Ajker Patrika

বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্ত থেকে ফিরে এল সবুজ কচ্ছপ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সবুজ কচ্ছপের সংখ্যা এখন বাড়ছে। ছবি: বিবিসি
সবুজ কচ্ছপের সংখ্যা এখন বাড়ছে। ছবি: বিবিসি

বিলুপ্তির মুখ থেকে নাটকীয়ভাবে ফিরে এসেছে সবুজ কচ্ছপ। বিজ্ঞানীরা এই সাফল্যকে ‘একটি বড় সংরক্ষণ জয়’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। একসময় কচ্ছপের স্যুপ, ডিম এবং শাঁসের চাহিদায় প্রাচীন এই সামুদ্রিক প্রাণীটি নির্বিচারে শিকার হতো। ফলে তাদের সংখ্যা দ্রুত হ্রাস পায় এবং ১৯৮০-এর দশক থেকে প্রজাতিটিকে ‘বিপন্ন’ তালিকায় রাখা হয়।

তবে কয়েক দশক ধরে বিশ্বব্যাপী সংরক্ষণ প্রচেষ্টার ফলে নতুন তথ্য বলছে, সবুজ কচ্ছপের সংখ্যা এখন বাড়ছে। এসব সংরক্ষণ প্রচেষ্টার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—সৈকতে পাহারা, মাদি কচ্ছপ ও তাদের ডিমের সুরক্ষা, নবজাত কচ্ছপ সমুদ্রে ছেড়ে দেওয়া, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং মাছ ধরায় ব্যবহৃত জালে কচ্ছপ আটকানো রোধে প্রযুক্তি প্রয়োগ।

বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্ত থেকে সবুজ কচ্ছপের ফিরে আসা নিয়ে মালয়েশিয়ার সাবাহ প্রদেশভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান মেরিন রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ড. নিকোলাস পিলচার বলেছেন, ‘এই সাফল্যকে আমরা আরও অনেক সাফল্যের প্রেরণা হিসেবে ব্যবহার করতে পারি।’

শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বিবিসি জানিয়েছে, সবুজ কচ্ছপ সাতটি জীবিত সামুদ্রিক কচ্ছপ প্রজাতির একটি এবং আকারে এটি সবচেয়ে বড়গুলোর মধ্যে অন্যতম। এদের নাম এসেছে শরীরের সবুজাভ রঙ থেকে। উদ্ভিদভিত্তিক খাদ্য গ্রহণের ফলেই এই ধরনের সবুজাভ আভা কচ্ছপগুলোর শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। তবে সাতটি প্রজাতির মধ্যে দুটি এখনো ‘অতিমাত্রায় বিপন্ন’ তালিকায় রয়েছে।

ইউনিভার্সিটি অব এক্সেটারের সংরক্ষণ বিজ্ঞানী প্রফেসর ব্রেনডান গডলি বলেছেন, ‘গত পঞ্চাশ বছরে ধারাবাহিক সংরক্ষণ উদ্যোগের কারণে বিশ্বের অনেক অঞ্চলে সবুজ কচ্ছপের সংখ্যা পুনরুদ্ধারের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। কাজটি এখনো শেষ হয়নি, তবে এটি আশার বার্তা।’

তিনি আরও বলেন, ‘সমুদ্র কচ্ছপ এমন এক প্রতীকী ও অনুপ্রেরণাদায়ী প্রাণী, যাদের টিকিয়ে রাখতে শতসহস্র মানুষ দশকের পর দশক কাজ করে চলেছেন এবং তা নিঃসন্দেহে ফল দিয়েছে।’

ফিলিপাইনে মাছ ধরার জালে আটকে পড়া একটি সবুজ কচ্ছপকে উদ্ধার করেছেন জেলেরা। ছবি: বিবিসি
ফিলিপাইনে মাছ ধরার জালে আটকে পড়া একটি সবুজ কচ্ছপকে উদ্ধার করেছেন জেলেরা। ছবি: বিবিসি

সম্প্রতি ‘প্রকৃতি সংরক্ষণের আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন’ (আইইউসিএন) এর ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে প্রকাশিত বিপন্ন প্রজাতির লাল তালিকায় ১ লাখ ৭২ হাজার ৬২০টি প্রজাতির নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৪৮ হাজার ৬৪৬টি বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে। মূলত হালনাগাদ তথ্যে কোনো প্রজাতির সংখ্যা বা বাসস্থান পরিবর্তনের ওপর ভিত্তি করে তাদের ঝুঁকির স্তর নির্ধারণ করা হয়।

তালিকাটিতে সবুজ কচ্ছপকে এবার ‘বিপন্ন’ থেকে ‘সর্বনিম্ন ঝুঁকিপূর্ণ’ শ্রেণিতে নামিয়ে আনা হয়েছে। তবে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন—এই অগ্রগতির পরও প্রজাতিটি এখনো অতীতের তুলনায় সংখ্যায় অনেক কম। অতিরিক্ত মাছ ধরা, বাসস্থান ধ্বংস এবং জলবায়ু পরিবর্তন এখনো তাদের অস্তিত্বের জন্য বড় হুমকি। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার রেইন দ্বীপের মতো জায়গায় ডিম ফোটার হার কমে যাওয়ায় সংরক্ষণের কাজটি এখনো চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।

অন্যদিকে, সর্বশেষ তালিকায় আর্কটিক অঞ্চলের সিল প্রজাতির জন্য এসেছে দুঃসংবাদ। সমুদ্রের বরফ দ্রুত গলে যাওয়ায় হুডেড সিল ‘সংকটাপন্ন’ এবং বিয়ার্ড ও হার্প সিল ‘প্রায় ঝুঁকিপূর্ণ’ তালিকায় নেমে এসেছে। বরফের ওপর নির্ভর করে প্রজনন, বিশ্রাম ও খাদ্য সংগ্রহ করা এসব প্রাণীর অস্তিত্ব এখন গুরুতর ঝুঁকিতে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিসিএসে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর নিয়ে প্রশ্ন, নেই মুক্তিযুদ্ধ

যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, নিহত ও নিখোঁজ বহু

স্বামীকে হত্যার পর ইয়াবা সেবন করে লাশ টুকরো করেন স্ত্রী ও প্রেমিক

ইরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে বাংলাদেশমুখী এলপিজির জাহাজ

সমুদ্রের নিচে উদ্বেগজনক কিছু নজরে এল বিজ্ঞানীদের

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত