Ajker Patrika

ফিরোজা বেগমকে নিয়ে গবেষণা হওয়া উচিত

মীর রাকিব হাসান
ফিরোজা বেগমকে নিয়ে গবেষণা হওয়া উচিত

আজ প্রখ্যাত নজরুলসংগীত শিল্পী ফিরোজা বেগমের মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৪ সালের এই দিনে মারা যান উপমহাদেশের খ্যাতনামা এই শিল্পী। তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়ে স্মৃতিচারণা করেছেন শিল্পীপুত্র ব্যান্ড তারকা শাফিন আহমেদ।

না থাকার সাত বছর। এর মধ্যে আমরা ওনার রেকর্ড করা গান, সাক্ষাৎকার, অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া, বিভিন্ন সময়ে তোলা ছবিসহ ওনাকে নিয়ে বিস্তর তথ্য নিয়ে একটা ওয়েবসাইট সাজিয়েছি। সম্প্রতি সেটা উদ্বোধনও করা হয়েছে। ফিরোজা বেগম আর্কাইভ নামে এই ওয়েবসাইটটা স্টাডি করলে অনেক কিছু জানতে পারবে এই প্রজন্ম। এটা বিশাল একটি কাজ। অনেক কষ্ট করে সাজিয়েছি। সাইটটাতে বাবা কমল দাশগুপ্তেরও অনেক তথ্য রয়েছে। এই কাজে আমাদের সহযোগিতা করেছে এসিআই ফাউন্ডেশন। আমরা গর্বিত যে একটা বড় কাজ করতে পারলাম।

শিল্পীপুত্র ব্যান্ড তারকা শাফিন আহমেদমায়ের কথা প্রতিনিয়তই স্মরণ করতে হয়। আমাদের মা ছিলেন বলেই নয়, উনি একজন সংগীতবিশারদ ছিলেন। সংগীতের অনেক কিছু ওনার সঙ্গে আলাপ করা যেত। এমন মানুষের সংস্পর্শ পাওয়াও তো সৌভাগ্যের ব্যাপার। প্রতিদিন চলতে-ফিরতে তাঁর কথা মনে পড়ে। থমকে যাই। খুব মিস করি মাকে। খেতে বসলে মিস করি, শরীর খারাপ হলে মিস করি। গানবাজনাতেও মিস করি। উনি এখনো আমার জীবনে গভীরভাবে উপস্থিত আছেন। প্রায়ই মনে হয় উনি বেঁচে আছেন। এই তো এসে কথা বলবেন। পরক্ষণেই যখন মনে পড়ে উনি নেই, এক শূন্যতায় মন কেঁদে ওঠে।

গানের মানুষ হিসেবে বলব, তাঁকে নিয়ে গবেষণা করা উচিত। বিশেষ করে শিল্পীদের উচিত তাঁকে নিয়ে পড়াশোনা করা। তাহলে বুঝতে পারবে একজন উচ্চমানের শিল্পী হতে কী গুণ থাকতে হয়।

কীভাবে গানের তপস্যা করতে হয়। কীভাবে নিজের লক্ষ্যের প্রতি সৎ থাকতে পারে। উনি কীভাবে নজরুলসংগীত গাইতেন, কীভাবে নজরুলের গানকে সারা বিশ্বের শ্রোতাদের সামনে তুলে ধরেছেন।

ফিরোজা বেগম (১৯৩০-২০১৪)এটাকে উনি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলেন এবং সফল হয়েছিলেন। তিনি নজরুলসংগীতের মুখপাত্র হয়ে কাজ করেছেন। কোথাও ভুল দেখলে সেটা তাৎক্ষণিকভাবে ঠিক করে দিয়েছেন। ওনার কাছে আধুনিক গানের প্রচুর প্রস্তাব আসত, ছবির গানের প্রস্তাব আসত। উনি সম্মতি দেননি। বাবার সুরে পুরোনো আধুনিক গান ছাড়া আর কোনো গান করেননি। নজরুলের গানই ছিল মুখ্য।

আমরা যখন গান শুরু করলাম, মায়ের সহযোগিতা পেয়েছি। উনি উৎসাহ দিয়েছেন। বাসায় যখনই প্র্যাকটিস করেছি, যত আওয়াজ হোক, ডিস্টার্ব হোক মা বাধা দেননি। বিরক্ত হননি। যখন আমাদের গান প্রকাশ হলো, তখন উনি দারুণ উৎসাহ নিয়ে আমাদের গান শুনেছেন, আমাদের গান নিয়ে আলোচনা করেছেন। বেশ কিছু গানের প্রশংসাও করেছেন। আমাদের অর্জন নিয়েও গর্ব করতেন মা। সাধারণ মানুষ যে আমাদের গান ভালোবাসছে, এটা ওনাকে খুব স্পর্শ করত। উনি মাইলসের ৩০ বছর পূর্তিতে উপস্থিত ছিলেন। ৪০ বছরের আয়োজনেও নিশ্চয়ই উনি  থাকতেন। তার আগেই তো চলে গেলেন না ফেরার দেশে।

অনুলিখন: মীর রাকিব হাসান

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত