ইশতিয়াক হাসান

একটা সময় প্রায় গোটা বাংলাদেশেই ছিল চিতা বাঘেদের রাজ্য। গত শতকের মাঝামাঝি সময়ে, এমনকি উত্তরা ও মিরপুরেও দেখা মিলত এদের। মধুপুর ও ভাওয়ালের গড় তো ছিল চিতা বাঘেদের প্রিয় বিচরণ ভূমি। সিলেট বিভাগের চা বাগানগুলোতেও মহানন্দে চষে বেড়াত তারা। তবে এখন পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, অনেকে বিশ্বাসই করতে চান না বাংলাদেশের বনাঞ্চলে আর বুনো চিতা বাঘ আছে। কিন্তু শত বিপদ মাথায় নিয়ে এখনো এ দেশের প্রকৃতিতে সত্যি আছে এই প্রাণীটি। চলুন তাহলে বেরিয়ে পড়ি চিতা বাঘের খোঁজে।
উত্তরের মরণফাঁদ
নীলফামারী সদর উপজেলার চওড়া বড়গাছা ইউনিয়নের কাঞ্চনপাড়া গ্রাম। সেখানে অলিয়ার রহমানের মুরগির খামার। তিন হাজারের বেশি মুরগি আছে খামারে। বন বিড়াল ও শিয়ালের কবল থেকে মুরগি বাঁচাতে খামার মালিক পুরো খামারটি জিআই তার দিয়ে ঘিরে বৈদ্যুতিক সংযোগ দিয়ে দেন। এতে ওই বৈদ্যুতিক তারে শক খেয়ে মুরগির লোভে হানা দেওয়া কয়েকটি বনবিড়াল ও শিয়াল মারা পড়ে। তবে গত শুক্রবার রাতে ঘটল অস্বাভাবিক এক কাণ্ড। রাত তখন পৌনে ৩ টা। খামারের পেছনে বন্যপ্রাণীর আওয়াজ পাওয়া গেল। দেরি না করে সুইচ টিপে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হলো। এর কিছুক্ষণ পরই একটি জন্তু বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে পড়ার শব্দ শোনা গেল। তবে আওয়াজটা বলে দিচ্ছিল বন বিড়াল বা শিয়াল নয়, অনেক বড় কোনো জন্তু আটকা পড়েছে ফাঁদে। আতঙ্কিত হয়ে বাড়ির মানুষেরা টর্চ লাইট জ্বেলে চমকে ওঠেন। একটি চিতা বাঘ বিদ্যুতায়িত তারের স্পর্শে মরে পড়ে আছে।
বাঘ মারা পড়েছে—এ তো বড় আনন্দের খবর; অন্তত আমাদের কাছে, তাই না! সকালে মৃত বাঘটির গলায় দড়ি পেঁচিয়ে বাইরে আনা হতেই একে দেখতে আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে কয়েক হাজার মানুষ হাজির। তবে এলাকার মানুষের মনে আরেকটি বড় দুশ্চিন্তা ভর করেছে, তা হলো আরও একটি চিতা বাঘ এলাকায় রয়ে যাওয়ার গুজব। পত্রিকা মারফত এবং পঞ্চগড়ের বন্যপ্রাণীপ্রেমী ও আলোকচিত্রী ফিরোজ আল সাবাহর সঙ্গে কথা বলে মোটামুটি জানতে পারি নীলফামারীর চিতা বাঘ সম্পর্কে।
তবে কেউ কেউ অলিয়ার রহমানের বাড়ির পেছনের ভুট্টা খেতে ওপর একটি চিতা বাঘ অদৃশ্য হওয়ার কথা বললেও নিশ্চিত প্রমাণ মেলেনি। তবে নিঃসন্দেহে চিতা বাঘটার ভাগ্য ভালো। না হলে মানুষের পিটুনিতে ওটাকে যে পৃথিবীর মায়া কাটাতে হতো সন্দেহ নেই।। গত প্রায় ১৪ বছরে রংপুর বিভাগে আটটি চিতাবাঘের মৃত্যুর ঘটনা এই ইঙ্গিতই দিচ্ছে। এদের বেশির ভাগকে ধাওয়া করে পিটিয়ে মারা হয়েছে।
এই অঞ্চলের পঞ্চগড়েই জীবিত চিতা বাঘের দুর্লভ একটি ছবি তুলছিলেন বন্যপ্রাণীপ্রেমী ও আলোকচিত্রী ফিরোজ আল সাবাহ। সেটা ২০১৮ সালে। একটা ঝোপে আশ্রয় নিয়েছিল বাঘটা। চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলেছিল উৎসুক জনতা। মরিয়া চিতা বাঘটা হুংকার দিচ্ছিল, লেজ নাচাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, যেকোনো মুহূর্তে ঝোপ থেকে লাফ দেবে। এর মধ্যেই কাছে গিয়ে কয়েকটা ছবি তোলেন সাবাহ। অবশ্য উত্তেজিত জনতার রোষ থেকে আশ্চর্য সুন্দর সেই বাঘটিকে বাঁচানো যায়নি।
এল কীভাবে
কিন্তু ঘটনা হলো নীলফামারীতে চিতা বাঘ এল কীভাবে? এটা সত্যি—এক সময় পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম এলাকায় চিতা বাঘেদের দেখা মিলত বিস্তর। কিন্তু বহু বছর ধরেই এই অঞ্চলে চিতা বাঘ আশ্রয় নেওয়ার মতো বড় বন নেই। তাই এদিকটায় চিতা বাঘেদের বাসও নেই। তবে কথা হলো আমাদের উত্তরের এই জেলাগুলোর ওপাশেই ভারতের ডুয়ার্স এলাকা। চিতা বাঘের আড্ডাখানা। এখানকার চিতা বাঘেরা ডুয়ার্সের সবুজ চা বাগানে ঘুরে বেড়ায় মনের আনন্দে। আর ওগুলোর মধ্যে যেগুলো একটু দুর্ভাগা, সেগুলো আমাদের নীলফামারী, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম এলাকায় চলে আসে। তার পর কোনো গৃহস্থের মুরগির খামারে হানা দেওয়ার অপরাধে কিংবা নিজেদের হলুদে-কালোয় মেশানো সুন্দর চেহারাটা প্রকাশ পেয়ে যাওয়ার কারণে মারা পড়ে গ্রামবাসীদের পিটুনিতে। অথচ আমাদের বরং প্রকৃতির আশ্চর্য সুন্দর এই প্রাণীগুলো এখনো এদিকটায় পা দেওয়ায় খুশি হওয়ার কথা। এই ভেবে ভালো লাগছে যে, পিতৃপুরুষের পুরোনো আস্তানাকে এখনো একেবারে ভুলে যায়নি নয়া জমানার চিতা বাঘেরা।
পাহাড়ি বনের চিতা বাঘ
গল্পটা চিতা বাঘ নিয়ে। এখন বাংলাদেশে ওদের মূল আস্তানা পাহাড়ি বনে। তাই সেদিকে একটু নজর দিই। মাতামুহুরী সংরক্ষিত বন, আলীকদম। মুরং এক যুবক যাচ্ছেন জুমের খেতে। যে পথটা দিয়ে যাচ্ছেন, অরণ্য বেশ গভীর। হঠাৎ দেখলেন ওটাকে। বিদ্যুৎ চমকের মতো লাফিয়ে পড়ল তাঁর পথের একটু সামনে। হলুদ জমিনে কালো ফোঁটার চিতা বাঘ। বহু দিন পর আশ্চর্য সুন্দর এই প্রাণীটিকে দেখলেন মুরং যুবক। কাঁটা দিয়ে উঠল শরীর, রোমাঞ্চে। একবার ঘাড় ঘুরিয়ে তাকে দেখল জন্তুটা। তারপরই এক লাফে হারিয়ে গেল পাশের জঙ্গলে। কোনো উপন্যাস, বা পুরোনো দিনের শিকার কাহিনির অংশ নয় এটি। ঘটনাটা গত বছরের এপ্রিলের।
ওই ঘটনার ঠিক এক মাস আগে চলে যাই টাইম মেশিনে চেপে। এবারের ঘটনাস্থল বান্দরবানের থানচির সাঙ্গু সংরক্ষিত বন। মুরংদের একটি দল জঙ্গলে ঢুকেছে; ইচ্ছে, মাছ শিকার। সঙ্গে তাগড়া কয়েকটা কুকুর। এই কুকুরগুলো হরিণ, শূকরের মতো বন্যপ্রাণী শিকারেও সাহায্য করে তাঁদের। এ সময়ই কুকুরগুলো ঘেউ ঘেউ শুরু করল। কণ্ঠ বলে দিচ্ছে, কিছুটা আতঙ্কিত এরা। তারপরই মুরংদের চোখে পড়ল জন্তুটার দিকে। পাহাড় থেকে নেমে এসেছে। আশ্চর্য সুন্দর এক চিতা বাঘ। বেচারা আচমকা মানুষ, আর কুকুরের দলের সামনে চলে এসেছে। এমনিতে অবশ্য চিতা বাঘের প্রিয় খাবারের তালিকায় কুকুর আছে ওপরের দিকে। তবে মানুষ কী জিনিস—এটা সে এত দিনে বেশ বুঝে গিয়েছে। সরে পড়তে শুরু করল লাজুক প্রাণীটা।
তবে সঙ্গে মালিক থাকাতে সাহস আকাশ ছুঁয়েছে শিকারি কুকুরগুলোর। তাড়া করল ওটাকে। পেছন পেছন হই হল্লা করতে করতে চলল মারমারাও। জঙ্গলের এক পাশে কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়ছিল চিতাটা। তবে তখনই খেপে গিয়ে করাতচেরা কণ্ঠে গর্জে উঠল জন্তুটা। কুকরগুলো ভয়ে পিছু হটল। মুহূর্তে জঙ্গলে ঢুকে পড়ল ধূর্ত জন্তুটা। তবে এর আগেই একটা প্রমাণ রেখে গেল। মারমা দলটির এক তরুণ দলছুট হয়ে পাশের এক টিলায় উঠে পড়েছিল। সেখান থেকে চিতা বাঘটাকে বন্দী করে ফেলল মোবাইলের ক্যামেরায়।
একটা সময় অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন, বাংলাদেশে বুঝি চিতা বাঘ আর নেই। তবে নানা তথ্য-প্রমাণ জানান দিচ্ছিল, এরা আছে। তবে প্রমাণ মিলছিল না। প্রথম নিশ্চিত প্রমাণ হাজির করে ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্স (সিসিএ) নামের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে কাজ করা সংগঠনটি। ২০১৫ সালে সাঙ্গু রিজার্ভে তাদের ক্যামেরা ট্র্যাপে বন্দী হয় এক চিতা বাঘ। তার পর ২০২১ সালে সিসিএর এক পাহাড়ি প্যারা বায়োলজিস্ট সরাসরি ছবি তুলে ফেললেন চিতা বাঘের।
চিতা বাঘ মিতা আমার
আমার সবচেয়ে পছন্দের বন্য প্রাণীগুলোর একটি চিতা বাঘ। তাই যে জঙ্গলে যাই, প্রিয় জন্তুটির খোঁজ নিই। কখনো আবার এদের ট্রেইল অনুসরণ করে সন্ধানে বের হয়ে পড়ি। একসময় বাংলাদেশের অনেক বনেই দেখা মিলত এদের। ছিল ঢাকা ও আশপাশের এলাকায়ও। এমনকি আজ থেকে বছর ষাটেক আগেও ঢাকার উত্তরা আর মিরপুরে চিতাবাঘ শিকারের কথা বলেছেন এনায়েত মওলা তাঁর ‘যখন শিকারি ছিলাম’ বইয়ে।
এনায়েত মাওলা বইটিতে জুড়ির রত্না ও তার পাশের সাগরনাল চা বাগানের জঙ্গলে চিতা বাঘ ও বাঘ শিকারের রোমহর্ষক বিবরণ আছে! তাই সেই ২০০৭-০৮ সালের দিকে ঘুরে এসেছিলাম ওদিকটা। অদ্ভুত এক রাত কেটেছিল পুটিছড়া বাংলোতে। সন্ধ্যা ঘনানোর ঠিক আগে বাংলোর টিলা থেকে নেমে হাঁটার সময় চা বাগানে আলাপ জমে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে। তাঁদের কাছে এখানে নতুন বসতি স্থাপনের পর মশাল দিয়ে চিতা বাঘ তাড়ানোর গল্প চোখ বড় বড় করে শুনেছি নব্বইয়ের দশকে। রাগনার বনে ঘোরার সময় স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করেন, এখনো পাথারিয়া রেঞ্জের পাহাড়ে আছে চিতা বাঘেরা।
এর দু-এক বছর পর পাথারিয়া পাহাড়ের আরেক বন জুড়ির লাঠিটিলায় গিয়ে দেখা হয়েছিল বন বিভাগের ভিলেজার মন্টু মিয়া, আর ফখরুদ্দীনের সঙ্গে। তাঁরাই দিল খবর—তিনটি গরু জঙ্গলে চরে বেড়ানোর সময় মারা পড়ে চিতা বাঘের আক্রমণে। প্রথম দুটো মারা পড়ে একই দিনে, আরেকটা ছয় মাস পর। প্রতি শীতেই চিতার ডাক শোনেন তাঁরা। সন্দেহ প্রকাশ করতেই, ফখরুদ্দীন আমাদের চিতা বাঘের ডাক নকল করে শোনাল। চমকে উঠলাম, ভুল হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। চিতার সেই হুবহু করাতচেরার ডাকই অনুকরণ করেছেন তিনি। কাছাকাছি সময়ে একটি চিতা বাঘকে গ্রামবাসীরা বিষ টোপ দিয়ে মারার ঘটনা জানান, বন বিভাগের ডেপুটি রেঞ্জার নুরুজ্জামান ভাই।
স্কুলে পড়ি তখন। হবিগঞ্জে নানার বাড়িতে গিয়েছিলাম। সেজ মামা একদিন বলছিলেন, ঢাকা-সিলেটের রাস্তাটা চুনারুঘাটের যেখানটায় একটা বনের ভেতর দিয়ে গেছে, বছর কয়েক আগেও রাতের বেলায় গাড়ির হেডলাইটের আলোয় সেখানে দেখা যেত চিতা বাঘের গায়ের ফোঁটা কিংবা জ্বলতে থাকা চোখ। কখনো আবার রাস্তা পেরোনোর সময় আগুয়ান কোনো গাড়ি দেখে অজানা প্রাণী ঠাউরে থাবা চালিয়ে গ্লাস ভেঙে দিয়েছে চিতারা। ওই পথে যাওয়ার সময় আঁধার নেমে গেলে চালকেরা তাই প্রমাদ গুণত। পরে জানতে পারি ওই বনটা সাতছড়ি। সিলেট বিভাগের আদমপুর, সাতছড়ি, লাউয়াছড়ার মতো জঙ্গলগুলোতে গিয়েও শুনেছি দুঃসাহসী চিতাদের কত কাণ্ড-কীর্তির গল্প। তবে চিতা বাঘের সিলেটে সবচেয়ে সেরা ডেরা ছিল রেমা-কালেঙ্গায়। ২০০৪ সালে যখন রেমা যাই, তখন এক ফরেস্ট গার্ড বলেছিলেন চিতা বাঘেদের শীতে গায়ে রোদ লাগানোর জন্য বনপথে বসে থাকার গল্প। দুই বছর বাদে ২০০৬ সালে কালেঙ্গায় পাহাড়ের ওপরের বন বাংলোয় কাটিয়ে ছিলাম একটি রাত। তখন রেঞ্জার আকবর ভাই বলেছিলেন, মাস কয়েক আগে রাতে রেমা থেকে ফিরছিলেন মোটরসাইকেলে। হঠাৎ পথের ওপর এসে দাঁড়ায় অপূর্ব সুন্দর এক চিতা। গাড়ির হেডলাইটের আলোয় চোখ ধাঁধিয়ে যাওয়ায় দাঁড়িয়ে গিয়েছিল ওটা। পরমুহূর্তেই চম্পট দেয়। তখনই শুনি ছনবাড়ি বিটে চিতা বাঘের আক্রমণে গরু মারা পড়ার কাহিনি। পরদিন দেখে এসেছিলাম যেখানে গরুটা মারা পড়েছে, সে জায়গাটি। গত বছরও কালেঙ্গা গিয়ে চিতা বাঘের একটি বাছুর শিকারের গুজব শুনেছিলাম। তবে খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হতে পারিনি।
সালটা ২০১১। সাঙ্গু রিজার্ভের গহিনে যাওয়ার জন্য থানচি থেকে নৌকা ভাড়া করে রওনা দিয়েছিলাম। নৌকার দুই মাঝি মারমা। এর মধ্যে একজন বয়সে একবারেই তরুণ। ভারী হাসি-খুশি। ভাব জমে গেলে অকপটে স্বীকার করলেন, জঙ্গলে হরিণ শিকারে যাওয়ার কথা। মেলে দিলেন গল্পের ঝাঁপি। দুই বছর আগে শিকারে গিয়েছিলেন, মোদকের মিয়ানমার সীমান্ত লাগোয়া পাহাড়ে। তখন দুটো প্রাণী মুখোমুখি হয়ে যায় আচমকা। ছোটাছুটি করে খেলছিল তারা নিজেদের মধ্যে। হলুদ জমিনে কালো ফোঁটা ওগুলোর, চিতা বাঘ। তবে মানুষজন দেখে মুহূর্তেই জঙ্গলে হাওয়া।
এভাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম কিংবা সিলেট অঞ্চলের যে জঙ্গলেই যাই, আমার অন্যতম কাজ চিতা বাঘের খোঁজ করা। অদ্ভুত সুন্দর এই জন্তুটির ট্রেইল অনুসরণ করে হানা দিয়েছি কত জঙ্গলে!
গড়ের রাজার বিদায়
মধুপুরের জলছত্র মিশনের নাম শুনলেই শিহরণ জাগে শরীরে। যদিও এখন ওই এলাকা ঘুরে আনারস বাগান ছাড়া পাবেন না কিছুই। আমাকে টানে পঞ্চাশ বছর কিংবা তারও আগের পুরোনো সেই জলছত্র মিশন, যেখানে ছিল বাঘ-চিতার আড্ডাখানা।
স্বাধীনতার বছর কয়েক আগের ঘটনা। জলছত্র মিশনের দক্ষিণের পাকা রাস্তা। ধারেই বিশাল এক বট গাছ। গ্রীষ্মের মাঝামাঝি। প্রবল গরমে প্রাণ যায়। ত্যক্তবিরক্ত একটা চিতা বাঘ বটের মোটা একটা ডালে চড়ে বসল। একটু বাতাস বইতেই আয়েশ করে গা এলিয়ে দিল। শান্তিতে চোখ বুজে এল। তবে সুখ কপালে সইল না। মধুপুরের হাটুরেদের একটি দল ওদিক দিয়ে যাচ্ছিল। ওরা ওটাকে দেখে ফেলল।
হাটুরেরা খবর দিল, শিকারি মনসিনিয়র মাইকেল ডি’কস্তাকে। চিতাটা বেশ দূরে। তারপরও লোকজনের পীড়াপীড়িতে গুলি করলেন। কপাল ভালো চিতাটার। গুলিটা লাগল ও যেখানে বসেছিল, তার একটু নিচে। নিঃশব্দে গাছ থেকে নেমে ঝোপের আড়াল নিয়ে লোকজনের নাগালের বাইরে চলে গেল সে।
বায়জীদ খান পন্নীর ‘বাঘ-বন-বন্দুক’ বইয়েও মধুপুর এলাকায় চিতা বাঘ শিকারের কাহিনি আছে। মধুপুরের জঙ্গলে বাঘ ছিল সম্ভবত ১৯৬০-এর আশপাশ পর্যন্ত। তবে চিতা আরও কিছুটা বেশি দিন টিকেছিল। জানামতে, মুক্তিযুদ্ধের কয়েক বছর পরও কালেভদ্রে ওদের দেখা মিলত। নিদেনপক্ষে রাতে শোনা যেত রোমহর্ষক সেই করাতচেরা ডাক।
দিবাস্বপ্ন দেখি, হয়তো পরের আরও অনেকগুলো বছরও চিতারা ছিল ওখানে। ধূর্ত জন্তুগুলো হিংস্র দু-পেয়েদের ফাঁকি দিয়ে বেঁচে থাকার কৌশল শিখে ফেলেছিল।
এক সময়ের শিকারি সরওয়ার পাঠান ভাই এখন পুরোদস্তুর বন্যপ্রাণীপ্রেমী। তাঁর কাছে শুনেছিলাম আশ্চর্য এক গল্প। ওটা অন্তত বছর পঁচিশেক আগের কাহিনি। এর বেশ কিছু সময় আগে মধুপুর এলাকা থেকে বিদায় নিয়েছে গড়ের রাজা চিতা বাঘ। তো গাজীপুরের জঙ্গলের ধারের এক বাড়িতে যেতেন তিনি প্রায়ই। ওরা জাল দিয়ে মেছো বাঘ ধরত। ওই বাড়ির লোকেরাই বলত বিশাল এক মেছো বাঘের গল্প। ওটা খুব ধূর্ত ছিল। জালে ধরা পড়ত না কখনো। আমার নিজের সন্দেহ ওটা হয়তো আদপে মেছো বাঘই ছিল না, ছিল মেছো বাঘের ছদ্মবেশে টিকে থাকা গড়ের শেষ চিতা বাঘ!
গবেষণায় আশার আলো
তবে মধুপুর থেকে চিতা হারিয়ে যাওয়াই শেষ কথা নয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের বন-পাহাড়ে এখনো হঠাৎ হঠাৎ মেলে চিতার খবর। শিকারিদের সঙ্গে লুকোচুরি খেলে এখনো টিকে আছে ওরা।
সম্প্রতি ‘ডিটেকটিং দ্য স্পট: আ রিভিউ অন ল্যাপার্ড অকারেন্সেস ইন বাংলাদেশ’ নামে একটি কাজ করেছেন মুনতাসির আকাশ, স্কট ট্রেগারস, তানিয়া জাকির, শাহরিয়ার সিজার রহমান, ফাতেমা-তুজ-জোহরা খালেক মিলা ও অনিমেষ ঘোষ। চিতা বাঘ নিয়ে বাংলাদেশে এমন গবেষণা এটাই প্রথম। সেখান থেকেও জানা যায় বাংলাদেশে চিতা বাঘদের সাম্প্রতিক বিচরণের নানা খবর। সেখানে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে চিতা বাঘ দেখার পাঁচটি ও কক্সবাজার অঞ্চলে চিতা বাঘ দেখার নিশ্চিত দুটি তথ্যের কথা বলা হয়েছে।
সুপ্রিয় চাকমা, শাহরিয়ার সিজার রহমানদের গবেষণা, ক্যামেরা ট্র্যাপও নিশ্চিত করছে, এখনো পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্তত কয়েকটি এলাকায় চিতা বাঘের আলাদা বসতি আছে। যদিও কোনোখানেই সংখ্যাটি বেশি নয়। রাঙামাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক এবং বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ সুপ্রিয় চাকমা যে গবেষণা করেছিলেন, তার ফলাফল নিশ্চিত করে বান্দরবানের সাঙ্গু এবং রাঙামাটির কাসালং এবং রাইংখং সংরক্ষিত অরণ্যে চিতা বাঘের উপস্থিতি।
রহস্যময় কালো চিতা
বাংলাদেশের বনে এমনকি কালো চিতাও দেখা গেছে। শরীরে মেলানিনের আধিক্যে যেসব চিতাবাঘের গায়ের রং কালো হয়, তারাই পরিচিত কালো চিতা বা ব্ল্যাক প্যান্থার নামে। তবে এরা আলাদা কোনো প্রজাতি নয়। বন্য প্রাণী বিশেষজ্ঞ খসরু চৌধুরী কালো চিতা দেখেছিলেন তিন যুগ আগে বান্দরবানের আলীকদম এলাকায়। ২০১১ সালে বড় মোদক যাওয়ার সময় আমাদের মারমা গাইড আংসু মারমার কাছ থেকে জানতে পারলাম, ১৯৯০ সালের দিকে রেমাক্রি এলাকায় একটা কালো চিতা ফাঁদ পেতে মেরেছিল শিকারিরা।
স্বপ্ন দেখতে চাই
তবে ভয়াবহ একটা আশঙ্কায়ও কেঁপে ওঠে বুক। পার্বত্য চট্টগ্রামের চিতা বাঘ অধ্যুষিত এলাকাগুলোয় চলছে সমানে গাছকাটা, বন্যপ্রাণী শিকার। চিতার অন্য বসতিগুলোও আছে বিপদে। আমাদের পাশের দেশ ভারতের বন বিভাগ প্রতিটি জঙ্গলে চিতা বাঘের সংখ্যা জানা। আর আমাদের বনগুলোতে চিতা বাঘের অবস্থা সম্পর্কে অনেকটাই ধোঁয়াশায় আছি আমরা। এত চমৎকার একটি প্রাণী, কিন্তু কী অবহেলা!
তবে বন্যপ্রাণীর ব্যাপারে আমি সব সময় অতি আশাবাদী মানুষ। তাই যেমন এখনো স্বপ্ন দেখি পার্বত চট্টগ্রামে বাঘের আস্তানার, তেমনি আশা করি পার্বত্য চট্টগ্রাম আর সিলেটের বিভিন্ন অরণ্যে পুরোনো দিনের মতো মহানন্দে ঘুরে বেড়াবে চিতা বাঘেরা। চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড-মিরসরাই এবং ভারতের সীমান্তঘেঁষা শেরপুর-নেত্রকোনা-জামালপুরেও এদের ছোট ছোট দু-একটি বসতিরও স্বপ্ন দেখি। আবার জেগে জেগেই স্বপ্ন দেখি মধুপুরের অরণ্যে গড়ের রাজাদের প্রস্থানের কিংবা নীলফামারী-দিনাজপুর-পঞ্চগড় এলাকার সমতলের ছোট ছোট ঝোপ-ঝাড়, কিংবা জঙ্গলে চিতা বাঘেদের বছরের অন্তত কয়েকটি মাস আস্তানা গাড়ার।

একটা সময় প্রায় গোটা বাংলাদেশেই ছিল চিতা বাঘেদের রাজ্য। গত শতকের মাঝামাঝি সময়ে, এমনকি উত্তরা ও মিরপুরেও দেখা মিলত এদের। মধুপুর ও ভাওয়ালের গড় তো ছিল চিতা বাঘেদের প্রিয় বিচরণ ভূমি। সিলেট বিভাগের চা বাগানগুলোতেও মহানন্দে চষে বেড়াত তারা। তবে এখন পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, অনেকে বিশ্বাসই করতে চান না বাংলাদেশের বনাঞ্চলে আর বুনো চিতা বাঘ আছে। কিন্তু শত বিপদ মাথায় নিয়ে এখনো এ দেশের প্রকৃতিতে সত্যি আছে এই প্রাণীটি। চলুন তাহলে বেরিয়ে পড়ি চিতা বাঘের খোঁজে।
উত্তরের মরণফাঁদ
নীলফামারী সদর উপজেলার চওড়া বড়গাছা ইউনিয়নের কাঞ্চনপাড়া গ্রাম। সেখানে অলিয়ার রহমানের মুরগির খামার। তিন হাজারের বেশি মুরগি আছে খামারে। বন বিড়াল ও শিয়ালের কবল থেকে মুরগি বাঁচাতে খামার মালিক পুরো খামারটি জিআই তার দিয়ে ঘিরে বৈদ্যুতিক সংযোগ দিয়ে দেন। এতে ওই বৈদ্যুতিক তারে শক খেয়ে মুরগির লোভে হানা দেওয়া কয়েকটি বনবিড়াল ও শিয়াল মারা পড়ে। তবে গত শুক্রবার রাতে ঘটল অস্বাভাবিক এক কাণ্ড। রাত তখন পৌনে ৩ টা। খামারের পেছনে বন্যপ্রাণীর আওয়াজ পাওয়া গেল। দেরি না করে সুইচ টিপে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হলো। এর কিছুক্ষণ পরই একটি জন্তু বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে পড়ার শব্দ শোনা গেল। তবে আওয়াজটা বলে দিচ্ছিল বন বিড়াল বা শিয়াল নয়, অনেক বড় কোনো জন্তু আটকা পড়েছে ফাঁদে। আতঙ্কিত হয়ে বাড়ির মানুষেরা টর্চ লাইট জ্বেলে চমকে ওঠেন। একটি চিতা বাঘ বিদ্যুতায়িত তারের স্পর্শে মরে পড়ে আছে।
বাঘ মারা পড়েছে—এ তো বড় আনন্দের খবর; অন্তত আমাদের কাছে, তাই না! সকালে মৃত বাঘটির গলায় দড়ি পেঁচিয়ে বাইরে আনা হতেই একে দেখতে আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে কয়েক হাজার মানুষ হাজির। তবে এলাকার মানুষের মনে আরেকটি বড় দুশ্চিন্তা ভর করেছে, তা হলো আরও একটি চিতা বাঘ এলাকায় রয়ে যাওয়ার গুজব। পত্রিকা মারফত এবং পঞ্চগড়ের বন্যপ্রাণীপ্রেমী ও আলোকচিত্রী ফিরোজ আল সাবাহর সঙ্গে কথা বলে মোটামুটি জানতে পারি নীলফামারীর চিতা বাঘ সম্পর্কে।
তবে কেউ কেউ অলিয়ার রহমানের বাড়ির পেছনের ভুট্টা খেতে ওপর একটি চিতা বাঘ অদৃশ্য হওয়ার কথা বললেও নিশ্চিত প্রমাণ মেলেনি। তবে নিঃসন্দেহে চিতা বাঘটার ভাগ্য ভালো। না হলে মানুষের পিটুনিতে ওটাকে যে পৃথিবীর মায়া কাটাতে হতো সন্দেহ নেই।। গত প্রায় ১৪ বছরে রংপুর বিভাগে আটটি চিতাবাঘের মৃত্যুর ঘটনা এই ইঙ্গিতই দিচ্ছে। এদের বেশির ভাগকে ধাওয়া করে পিটিয়ে মারা হয়েছে।
এই অঞ্চলের পঞ্চগড়েই জীবিত চিতা বাঘের দুর্লভ একটি ছবি তুলছিলেন বন্যপ্রাণীপ্রেমী ও আলোকচিত্রী ফিরোজ আল সাবাহ। সেটা ২০১৮ সালে। একটা ঝোপে আশ্রয় নিয়েছিল বাঘটা। চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলেছিল উৎসুক জনতা। মরিয়া চিতা বাঘটা হুংকার দিচ্ছিল, লেজ নাচাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, যেকোনো মুহূর্তে ঝোপ থেকে লাফ দেবে। এর মধ্যেই কাছে গিয়ে কয়েকটা ছবি তোলেন সাবাহ। অবশ্য উত্তেজিত জনতার রোষ থেকে আশ্চর্য সুন্দর সেই বাঘটিকে বাঁচানো যায়নি।
এল কীভাবে
কিন্তু ঘটনা হলো নীলফামারীতে চিতা বাঘ এল কীভাবে? এটা সত্যি—এক সময় পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম এলাকায় চিতা বাঘেদের দেখা মিলত বিস্তর। কিন্তু বহু বছর ধরেই এই অঞ্চলে চিতা বাঘ আশ্রয় নেওয়ার মতো বড় বন নেই। তাই এদিকটায় চিতা বাঘেদের বাসও নেই। তবে কথা হলো আমাদের উত্তরের এই জেলাগুলোর ওপাশেই ভারতের ডুয়ার্স এলাকা। চিতা বাঘের আড্ডাখানা। এখানকার চিতা বাঘেরা ডুয়ার্সের সবুজ চা বাগানে ঘুরে বেড়ায় মনের আনন্দে। আর ওগুলোর মধ্যে যেগুলো একটু দুর্ভাগা, সেগুলো আমাদের নীলফামারী, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম এলাকায় চলে আসে। তার পর কোনো গৃহস্থের মুরগির খামারে হানা দেওয়ার অপরাধে কিংবা নিজেদের হলুদে-কালোয় মেশানো সুন্দর চেহারাটা প্রকাশ পেয়ে যাওয়ার কারণে মারা পড়ে গ্রামবাসীদের পিটুনিতে। অথচ আমাদের বরং প্রকৃতির আশ্চর্য সুন্দর এই প্রাণীগুলো এখনো এদিকটায় পা দেওয়ায় খুশি হওয়ার কথা। এই ভেবে ভালো লাগছে যে, পিতৃপুরুষের পুরোনো আস্তানাকে এখনো একেবারে ভুলে যায়নি নয়া জমানার চিতা বাঘেরা।
পাহাড়ি বনের চিতা বাঘ
গল্পটা চিতা বাঘ নিয়ে। এখন বাংলাদেশে ওদের মূল আস্তানা পাহাড়ি বনে। তাই সেদিকে একটু নজর দিই। মাতামুহুরী সংরক্ষিত বন, আলীকদম। মুরং এক যুবক যাচ্ছেন জুমের খেতে। যে পথটা দিয়ে যাচ্ছেন, অরণ্য বেশ গভীর। হঠাৎ দেখলেন ওটাকে। বিদ্যুৎ চমকের মতো লাফিয়ে পড়ল তাঁর পথের একটু সামনে। হলুদ জমিনে কালো ফোঁটার চিতা বাঘ। বহু দিন পর আশ্চর্য সুন্দর এই প্রাণীটিকে দেখলেন মুরং যুবক। কাঁটা দিয়ে উঠল শরীর, রোমাঞ্চে। একবার ঘাড় ঘুরিয়ে তাকে দেখল জন্তুটা। তারপরই এক লাফে হারিয়ে গেল পাশের জঙ্গলে। কোনো উপন্যাস, বা পুরোনো দিনের শিকার কাহিনির অংশ নয় এটি। ঘটনাটা গত বছরের এপ্রিলের।
ওই ঘটনার ঠিক এক মাস আগে চলে যাই টাইম মেশিনে চেপে। এবারের ঘটনাস্থল বান্দরবানের থানচির সাঙ্গু সংরক্ষিত বন। মুরংদের একটি দল জঙ্গলে ঢুকেছে; ইচ্ছে, মাছ শিকার। সঙ্গে তাগড়া কয়েকটা কুকুর। এই কুকুরগুলো হরিণ, শূকরের মতো বন্যপ্রাণী শিকারেও সাহায্য করে তাঁদের। এ সময়ই কুকুরগুলো ঘেউ ঘেউ শুরু করল। কণ্ঠ বলে দিচ্ছে, কিছুটা আতঙ্কিত এরা। তারপরই মুরংদের চোখে পড়ল জন্তুটার দিকে। পাহাড় থেকে নেমে এসেছে। আশ্চর্য সুন্দর এক চিতা বাঘ। বেচারা আচমকা মানুষ, আর কুকুরের দলের সামনে চলে এসেছে। এমনিতে অবশ্য চিতা বাঘের প্রিয় খাবারের তালিকায় কুকুর আছে ওপরের দিকে। তবে মানুষ কী জিনিস—এটা সে এত দিনে বেশ বুঝে গিয়েছে। সরে পড়তে শুরু করল লাজুক প্রাণীটা।
তবে সঙ্গে মালিক থাকাতে সাহস আকাশ ছুঁয়েছে শিকারি কুকুরগুলোর। তাড়া করল ওটাকে। পেছন পেছন হই হল্লা করতে করতে চলল মারমারাও। জঙ্গলের এক পাশে কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়ছিল চিতাটা। তবে তখনই খেপে গিয়ে করাতচেরা কণ্ঠে গর্জে উঠল জন্তুটা। কুকরগুলো ভয়ে পিছু হটল। মুহূর্তে জঙ্গলে ঢুকে পড়ল ধূর্ত জন্তুটা। তবে এর আগেই একটা প্রমাণ রেখে গেল। মারমা দলটির এক তরুণ দলছুট হয়ে পাশের এক টিলায় উঠে পড়েছিল। সেখান থেকে চিতা বাঘটাকে বন্দী করে ফেলল মোবাইলের ক্যামেরায়।
একটা সময় অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন, বাংলাদেশে বুঝি চিতা বাঘ আর নেই। তবে নানা তথ্য-প্রমাণ জানান দিচ্ছিল, এরা আছে। তবে প্রমাণ মিলছিল না। প্রথম নিশ্চিত প্রমাণ হাজির করে ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্স (সিসিএ) নামের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে কাজ করা সংগঠনটি। ২০১৫ সালে সাঙ্গু রিজার্ভে তাদের ক্যামেরা ট্র্যাপে বন্দী হয় এক চিতা বাঘ। তার পর ২০২১ সালে সিসিএর এক পাহাড়ি প্যারা বায়োলজিস্ট সরাসরি ছবি তুলে ফেললেন চিতা বাঘের।
চিতা বাঘ মিতা আমার
আমার সবচেয়ে পছন্দের বন্য প্রাণীগুলোর একটি চিতা বাঘ। তাই যে জঙ্গলে যাই, প্রিয় জন্তুটির খোঁজ নিই। কখনো আবার এদের ট্রেইল অনুসরণ করে সন্ধানে বের হয়ে পড়ি। একসময় বাংলাদেশের অনেক বনেই দেখা মিলত এদের। ছিল ঢাকা ও আশপাশের এলাকায়ও। এমনকি আজ থেকে বছর ষাটেক আগেও ঢাকার উত্তরা আর মিরপুরে চিতাবাঘ শিকারের কথা বলেছেন এনায়েত মওলা তাঁর ‘যখন শিকারি ছিলাম’ বইয়ে।
এনায়েত মাওলা বইটিতে জুড়ির রত্না ও তার পাশের সাগরনাল চা বাগানের জঙ্গলে চিতা বাঘ ও বাঘ শিকারের রোমহর্ষক বিবরণ আছে! তাই সেই ২০০৭-০৮ সালের দিকে ঘুরে এসেছিলাম ওদিকটা। অদ্ভুত এক রাত কেটেছিল পুটিছড়া বাংলোতে। সন্ধ্যা ঘনানোর ঠিক আগে বাংলোর টিলা থেকে নেমে হাঁটার সময় চা বাগানে আলাপ জমে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে। তাঁদের কাছে এখানে নতুন বসতি স্থাপনের পর মশাল দিয়ে চিতা বাঘ তাড়ানোর গল্প চোখ বড় বড় করে শুনেছি নব্বইয়ের দশকে। রাগনার বনে ঘোরার সময় স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করেন, এখনো পাথারিয়া রেঞ্জের পাহাড়ে আছে চিতা বাঘেরা।
এর দু-এক বছর পর পাথারিয়া পাহাড়ের আরেক বন জুড়ির লাঠিটিলায় গিয়ে দেখা হয়েছিল বন বিভাগের ভিলেজার মন্টু মিয়া, আর ফখরুদ্দীনের সঙ্গে। তাঁরাই দিল খবর—তিনটি গরু জঙ্গলে চরে বেড়ানোর সময় মারা পড়ে চিতা বাঘের আক্রমণে। প্রথম দুটো মারা পড়ে একই দিনে, আরেকটা ছয় মাস পর। প্রতি শীতেই চিতার ডাক শোনেন তাঁরা। সন্দেহ প্রকাশ করতেই, ফখরুদ্দীন আমাদের চিতা বাঘের ডাক নকল করে শোনাল। চমকে উঠলাম, ভুল হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। চিতার সেই হুবহু করাতচেরার ডাকই অনুকরণ করেছেন তিনি। কাছাকাছি সময়ে একটি চিতা বাঘকে গ্রামবাসীরা বিষ টোপ দিয়ে মারার ঘটনা জানান, বন বিভাগের ডেপুটি রেঞ্জার নুরুজ্জামান ভাই।
স্কুলে পড়ি তখন। হবিগঞ্জে নানার বাড়িতে গিয়েছিলাম। সেজ মামা একদিন বলছিলেন, ঢাকা-সিলেটের রাস্তাটা চুনারুঘাটের যেখানটায় একটা বনের ভেতর দিয়ে গেছে, বছর কয়েক আগেও রাতের বেলায় গাড়ির হেডলাইটের আলোয় সেখানে দেখা যেত চিতা বাঘের গায়ের ফোঁটা কিংবা জ্বলতে থাকা চোখ। কখনো আবার রাস্তা পেরোনোর সময় আগুয়ান কোনো গাড়ি দেখে অজানা প্রাণী ঠাউরে থাবা চালিয়ে গ্লাস ভেঙে দিয়েছে চিতারা। ওই পথে যাওয়ার সময় আঁধার নেমে গেলে চালকেরা তাই প্রমাদ গুণত। পরে জানতে পারি ওই বনটা সাতছড়ি। সিলেট বিভাগের আদমপুর, সাতছড়ি, লাউয়াছড়ার মতো জঙ্গলগুলোতে গিয়েও শুনেছি দুঃসাহসী চিতাদের কত কাণ্ড-কীর্তির গল্প। তবে চিতা বাঘের সিলেটে সবচেয়ে সেরা ডেরা ছিল রেমা-কালেঙ্গায়। ২০০৪ সালে যখন রেমা যাই, তখন এক ফরেস্ট গার্ড বলেছিলেন চিতা বাঘেদের শীতে গায়ে রোদ লাগানোর জন্য বনপথে বসে থাকার গল্প। দুই বছর বাদে ২০০৬ সালে কালেঙ্গায় পাহাড়ের ওপরের বন বাংলোয় কাটিয়ে ছিলাম একটি রাত। তখন রেঞ্জার আকবর ভাই বলেছিলেন, মাস কয়েক আগে রাতে রেমা থেকে ফিরছিলেন মোটরসাইকেলে। হঠাৎ পথের ওপর এসে দাঁড়ায় অপূর্ব সুন্দর এক চিতা। গাড়ির হেডলাইটের আলোয় চোখ ধাঁধিয়ে যাওয়ায় দাঁড়িয়ে গিয়েছিল ওটা। পরমুহূর্তেই চম্পট দেয়। তখনই শুনি ছনবাড়ি বিটে চিতা বাঘের আক্রমণে গরু মারা পড়ার কাহিনি। পরদিন দেখে এসেছিলাম যেখানে গরুটা মারা পড়েছে, সে জায়গাটি। গত বছরও কালেঙ্গা গিয়ে চিতা বাঘের একটি বাছুর শিকারের গুজব শুনেছিলাম। তবে খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হতে পারিনি।
সালটা ২০১১। সাঙ্গু রিজার্ভের গহিনে যাওয়ার জন্য থানচি থেকে নৌকা ভাড়া করে রওনা দিয়েছিলাম। নৌকার দুই মাঝি মারমা। এর মধ্যে একজন বয়সে একবারেই তরুণ। ভারী হাসি-খুশি। ভাব জমে গেলে অকপটে স্বীকার করলেন, জঙ্গলে হরিণ শিকারে যাওয়ার কথা। মেলে দিলেন গল্পের ঝাঁপি। দুই বছর আগে শিকারে গিয়েছিলেন, মোদকের মিয়ানমার সীমান্ত লাগোয়া পাহাড়ে। তখন দুটো প্রাণী মুখোমুখি হয়ে যায় আচমকা। ছোটাছুটি করে খেলছিল তারা নিজেদের মধ্যে। হলুদ জমিনে কালো ফোঁটা ওগুলোর, চিতা বাঘ। তবে মানুষজন দেখে মুহূর্তেই জঙ্গলে হাওয়া।
এভাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম কিংবা সিলেট অঞ্চলের যে জঙ্গলেই যাই, আমার অন্যতম কাজ চিতা বাঘের খোঁজ করা। অদ্ভুত সুন্দর এই জন্তুটির ট্রেইল অনুসরণ করে হানা দিয়েছি কত জঙ্গলে!
গড়ের রাজার বিদায়
মধুপুরের জলছত্র মিশনের নাম শুনলেই শিহরণ জাগে শরীরে। যদিও এখন ওই এলাকা ঘুরে আনারস বাগান ছাড়া পাবেন না কিছুই। আমাকে টানে পঞ্চাশ বছর কিংবা তারও আগের পুরোনো সেই জলছত্র মিশন, যেখানে ছিল বাঘ-চিতার আড্ডাখানা।
স্বাধীনতার বছর কয়েক আগের ঘটনা। জলছত্র মিশনের দক্ষিণের পাকা রাস্তা। ধারেই বিশাল এক বট গাছ। গ্রীষ্মের মাঝামাঝি। প্রবল গরমে প্রাণ যায়। ত্যক্তবিরক্ত একটা চিতা বাঘ বটের মোটা একটা ডালে চড়ে বসল। একটু বাতাস বইতেই আয়েশ করে গা এলিয়ে দিল। শান্তিতে চোখ বুজে এল। তবে সুখ কপালে সইল না। মধুপুরের হাটুরেদের একটি দল ওদিক দিয়ে যাচ্ছিল। ওরা ওটাকে দেখে ফেলল।
হাটুরেরা খবর দিল, শিকারি মনসিনিয়র মাইকেল ডি’কস্তাকে। চিতাটা বেশ দূরে। তারপরও লোকজনের পীড়াপীড়িতে গুলি করলেন। কপাল ভালো চিতাটার। গুলিটা লাগল ও যেখানে বসেছিল, তার একটু নিচে। নিঃশব্দে গাছ থেকে নেমে ঝোপের আড়াল নিয়ে লোকজনের নাগালের বাইরে চলে গেল সে।
বায়জীদ খান পন্নীর ‘বাঘ-বন-বন্দুক’ বইয়েও মধুপুর এলাকায় চিতা বাঘ শিকারের কাহিনি আছে। মধুপুরের জঙ্গলে বাঘ ছিল সম্ভবত ১৯৬০-এর আশপাশ পর্যন্ত। তবে চিতা আরও কিছুটা বেশি দিন টিকেছিল। জানামতে, মুক্তিযুদ্ধের কয়েক বছর পরও কালেভদ্রে ওদের দেখা মিলত। নিদেনপক্ষে রাতে শোনা যেত রোমহর্ষক সেই করাতচেরা ডাক।
দিবাস্বপ্ন দেখি, হয়তো পরের আরও অনেকগুলো বছরও চিতারা ছিল ওখানে। ধূর্ত জন্তুগুলো হিংস্র দু-পেয়েদের ফাঁকি দিয়ে বেঁচে থাকার কৌশল শিখে ফেলেছিল।
এক সময়ের শিকারি সরওয়ার পাঠান ভাই এখন পুরোদস্তুর বন্যপ্রাণীপ্রেমী। তাঁর কাছে শুনেছিলাম আশ্চর্য এক গল্প। ওটা অন্তত বছর পঁচিশেক আগের কাহিনি। এর বেশ কিছু সময় আগে মধুপুর এলাকা থেকে বিদায় নিয়েছে গড়ের রাজা চিতা বাঘ। তো গাজীপুরের জঙ্গলের ধারের এক বাড়িতে যেতেন তিনি প্রায়ই। ওরা জাল দিয়ে মেছো বাঘ ধরত। ওই বাড়ির লোকেরাই বলত বিশাল এক মেছো বাঘের গল্প। ওটা খুব ধূর্ত ছিল। জালে ধরা পড়ত না কখনো। আমার নিজের সন্দেহ ওটা হয়তো আদপে মেছো বাঘই ছিল না, ছিল মেছো বাঘের ছদ্মবেশে টিকে থাকা গড়ের শেষ চিতা বাঘ!
গবেষণায় আশার আলো
তবে মধুপুর থেকে চিতা হারিয়ে যাওয়াই শেষ কথা নয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের বন-পাহাড়ে এখনো হঠাৎ হঠাৎ মেলে চিতার খবর। শিকারিদের সঙ্গে লুকোচুরি খেলে এখনো টিকে আছে ওরা।
সম্প্রতি ‘ডিটেকটিং দ্য স্পট: আ রিভিউ অন ল্যাপার্ড অকারেন্সেস ইন বাংলাদেশ’ নামে একটি কাজ করেছেন মুনতাসির আকাশ, স্কট ট্রেগারস, তানিয়া জাকির, শাহরিয়ার সিজার রহমান, ফাতেমা-তুজ-জোহরা খালেক মিলা ও অনিমেষ ঘোষ। চিতা বাঘ নিয়ে বাংলাদেশে এমন গবেষণা এটাই প্রথম। সেখান থেকেও জানা যায় বাংলাদেশে চিতা বাঘদের সাম্প্রতিক বিচরণের নানা খবর। সেখানে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে চিতা বাঘ দেখার পাঁচটি ও কক্সবাজার অঞ্চলে চিতা বাঘ দেখার নিশ্চিত দুটি তথ্যের কথা বলা হয়েছে।
সুপ্রিয় চাকমা, শাহরিয়ার সিজার রহমানদের গবেষণা, ক্যামেরা ট্র্যাপও নিশ্চিত করছে, এখনো পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্তত কয়েকটি এলাকায় চিতা বাঘের আলাদা বসতি আছে। যদিও কোনোখানেই সংখ্যাটি বেশি নয়। রাঙামাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক এবং বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ সুপ্রিয় চাকমা যে গবেষণা করেছিলেন, তার ফলাফল নিশ্চিত করে বান্দরবানের সাঙ্গু এবং রাঙামাটির কাসালং এবং রাইংখং সংরক্ষিত অরণ্যে চিতা বাঘের উপস্থিতি।
রহস্যময় কালো চিতা
বাংলাদেশের বনে এমনকি কালো চিতাও দেখা গেছে। শরীরে মেলানিনের আধিক্যে যেসব চিতাবাঘের গায়ের রং কালো হয়, তারাই পরিচিত কালো চিতা বা ব্ল্যাক প্যান্থার নামে। তবে এরা আলাদা কোনো প্রজাতি নয়। বন্য প্রাণী বিশেষজ্ঞ খসরু চৌধুরী কালো চিতা দেখেছিলেন তিন যুগ আগে বান্দরবানের আলীকদম এলাকায়। ২০১১ সালে বড় মোদক যাওয়ার সময় আমাদের মারমা গাইড আংসু মারমার কাছ থেকে জানতে পারলাম, ১৯৯০ সালের দিকে রেমাক্রি এলাকায় একটা কালো চিতা ফাঁদ পেতে মেরেছিল শিকারিরা।
স্বপ্ন দেখতে চাই
তবে ভয়াবহ একটা আশঙ্কায়ও কেঁপে ওঠে বুক। পার্বত্য চট্টগ্রামের চিতা বাঘ অধ্যুষিত এলাকাগুলোয় চলছে সমানে গাছকাটা, বন্যপ্রাণী শিকার। চিতার অন্য বসতিগুলোও আছে বিপদে। আমাদের পাশের দেশ ভারতের বন বিভাগ প্রতিটি জঙ্গলে চিতা বাঘের সংখ্যা জানা। আর আমাদের বনগুলোতে চিতা বাঘের অবস্থা সম্পর্কে অনেকটাই ধোঁয়াশায় আছি আমরা। এত চমৎকার একটি প্রাণী, কিন্তু কী অবহেলা!
তবে বন্যপ্রাণীর ব্যাপারে আমি সব সময় অতি আশাবাদী মানুষ। তাই যেমন এখনো স্বপ্ন দেখি পার্বত চট্টগ্রামে বাঘের আস্তানার, তেমনি আশা করি পার্বত্য চট্টগ্রাম আর সিলেটের বিভিন্ন অরণ্যে পুরোনো দিনের মতো মহানন্দে ঘুরে বেড়াবে চিতা বাঘেরা। চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড-মিরসরাই এবং ভারতের সীমান্তঘেঁষা শেরপুর-নেত্রকোনা-জামালপুরেও এদের ছোট ছোট দু-একটি বসতিরও স্বপ্ন দেখি। আবার জেগে জেগেই স্বপ্ন দেখি মধুপুরের অরণ্যে গড়ের রাজাদের প্রস্থানের কিংবা নীলফামারী-দিনাজপুর-পঞ্চগড় এলাকার সমতলের ছোট ছোট ঝোপ-ঝাড়, কিংবা জঙ্গলে চিতা বাঘেদের বছরের অন্তত কয়েকটি মাস আস্তানা গাড়ার।

শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে আজ বুধবার এই তালিকায় শীর্ষে আছে ভারতের কলকাতা। শহরটির অবস্থা আজ খুব অস্বাস্থ্যকর। আজ ঢাকার বাতাসেও দূষণ কিছুটা বেড়েছে।
৫ ঘণ্টা আগে
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি আরও শক্তিশালী হয়েছে। এটি আজ বুধবার সকালে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে। এর প্রভাবে চট্টগ্রাম উপকূলীয় অঞ্চলে বৃষ্টি হচ্ছে।
৬ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের জলবায়ু তহবিলের বরাদ্দে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটির সর্বশেষ গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় জলবায়ু তহবিল বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্টের (বিসিসিটি) বরাদ্দের ৫৪ শতাংশেই দুর্নীতি হয়েছে। ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়
১ দিন আগে
পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন মিয়ানমার উপকূলের কাছে একটি লঘুচাপ বিরাজ করছে। এটি উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে মিয়ানমার-বাংলাদেশ উপকূল বরাবর অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে আজ বুধবার এই তালিকায় শীর্ষে আছে ভারতের কলকাতা। শহরটির অবস্থা আজ খুব অস্বাস্থ্যকর। আজ ঢাকার বাতাসেও দূষণ কিছুটা বেড়েছে। ঢাকার বাতাস আজ শিশু ও বৃদ্ধদের মতো সংবেদনশীল মানুষের জন্য অস্বাস্থ্যকর।
বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের আজ সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান ১১১, যা গতকাল ছিল ১০৫। দূষিত বায়ুর শহরগুলোর তালিকায় আজ ১৭তম স্থানে আছে ঢাকা, গতকাল ছিল ১১তম স্থানে।
বায়ুদূষণের শীর্ষে থাকা ভারতের কলকাতা শহরটির বায়ুমান আজ ২৬৭, যা অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক। শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, ভারতের দিল্লি, চীনের বেইজিং ও মিসরের কায়রো। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২১৪, ২০৭, ১৯৩ ও ১৮১।
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে আজ বুধবার এই তালিকায় শীর্ষে আছে ভারতের কলকাতা। শহরটির অবস্থা আজ খুব অস্বাস্থ্যকর। আজ ঢাকার বাতাসেও দূষণ কিছুটা বেড়েছে। ঢাকার বাতাস আজ শিশু ও বৃদ্ধদের মতো সংবেদনশীল মানুষের জন্য অস্বাস্থ্যকর।
বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের আজ সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান ১১১, যা গতকাল ছিল ১০৫। দূষিত বায়ুর শহরগুলোর তালিকায় আজ ১৭তম স্থানে আছে ঢাকা, গতকাল ছিল ১১তম স্থানে।
বায়ুদূষণের শীর্ষে থাকা ভারতের কলকাতা শহরটির বায়ুমান আজ ২৬৭, যা অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক। শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, ভারতের দিল্লি, চীনের বেইজিং ও মিসরের কায়রো। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ২১৪, ২০৭, ১৯৩ ও ১৮১।
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

একটা সময় প্রায় গোটা বাংলাদেশেই ছিল চিতা বাঘেদের রাজ্য। গত শতকের মাঝামাঝি সময়ে, এমনকি উত্তরা ও মিরপুরেও দেখা মিলত এদের। মধুপুর ও ভাওয়ালের গড় তো ছিল চিতা বাঘেদের প্রিয় বিচরণ ভূমি। গত শুক্রবার নীলফামারী সদর উপজেলার...
২৩ মার্চ ২০২২
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি আরও শক্তিশালী হয়েছে। এটি আজ বুধবার সকালে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে। এর প্রভাবে চট্টগ্রাম উপকূলীয় অঞ্চলে বৃষ্টি হচ্ছে।
৬ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের জলবায়ু তহবিলের বরাদ্দে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটির সর্বশেষ গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় জলবায়ু তহবিল বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্টের (বিসিসিটি) বরাদ্দের ৫৪ শতাংশেই দুর্নীতি হয়েছে। ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়
১ দিন আগে
পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন মিয়ানমার উপকূলের কাছে একটি লঘুচাপ বিরাজ করছে। এটি উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে মিয়ানমার-বাংলাদেশ উপকূল বরাবর অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি আরও শক্তিশালী হয়েছে। এটি আজ বুধবার সকালে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে। এর প্রভাবে চট্টগ্রাম উপকূলীয় অঞ্চলে বৃষ্টি হচ্ছে।
এ ছাড়া বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের ওপর দিয়ে আজ দুপুরের মধ্যে ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এই অঞ্চলের নৌবন্দরগুলোকে ২ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক আজ সকালে আজকের পত্রিকাকে বলেন, সুস্পষ্ট লঘুচাপটি আজ চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করার সময় বৃষ্টি ঝরাতে ঝরাতে দুর্বল হয়ে যাবে। অবশ্য এর প্রভাবে গতকাল রাত থেকেই চট্টগ্রাম অঞ্চলে বৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া আজ সিলেট অঞ্চলেও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলে সামান্য বৃষ্টি হতে পারে। সুস্পষ্ট লঘুচাপ চলে যাওয়ার পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে।
তিনি আরও বলেন, সুস্পষ্ট লঘুচাপের কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে হবে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার সব নৌযানকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে হবে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ সকাল ৭টার পূর্বাভাসে জানিয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের আকাশ দুপুর পর্যন্ত অস্থায়ীভাবে মেঘলা থাকতে পারে। তবে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা হ্রাস পেতে পারে।
আজ সকাল ৬টায় ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ২৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৮৫ শতাংশ। আজকে ঢাকায় সূর্যাস্ত বিকেল ৫টা ১৭ মিনিটে। আগামীকাল সূর্যোদয় সকাল ৬টা ৮ মিনিটে।
সারা দেশের আজকের পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারা দেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি আরও শক্তিশালী হয়েছে। এটি আজ বুধবার সকালে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে। এর প্রভাবে চট্টগ্রাম উপকূলীয় অঞ্চলে বৃষ্টি হচ্ছে।
এ ছাড়া বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের ওপর দিয়ে আজ দুপুরের মধ্যে ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এই অঞ্চলের নৌবন্দরগুলোকে ২ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক আজ সকালে আজকের পত্রিকাকে বলেন, সুস্পষ্ট লঘুচাপটি আজ চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করার সময় বৃষ্টি ঝরাতে ঝরাতে দুর্বল হয়ে যাবে। অবশ্য এর প্রভাবে গতকাল রাত থেকেই চট্টগ্রাম অঞ্চলে বৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া আজ সিলেট অঞ্চলেও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলে সামান্য বৃষ্টি হতে পারে। সুস্পষ্ট লঘুচাপ চলে যাওয়ার পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে।
তিনি আরও বলেন, সুস্পষ্ট লঘুচাপের কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে হবে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার সব নৌযানকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে হবে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ সকাল ৭টার পূর্বাভাসে জানিয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের আকাশ দুপুর পর্যন্ত অস্থায়ীভাবে মেঘলা থাকতে পারে। তবে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা হ্রাস পেতে পারে।
আজ সকাল ৬টায় ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ২৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৮৫ শতাংশ। আজকে ঢাকায় সূর্যাস্ত বিকেল ৫টা ১৭ মিনিটে। আগামীকাল সূর্যোদয় সকাল ৬টা ৮ মিনিটে।
সারা দেশের আজকের পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারা দেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

একটা সময় প্রায় গোটা বাংলাদেশেই ছিল চিতা বাঘেদের রাজ্য। গত শতকের মাঝামাঝি সময়ে, এমনকি উত্তরা ও মিরপুরেও দেখা মিলত এদের। মধুপুর ও ভাওয়ালের গড় তো ছিল চিতা বাঘেদের প্রিয় বিচরণ ভূমি। গত শুক্রবার নীলফামারী সদর উপজেলার...
২৩ মার্চ ২০২২
শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে আজ বুধবার এই তালিকায় শীর্ষে আছে ভারতের কলকাতা। শহরটির অবস্থা আজ খুব অস্বাস্থ্যকর। আজ ঢাকার বাতাসেও দূষণ কিছুটা বেড়েছে।
৫ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের জলবায়ু তহবিলের বরাদ্দে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটির সর্বশেষ গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় জলবায়ু তহবিল বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্টের (বিসিসিটি) বরাদ্দের ৫৪ শতাংশেই দুর্নীতি হয়েছে। ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়
১ দিন আগে
পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন মিয়ানমার উপকূলের কাছে একটি লঘুচাপ বিরাজ করছে। এটি উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে মিয়ানমার-বাংলাদেশ উপকূল বরাবর অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে।
১ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বাংলাদেশের জলবায়ু তহবিলের বরাদ্দে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটির সর্বশেষ গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় জলবায়ু তহবিল বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্টের (বিসিসিটি) বরাদ্দের ৫৪ শতাংশেই দুর্নীতি হয়েছে। ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়ে বাস্তবায়িত ৮৯১টি প্রকল্পে অনিয়মের আনুমানিক পরিমাণ বলা হয়েছে ২৪৮ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ২ হাজার ১১০ কোটি টাকা)।
আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) টিআইবির ধানমন্ডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘বাংলাদেশে জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন টিআইবির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো মো. মাহফুজুল হক এবং রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট মো. সহিদুল ইসলাম। এ সময় সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ও আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলামও ছিলেন।
প্রতিবেদনে ২০০৪ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাস্তবায়িত ১২টি তহবিলের আওতায় ৯৪২টি প্রকল্পের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় প্রণীত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ঘাটতি রয়েছে। অর্থের চাহিদার বিপরীতে সামঞ্জস্যপূর্ণ বরাদ্দ দেওয়া হয়নি এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অভাব প্রকট।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সবচেয়ে বিপদাপন্ন অঞ্চলে বরাদ্দের অগ্রাধিকার কম এবং অনেক প্রকল্প বাস্তবে জলবায়ু অভিযোজনের সঙ্গে সম্পর্কহীন। উদাহরণ হিসেবে বলা হয়, জলবায়ু তহবিলের অর্থে সাফারি পার্ক ও ইকোপার্ক নির্মাণের মতো প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, যেখানে নিম্নমানের কাজ, অর্থ আত্মসাৎ ও সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে নিয়মবহির্ভূত অর্থ আদায়ের ঘটনা ঘটেছে।
জাতীয় তহবিলের প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতা এবং ব্যর্থতার প্রকটতাও গবেষণায় উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৮৯১টি প্রকল্পের মধ্যে ৫৪৯টির (৬১ দশমিক ৬ শতাংশ) মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। গড়ে প্রকল্পের মেয়াদ ৬৪৮ দিন থেকে বেড়ে ১ হাজার ৫১৫ দিনে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ ১৩৩ শতাংশের বেশি সময় লেগেছে। কোনো কোনো প্রকল্পে চার বছরের পরিবর্তে ১৪ বছর পর্যন্ত সময় লেগেছে।
টিআইবির অভিযোগ, জলবায়ু অর্থায়নে প্রয়োজনীয় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাব রয়েছে। ২০১৫ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশের জলবায়ু অভিযোজনের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে মাত্র ৮৬ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার, যা প্রয়োজনীয় অর্থের মাত্র শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিবছর জলবায়ু ক্ষতিপূরণ হিসাবে ১০ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। কিন্তু ২০০৩ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আমরা পেয়েছি মাত্র ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার, যা অত্যন্ত নগণ্য।’
গবেষণা প্রতিবেদনে কিছু সুপারিশ করেছে টিআইবি। সেগুলো হলো—
১. বিসিসিএসএপি ২০০৯ এবং জলবায়ু পরিবর্তন-সংক্রান্ত জাতীয় পরিকল্পনাসমূহ হালনাগাদ করে যুগোপযোগী করতে হবে। জাতীয় পরিকল্পনাসমূহ বাস্তবায়নে ট্রাস্ট ফান্ড এবং উন্নয়ন প্রকল্পের আওতার জলবায়ু-সংশ্লিষ্ট অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে।
২. জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট আইন, ২০১০ সংশোধন করতে হবে। আইনে ট্রাস্টের জনবল নিয়োগ ও পদোন্নতির বিষয়ক ধারা সংযোজন করতে হবে। বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি স্বাধীন ট্রাস্টি বোর্ড গঠনের বিধান যুক্ত করতে হবে। ট্রাস্ট থেকে কমপক্ষে একজন বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানসম্পন্ন কর্মকর্তাকে প্রকল্প প্রস্তাব মূল্যায়ন-সংক্রান্ত কারিগরি কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি ফলাফল অর্জনে সক্ষম বা ট্রান্সফর্মেটিভ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য তহবিলের আওতায় অর্থ বরাদ্দের সীমা বৃদ্ধি করতে হবে। জবাবদিহি নিশ্চিত এবং অনিয়ম-দুর্নীতি প্রতিরোধে দেশে প্রচলিত আইন, যেগুলো ট্রাস্টের জন্য প্রযোজ্য, তা সুনির্দিষ্ট করে ট্রাস্ট আইনে উল্লেখ করতে হবে। আর্থিক ও কারিগরি ব্যবস্থাপক হিসেবে বিসিসিটির কর্মকর্তাদের প্রকল্প প্রস্তাব মূল্যায়ন, প্রকল্প বাস্তবায়নের চুক্তি ও শর্তাবলি নির্ধারণ, প্রকল্প অনুমোদন, প্রকল্প বাস্তবায়নের অগ্রগতি ও অর্থ ছাড়, মাঠপর্যায়ে প্রকল্প তদারকি, প্রকল্প পরিবীক্ষণ এবং নথি ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত বিষয়ে দায়িত্ব স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করতে হবে। দুর্নীতি ও স্বার্থের দ্বন্দ্ব প্রতিরোধ, অংশীজনের অংশগ্রহণ, তহবিল ও প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট তথ্য উন্মুক্তকরণ, পরিবেশ ও সামাজিক মূল্যায়ন এবং নিয়মিত নিরীক্ষা-সংক্রান্ত বিষয় নতুন আইনে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৩. রাজস্ব বাজেটের বাইরে বিসিসিটিকে উদ্ভাবনীমূলক কার্যক্রম, যেমন—আন্তর্জাতিক জলবায়ু তহবিল, কার্বন ট্রেডিং, ক্লিন ডেভেলপমেন্ট মেকানিজমসহ বেসরকারি অর্থায়ন উৎস থেকে তহবিল সংগ্রহে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
৪. থিমভিত্তিক, বিপদাপন্নতা ও ঝুঁকির ভৌগোলিক বিন্যাসভিত্তিক এবং বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানভিত্তিক অগ্রাধিকার নির্ধারণ করে বিসিসিটি প্রকল্প বাস্তবায়নে একটি সমন্বিত পথ নকশা প্রস্তুত করতে হবে। পথ নকশায় মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি কার্যক্রমকে অন্তর্ভুক্ত করে সেই অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দ, প্রকল্প অনুমোদন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
৫. বিসিসিটির আওতায় স্বল্পমেয়াদি এবং টাকার অঙ্ক ক্ষুদ্র প্রকল্প বাস্তবায়ন পরিহার করতে হবে। প্রান্তিক, দুর্গম ও ঝুঁকিপূর্ণ জেলা, উপজেলা এবং স্থান যেখানে সাধারণ উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে জলবায়ু ঝুঁকি কার্যকরভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব নয় এমন স্থানে বিসিসিটি থেকে মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প বাস্তবায়নকে প্রাধান্য দিতে হবে।
৬. বাংলাদেশে বাস্তবায়িত জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক জলবায়ু তহবিলের প্রকল্প নিয়মিত তদারকি ও নিরীক্ষা করার জন্য একটি পৃথক স্বাধীন তদারকি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
৭. স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করে প্রকল্প অনুমোদন এবং বাস্তবায়নসহ ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর কাছে জলবায়ু তহবিল কার্যকরভাবে পৌঁছানো নিশ্চিতে বিপদাপন্নতার সূচক এবং ভৌগোলিক বা স্থানিক ঝুঁকিকে প্রাধান্য দিতে হবে।
৮. জাতীয় পর্যায়ে একটি প্রতিষ্ঠানকে জলবায়ু-সংক্রান্ত বিষয় সমন্বয়ের জন্য ফোকাল পয়েন্ট নির্ধারণ করতে হবে। সেই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিকল্পনাসহ অংশীজন সমন্বয় ও আন্তপ্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
৯. তহবিলসমূহের প্রকল্প বাস্তবায়নে বিবিধ অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে, অবকাঠামো ও সৌর সড়কবাতি-সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের স্বাধীন তদন্ত করতে হবে।

বাংলাদেশের জলবায়ু তহবিলের বরাদ্দে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটির সর্বশেষ গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় জলবায়ু তহবিল বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্টের (বিসিসিটি) বরাদ্দের ৫৪ শতাংশেই দুর্নীতি হয়েছে। ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়ে বাস্তবায়িত ৮৯১টি প্রকল্পে অনিয়মের আনুমানিক পরিমাণ বলা হয়েছে ২৪৮ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ২ হাজার ১১০ কোটি টাকা)।
আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) টিআইবির ধানমন্ডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘বাংলাদেশে জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন টিআইবির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো মো. মাহফুজুল হক এবং রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট মো. সহিদুল ইসলাম। এ সময় সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ও আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলামও ছিলেন।
প্রতিবেদনে ২০০৪ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাস্তবায়িত ১২টি তহবিলের আওতায় ৯৪২টি প্রকল্পের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় প্রণীত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ঘাটতি রয়েছে। অর্থের চাহিদার বিপরীতে সামঞ্জস্যপূর্ণ বরাদ্দ দেওয়া হয়নি এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অভাব প্রকট।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সবচেয়ে বিপদাপন্ন অঞ্চলে বরাদ্দের অগ্রাধিকার কম এবং অনেক প্রকল্প বাস্তবে জলবায়ু অভিযোজনের সঙ্গে সম্পর্কহীন। উদাহরণ হিসেবে বলা হয়, জলবায়ু তহবিলের অর্থে সাফারি পার্ক ও ইকোপার্ক নির্মাণের মতো প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, যেখানে নিম্নমানের কাজ, অর্থ আত্মসাৎ ও সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে নিয়মবহির্ভূত অর্থ আদায়ের ঘটনা ঘটেছে।
জাতীয় তহবিলের প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতা এবং ব্যর্থতার প্রকটতাও গবেষণায় উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৮৯১টি প্রকল্পের মধ্যে ৫৪৯টির (৬১ দশমিক ৬ শতাংশ) মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। গড়ে প্রকল্পের মেয়াদ ৬৪৮ দিন থেকে বেড়ে ১ হাজার ৫১৫ দিনে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ ১৩৩ শতাংশের বেশি সময় লেগেছে। কোনো কোনো প্রকল্পে চার বছরের পরিবর্তে ১৪ বছর পর্যন্ত সময় লেগেছে।
টিআইবির অভিযোগ, জলবায়ু অর্থায়নে প্রয়োজনীয় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাব রয়েছে। ২০১৫ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশের জলবায়ু অভিযোজনের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে মাত্র ৮৬ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার, যা প্রয়োজনীয় অর্থের মাত্র শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিবছর জলবায়ু ক্ষতিপূরণ হিসাবে ১০ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। কিন্তু ২০০৩ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আমরা পেয়েছি মাত্র ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার, যা অত্যন্ত নগণ্য।’
গবেষণা প্রতিবেদনে কিছু সুপারিশ করেছে টিআইবি। সেগুলো হলো—
১. বিসিসিএসএপি ২০০৯ এবং জলবায়ু পরিবর্তন-সংক্রান্ত জাতীয় পরিকল্পনাসমূহ হালনাগাদ করে যুগোপযোগী করতে হবে। জাতীয় পরিকল্পনাসমূহ বাস্তবায়নে ট্রাস্ট ফান্ড এবং উন্নয়ন প্রকল্পের আওতার জলবায়ু-সংশ্লিষ্ট অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে।
২. জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট আইন, ২০১০ সংশোধন করতে হবে। আইনে ট্রাস্টের জনবল নিয়োগ ও পদোন্নতির বিষয়ক ধারা সংযোজন করতে হবে। বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি স্বাধীন ট্রাস্টি বোর্ড গঠনের বিধান যুক্ত করতে হবে। ট্রাস্ট থেকে কমপক্ষে একজন বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানসম্পন্ন কর্মকর্তাকে প্রকল্প প্রস্তাব মূল্যায়ন-সংক্রান্ত কারিগরি কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি ফলাফল অর্জনে সক্ষম বা ট্রান্সফর্মেটিভ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য তহবিলের আওতায় অর্থ বরাদ্দের সীমা বৃদ্ধি করতে হবে। জবাবদিহি নিশ্চিত এবং অনিয়ম-দুর্নীতি প্রতিরোধে দেশে প্রচলিত আইন, যেগুলো ট্রাস্টের জন্য প্রযোজ্য, তা সুনির্দিষ্ট করে ট্রাস্ট আইনে উল্লেখ করতে হবে। আর্থিক ও কারিগরি ব্যবস্থাপক হিসেবে বিসিসিটির কর্মকর্তাদের প্রকল্প প্রস্তাব মূল্যায়ন, প্রকল্প বাস্তবায়নের চুক্তি ও শর্তাবলি নির্ধারণ, প্রকল্প অনুমোদন, প্রকল্প বাস্তবায়নের অগ্রগতি ও অর্থ ছাড়, মাঠপর্যায়ে প্রকল্প তদারকি, প্রকল্প পরিবীক্ষণ এবং নথি ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত বিষয়ে দায়িত্ব স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করতে হবে। দুর্নীতি ও স্বার্থের দ্বন্দ্ব প্রতিরোধ, অংশীজনের অংশগ্রহণ, তহবিল ও প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট তথ্য উন্মুক্তকরণ, পরিবেশ ও সামাজিক মূল্যায়ন এবং নিয়মিত নিরীক্ষা-সংক্রান্ত বিষয় নতুন আইনে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৩. রাজস্ব বাজেটের বাইরে বিসিসিটিকে উদ্ভাবনীমূলক কার্যক্রম, যেমন—আন্তর্জাতিক জলবায়ু তহবিল, কার্বন ট্রেডিং, ক্লিন ডেভেলপমেন্ট মেকানিজমসহ বেসরকারি অর্থায়ন উৎস থেকে তহবিল সংগ্রহে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
৪. থিমভিত্তিক, বিপদাপন্নতা ও ঝুঁকির ভৌগোলিক বিন্যাসভিত্তিক এবং বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানভিত্তিক অগ্রাধিকার নির্ধারণ করে বিসিসিটি প্রকল্প বাস্তবায়নে একটি সমন্বিত পথ নকশা প্রস্তুত করতে হবে। পথ নকশায় মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি কার্যক্রমকে অন্তর্ভুক্ত করে সেই অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দ, প্রকল্প অনুমোদন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
৫. বিসিসিটির আওতায় স্বল্পমেয়াদি এবং টাকার অঙ্ক ক্ষুদ্র প্রকল্প বাস্তবায়ন পরিহার করতে হবে। প্রান্তিক, দুর্গম ও ঝুঁকিপূর্ণ জেলা, উপজেলা এবং স্থান যেখানে সাধারণ উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে জলবায়ু ঝুঁকি কার্যকরভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব নয় এমন স্থানে বিসিসিটি থেকে মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প বাস্তবায়নকে প্রাধান্য দিতে হবে।
৬. বাংলাদেশে বাস্তবায়িত জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক জলবায়ু তহবিলের প্রকল্প নিয়মিত তদারকি ও নিরীক্ষা করার জন্য একটি পৃথক স্বাধীন তদারকি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
৭. স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করে প্রকল্প অনুমোদন এবং বাস্তবায়নসহ ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর কাছে জলবায়ু তহবিল কার্যকরভাবে পৌঁছানো নিশ্চিতে বিপদাপন্নতার সূচক এবং ভৌগোলিক বা স্থানিক ঝুঁকিকে প্রাধান্য দিতে হবে।
৮. জাতীয় পর্যায়ে একটি প্রতিষ্ঠানকে জলবায়ু-সংক্রান্ত বিষয় সমন্বয়ের জন্য ফোকাল পয়েন্ট নির্ধারণ করতে হবে। সেই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিকল্পনাসহ অংশীজন সমন্বয় ও আন্তপ্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
৯. তহবিলসমূহের প্রকল্প বাস্তবায়নে বিবিধ অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে, অবকাঠামো ও সৌর সড়কবাতি-সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের স্বাধীন তদন্ত করতে হবে।

একটা সময় প্রায় গোটা বাংলাদেশেই ছিল চিতা বাঘেদের রাজ্য। গত শতকের মাঝামাঝি সময়ে, এমনকি উত্তরা ও মিরপুরেও দেখা মিলত এদের। মধুপুর ও ভাওয়ালের গড় তো ছিল চিতা বাঘেদের প্রিয় বিচরণ ভূমি। গত শুক্রবার নীলফামারী সদর উপজেলার...
২৩ মার্চ ২০২২
শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে আজ বুধবার এই তালিকায় শীর্ষে আছে ভারতের কলকাতা। শহরটির অবস্থা আজ খুব অস্বাস্থ্যকর। আজ ঢাকার বাতাসেও দূষণ কিছুটা বেড়েছে।
৫ ঘণ্টা আগে
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি আরও শক্তিশালী হয়েছে। এটি আজ বুধবার সকালে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে। এর প্রভাবে চট্টগ্রাম উপকূলীয় অঞ্চলে বৃষ্টি হচ্ছে।
৬ ঘণ্টা আগে
পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন মিয়ানমার উপকূলের কাছে একটি লঘুচাপ বিরাজ করছে। এটি উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে মিয়ানমার-বাংলাদেশ উপকূল বরাবর অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ঘূর্ণিঝড় মোন্থার প্রভাব কাটতে না কাটতেই বঙ্গোপসাগরে আবারও লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত সতর্কবার্তায় বলা হয়, পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন মিয়ানমার উপকূলের কাছে একটি লঘুচাপ বিরাজ করছে। এটি উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে মিয়ানমার-বাংলাদেশ উপকূল বরাবর অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকার ওপর দিয়ে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এ জন্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
সতর্কবার্তায় উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
তবে চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চল ছাড়া লঘুচাপটির প্রভাব দেশের অন্যান্য অঞ্চলে পড়বে না বলে মনে করছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।
আজ মঙ্গলবার সকালে আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা আজকের পত্রিকাকে বলেন, বঙ্গোপসাগরে এই লঘুচাপটির নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা খুব। এর প্রভাবে চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও আজ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া সিলেট বিভাগেও আগামীকাল বুধবার বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় মোন্থার প্রভাব কাটতে না কাটতেই বঙ্গোপসাগরে আবারও লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত সতর্কবার্তায় বলা হয়, পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন মিয়ানমার উপকূলের কাছে একটি লঘুচাপ বিরাজ করছে। এটি উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে মিয়ানমার-বাংলাদেশ উপকূল বরাবর অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকার ওপর দিয়ে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এ জন্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
সতর্কবার্তায় উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
তবে চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চল ছাড়া লঘুচাপটির প্রভাব দেশের অন্যান্য অঞ্চলে পড়বে না বলে মনে করছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।
আজ মঙ্গলবার সকালে আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা আজকের পত্রিকাকে বলেন, বঙ্গোপসাগরে এই লঘুচাপটির নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা খুব। এর প্রভাবে চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও আজ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া সিলেট বিভাগেও আগামীকাল বুধবার বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

একটা সময় প্রায় গোটা বাংলাদেশেই ছিল চিতা বাঘেদের রাজ্য। গত শতকের মাঝামাঝি সময়ে, এমনকি উত্তরা ও মিরপুরেও দেখা মিলত এদের। মধুপুর ও ভাওয়ালের গড় তো ছিল চিতা বাঘেদের প্রিয় বিচরণ ভূমি। গত শুক্রবার নীলফামারী সদর উপজেলার...
২৩ মার্চ ২০২২
শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে আজ বুধবার এই তালিকায় শীর্ষে আছে ভারতের কলকাতা। শহরটির অবস্থা আজ খুব অস্বাস্থ্যকর। আজ ঢাকার বাতাসেও দূষণ কিছুটা বেড়েছে।
৫ ঘণ্টা আগে
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি আরও শক্তিশালী হয়েছে। এটি আজ বুধবার সকালে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে। এর প্রভাবে চট্টগ্রাম উপকূলীয় অঞ্চলে বৃষ্টি হচ্ছে।
৬ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের জলবায়ু তহবিলের বরাদ্দে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটির সর্বশেষ গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় জলবায়ু তহবিল বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্টের (বিসিসিটি) বরাদ্দের ৫৪ শতাংশেই দুর্নীতি হয়েছে। ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়
১ দিন আগে