আজকের পত্রিকা ডেস্ক
গঙ্গা (যা বাংলাদেশে পদ্মা নামেও পরিচিত) দক্ষিণ এশিয়ার কোটি মানুষের জীবনের অবলম্বন। কিন্তু এই অবলম্বনই ব্যাপকভাবে দ্রুত শুকিয়ে যেতে শুরু করেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ইতিহাসে এত দ্রুত কখনোই গঙ্গাকে শুকিয়ে যেতে দেখা যায়নি। তাঁরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন, বদলে যাওয়া মৌসুমি বৃষ্টি, লাগাতার পানি উত্তোলন ও বাঁধ নির্মাণ—সব মিলিয়ে মহাশক্তিশালী এই নদী ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এর প্রভাব পড়ছে খাদ্য, পানির জোগান আর কোটি মানুষের জীবিকার ওপর।
যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ম্যানচেস্টারের এক গবেষণা থেকে এ তথ্য জানা গেছে। গবেষণা নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটেই। এর শিরোনাম ‘The Ganges River is drying faster than ever–here’s what it means for the region and the world. ’ অর্থাৎ, ‘অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় দ্রুত শুকাচ্ছে গঙ্গা, এর আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক প্রভাব কী।’
শতাব্দীর পর শতাব্দী গঙ্গা ও এর উপনদীগুলো পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলের জীবনধারণের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। হিমালয় থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত এই নদী অববাহিকা সাড়ে ৬০০ কোটি মানুষের জীবনের ভরসা। এই নদী ভারতের এক-চতুর্থাংশ মিঠা পানি এবং দেশটির বিশাল খাদ্য ও অর্থনীতির লাইফ লাইন। কিন্তু নতুন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, নদীটির অবক্ষয় এখন রেকর্ডকৃত ইতিহাসের যেকোনো সময়ের চেয়ে দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে।
সাম্প্রতিক দশকগুলোতে বিশ্বের বড় বড় অনেক নদীর রূপান্তর নিয়ে উদ্বেগজনক তথ্য নথিবদ্ধ করেছেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু গঙ্গার ক্ষেত্রে এই পরিবর্তনের গতি ও ব্যাপকতা আলাদা মাত্রা নিয়েছে। এক নতুন গবেষণায় বিজ্ঞানীরা ১ হাজার ৩০০ বছরের প্রবাহের তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন। সেখানে দেখা গেছে, সাম্প্রতিক কয়েক দশকেই অববাহিকাটি ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ খরার মুখোমুখি হয়েছে। আর এই খরাগুলো প্রাকৃতিক জলবায়ু পরিবর্তনের সীমার বাইরে।
যে নদীপথে একসময় সারা বছর নৌযান চলাচল হতো, তা এখন গ্রীষ্মে অচল হয়ে পড়ছে। বড় নৌকা যেগুলো আগে বাংলার নদী থেকে বিহার হয়ে বারাণসী ও এলাহাবাদ পর্যন্ত গঙ্গায় চলত, সেগুলো এখন বালুচরে আটকে যাচ্ছে। যেসব খাল আগে সপ্তাহের পর সপ্তাহ জমিতে পানি বয়ে নিয়ে যেত গঙ্গা থেকে, সেগুলো এখন আগেভাগেই শুকিয়ে যাচ্ছে। এমনকি যেসব কূপ একেক পরিবারকে কয়েক দশক ধরে বাঁচিয়ে রেখেছিল, সেগুলো এখন কেবল ফোঁটা ফোঁটা পানি দিচ্ছে।
বৈশ্বিক জলবায়ু মডেলও গঙ্গার শুকিয়ে যাওয়ার ভয়াবহতা অনুমানে ব্যর্থ হয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এর মানে মানবিক ও পরিবেশগত চাপ এমনভাবে একে অপরের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে, যা আমরা এখনো পুরোপুরি বুঝতে পারিনি। সেচখালগুলোতে অতিরিক্ত পানি সরানো হচ্ছে, কৃষির জন্য ভূগর্ভস্থ পানি পাম্প করা হচ্ছে, নদীর তীরে গড়ে উঠেছে অসংখ্য শিল্পকারখানা। এক হাজারের বেশি বাঁধ ও ব্যারাজ নদীর স্বাভাবিক গতিপথই পাল্টে দিয়েছে। এর সঙ্গে বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে মৌসুমি বৃষ্টিও ক্রমেই অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। ফলাফল হচ্ছে—একটি নদীব্যবস্থা যা নিজেকে আর টিকিয়ে রাখতে পারছে না।
হিমালয়ের উচ্চভূমিতে নদীর উৎস গঙ্গোত্রী হিমবাহ মাত্র দুই দশকে হ্রাস পেয়ে আগের তুলনায় প্রায় এক কিলোমিটার পিছিয়ে গেছে। পুরো হিমালয়ে একই চিত্র দেখা যাচ্ছে—উষ্ণায়নে দ্রুত হিমবাহ গলে যাচ্ছে। প্রথম দিকে এতে হিমবাহ হ্রদ থেকে হঠাৎ বন্যা নামত। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে এর মানে হচ্ছে শুষ্ক মৌসুমে নদীতে অনেক কম পানি প্রবাহিত হবে।
এসব হিমবাহকে বলা হয় ‘এশিয়ার পানির টাওয়ার’। কিন্তু সেই টাওয়ারগুলো ছোট হয়ে আসায় গ্রীষ্মকালে গঙ্গা ও এর উপনদীগুলোর পানির প্রবাহও ভয়াবহভাবে কমে যাচ্ছে।
ভূগর্ভস্থ পানির লাগামহীন উত্তোলন পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করছে। গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র অববাহিকা এখন বিশ্বের দ্রুততম হারে নিঃশেষ হতে থাকা ভূগর্ভস্থ জলাধারগুলোর একটি। প্রতিবছর পানির স্তর ১৫ থেকে ২০ মিলিমিটার পর্যন্ত নেমে যাচ্ছে। এর মধ্যে অনেক ভূগর্ভস্থ পানিই আবার আর্সেনিক ও ফ্লোরাইডে দূষিত। এতে মানবস্বাস্থ্য ও কৃষি উভয়ই হুমকির মুখে।
মানুষের প্রকৌশলগত হস্তক্ষেপও বড় ভূমিকা রাখছে। ভারতের ফারাক্কা ব্যারাজের মতো প্রকল্পগুলো শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে পানির প্রবাহ কমিয়ে দিয়েছে। এতে মাটি আরও লবণাক্ত হচ্ছে আর হুমকির মুখে পড়ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। স্বল্পমেয়াদি অর্থনৈতিক লাভকে অগ্রাধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্তগুলো নদীর পরিবেশগত ভারসাম্য ভেঙে দিয়েছে।
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল আর পশ্চিমবঙ্গে অনেক ছোট নদী গ্রীষ্মেই শুকিয়ে যাচ্ছে। এতে গ্রামাঞ্চলে মানুষ ফসল ও গবাদিপশুর জন্য পানি পাচ্ছে না। এই উপনদীগুলোর অদৃশ্য হয়ে যাওয়া বড় সতর্কবার্তা, যা জানিয়ে দিচ্ছে গঙ্গার ক্ষেত্রেও একই পরিণতি ঘটতে পারে। বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা, এখনই কিছু না বদলালে কয়েক দশকের মধ্যে অববাহিকার কোটি মানুষ ভয়াবহ খাদ্য সংকটের মুখে পড়বে।
এখন আর টুকরো টুকরো সমাধানে কাজ হবে না। জরুরি ভিত্তিতে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া ছাড়া গঙ্গাকে রক্ষা করা সম্ভব নয়। এর মানে হচ্ছে, ভূগর্ভস্থ পানির অতি ব্যবহার কমানো, যাতে স্বাভাবিকভাবে পুনরায় মজুত হতে পারে। এর মানে নদীতে পর্যাপ্ত প্রবাহ বজায় রাখা, যাতে মানুষ ও পরিবেশ দুটিই টিকে থাকে। এর মানে উন্নত জলবায়ু মডেল তৈরি করা, যেখানে সেচ, বাঁধ ও মৌসুমি বৃষ্টির অনিশ্চয়তা একসঙ্গে বিবেচনায় রাখা হবে।
একই সঙ্গে সীমান্তপারের সহযোগিতা অপরিহার্য। ভারত, বাংলাদেশ ও নেপালকে আরও বেশি করে তথ্য ভাগাভাগি করতে হবে, বাঁধ পরিচালনায় সমন্বয় করতে হবে, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় যৌথ পরিকল্পনা নিতে হবে। আন্তর্জাতিক তহবিল আর রাজনৈতিক অঙ্গীকারেও গঙ্গার মতো নদীগুলোকে বৈশ্বিক অগ্রাধিকার হিসেবে নিতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে শাসনব্যবস্থা যেন অংশগ্রহণমূলক হয়—স্থানীয় মানুষের কণ্ঠস্বর, বিজ্ঞানী আর নীতিনির্ধারকদের পাশাপাশি নদী পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় সমানভাবে গুরুত্ব পায়।
গঙ্গা শুধু একটি নদী নয়। এটি জীবনরেখা, এটি পবিত্র প্রতীক, এটি দক্ষিণ এশীয় সভ্যতার ভিত্তি। কিন্তু এই নদী এখন ইতিহাসে যেকোনো সময়ের চেয়ে দ্রুত শুকিয়ে যাচ্ছে। নিষ্ক্রিয়তার পরিণতি অকল্পনীয়। সতর্কবার্তার সময় শেষ হয়ে গেছে। এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে গঙ্গা বয়ে চলে—শুধু আমাদের জন্য নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও।
গঙ্গা (যা বাংলাদেশে পদ্মা নামেও পরিচিত) দক্ষিণ এশিয়ার কোটি মানুষের জীবনের অবলম্বন। কিন্তু এই অবলম্বনই ব্যাপকভাবে দ্রুত শুকিয়ে যেতে শুরু করেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ইতিহাসে এত দ্রুত কখনোই গঙ্গাকে শুকিয়ে যেতে দেখা যায়নি। তাঁরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন, বদলে যাওয়া মৌসুমি বৃষ্টি, লাগাতার পানি উত্তোলন ও বাঁধ নির্মাণ—সব মিলিয়ে মহাশক্তিশালী এই নদী ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এর প্রভাব পড়ছে খাদ্য, পানির জোগান আর কোটি মানুষের জীবিকার ওপর।
যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ম্যানচেস্টারের এক গবেষণা থেকে এ তথ্য জানা গেছে। গবেষণা নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটেই। এর শিরোনাম ‘The Ganges River is drying faster than ever–here’s what it means for the region and the world. ’ অর্থাৎ, ‘অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় দ্রুত শুকাচ্ছে গঙ্গা, এর আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক প্রভাব কী।’
শতাব্দীর পর শতাব্দী গঙ্গা ও এর উপনদীগুলো পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলের জীবনধারণের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। হিমালয় থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত এই নদী অববাহিকা সাড়ে ৬০০ কোটি মানুষের জীবনের ভরসা। এই নদী ভারতের এক-চতুর্থাংশ মিঠা পানি এবং দেশটির বিশাল খাদ্য ও অর্থনীতির লাইফ লাইন। কিন্তু নতুন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, নদীটির অবক্ষয় এখন রেকর্ডকৃত ইতিহাসের যেকোনো সময়ের চেয়ে দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে।
সাম্প্রতিক দশকগুলোতে বিশ্বের বড় বড় অনেক নদীর রূপান্তর নিয়ে উদ্বেগজনক তথ্য নথিবদ্ধ করেছেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু গঙ্গার ক্ষেত্রে এই পরিবর্তনের গতি ও ব্যাপকতা আলাদা মাত্রা নিয়েছে। এক নতুন গবেষণায় বিজ্ঞানীরা ১ হাজার ৩০০ বছরের প্রবাহের তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন। সেখানে দেখা গেছে, সাম্প্রতিক কয়েক দশকেই অববাহিকাটি ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ খরার মুখোমুখি হয়েছে। আর এই খরাগুলো প্রাকৃতিক জলবায়ু পরিবর্তনের সীমার বাইরে।
যে নদীপথে একসময় সারা বছর নৌযান চলাচল হতো, তা এখন গ্রীষ্মে অচল হয়ে পড়ছে। বড় নৌকা যেগুলো আগে বাংলার নদী থেকে বিহার হয়ে বারাণসী ও এলাহাবাদ পর্যন্ত গঙ্গায় চলত, সেগুলো এখন বালুচরে আটকে যাচ্ছে। যেসব খাল আগে সপ্তাহের পর সপ্তাহ জমিতে পানি বয়ে নিয়ে যেত গঙ্গা থেকে, সেগুলো এখন আগেভাগেই শুকিয়ে যাচ্ছে। এমনকি যেসব কূপ একেক পরিবারকে কয়েক দশক ধরে বাঁচিয়ে রেখেছিল, সেগুলো এখন কেবল ফোঁটা ফোঁটা পানি দিচ্ছে।
বৈশ্বিক জলবায়ু মডেলও গঙ্গার শুকিয়ে যাওয়ার ভয়াবহতা অনুমানে ব্যর্থ হয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এর মানে মানবিক ও পরিবেশগত চাপ এমনভাবে একে অপরের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে, যা আমরা এখনো পুরোপুরি বুঝতে পারিনি। সেচখালগুলোতে অতিরিক্ত পানি সরানো হচ্ছে, কৃষির জন্য ভূগর্ভস্থ পানি পাম্প করা হচ্ছে, নদীর তীরে গড়ে উঠেছে অসংখ্য শিল্পকারখানা। এক হাজারের বেশি বাঁধ ও ব্যারাজ নদীর স্বাভাবিক গতিপথই পাল্টে দিয়েছে। এর সঙ্গে বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে মৌসুমি বৃষ্টিও ক্রমেই অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। ফলাফল হচ্ছে—একটি নদীব্যবস্থা যা নিজেকে আর টিকিয়ে রাখতে পারছে না।
হিমালয়ের উচ্চভূমিতে নদীর উৎস গঙ্গোত্রী হিমবাহ মাত্র দুই দশকে হ্রাস পেয়ে আগের তুলনায় প্রায় এক কিলোমিটার পিছিয়ে গেছে। পুরো হিমালয়ে একই চিত্র দেখা যাচ্ছে—উষ্ণায়নে দ্রুত হিমবাহ গলে যাচ্ছে। প্রথম দিকে এতে হিমবাহ হ্রদ থেকে হঠাৎ বন্যা নামত। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে এর মানে হচ্ছে শুষ্ক মৌসুমে নদীতে অনেক কম পানি প্রবাহিত হবে।
এসব হিমবাহকে বলা হয় ‘এশিয়ার পানির টাওয়ার’। কিন্তু সেই টাওয়ারগুলো ছোট হয়ে আসায় গ্রীষ্মকালে গঙ্গা ও এর উপনদীগুলোর পানির প্রবাহও ভয়াবহভাবে কমে যাচ্ছে।
ভূগর্ভস্থ পানির লাগামহীন উত্তোলন পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করছে। গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র অববাহিকা এখন বিশ্বের দ্রুততম হারে নিঃশেষ হতে থাকা ভূগর্ভস্থ জলাধারগুলোর একটি। প্রতিবছর পানির স্তর ১৫ থেকে ২০ মিলিমিটার পর্যন্ত নেমে যাচ্ছে। এর মধ্যে অনেক ভূগর্ভস্থ পানিই আবার আর্সেনিক ও ফ্লোরাইডে দূষিত। এতে মানবস্বাস্থ্য ও কৃষি উভয়ই হুমকির মুখে।
মানুষের প্রকৌশলগত হস্তক্ষেপও বড় ভূমিকা রাখছে। ভারতের ফারাক্কা ব্যারাজের মতো প্রকল্পগুলো শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে পানির প্রবাহ কমিয়ে দিয়েছে। এতে মাটি আরও লবণাক্ত হচ্ছে আর হুমকির মুখে পড়ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। স্বল্পমেয়াদি অর্থনৈতিক লাভকে অগ্রাধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্তগুলো নদীর পরিবেশগত ভারসাম্য ভেঙে দিয়েছে।
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল আর পশ্চিমবঙ্গে অনেক ছোট নদী গ্রীষ্মেই শুকিয়ে যাচ্ছে। এতে গ্রামাঞ্চলে মানুষ ফসল ও গবাদিপশুর জন্য পানি পাচ্ছে না। এই উপনদীগুলোর অদৃশ্য হয়ে যাওয়া বড় সতর্কবার্তা, যা জানিয়ে দিচ্ছে গঙ্গার ক্ষেত্রেও একই পরিণতি ঘটতে পারে। বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা, এখনই কিছু না বদলালে কয়েক দশকের মধ্যে অববাহিকার কোটি মানুষ ভয়াবহ খাদ্য সংকটের মুখে পড়বে।
এখন আর টুকরো টুকরো সমাধানে কাজ হবে না। জরুরি ভিত্তিতে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া ছাড়া গঙ্গাকে রক্ষা করা সম্ভব নয়। এর মানে হচ্ছে, ভূগর্ভস্থ পানির অতি ব্যবহার কমানো, যাতে স্বাভাবিকভাবে পুনরায় মজুত হতে পারে। এর মানে নদীতে পর্যাপ্ত প্রবাহ বজায় রাখা, যাতে মানুষ ও পরিবেশ দুটিই টিকে থাকে। এর মানে উন্নত জলবায়ু মডেল তৈরি করা, যেখানে সেচ, বাঁধ ও মৌসুমি বৃষ্টির অনিশ্চয়তা একসঙ্গে বিবেচনায় রাখা হবে।
একই সঙ্গে সীমান্তপারের সহযোগিতা অপরিহার্য। ভারত, বাংলাদেশ ও নেপালকে আরও বেশি করে তথ্য ভাগাভাগি করতে হবে, বাঁধ পরিচালনায় সমন্বয় করতে হবে, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় যৌথ পরিকল্পনা নিতে হবে। আন্তর্জাতিক তহবিল আর রাজনৈতিক অঙ্গীকারেও গঙ্গার মতো নদীগুলোকে বৈশ্বিক অগ্রাধিকার হিসেবে নিতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে শাসনব্যবস্থা যেন অংশগ্রহণমূলক হয়—স্থানীয় মানুষের কণ্ঠস্বর, বিজ্ঞানী আর নীতিনির্ধারকদের পাশাপাশি নদী পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় সমানভাবে গুরুত্ব পায়।
গঙ্গা শুধু একটি নদী নয়। এটি জীবনরেখা, এটি পবিত্র প্রতীক, এটি দক্ষিণ এশীয় সভ্যতার ভিত্তি। কিন্তু এই নদী এখন ইতিহাসে যেকোনো সময়ের চেয়ে দ্রুত শুকিয়ে যাচ্ছে। নিষ্ক্রিয়তার পরিণতি অকল্পনীয়। সতর্কবার্তার সময় শেষ হয়ে গেছে। এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে গঙ্গা বয়ে চলে—শুধু আমাদের জন্য নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও।
বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান ১৭২। দূষিত শহরের বাতাসের তালিকায় ঢাকার অবস্থান আজ দ্বিতীয়। গতকাল বুধবার ১৫৩ স্কোর নিয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় ৪র্থ স্থানে ছিল ঢাকা।
৭ ঘণ্টা আগেদুপুর পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় আকাশ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। মেঘাচ্ছন্ন আকাশের পাশাপাশি বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিও হতে পারে। এ সময় দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে।
৯ ঘণ্টা আগেরাজধানীর নদী ও খাল দূষণমুক্ত করা কঠিন হলেও তা অসম্ভব নয়। এ জন্য সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে এবং উৎস থেকে বর্জ্য ফেলার প্রবণতা বন্ধ করতে হবে। শুধু ড্রেজিং করে কিংবা দায় এড়িয়ে সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়।
১ দিন আগেবায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের আজ বুধবার সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান ১৫৩। দূষিত শহরের বাতাসের তালিকায় ঢাকার অবস্থান ৪র্থ। গতকাল মঙ্গলবার ১০৭ স্কোর নিয়ে বায়ুদূষণের তালিকায় ৯ম স্থানে ছিল ঢাকা।
১ দিন আগে