Ajker Patrika

চলে গেলেন মুক্তিযোদ্ধা ও অভিনেতা খালেকুজ্জামান

বিনোদন প্রতিবেদক
চলে গেলেন মুক্তিযোদ্ধা ও অভিনেতা খালেকুজ্জামান

মারা গেছেন মুক্তিযোদ্ধা, অভিনেতা খালেকুজ্জামান। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। অভিনেতা খালেকুজ্জামানের ছেলে জিশান জানিয়েছেন, দুদিন আগে তাঁর জ্বর উঠেছিল। সেটাও ভালো হয়েছিল। গতকাল সকালে হঠাৎ করেই তাঁর শ্বাস কষ্ট ওঠে। বেলা ১১টার দিকে তাঁকে রাজধানীর ইমপালস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া পর সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

জোহর নামাজের পর নিকেতনে খালেকুজ্জামানের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বিমানবন্দর কার্গো মাঠে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা জানিয়েছেন জিশান। এরপর অভিনেতার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে তাঁর গ্রামের বাড়ি নরসিংদীতে। সেখানে বাদ এশা তৃতীয় জানাজা শেষে বাবা-মায়ের পাশে দাফন করা হবে তাঁকে।

অভিনেতা খালেকুজ্জামানের মৃত্যুতে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁর দীর্ঘদিনের সহকর্মী, অভিনয় শিল্পী ও কলাকুশলীরা শোক প্রকাশ করেছেন অভিনেতার মৃত্যুতে।

অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবিব নাসিম বলেছেন, ‘অভিনেতা খালেকুজ্জামানের মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। দীর্ঘ অভিনয় জীবনে তাঁর অবদান সত্যিই অনস্বীকার্য। আমরা তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।’

নির্মাতা শিহাব শাহীন সোশ্যাল হ্যান্ডেলে বলেছেন, “আমার অনেক প্রিয়, অনেক দিনের সহকর্মী খালেক ভাই আজ (২১ মার্চ) সকালে মারা গেছেন। সেই ২০০৭ সাল থেকে ‘এক্স ফ্যাক্টর’ দিয়ে খালেক ভাইয়ের সঙ্গে পথচলা। অসংখ্য কাজ হয়েছে খালেক ভাইয়ের সাথে। আজ ছেড়ে চলে গেলেন। দারুণ ভালো একজন মানুষ ছিলেন খালেকুজ্জামান!”

অভিনেত্রী তানভীন সুইটি বলেছেন, ‘অনেক ভালো মনের একজন মানুষ ছিলেন। সব সময় হাসি থাকতো তাঁর মুখে, এত ভালো ব্যবহার ছিল তাঁর। সবাই আমরা এক সময় এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাব এবং এটাই বড় সত্য। আংকেলের আত্মার শান্তি কামনা করি।’

অভিনেতা মোশাররফ করিম বলেছেন, ‘আমার অনেক প্রিয় একজন অভিনেতা খালকুজ্জামান আর নেই। মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে। তার আত্মার শান্তি কামনা করছি।’

অভিনেতা খালেকুজ্জামান (১৯৫০–২০২৩)অভিনেতা অপূর্ব সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘আমাদের সকলের প্রিয় সহকর্মী এম. খালেকুজ্জামান আজ সকালে মারা গেছেন। সবাই ওনার জন্য দোয়া করবেন।’

অভিনেত্রী মনিরা মিঠু বলেছন, ‘একজন গুণী শিল্পী এবং চমৎকার মানুষ ছিলেন অভিনেতা খালেকুজ্জামান ভাই। আল্লাহ উনাকে বেহেশত নসিব করুন।’

খালেকুজ্জামান মুক্তিযুদ্ধের সময় মুজিব বাহিনীর হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। টিভি নাটকে তার যাত্রা শুরু বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত ‘সর্পভ্রমে রজ্জু’ নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। ১৯৭৫ সালে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত শিল্পী হন। সেই সময়ে তিনি নায়ক রাজ রাজ্জাক ও কবরীর সঙ্গে কামাল আহমেদ পরিচালিত ‘অনির্বাণ’ সিনেমায় অভিনয় করেন। অভিনয় জীবনের শুরুতে টিভিতে ‘তমা’, ‘বড় বাড়ি’, ‘সময় অসময়’, ‘সুবর্ণ সময়’ নাটকে অভিনয় করে প্রশংসিত হন।

বহু নাটকে বাবা চরিত্রের অন্যতম সফল অভিনেতা খালেকুজ্জামান। একজন আদর্শ বাবা হিসেবেই দর্শক তাকে নাটকে দেখতে ভালোবাসেন। খালেকুজ্জামানও দর্শকের এই ভালো লাগা ভালোবাসাকে সঙ্গে নিয়ে বাবা চরিত্রে অভিনয়েই স্বাচ্ছন্দ্য খুঁজে পেতেন। নরসিংদীর ডা. কামরুজ্জামান ও শায়েস্তা আক্তার জামান দম্পতির সন্তান খালেকুজ্জামানের জন্ম সান্তাহারে। নাট্যকলা বিষয়ে দেশে প্রথম স্নাতকোত্তরদের একজন খালেকুজ্জামান।তাঁর স্ত্রী সুলতানা মমতাজ একজন সংগীতশিল্পী। তার ছেলে জিসান, মেয়ে মৌরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত