Ajker Patrika

মানিকছড়ির রাবার কারখানার বর্জ্যে নষ্ট হচ্ছে খেত-খামার

হিমেল চাকমা, রাঙামাটি
মানিকছড়ির রাবার কারখানার বর্জ্যে নষ্ট হচ্ছে খেত-খামার

ফুরোমোন পাহাড়ের বুক চিরে নেমে আসা মানিকছড়ি ছড়ার ওপর এক সময় নির্ভর করত আশপাশের মানুষ। সুপেয় পানি পানসহ দৈনন্দিন ধোয়া-মোছার কাজ ও জমিতে সেচ দেওয়া হতো এ ছড়ার পানি দিয়ে। স্বচ্ছ জলাধারার ছড়াটি দূষণে এখন অস্তিত্ব সংকটে। রাঙামাটির মানিকছড়ির একটি রাবার কারখানার বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে ছড়ার পানি। 

কারখানার দূষিত পানি সরাসরি ফেলা হচ্ছে ছড়ায়। এতে মরছে মাছসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণী। পানি সংস্পর্শে হচ্ছে চর্মরোগ। জমিতে সেচ দিলে মরে যাচ্ছে ধান ও সবজি খেত। ধানগাছ মরে যাওয়ায় জমিতে সেচ দেওয়া বন্ধ রেখেছেন কৃষকেরা। 

যে ছড়ায় দূষিত পানি ফেলা হচ্ছে সেটি ফুরোমোন পাহাড় থেকে নেমে এসে সাপছড়ি, মানিকছড়ি, দেপ্পোয়াছড়ি মুখ, গাত্তছড়া, আমছড়ি, কার্বোপাড়া রংঙ্গ্যাছড়ি ওগেয়াছড়ি, আদর্শ গ্রাম, আজাছড়ি মারমা পাড়া হয়ে কাপ্তাই হ্রদে মিশে গেছে। শুষ্ক মৌসুমে এ ছড়ার ওপর নির্ভর করতে হয় এসব গ্রামের প্রায় ৩ হাজার মানুষকে। ভূগর্ভে পাথর থাকার কারণে এসব এলাকায় স্থাপন করা হয় না গভীর নলকূপ। ফলে ছড়ার পানি পান করাসহ গোসলে ব্যবহার করেন তাঁরা। 

মানিকছড়ি শিল্পনগরী এলাকায় মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, ছড়ায় আগে মানুষ গোসল করত। উৎপাদিত সবজি ধুয়ে বাজারে নিত। এখন এ ছড়ার পানি ব্যবহারই করা যাচ্ছে না। পানি ধরলে চুলকানিসহ চর্মরোগ হচ্ছে। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, ছড়ার পানি সাদা হয়ে দুধের মতো রং ধারণ করেছে। দুই পাড়ে ধানের জমিতে সেচ দেওয়া বন্ধ রেখেছেন কৃষকেরা। 

দোপ্পোছড়ি মুখ পাড়ার কৃষক নিক্সন চাকমা বলেন, জমিতে পানি সেচ দেওয়া হলে এ সেচের পানি যখন শুকিয়ে যায় তখন পুরো জমিতে একটি আবরণ পড়ে। এরপর ধানগাছের পাতা লালচে হয়ে যায়। আর ধানগাছ বাড়তে পারে না, মারা যায়। যার জমিতে এ পানি উঠেছে তার জমির এ অবস্থা হয়েছে। এ অবস্থায় সবাই পানি সেচ দেওয়া বন্ধ রেখেছে। 

শিল্পনগরী সড়ক মুখের বাসিন্দা সুষমা চাকমা বলেন, ‘আমার বাচ্চার বয়স তিন বছর। ছড়ায় পানিতে বাচ্চাকে গোসল করানোর পর পুরো শরীরে চর্মরোগ দেখা দিয়েছে। ডাক্তার দেখে বলেছে বাচ্চার শরীরে যে চর্মরোগ তা ভালো করতে হাই পাওয়ার ওষুধ দিতে হবে। কিন্তু সে এ ওষুধ নিতে পারবে না। এমন অবস্থায় খুব কষ্টে আছি। বাচ্চাটা সারা দিন কান্না করে।’ 

রাবার কারখানার বর্জ্যে সাদা রং ধারণ করেছে মানিকছড়ির ছড়ার পানি। ছবি: আজকের পত্রিকা 

মানিকছড়িতে দায়িত্বরত সরকারি চাকরিজীবী নয়ন চক্রবর্তী বলেন, রাবার কারখানাটি এলাকার বায়ু দূষণ করেছে চরমভাবে। এর আশপাশে আর মুক্ত বাতাস নেই। এমন দুর্গন্ধ, আশপাশে খেলাধুলা বা ঘুরে বেড়ানো যায় না। 

রাবার কারখানায় গিয়ে দেখা গেছে, স্থানীয় ছড়া নির্ভর পরিবারগুলোর জন্য একটি পানির ট্যাংক বসানো হয়েছে। সেখান থেকে পানি সংগ্রহ ও গোসল করছেন এসব পরিবারের সদস্যরা। কারখানার পাশে ছড়ায় ভাসমান অবস্থায় মরা তেলাপিয়া, পুঁটি, বেলে, চিংড়ি মাছ দেখা গেছে। কারখানার ভেতরে গিয়ে দেখা গেছে পাঁচটি পাকা হাউজে রাখা হয়েছে রাবার মিশ্রিত পানি। 

কারখানার শ্রমিক মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘আমরা একটি অ্যাসিড ব্যবহার করি। এটি হাতে ধরি। আমাদের কিছু হয় না। আর্মিরা আমাদের কারখানার বর্জ্য পরীক্ষা করে কিছুই পায়নি। কারখানার বর্জ্য আমরা কারখানার বাইরে এক সপ্তাহ রাখি। এরপর ছড়ায় ফেলি।’ 

রাঙামাটি সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু মো. মনিরুজ্জামান বলেন, দূষিত পানির জমিতে সেচ দেওয়ার কারণে জমির ওপরে একটি রাবার আবরণ জমা হচ্ছে। এ জমির ও ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। পানি বিষাক্ত হলে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন করা সম্ভব হবে না। কারখানা বন্ধ করতে বলছি না, এটি সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করে দূষণ রোধ করতে হবে। না হলে এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে এখানে।’ 

 রাবার কারখানায় যে কেমিক্যাল ব্যবহার করা হচ্ছে তা মানব শরীর, ফসল, পরিবেশ ও জীব-বৈচিত্র্যের জন্য ক্ষতিকর। এটি পানিতে দূষণ করছে। এর প্রভাব সবখানে ফেলবে। দূষণ দীর্ঘমেয়াদি হলে এ এলাকার মানুষ ক্যানসারেও আক্রান্ত হবে বলে জানান রাঙামাটি প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো ভিসি প্রাণ ও রসায়নবিদ ড. কাঞ্চন চাকমা। 

রাবার কারখানার বর্জ্যে সাদা রং ধারণ করেছে মানিকছড়ির ছড়ার পানি। ছবি: আজকের পত্রিকা রাঙামাটি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোস্তফা জাভেদ কায়সার বলেন, কারখানাটি যদি পরিবেশের ক্ষতি করে তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

এদিকে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) রাঙামাটির শিল্প নগরী কর্তৃপক্ষ প্লট বরাদ্দ দিলেও পরিবেশবান্ধব পরিকল্পিত কারখানা গড়ে তোলা হচ্ছে কিনা তা নিয়ে কোন নজরদারি নেই। 

রাঙামাটি বিসিকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘আমি রসায়ন বিজ্ঞানে পড়াশোনা করেছি। কারখানায় ক্ষতিকারক কিছুই নেই। যা বলা হচ্ছে সব মিথ্যা। আর্মিদের পরীক্ষা করতে বলেছি। তারা পরীক্ষা করে কিছুই পায়নি। এটি পরীক্ষা করে ক্ষতিকারক কিছু পেলে আমি বন্ধ করে দেব। সে ক্ষমতা আমার আছে। এ নিয়ে আমাকে অনেকে বিরক্ত করছে। সাংবাদিকও আমার পিছে লেগে আছে। সব বুঝি এরা চাঁদার জন্য মূলত এ কাজ করছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সারা দেশে বাড়ছে শীতের অনুভূতি, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রাজশাহী ও তেঁতুলিয়ায়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

সারা দেশের প্রায় সব অঞ্চলে শীতের অনুভূতি বাড়ছে। আজ সোমবার সকাল ৬টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল রাজশাহী ও পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়ায় ১৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় রাজধানী ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আগামী কয়েক দিন তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে কমতে থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

সারা দেশে আজকের আবহাওয়া অধিদপ্তর পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, আজ সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। একই সঙ্গে সারা দেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।

এদিকে সোমবার সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার জন্য ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। তবে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে। এ সময় দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমে যেতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও জানায়, আজ সকাল ৬টায় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৭৯ শতাংশ। আজ সূর্যাস্ত হবে সন্ধ্যা ৫টা ১৪ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ভোর ৬টা ১১ মিনিটে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত সারা দেশের সম্ভাব্য পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, আজ সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। একই সঙ্গে সারা দেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।

আবহাওয়াবিদ ড. ওমর ফারুক আজ সকালে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উত্তরাঞ্চলে শীত পড়তে শুরু করেছে। ক্রমান্বয়ে সারা দেশেই শীত বাড়বে। তবে আপাতত আরও দুই-তিন তাপমাত্রা কমবে। এর পর তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শ্বাসরুদ্ধকর হয়ে উঠছে ঢাকার বাতাস, মহানগরীর ৮ এলাকায় ভয়াবহ পরিস্থিতি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৯: ৩৬
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানী ঢাকা দীর্ঘস্থায়ী এবং বিপজ্জনক বায়ুদূষণের সংকটে ভুগছে। বাতাসের গুণগত মান (একিউআই) নিয়মিতভাবে ‘অস্বাস্থ্যকর’ থেকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ শ্রেণিতে থাকছে।

আইকিউএয়ারসহ বৈশ্বিক বায়ু পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, শহরের এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) প্রায়ই ১৮০ (যা ‘অস্বাস্থ্যকর’ মাত্রা নির্দেশ করে) বা তার চেয়ে বেশি রেকর্ড করা হচ্ছে। দৈনিক গড় মান প্রায়ই ১৫০-এর ওপরে থাকছে, যা ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে চিহ্নিত। এই উদ্বেগজনক সংখ্যাগুলো বাসিন্দাদের জন্য একটি তাৎক্ষণিক এবং গুরুতর জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি তুলে ধরেছে।

অবশ্য শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান শহরগুলো বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় শুরুর দশের মধ্যে অবস্থান করছে। এর মধ্যে আজ রোববার এই তালিকায় শীর্ষে আছে ভারতের দিল্লি। শহরটির অবস্থা আজ দুর্যোগপূর্ণ। আজ ঢাকার বাতাসেও দূষণ বেড়েছে। ঢাকার বাতাস আজ সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর।

বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের আজ সকাল ৯টার রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার গড় বায়ুমান ২১৩। বায়ুদূষণের শীর্ষ শহরগুলোর তালিকায় আজ চতুর্থ স্থানে আছে ঢাকা।

বায়ুদূষণের শীর্ষে থাকা ভারতের দিল্লির বায়ুমান আজ ৬৮৬, যা দুর্যোগপূর্ণ বাতাসের নির্দেশক। শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো পাকিস্তানের লাহোর (৩৫৪), কুয়েতের কুয়েত সিটি (২৮৬), ভারতের কলকাতা (১৯৬), পাকিস্তানের করাচি (১৬১) এবং ইরাকের বাগদাদ (১৫৬)।

ঢাকার নিম্নমানের বাতাসের প্রধান কারণ হলো পিএম ২.৫ বা সূক্ষ্ম কণা। এই অতিক্ষুদ্র কণাগুলো, যাদের ব্যাস ২.৫ মাইক্রোমিটারের চেয়েও কম, ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করে রক্তপ্রবাহে মিশে যেতে পারে। এর ফলে হাঁপানি (অ্যাজমা) বৃদ্ধি, ব্রঙ্কাইটিস এবং হৃদ্‌রোগের মতো শ্বাসযন্ত্র ও হৃদ্‌যন্ত্রের গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।

এদিকে রাজধানী ঢাকার যে কয়টি এলাকায় আজ সকাল ৯টার দিকে ভয়াবহ মাত্রার বায়ুদূষণ রেকর্ড করা হয়েছে, সেগুলো হলো ইস্টার্ন হাউজিং ২২৬, দক্ষিণ পল্লবী ২২৭, কল্যাণপুর ২১৩, বেজ এজওয়াটার ২২৭, আইসিডিডিআরবি ২৫০, গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ১৯৬, গোরান ১৯৪ এবং বেচারাম দেউড়ি ২২৯।

শীতকালীন আবহাওয়ার ধরন, যানবাহন ও শিল্প থেকে অনিয়ন্ত্রিত নির্গমন, চলমান নির্মাণকাজ থেকে সৃষ্ট ধুলো এবং আশপাশের ইটভাটাগুলো এই দূষণ সংকটের জন্য দায়ী।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১ থেকে ২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

বাতাসের এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে করণীয়

অত্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠী: শিশু, বয়স্ক, হৃদ্‌রোগ বা শ্বাসকষ্টের রোগীরা সব ধরনের ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।

সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: তাদের উচিত বাইরে কাটানো সময় সীমিত করা এবং শারীরিক পরিশ্রমের কাজ এড়িয়ে চলা।

যদি বাইরে বের হতে হয়, তবে অবশ্যই দূষণ রোধে কার্যকর মাস্ক ব্যবহার করুন।

ঘরের ভেতরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন এবং দূষিত বাতাস প্রবেশ ঠেকাতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

উত্তরে জেঁকে বসছে শীত, দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৯: ০৯
উত্তরে জেঁকে বসছে শীত, দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায়

কার্তিক মাসের বিদায় বেলায় সারা দেশে শীতের আমেজ শুরু হয়েছে। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলসহ সারা দেশের তাপমাত্রা কমেছে। কুয়াশাও জেঁকে বসেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ রোববার সকাল ৬টায় সারা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ১৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল শনিবার সকালে ছিল ১৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আজকের সারা দেশের পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কোথাও কোথাও ভোরের দিকে হালকা কুয়াশা পড়তে পারে। একই সঙ্গে সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে। দিনের তাপমাত্রাও সামান্য কমতে পারে।

আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান আজ সকালে আজকের পত্রিকাকে বলেন, দিনের ব্যাপ্তি এখন কমছে। এর সঙ্গে তাপমাত্রাও কমে আসছে। আজ সকালে ঢাকাসহ দেশের প্রায় সব অঞ্চলে হালকা শীত অনুভূত হয়েছে। উত্তরাঞ্চলে বেশ ভালো শীত পড়েছে। তবে চট্টগ্রাম অঞ্চলে তুলনামূলক কিছুটা গরম ছিল। সামনের দিনগুলোতে ক্রমান্বয়ে তাপমাত্রা কমতে থাকবে।

এদিকে আজ সকালে রাজধানী ঢাকায় তাপমাত্রা ছিল ২২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ৭২ শতাংশ।

রোববার সকাল ৭টায় ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের পরবর্তী ছয় ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থাকতে পারে, তবে বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই। এ সময় এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে হালকা বাতাস বয়ে যেতে পারে।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা ও আশপাশ অঞ্চলে কোনো বৃষ্টি হয়নি। আজ সূর্যাস্ত হবে ৫টা ১৫ মিনিটে, আর আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ১০ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বন্য প্রাণী ও বন রক্ষায় স্বেচ্ছাসেবক নিচ্ছে সরকার, নিবন্ধন শুরু

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৭: ৩৮
বন্য প্রাণী ও বন রক্ষায় স্বেচ্ছাসেবক নিচ্ছে সরকার, নিবন্ধন শুরু

প্রকৃতি ও বন্য প্রাণী রক্ষায় নাগরিকদের অংশগ্রহণ আরও জোরদার করার লক্ষ্যে স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগের জন্য নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু করেছে সরকার। ঢাকা অঞ্চলের বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে কাজ করছে।

আজ শনিবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা দীপংকর বর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা, বন্য প্রাণীর আবাসস্থল সংরক্ষণ, বন্য প্রাণী উদ্ধার এবং সচেতনতা কার্যক্রমে যারা ইতিমধ্যে কাজ করছেন বা আগ্রহী, তাঁদের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নিবন্ধন ফরম পূরণের আহ্বান জানানো হয়েছে। সংগৃহীত তথ্য সরকারি কাজে ব্যবহৃত হবে।

স্বেচ্ছাসেবকেরা বন্য প্রাণী সংরক্ষণ, অবৈধ বন্য প্রাণী বাণিজ্য প্রতিরোধ, প্রাকৃতিক আবাসস্থল পুনরুদ্ধার এবং স্থানীয় জনগণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে পারবেন।

বন অধিদপ্তর নিবন্ধিত স্বেচ্ছাসেবকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেবে। তাদের সরবরাহকৃত তথ্যের ভিত্তিতে পুরস্কার প্রদান বা বন্য প্রাণী সংরক্ষণে বিশেষ অবদানের জন্য পুরস্কারের বিষয়টিও বিবেচনা করা হবে।

নিবন্ধনের জন্য আগ্রহীরা অনলাইনে এই লিংকে ফরম পূরণ করতে পারবেন।

এ বিষয়ে প্রয়োজনে বন সংরক্ষক, বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল, ঢাকার সঙ্গে মোবাইল নম্বর: ০১৯৯৯০০০০৪২ অথবা ই-মেইল: [email protected], [email protected]এ যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

পরিবেশবান্ধব বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে তরুণ সমাজ ও সাধারণ জনগণকে বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণের কর্মযাত্রায় সম্পৃক্ত করতে উদ্যোগটি নেওয়া হয়েছে। সরকার মনে করে, প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্য রক্ষায় নাগরিকদের সক্রিয় ভূমিকা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ ও সবুজ পৃথিবী গড়ে তুলতে সহায়তা করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত