Ajker Patrika

ফারসি বিভাগের নিয়োগ বোর্ডে নেই ফারসি বিশেষজ্ঞ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ নভেম্বর ২০২১, ১০: ৫৭
ফারসি বিভাগের নিয়োগ বোর্ডে নেই ফারসি বিশেষজ্ঞ

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্যাটিউট অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়োগ বোর্ডে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ সদস্য রাখতে হয়। তবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডে এ বিভাগের কোনো বিশেষজ্ঞ শিক্ষক ছিলেন না। এ ছাড়া আড়াই বছর আগে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির আলোকে তিন পদের বিপরীতে পাঁচজনকে সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানা যায়। ফলে নিয়োগ প্রক্রিয়াকে অস্বচ্ছ ও ত্রুটিপূর্ণ আখ্যা দিয়ে পুনরায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। 

অভিযোগ আছে, ফারসি বিভাগের প্ল্যানিং কমিটি থেকে সিলেকশন বোর্ডের সদস্যের জন্য যে চারজনকে সুপারিশ করা হয়েছিল, তাদের একজনকেও রাখা হয়নি নিয়োগ বোর্ডে। এ ছাড়া আবেদনকারীদের মধ্যে পিএইচডি ডিগ্রিধারী, প্রথম শ্রেণিতে প্রথম একাধিক প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও অপেক্ষাকৃত অযোগ্যদের সুপারিশ করা হয়েছে বলে অভিযোগ আবেদনকারীদের। 

প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক প্রাপ্ত পিএইচডি ডিগ্রিধারী আবেদনকারী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মুহাররম হোসাইন আজকের পত্রিকাকে বলেন, `বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় এমন ব্যক্তিদের আসা উচিত, যাঁরা শিক্ষাজীবনে সর্বোচ্চ ফলাফল অর্জন করেছেন। পাশাপাশি যেখানে প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক দিয়ে আমাদের সম্মানিত করেছেন, সেখানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আমাদেরই আসা উচিত। এটা আমার গর্ব বা অহংকার নয়, এটা আমার অধিকার। কিন্তু আমি শুনেছি, তিনজনের জায়গায় পাঁচজনকে সুপারিশ করা হয়েছে, যাঁদের অধিকাংশই তুলনামূলক অযোগ্য। এমনকি যতটুকু জেনেছি তারা ঠিকমতো ফারসি পড়তেও পারেন না।' 

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ নভেম্বর ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের তিন সদস্যের বোর্ড বসে। তিন সদস্যের এই বোর্ডে পদাধিকারবলে সদস্য ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। বোর্ডের অপর দুই সদস্য হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক শামিম বানু ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন ও বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মহীবুল আজিজ। এদের কেউই সরাসরি ফারসি ভাষা সাহিত্য বিভাগের শিক্ষক বা বিশেষজ্ঞ নন। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি বিভাগের একজন শিক্ষক বলেন, বাংলাদেশে ঢাবি, রাবি ও চবিতে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ রয়েছে। সেখান থেকে কোনো প্রতিনিধি রাখা হয়নি সিলেকশন বোর্ডে। সিলেকশন বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক শামিম বানু আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের ফারসি ভাষার শিক্ষক হলেও তিনি ফারসির বিশেষজ্ঞ নন। 

এ বিষয়ে জানতে ফারসি বিভাগের সভাপতি আব্দুল করিমকে মুঠোফোনে কল দিলে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি। 

জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৪ জুন সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর মেয়াদ শেষ হওয়ার মাত্র ২৮ দিন আগে ১৬ মে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি। এতে আবেদনের সময় হিসেবে উল্লেখ করা হয় ২৬ মে পর্যন্ত। ফলে আবেদনের জন্য প্রার্থীরা সময় পান মাত্র ১০ দিন। আবার সেই ১০ দিনের মধ্যে ৯ দিনই ছিল সাপ্তাহিক ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি। তাই মাত্র ১ কার্যদিবসে সব প্রক্রিয়া শেষ করার সুযোগ পান আবেদনকারীরা। এ ছাড়া আবেদনপত্র সংগ্রহের মাধ্যম বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের কথা উল্লেখ ছিল বিজ্ঞপ্তিতে। তবে কারিগরি ত্রুটির কারণে তখন ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও আবেদন করা যায়নি।  ১৬ মে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকে ওয়েবসাইট অকার্যকর ছিল বলে অভিযোগ আবেদনকারীদের। এমন জটিলতায় অনেক আগ্রহী আবেদনকারী প্রার্থী আবেদন করতে পারেননি। বিষয়টি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের ফারসি ভাষার খণ্ডকালীন শিক্ষক মো. কামাল হোসাইন চবির রেজিস্ট্রার বরাবর ২৬ মে একটি চিঠি দেন। চিঠিতে তিনি সার্বিক অসুবিধার বিষয়টি উল্লেখ করে আবেদনের সময় বাড়ানোর আবেদন করেন। তবে এতে কোনো সাড়া দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে মো. কামাল হোসাইন উচ্চ আদালতে একটি রিট করেন।  উচ্চ আদালত এই বিজ্ঞপ্তি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না মর্মে রুল জারি করেন। সেই সঙ্গে আবেদনকারীর দরখাস্ত নিষ্পত্তি করতে উচ্চ আদালত নির্দেশনা দেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ লিখিতভাবে আবেদনকারীর আবেদন গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায়। রুলের একটি অংশের নিষ্পত্তি করলেও অপর অংশের নিষ্পত্তি না করেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিয়োগ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখে। 

উচ্চ আদালতে রিটকারী মো. কামাল হোসাইন আজকের পত্রিকাকে বলেন, রিটের দুটি অংশ ছিল। একটি হলো সময় বাড়ানো ছাড়া বিজ্ঞপ্তি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। আরেকটি অংশ হলো আবেদনকারীর আবেদন ১৫ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবেদন গ্রহণ করা সম্ভব নয় বলে আবেদনকারীকে লিখিত জানালেও রিটের দ্বিতীয় অংশ সময় বাড়ানো ছাড়া বিজ্ঞপ্তি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তার নিষ্পত্তি করেনি। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রিট শুনানিতেও অংশগ্রহণ করেনি। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক বেনু কুমার দে বলেন, এটা আমার আয়ত্তের বাইরে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এস এম মনিরুল হাসান বলেন, সিলেকশন বোর্ডে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামিম বানু ছিলেন, তিনি ফারসির আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের ফারসির শিক্ষক। সরাসরি ফারসি বিভাগের শিক্ষক হতে হবে এমন নিয়ম নেই। বিশেষজ্ঞ হলেই চলবে। উচ্চ আদালতের রিটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রিটের জবাব দেওয়া হয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জকসু নির্বাচন: ৪২ জন প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি

জবি প্রতিনিধি 
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ২২
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রফিক ভবনের সামনে রোববার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রফিক ভবনের সামনে রোববার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা থেকে ৪২ জন প্রার্থীকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে ছাত্রদল ও ছাত্র অধিকার পরিষদ সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেল। ‎

বিশ্ববিদ্যালয়ের রফিক ভবনের সামনে আজ রোববার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ দাবি তোলেন প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী খাদিজাতুল কুবরা। ‎

‎তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন সম্প্রতি ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান প্যানেলের তিন প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করেছে। তাঁদের একজন সম্পাদক এবং অপর দুজন কার্যনির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী। পাশাপাশি অন্যান্য প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদেরও প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেয়নি।

খাদিজাতুল কুবরা বলেন, প্রার্থীর এসএসসি বা এইচএসসি পরীক্ষার সনদে যে নাম আছে, এর পাশাপাশি তাঁর পরিচিত নাম প্রার্থী তালিকায় না থাকায় ভোটারদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে।‎

‎প্যানেলের দাবি, অবিলম্বে ওই ৪২ প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা হোক। একই সঙ্গে জকসু নির্বাচনে অংশ নেওয়া সব প্রার্থী ও প্যানেলের প্রতি সমান, নিরপেক্ষ ও ন্যায়সংগত আচরণ নিশ্চিতের দাবিও জানানো হয়। ‎

‎গত ১৭ ও ১৮ নভেম্বর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ও হল সংসদের মোট ৩৪টি পদের বিপরীতে ২৪৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। যাচাই-বাছাই শেষে ২৪ নভেম্বর প্রাথমিক তালিকায় ২৩১ জন প্রার্থীর নাম প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। ‎

এরপর ১১ ডিসেম্বর জকসুর ২১ পদে ১৫৬ জন ও হল সংসদের ১৩ পদের বিপরীতে ৩৩ জন প্রার্থীর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্য দিয়ে বাদ পড়েন মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ৪২ জন প্রার্থী।

৩০ ডিসেম্বর জকসু নির্বাচনে ভোট গ্রহণ করা হবে। আর ফলাফল ঘোষণা করা হবে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কৃষি গুচ্ছের ভর্তি আবেদনের সময় বাড়ল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
কৃষি গুচ্ছের ভর্তি আবেদনের সময় বাড়ল

কৃষি গুচ্ছের ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তিতে আবেদনের সময় বাড়ানো হয়েছে। ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা ১৮ ডিসেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। এর আগে আবেদনের কার্যক্রম ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল

সম্প্রতি কৃষি গুচ্ছের ওয়েবসাইটে এ-সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, কৃষি গুচ্ছের ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তিতে আবেদনের সময়সীমা ১৮ ডিসেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত বর্ধিত করা হলো। আবেদন শুরু হয় গত ২৫ নভেম্বর থেকে।

এবার কৃষি গুচ্ছের ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট আসনসংখ্যা ৩ হাজার ৭০১টি। ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৩ জানুয়ারি। ওই দিন বেলা ২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত চলবে এই পরীক্ষা।

কৃষি গুচ্ছের আওতাধীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ২৪-এর আকাঙ্ক্ষা ধারণ করেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে: জবি উপাচার্য

জবি প্রতিনিধি 
মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে জবি উপাচার্যের শ্রদ্ধাঞ্জলি। ছবি: আজকের পত্রিকা
মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে জবি উপাচার্যের শ্রদ্ধাঞ্জলি। ছবি: আজকের পত্রিকা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেছেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ২৪ এর জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করেই আমাদের এ নতুন বাংলাদেশ সামনে এগিয়ে যাচ্ছে।’ আজ ‎রোববার (১৪ ডিসেম্বর) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়ার পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। ‎

‎জবি উপাচার্য বলেন, ‘একটি বৈষম্যহীন সমাজ ও কল্যাণ রাষ্ট্রের স্বপ্নে শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মুক্তিযোদ্ধারা জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। কিন্তু ৫৪ বছরে আমরা সেই লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়েছি, যার মূল্য দিতে হয়েছে ২৪-এর জুলাই–আগস্টে বহু ছাত্র–জনতাকে।’ ‎

তিনি আরও বলেন, ‘একটি বৈষম্যহীন সমাজ এবং বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমে শহীদদের স্বপ্ন পূরণ হবে। বাংলাদেশ একটু একটু করে সেদিকেই এগিয়ে যাচ্ছে।’ ‎

‎এর আগে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়া হয়। ‎এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন, প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দিনসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, সাংবাদিক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এআইইউবির ২৩তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
এআইইউবির ২৩তম সমাবর্তনে বিভিন্ন অনুষদের ১৭৬৬ জন শিক্ষার্থীকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করা হয়। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
এআইইউবির ২৩তম সমাবর্তনে বিভিন্ন অনুষদের ১৭৬৬ জন শিক্ষার্থীকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করা হয়। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (এআইইউবি)-এর ২৩তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসে সমাবর্তনের আয়োজন করা হয়।

এআইইউবির প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু মিয়া আকন্দ তুহিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মোঃ সাহাবুদ্দিনের সম্মতিক্রমে বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ড. আবেদ চৌধুরী সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করেন এবং গ্র্যাজুয়েটদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সম্মানিত সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।

এআইইউবির ২৩তম সমাবর্তনে বিভিন্ন অনুষদের মোট ১৭৬৬ জন শিক্ষার্থীকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এবারের সমাবর্তনে কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক পেয়েছেন ৩ জন; সুম্মা কাম লাউড পেয়েছেন ৪৩ জন; ম্যাগনা কাম লাউড পেয়েছেন ৭৪ জন; কাম লাউড পেয়েছেন ২৬ জন; ডা. আনোয়ারুল আবেদীন লিডারশিপ পদক পেয়েছেন ১৯ জন এবং ভাইস-চ্যান্সেলর পদক পেয়েছেন ২১ জন।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন এআইইউবির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য নাদিয়া আনোয়ার, উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম এবং উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহমান।

সমাবর্তনের প্রধান অতিথি ড. আবেদ চৌধুরী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, বাংলাদেশ ও বিশ্ব বর্তমানে এক বড় সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সংকট হলো ঝুঁকি এবং সম্ভাবনার সমন্বয়। স্থানীয় ও বৈশ্বিকভাবে ঝুঁকি পরিমাপ এবং সম্ভাবনা বিবেচনায় দেখা যায়, শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতাই সবচেয়ে বড় শক্তি।

তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মধ্যেই সেই শিক্ষা প্রতিফলিত হয়। সংকট শনাক্ত এবং অতিক্রম করার সক্ষমতা রয়েছে তাদের এবং সংকটের বাইরে এগিয়ে যাওয়ার সামর্থ্যই দেশের ভবিষ্যৎ। ভবিষ্যৎ আপনারাই।’

স্নাতকদের অভিনন্দন জানিয়ে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এই মুহূর্তটি কেবল একটি সমাবর্তন নয়; এটি আপনার বহু বছরের পরিশ্রমের স্বীকৃতি। পরীক্ষা ও অ্যাসাইনমেন্টের চাপ, নির্ঘুম রাত, নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও অটল থাকা, অভিভাবকদের কষ্টার্জিত টিউশন ফি আর আপনার নিজের নিষ্ঠা ও ত্যাগ, সবকিছুরই সম্মিলিত স্বীকৃতি এটি।’

স্বাগত বক্তব্যে এআইইউবির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান নাদিয়া আনোয়ার বলেন, ‘যখন আমি আপনাদের দিকে তাকাই, তখন শত শত গল্প ভেসে ওঠে। নীরবে লড়ে যাওয়া সংগ্রামের গল্প, হৃদয়ের গভীরে লালিত স্বপ্নের গল্প। সংশয়ে ভরা অসংখ্য রাত পেরিয়ে নতুন প্রত্যয়ে জেগে ওঠা সকালের গল্প। আপনারা এই মুহূর্তে পৌঁছেছেন কোনো কাকতালীয়তায় নয়; পৌঁছেছেন নিজের শক্তি, আশার আলো এবং ভবিষ্যতের প্রতি অটল অঙ্গীকারের পথ ধরে।’

অভিভাবকদের উদ্দেশে নাদিয়া আনোয়ার বলেন, ‘আপনাদের প্রতি আমাদের ভালোবাসা, সম্মান ও কৃতজ্ঞতা—এসব শুধু শব্দ নয়; এগুলো আমাদের অন্তরের গভীর অনুভূতির প্রকাশ। আপনারা নীরবে যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন, হয়তো নিজের স্বপ্ন পিছিয়ে দিয়েছেন, হয়তো নিজের ইচ্ছাগুলো সংযত রেখেছেন, সেই ত্যাগই আজকের এই সাফল্যের প্রকৃত ভিত্তি।’

সমাবর্তন বক্তা ব্রাসেলসের আইআরইজি অবজারভেটরি অন একাডেমিক র‍্যাংকিং অ্যান্ড এক্সিলেন্সের এক্সিকিউটিভ কমিটি মেম্বার অধ্যাপক ড. হাবিব ফারদৌন শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এআইইউবি’র মূলমন্ত্র ‘হোয়্যার লিডারস আর ক্রিয়েটেড’ কেবল একটি বাক্য নয়; এটি শিক্ষার্থীদের প্রতি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব এবং সমাজের প্রতি অঙ্গীকারের প্রতিফলন। যেকোনো র‍্যাংকিংয়ের চেয়েও বড় বিষয় হলো, বিশ্ব আপনাকে চিনে নেওয়ার আগেই এআইইউবি আপনার সম্ভাবনায় বিশ্বাস করেছে। আপনার সবচেয়ে বড় শক্তি হলো শিখতে থাকা, আবার নতুনভাবে শিখতে পারা। এই চলমান শিক্ষণ-প্রক্রিয়ায় একজন কৌতূহলী মানুষ সেখানে সেতু নির্মাণ করেন, যেখানে অন্যরা কেবল দেয়াল দেখতে পান। ভবিষ্যৎ হবে তাদেরই, যারা এই সেতুগুলো গড়ে তুলতে সক্ষম।

শিক্ষার্থীদের আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে এআইইউবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আপনি এই স্তরে পৌঁছানোর জন্য দীর্ঘ পথ অতিক্রম করেছেন। তবে এখনো আপনাকে আরও অনেক দূর যেতে হবে এবং জীবনে সফল হতে আরও অনেক প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করতে হবে। মনে রাখবেন, এটি কোনো শেষ নয়, বরং সম্ভাবনাময় একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য শুরু।’

গ্র্যাজুয়েট, অভিভাবক ও সম্মানিত অতিথিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এআইইউবি’র উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহমান বলেন, ‘এআইইউবি’র পক্ষ থেকে আমরা সকল গ্রাজুয়েট, অভিভাবক ও অতিথিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। আপনাদের উপস্থিতি আজকের অনুষ্ঠানে বিশেষ মর্যাদা ও গৌরব যুক্ত করেছে।’

অনুষ্ঠানে এআইইউবির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ড. হাসানুল এ. হাসান ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ইশতিয়াক আবেদীন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ছিলেন বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্যরা, সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যরা, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের কর্মকর্তারা, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যরা, আমন্ত্রিত অতিথিরা, এআইইউবির কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রার, ডিন, শিক্ষক, প্রশাসনিক কর্মকর্তারা, শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত