটর, জলার তীরের ঝোপঝাড়েও বাসা বানায় এরা।
এদিকে একবার বড় হয়ে গেলে বনবিড়ালদের নাগাল পাওয়া দুঃসাধ্য হলেও বাচ্চাগুলো ধরতে তেমন বেগ পেতে হয় না। লুকানোর জায়গা কমে যাওয়ায় মা বনবিড়ালদের শত সতর্কতা সত্ত্বেও সহজেই খোঁজ পেয়ে যাচ্ছে দুষ্ট ছেলের দল। পরিণতি নিশ্চিত মৃত্যু।
এভাবেই যদি চলে, তাহলে একসময় মেছো বিড়ালদের মতো গ্রামীণ বন থেকে অদৃশ্য হয়ে যাবে এরাও, তখন বনবিড়াল দেখতে কিংবা এর মউপ মউপ ডাক শুনতেও আমাদের পাড়ি জমাতে হবে দূরের কোনো অরণ্যে। প্রায়ই বাংলাদেশের বিভিন্ন গ্রামে বনবিড়াল পিটিয়ে মারার আর এদের বাচ্চা ধরা পড়ার ঘটনা চোখে পড়ে পত্রিকায়।
অবশ্য সুন্দরবন, সাঙ্গু-মাতামুহুরি, লাউয়াছড়া থেকে শুরু করে বাংলাদেশের সব অরণ্যেই বনবিড়াল এখনো আছে মোটামুটি। মনে পড়ে, বহু বছর আগে হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের রেমার জঙ্গলে গিয়ে ওখানকার বিট অফিসের পাশেই ছোট্ট এক গোরস্থান দেখেছিলাম। বিট কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, ওখানে বন বিড়ালের আড্ডাখানা।
আশ্চর্য ঘটনা, ঢাকা শহরের সীমানার মধ্যেও খুব অল্প-বিস্তর হলেও এখনো টিকে আছে এরা। তবে ওই সব ঝোপঝাড়ময় জায়গাগুলোও খুব বেশি দিন খালি পড়ে থাকবে না। তখন ঢাকা শহর কিংবা এর আশপাশের জায়গার বনবিড়ালদেরও মানুষের পিটুনি খেয়ে মরতে হবে সন্দেহ নেই। শহর থেকে একটু দূরে সাভারের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো মোটামুটি ভালোভাবেই টিকে আছে এরা।
আজ বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস। এই দিনে আমার চাওয়া—ভালো থাকুক গ্রামীণ বন, পাহাড়ি বন ও ঢাকা শহরের বনবিড়ালেরা। তেমনি ভালো থাকুক গোটা পৃথিবীর বনবিড়ালেরা। আমরা মানুষ যদি একটু সদয় হই, একটু ভালোবাসা দেখাই সুন্দর এই প্রাণীর প্রতি, তাহলেই কেবল এটা সম্ভব হবে।

উত্তরাঞ্চলসহ সারা দেশেই শীত পড়তে শুরু করেছে। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগ ছাড়া দেশের বেশ কিছু অঞ্চলে তাপমাত্রা ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেছে। রাজশাহীতে আজ সোমবার সকাল ৯টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তিন ঘণ্টা আগে ভোর ৬টায় যা ছিল ১৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
১১ ঘণ্টা আগে
দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের দূষিত শহর তালিকায় দশের মধ্যে অবস্থান করছে ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলো। এর মধ্যে আজ সোমবার তালিকার প্রথম তিন স্থান দখল করে আছে দিল্লি, লাহোর ও ঢাকা।
১৫ ঘণ্টা আগে
ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। তবে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে। এ সময় দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমে যেতে পারে।
১৭ ঘণ্টা আগে
রাজধানী ঢাকা দীর্ঘস্থায়ী এবং বিপজ্জনক বায়ুদূষণের সংকটে ভুগছে। বাতাসের গুণগত মান (একিউআই) নিয়মিতভাবে ‘অস্বাস্থ্যকর’ থেকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ শ্রেণিতে থাকছে। আইকিউএয়ারসহ বৈশ্বিক বায়ু পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, শহরের এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) প্রায়ই ১৮০ (যা ‘অস্বাস্থ্যকর’ মাত্রা...
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

উত্তরাঞ্চলসহ সারা দেশেই শীত পড়তে শুরু করেছে। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগ ছাড়া দেশের বেশ কিছু অঞ্চলে তাপমাত্রা ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেছে। রাজশাহীতে আজ সোমবার সকাল ৯টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তিন ঘণ্টা আগে ভোর ৬টায় যা ছিল ১৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ সকাল ৯টার পূর্বাভাসে জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে দিন ও রাতে তাপমাত্রা আর কমতে পারে। এর মধ্যে দিনের বেলা তাপমাত্রা সামান্য কমলেও রাতের বেলা কমতে পারে ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও জানায়, মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এ অবস্থায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।
আবহাওয়াবিদ ড. ওমর ফারুক আজ সকালে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উত্তরাঞ্চলে শীত পড়তে শুরু করেছে। ক্রমান্বয়ে সারা দেশেই শীত বাড়বে। তবে আপাতত আরও দুই-তিন তাপমাত্রা কমবে। এর পর তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে।’

উত্তরাঞ্চলসহ সারা দেশেই শীত পড়তে শুরু করেছে। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগ ছাড়া দেশের বেশ কিছু অঞ্চলে তাপমাত্রা ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেছে। রাজশাহীতে আজ সোমবার সকাল ৯টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তিন ঘণ্টা আগে ভোর ৬টায় যা ছিল ১৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ সকাল ৯টার পূর্বাভাসে জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে দিন ও রাতে তাপমাত্রা আর কমতে পারে। এর মধ্যে দিনের বেলা তাপমাত্রা সামান্য কমলেও রাতের বেলা কমতে পারে ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও জানায়, মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এ অবস্থায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।
আবহাওয়াবিদ ড. ওমর ফারুক আজ সকালে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উত্তরাঞ্চলে শীত পড়তে শুরু করেছে। ক্রমান্বয়ে সারা দেশেই শীত বাড়বে। তবে আপাতত আরও দুই-তিন তাপমাত্রা কমবে। এর পর তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে।’

একটা সময় গ্রামীণ বনগুলোতে বেশ ভালো সংখ্যাতেই ছিল এরা। এমনকি ঢাকার বিভিন্ন এলাকায়ও দেখা মিলত। তবে যতই দিন যাচ্ছে, বন উজাড়ের কারণে সংকটে পড়ছে এরা। মানুষও এদের দেখলেই পিটিয়ে মেরে ফেলে। সবকিছু মিলিয়ে বনবিড়ালেরা আছে বড় বিপদে।
০৩ মার্চ ২০২৪
দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের দূষিত শহর তালিকায় দশের মধ্যে অবস্থান করছে ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলো। এর মধ্যে আজ সোমবার তালিকার প্রথম তিন স্থান দখল করে আছে দিল্লি, লাহোর ও ঢাকা।
১৫ ঘণ্টা আগে
ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। তবে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে। এ সময় দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমে যেতে পারে।
১৭ ঘণ্টা আগে
রাজধানী ঢাকা দীর্ঘস্থায়ী এবং বিপজ্জনক বায়ুদূষণের সংকটে ভুগছে। বাতাসের গুণগত মান (একিউআই) নিয়মিতভাবে ‘অস্বাস্থ্যকর’ থেকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ শ্রেণিতে থাকছে। আইকিউএয়ারসহ বৈশ্বিক বায়ু পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, শহরের এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) প্রায়ই ১৮০ (যা ‘অস্বাস্থ্যকর’ মাত্রা...
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের দূষিত শহর তালিকায় দশের মধ্যে অবস্থান করছে ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলো। এর মধ্যে আজ সোমবার তালিকার প্রথম তিন স্থান দখল করে আছে দিল্লি, লাহোর ও ঢাকা।
রাজধানী শহর ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণের সংকটে ভুগছে। আজ বায়ুদূষণে বিশ্বের তৃতীয় দূষিত শহর হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। শহরটির বাতাসের গুণগত মান (একিউআই) নিয়মিতভাবে ‘অস্বাস্থ্যকর’ থেকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ শ্রেণিতে থাকছে।
আইকিউএয়ারসহ বৈশ্বিক বায়ু পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, শহরের এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) প্রায়ই ১৮০ (যা ‘অস্বাস্থ্যকর’ মাত্রা নির্দেশ করে) বা তার চেয়ে বেশি রেকর্ড করা হচ্ছে। দৈনিক গড় মান প্রায়ই ১৫০-এর ওপরে থাকছে, যা ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে চিহ্নিত। এই উদ্বেগজনক সংখ্যাগুলো বাসিন্দাদের জন্য একটি তাৎক্ষণিক এবং গুরুতর জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি তুলে ধরেছে।
বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের আজ সকাল ৯টার রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার গড় বায়ুমান ২৬২। যা খুব অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।
বায়ুদূষণের শীর্ষে থাকা ভারতের দিল্লির বায়ুমান আজ ৪৯০, যা দুর্যোগপূর্ণ বাতাসের নির্দেশক। শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো পাকিস্তানের লাহোর (৩৯৪), ভারতের কলকাতা (১৯৯) ও বসনিয়া হার্জেগোভিনার সারাজেভো (১৭৭)।
ঢাকার নিম্নমানের বাতাসের প্রধান কারণ হলো পিএম ২.৫ বা সূক্ষ্ম কণা। এই অতিক্ষুদ্র কণাগুলো, যাদের ব্যাস ২.৫ মাইক্রোমিটারের চেয়েও কম, ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করে রক্তপ্রবাহে মিশে যেতে পারে। এর ফলে হাঁপানি (অ্যাজমা) বৃদ্ধি, ব্রঙ্কাইটিস এবং হৃদ্রোগের মতো শ্বাসযন্ত্র ও হৃদ্যন্ত্রের গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।
এদিকে রাজধানী ঢাকার যে কয়টি এলাকায় আজ সকাল ৯টার দিকে ভয়াবহ মাত্রার বায়ুদূষণ রেকর্ড করা হয়েছে, সেগুলো হলো— আইসিডিডিআরবি ৩০৬, দক্ষিণ পল্লবী ২৭৪, ইস্টার্ন হাউজিং ২৭১, বেচারাম দেউড়ি ২৬৩, বেজ এজওয়াটার আউটডোর ২৬২, কল্যাণপুর ২৫৫, গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ২৩৫ ও গোড়ান ২৩২।
শীতকালীন আবহাওয়ার ধরন, যানবাহন ও শিল্প থেকে অনিয়ন্ত্রিত নির্গমন, চলমান নির্মাণকাজ থেকে সৃষ্ট ধুলো এবং আশপাশের ইটভাটাগুলো এই দূষণ সংকটের জন্য দায়ী।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১ থেকে ২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।
বাতাসের এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে করণীয়
অত্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠী: শিশু, বয়স্ক, হৃদ্রোগ বা শ্বাসকষ্টের রোগীরা সব ধরনের ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।
সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: তাদের উচিত বাইরে কাটানো সময় সীমিত করা এবং শারীরিক পরিশ্রমের কাজ এড়িয়ে চলা।
যদি বাইরে বের হতে হয়, তবে অবশ্যই দূষণ রোধে কার্যকর মাস্ক ব্যবহার করুন।
ঘরের ভেতরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন এবং দূষিত বাতাস প্রবেশ ঠেকাতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।

দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের দূষিত শহর তালিকায় দশের মধ্যে অবস্থান করছে ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলো। এর মধ্যে আজ সোমবার তালিকার প্রথম তিন স্থান দখল করে আছে দিল্লি, লাহোর ও ঢাকা।
রাজধানী শহর ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণের সংকটে ভুগছে। আজ বায়ুদূষণে বিশ্বের তৃতীয় দূষিত শহর হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। শহরটির বাতাসের গুণগত মান (একিউআই) নিয়মিতভাবে ‘অস্বাস্থ্যকর’ থেকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ শ্রেণিতে থাকছে।
আইকিউএয়ারসহ বৈশ্বিক বায়ু পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, শহরের এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) প্রায়ই ১৮০ (যা ‘অস্বাস্থ্যকর’ মাত্রা নির্দেশ করে) বা তার চেয়ে বেশি রেকর্ড করা হচ্ছে। দৈনিক গড় মান প্রায়ই ১৫০-এর ওপরে থাকছে, যা ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে চিহ্নিত। এই উদ্বেগজনক সংখ্যাগুলো বাসিন্দাদের জন্য একটি তাৎক্ষণিক এবং গুরুতর জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি তুলে ধরেছে।
বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের আজ সকাল ৯টার রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার গড় বায়ুমান ২৬২। যা খুব অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।
বায়ুদূষণের শীর্ষে থাকা ভারতের দিল্লির বায়ুমান আজ ৪৯০, যা দুর্যোগপূর্ণ বাতাসের নির্দেশক। শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো পাকিস্তানের লাহোর (৩৯৪), ভারতের কলকাতা (১৯৯) ও বসনিয়া হার্জেগোভিনার সারাজেভো (১৭৭)।
ঢাকার নিম্নমানের বাতাসের প্রধান কারণ হলো পিএম ২.৫ বা সূক্ষ্ম কণা। এই অতিক্ষুদ্র কণাগুলো, যাদের ব্যাস ২.৫ মাইক্রোমিটারের চেয়েও কম, ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করে রক্তপ্রবাহে মিশে যেতে পারে। এর ফলে হাঁপানি (অ্যাজমা) বৃদ্ধি, ব্রঙ্কাইটিস এবং হৃদ্রোগের মতো শ্বাসযন্ত্র ও হৃদ্যন্ত্রের গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।
এদিকে রাজধানী ঢাকার যে কয়টি এলাকায় আজ সকাল ৯টার দিকে ভয়াবহ মাত্রার বায়ুদূষণ রেকর্ড করা হয়েছে, সেগুলো হলো— আইসিডিডিআরবি ৩০৬, দক্ষিণ পল্লবী ২৭৪, ইস্টার্ন হাউজিং ২৭১, বেচারাম দেউড়ি ২৬৩, বেজ এজওয়াটার আউটডোর ২৬২, কল্যাণপুর ২৫৫, গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ২৩৫ ও গোড়ান ২৩২।
শীতকালীন আবহাওয়ার ধরন, যানবাহন ও শিল্প থেকে অনিয়ন্ত্রিত নির্গমন, চলমান নির্মাণকাজ থেকে সৃষ্ট ধুলো এবং আশপাশের ইটভাটাগুলো এই দূষণ সংকটের জন্য দায়ী।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১ থেকে ২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।
বাতাসের এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে করণীয়
অত্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠী: শিশু, বয়স্ক, হৃদ্রোগ বা শ্বাসকষ্টের রোগীরা সব ধরনের ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।
সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: তাদের উচিত বাইরে কাটানো সময় সীমিত করা এবং শারীরিক পরিশ্রমের কাজ এড়িয়ে চলা।
যদি বাইরে বের হতে হয়, তবে অবশ্যই দূষণ রোধে কার্যকর মাস্ক ব্যবহার করুন।
ঘরের ভেতরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন এবং দূষিত বাতাস প্রবেশ ঠেকাতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।

একটা সময় গ্রামীণ বনগুলোতে বেশ ভালো সংখ্যাতেই ছিল এরা। এমনকি ঢাকার বিভিন্ন এলাকায়ও দেখা মিলত। তবে যতই দিন যাচ্ছে, বন উজাড়ের কারণে সংকটে পড়ছে এরা। মানুষও এদের দেখলেই পিটিয়ে মেরে ফেলে। সবকিছু মিলিয়ে বনবিড়ালেরা আছে বড় বিপদে।
০৩ মার্চ ২০২৪
উত্তরাঞ্চলসহ সারা দেশেই শীত পড়তে শুরু করেছে। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগ ছাড়া দেশের বেশ কিছু অঞ্চলে তাপমাত্রা ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেছে। রাজশাহীতে আজ সোমবার সকাল ৯টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তিন ঘণ্টা আগে ভোর ৬টায় যা ছিল ১৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
১১ ঘণ্টা আগে
ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। তবে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে। এ সময় দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমে যেতে পারে।
১৭ ঘণ্টা আগে
রাজধানী ঢাকা দীর্ঘস্থায়ী এবং বিপজ্জনক বায়ুদূষণের সংকটে ভুগছে। বাতাসের গুণগত মান (একিউআই) নিয়মিতভাবে ‘অস্বাস্থ্যকর’ থেকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ শ্রেণিতে থাকছে। আইকিউএয়ারসহ বৈশ্বিক বায়ু পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, শহরের এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) প্রায়ই ১৮০ (যা ‘অস্বাস্থ্যকর’ মাত্রা...
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

সারা দেশের প্রায় সব অঞ্চলে শীতের অনুভূতি বাড়ছে। আজ সোমবার সকাল ৬টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল রাজশাহী ও পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়ায় ১৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় রাজধানী ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আগামী কয়েক দিন তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে কমতে থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
সারা দেশে আজকের আবহাওয়া অধিদপ্তর পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, আজ সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। একই সঙ্গে সারা দেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
এদিকে সোমবার সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার জন্য ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। তবে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে। এ সময় দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমে যেতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও জানায়, আজ সকাল ৬টায় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৭৯ শতাংশ। আজ সূর্যাস্ত হবে সন্ধ্যা ৫টা ১৪ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ভোর ৬টা ১১ মিনিটে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত সারা দেশের সম্ভাব্য পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, আজ সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। একই সঙ্গে সারা দেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
আবহাওয়াবিদ ড. ওমর ফারুক আজ সকালে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উত্তরাঞ্চলে শীত পড়তে শুরু করেছে। ক্রমান্বয়ে সারা দেশেই শীত বাড়বে। তবে আপাতত আরও দুই-তিন তাপমাত্রা কমবে। এর পর তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে।’

সারা দেশের প্রায় সব অঞ্চলে শীতের অনুভূতি বাড়ছে। আজ সোমবার সকাল ৬টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল রাজশাহী ও পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়ায় ১৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় রাজধানী ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আগামী কয়েক দিন তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে কমতে থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
সারা দেশে আজকের আবহাওয়া অধিদপ্তর পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, আজ সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। একই সঙ্গে সারা দেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
এদিকে সোমবার সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার জন্য ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। তবে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে। এ সময় দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমে যেতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও জানায়, আজ সকাল ৬টায় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৭৯ শতাংশ। আজ সূর্যাস্ত হবে সন্ধ্যা ৫টা ১৪ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ভোর ৬টা ১১ মিনিটে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত সারা দেশের সম্ভাব্য পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, আজ সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। একই সঙ্গে সারা দেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
আবহাওয়াবিদ ড. ওমর ফারুক আজ সকালে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উত্তরাঞ্চলে শীত পড়তে শুরু করেছে। ক্রমান্বয়ে সারা দেশেই শীত বাড়বে। তবে আপাতত আরও দুই-তিন তাপমাত্রা কমবে। এর পর তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে।’

একটা সময় গ্রামীণ বনগুলোতে বেশ ভালো সংখ্যাতেই ছিল এরা। এমনকি ঢাকার বিভিন্ন এলাকায়ও দেখা মিলত। তবে যতই দিন যাচ্ছে, বন উজাড়ের কারণে সংকটে পড়ছে এরা। মানুষও এদের দেখলেই পিটিয়ে মেরে ফেলে। সবকিছু মিলিয়ে বনবিড়ালেরা আছে বড় বিপদে।
০৩ মার্চ ২০২৪
উত্তরাঞ্চলসহ সারা দেশেই শীত পড়তে শুরু করেছে। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগ ছাড়া দেশের বেশ কিছু অঞ্চলে তাপমাত্রা ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেছে। রাজশাহীতে আজ সোমবার সকাল ৯টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তিন ঘণ্টা আগে ভোর ৬টায় যা ছিল ১৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
১১ ঘণ্টা আগে
দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের দূষিত শহর তালিকায় দশের মধ্যে অবস্থান করছে ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলো। এর মধ্যে আজ সোমবার তালিকার প্রথম তিন স্থান দখল করে আছে দিল্লি, লাহোর ও ঢাকা।
১৫ ঘণ্টা আগে
রাজধানী ঢাকা দীর্ঘস্থায়ী এবং বিপজ্জনক বায়ুদূষণের সংকটে ভুগছে। বাতাসের গুণগত মান (একিউআই) নিয়মিতভাবে ‘অস্বাস্থ্যকর’ থেকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ শ্রেণিতে থাকছে। আইকিউএয়ারসহ বৈশ্বিক বায়ু পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, শহরের এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) প্রায়ই ১৮০ (যা ‘অস্বাস্থ্যকর’ মাত্রা...
২ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাজধানী ঢাকা দীর্ঘস্থায়ী এবং বিপজ্জনক বায়ুদূষণের সংকটে ভুগছে। বাতাসের গুণগত মান (একিউআই) নিয়মিতভাবে ‘অস্বাস্থ্যকর’ থেকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ শ্রেণিতে থাকছে।
আইকিউএয়ারসহ বৈশ্বিক বায়ু পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, শহরের এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) প্রায়ই ১৮০ (যা ‘অস্বাস্থ্যকর’ মাত্রা নির্দেশ করে) বা তার চেয়ে বেশি রেকর্ড করা হচ্ছে। দৈনিক গড় মান প্রায়ই ১৫০-এর ওপরে থাকছে, যা ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে চিহ্নিত। এই উদ্বেগজনক সংখ্যাগুলো বাসিন্দাদের জন্য একটি তাৎক্ষণিক এবং গুরুতর জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি তুলে ধরেছে।
অবশ্য শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে আজ রোববার এই তালিকায় শীর্ষে আছে ভারতের দিল্লি। শহরটির অবস্থা আজ দুর্যোগপূর্ণ। আজ ঢাকার বাতাসেও দূষণ বেড়েছে। ঢাকার বাতাস আজ সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর।
বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের আজ সকাল ৯টার রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার গড় বায়ুমান ২১৩। বায়ুদূষণের শীর্ষ শহরগুলোর তালিকায় আজ চতুর্থ স্থানে আছে ঢাকা।
বায়ুদূষণের শীর্ষে থাকা ভারতের দিল্লির বায়ুমান আজ ৬৮৬, যা দুর্যোগপূর্ণ বাতাসের নির্দেশক। শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো পাকিস্তানের লাহোর (৩৫৪), কুয়েতের কুয়েত সিটি (২৮৬), ভারতের কলকাতা (১৯৬), পাকিস্তানের করাচি (১৬১) এবং ইরাকের বাগদাদ (১৫৬)।
ঢাকার নিম্নমানের বাতাসের প্রধান কারণ হলো পিএম ২.৫ বা সূক্ষ্ম কণা। এই অতিক্ষুদ্র কণাগুলো, যাদের ব্যাস ২.৫ মাইক্রোমিটারের চেয়েও কম, ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করে রক্তপ্রবাহে মিশে যেতে পারে। এর ফলে হাঁপানি (অ্যাজমা) বৃদ্ধি, ব্রঙ্কাইটিস এবং হৃদ্রোগের মতো শ্বাসযন্ত্র ও হৃদ্যন্ত্রের গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।
এদিকে রাজধানী ঢাকার যে কয়টি এলাকায় আজ সকাল ৯টার দিকে ভয়াবহ মাত্রার বায়ুদূষণ রেকর্ড করা হয়েছে, সেগুলো হলো ইস্টার্ন হাউজিং ২২৬, দক্ষিণ পল্লবী ২২৭, কল্যাণপুর ২১৩, বেজ এজওয়াটার ২২৭, আইসিডিডিআরবি ২৫০, গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ১৯৬, গোরান ১৯৪ এবং বেচারাম দেউড়ি ২২৯।
শীতকালীন আবহাওয়ার ধরন, যানবাহন ও শিল্প থেকে অনিয়ন্ত্রিত নির্গমন, চলমান নির্মাণকাজ থেকে সৃষ্ট ধুলো এবং আশপাশের ইটভাটাগুলো এই দূষণ সংকটের জন্য দায়ী।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১ থেকে ২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।
বাতাসের এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে করণীয়
অত্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠী: শিশু, বয়স্ক, হৃদ্রোগ বা শ্বাসকষ্টের রোগীরা সব ধরনের ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।
সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: তাদের উচিত বাইরে কাটানো সময় সীমিত করা এবং শারীরিক পরিশ্রমের কাজ এড়িয়ে চলা।
যদি বাইরে বের হতে হয়, তবে অবশ্যই দূষণ রোধে কার্যকর মাস্ক ব্যবহার করুন।
ঘরের ভেতরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন এবং দূষিত বাতাস প্রবেশ ঠেকাতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।

রাজধানী ঢাকা দীর্ঘস্থায়ী এবং বিপজ্জনক বায়ুদূষণের সংকটে ভুগছে। বাতাসের গুণগত মান (একিউআই) নিয়মিতভাবে ‘অস্বাস্থ্যকর’ থেকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ শ্রেণিতে থাকছে।
আইকিউএয়ারসহ বৈশ্বিক বায়ু পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, শহরের এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) প্রায়ই ১৮০ (যা ‘অস্বাস্থ্যকর’ মাত্রা নির্দেশ করে) বা তার চেয়ে বেশি রেকর্ড করা হচ্ছে। দৈনিক গড় মান প্রায়ই ১৫০-এর ওপরে থাকছে, যা ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে চিহ্নিত। এই উদ্বেগজনক সংখ্যাগুলো বাসিন্দাদের জন্য একটি তাৎক্ষণিক এবং গুরুতর জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি তুলে ধরেছে।
অবশ্য শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে আজ রোববার এই তালিকায় শীর্ষে আছে ভারতের দিল্লি। শহরটির অবস্থা আজ দুর্যোগপূর্ণ। আজ ঢাকার বাতাসেও দূষণ বেড়েছে। ঢাকার বাতাস আজ সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর।
বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের আজ সকাল ৯টার রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার গড় বায়ুমান ২১৩। বায়ুদূষণের শীর্ষ শহরগুলোর তালিকায় আজ চতুর্থ স্থানে আছে ঢাকা।
বায়ুদূষণের শীর্ষে থাকা ভারতের দিল্লির বায়ুমান আজ ৬৮৬, যা দুর্যোগপূর্ণ বাতাসের নির্দেশক। শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো পাকিস্তানের লাহোর (৩৫৪), কুয়েতের কুয়েত সিটি (২৮৬), ভারতের কলকাতা (১৯৬), পাকিস্তানের করাচি (১৬১) এবং ইরাকের বাগদাদ (১৫৬)।
ঢাকার নিম্নমানের বাতাসের প্রধান কারণ হলো পিএম ২.৫ বা সূক্ষ্ম কণা। এই অতিক্ষুদ্র কণাগুলো, যাদের ব্যাস ২.৫ মাইক্রোমিটারের চেয়েও কম, ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করে রক্তপ্রবাহে মিশে যেতে পারে। এর ফলে হাঁপানি (অ্যাজমা) বৃদ্ধি, ব্রঙ্কাইটিস এবং হৃদ্রোগের মতো শ্বাসযন্ত্র ও হৃদ্যন্ত্রের গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।
এদিকে রাজধানী ঢাকার যে কয়টি এলাকায় আজ সকাল ৯টার দিকে ভয়াবহ মাত্রার বায়ুদূষণ রেকর্ড করা হয়েছে, সেগুলো হলো ইস্টার্ন হাউজিং ২২৬, দক্ষিণ পল্লবী ২২৭, কল্যাণপুর ২১৩, বেজ এজওয়াটার ২২৭, আইসিডিডিআরবি ২৫০, গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ১৯৬, গোরান ১৯৪ এবং বেচারাম দেউড়ি ২২৯।
শীতকালীন আবহাওয়ার ধরন, যানবাহন ও শিল্প থেকে অনিয়ন্ত্রিত নির্গমন, চলমান নির্মাণকাজ থেকে সৃষ্ট ধুলো এবং আশপাশের ইটভাটাগুলো এই দূষণ সংকটের জন্য দায়ী।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১ থেকে ২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।
বাতাসের এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে করণীয়
অত্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠী: শিশু, বয়স্ক, হৃদ্রোগ বা শ্বাসকষ্টের রোগীরা সব ধরনের ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।
সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: তাদের উচিত বাইরে কাটানো সময় সীমিত করা এবং শারীরিক পরিশ্রমের কাজ এড়িয়ে চলা।
যদি বাইরে বের হতে হয়, তবে অবশ্যই দূষণ রোধে কার্যকর মাস্ক ব্যবহার করুন।
ঘরের ভেতরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন এবং দূষিত বাতাস প্রবেশ ঠেকাতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।

একটা সময় গ্রামীণ বনগুলোতে বেশ ভালো সংখ্যাতেই ছিল এরা। এমনকি ঢাকার বিভিন্ন এলাকায়ও দেখা মিলত। তবে যতই দিন যাচ্ছে, বন উজাড়ের কারণে সংকটে পড়ছে এরা। মানুষও এদের দেখলেই পিটিয়ে মেরে ফেলে। সবকিছু মিলিয়ে বনবিড়ালেরা আছে বড় বিপদে।
০৩ মার্চ ২০২৪
উত্তরাঞ্চলসহ সারা দেশেই শীত পড়তে শুরু করেছে। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগ ছাড়া দেশের বেশ কিছু অঞ্চলে তাপমাত্রা ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেছে। রাজশাহীতে আজ সোমবার সকাল ৯টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তিন ঘণ্টা আগে ভোর ৬টায় যা ছিল ১৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
১১ ঘণ্টা আগে
দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের দূষিত শহর তালিকায় দশের মধ্যে অবস্থান করছে ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলো। এর মধ্যে আজ সোমবার তালিকার প্রথম তিন স্থান দখল করে আছে দিল্লি, লাহোর ও ঢাকা।
১৫ ঘণ্টা আগে
ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। তবে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে। এ সময় দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমে যেতে পারে।
১৭ ঘণ্টা আগে