Ajker Patrika

দেশে ৫ বছরে কীটনাশকের ব্যবহার বেড়েছে ৮১.৫ শতাংশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
জার্নালিস্ট ওরিয়েন্টেশন ওয়ার্কশপ অন পেস্টিসাইড রিস্ক রিডাকশন—কর্মশালায় উপস্থিত অতিথিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জার্নালিস্ট ওরিয়েন্টেশন ওয়ার্কশপ অন পেস্টিসাইড রিস্ক রিডাকশন—কর্মশালায় উপস্থিত অতিথিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশে গত পাঁচ বছরে কীটনাশকের ব্যবহার ৮১ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে। ধান, শাকসবজি ও ফলমূল উৎপাদনে এসব কীটনাশক ব্যবহৃত হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) অডিটোরিয়ামে কেয়ার বাংলাদেশ (কেবি) আয়োজিত ‘জার্নালিস্ট ওরিয়েন্টেশন ওয়ার্কশপ অন পেস্টিসাইড রিস্ক রিডাকশন’—কর্মশালায় উপস্থাপিত তথ্য থেকে এ চিত্র উঠে আসে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) মহাপরিচালক মো. ছাইফুল আলম। সভাপতিত্ব করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) সাবেক মহাপরিচালক আব্দুল মুঈদ। কর্মশালায় বক্তব্য দেন—কেবির এশিয়া অঞ্চলের ডেভেলপমেন্ট কমিউনিকেশন ম্যানেজার আজমত আব্বাস, বাংলাদেশ কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ ড. সালেহ আহমেদ ও প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর ড. দিলরুবা শারমিন। উপস্থিত ছিলেন ডিএই–এর সরেজমিন উইংয়ের পরিচালক মো. ওবায়দুর রহমান মণ্ডলসহ অনেকে।

উপস্থাপনায় জানানো হয়, দেশে ৫০ বছরে কীটনাশকের ব্যবহার বেড়েছে প্রায় ১০ গুণ। ১৯৭২ সালে ব্যবহার ছিল মাত্র ৪ হাজার মেট্রিক টন, ২০২২ সালে তা দাঁড়ায় ৪০ হাজার মেট্রিক টনে। ১৯৯৭ সালে ১১ হাজার ৩৬৭ টন কীটনাশক ব্যবহার হলেও ২০২২ সালে তা বেড়ে হয় ৩৯ হাজার ২৪৩ টন। ২০২৩ সালে ব্যবহারের পরিমাণ ছিল ৩৯ হাজার ১৫৭ টন। দেশে বর্তমানে ৮ হাজার ১৩টি কীটনাশকের নিবন্ধন রয়েছে, এর মধ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে ৩৬৩ টি। কোম্পানি রয়েছে ৭৫৪ টি।

ডিএই মহাপরিচালক মো. ছাইফুল আলম বলেন, ‘সাংবাদিকদের প্রতিবেদনের কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে। এখন কৃষকেরা কীটনাশক ব্যবহারের আগে ভাবেন, অযথা ব্যবহার কমাচ্ছেন। তবে খাদ্য উৎপাদন বাড়লেও নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ততটা বাড়েনি। ২০৫০ সালের মধ্যে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদনে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’

আব্দুল মুঈদ বলেন, ‘কীটনাশক পোকামাকড় দমন করলেও মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ক্যানসারসহ নানা রোগবালাইয়ের ঝুঁকি তৈরি করছে এগুলো। তিনি জানান, ক্যানসারে আক্রান্তদের ৬৪ শতাংশই কৃষক। কীটনাশক স্প্রে করতে গিয়ে তারা আক্রান্ত হচ্ছেন।’

আব্দুল মুঈদ আরও বলেন, ১৯৫৩ সালে দেশে কীটনাশকের ব্যবহার শুরু হয়। সে সময় ফসল বাঁচানোর উদ্দেশ্য থাকলেও এখন এর কারণে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। তিনি মনে করেন, দেশে আইন পর্যাপ্ত থাকলেও বাস্তবায়নে জোর দিতে হবে।

ড. দিলরুবা শারমিন বলেন, ‘দেশে কীটনাশকের বাজার এখন ৫ হাজার কোটি টাকার। মাছ চাষেও এগুলোর ব্যবহার বাড়ছে, বিশেষ করে শুঁটকিতে। ঘরে ঘরে ক্যানসার রোগী বাড়ছে। তিনি জানান, দেশে ইতিমধ্যে ১১০টি বায়ো-পেস্টিসাইড নিবন্ধিত হয়েছে এবং সরকার ৪০টি ক্ষতিকর কীটনাশক নিষিদ্ধ করেছে।’

ড. সালেহ আহমেদ বলেন, ‘কীভাবে কীটনাশকের ব্যবহার সীমিত করা যায়, সেই বিষয়ে কাজ চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত