Ajker Patrika

প্রাথমিকে ঈদের ছুটি ১৪, স্কুল-কলেজে ১৭ দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০২২, ১০: ১১
প্রাথমিকে ঈদের ছুটি ১৪, স্কুল-কলেজে ১৭ দিন

পবিত্র রমজান ও আসন্ন ঈদুল ফিতরে স্কুল-কলেজে ১৭ দিন ছুটি ঘোষণা করতে যাচ্ছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। আগামী ২১ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে এ ছুটি শেষ হবে আগামী ৭ মে। অন্যদিকে এবার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছুটি থাকবে ১৪ দিন।

ছুটির বিষয়ে মাউশি মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের ছুটি বাড়ানো হয়েছে। আগামী ২৬ এপ্রিলের পরিবর্তে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত ক্লাস হবে। তার পর ছুটি শেষে আগামী ৭ মে আবারও ক্লাস কার্যক্রম শুরু করা হবে। সে হিসেবে ১৭ দিন ছুটি কার্যকর হবে।

তবে স্কুল-কলেজের ছুটি বাড়ানো হলেও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছুটি আগের মতোই থাকছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, করোনায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষণ ঘাটতি পোষানোর লক্ষ্যে আগামী ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস চলবে। সে অনুযায়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবার রমজান ও ঈদের ছুটি ১৪ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।

অন্য বছর রমজানে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে পুরো রমজানে ছুটি থাকত। তবে করোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবার রমজানেও ক্লাস চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। প্রথমে স্কুল-কলেজ ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত খোলা থাকবে বলা হলেও পরে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত খোলা থাকবে বলে আদেশ জারি করা হয়। অন্যদিকে প্রাথমিকে ক্লাস চলবে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এআইইউবি মুট কোর্টে চ্যাম্পিয়ন ‘টিম ৬০৯’

মো. তাহমিদ আল মাহাবুব খান এলিন
এআইইউবি মুট কোর্টে চ্যাম্পিয়ন ‘টিম ৬০৯’

আইন শিক্ষা মানেই হলো যুক্তি, বিশ্লেষণ ও উপস্থাপনার এক জীবন্ত অনুশীলন। সেই অনুশীলনের সবচেয়ে প্রাণবন্ত রূপ হলো মুট কোর্ট প্রতিযোগিতা। এতে শিক্ষার্থীরা কল্পিত মামলার মাধ্যমে বাস্তব আদালতের অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। এই প্রতিযোগিতা তাঁদের আইনি চিন্তাধারা, গবেষণার ক্ষমতা ও আত্মবিশ্বাসকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যায়। এই ধারাবাহিকতায় আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ (এআইইউবি) আইন বিভাগের আয়োজনে ষষ্ঠবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘এআইইউবি অন্তর্বিভাগীয় মুট কোর্ট প্রতিযোগিতা ২০২৫’। তিন দিনব্যাপী এই আয়োজনে অংশ নেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের মোট ২৬টি দল।

৫ নভেম্বর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এই প্রতিযোগিতা। উদ্বোধনের শুরুতে অংশ নেওয়া দলগুলো একে অপরের সঙ্গে মেমোরিয়াল বিনিময় করে নেয়। এটি আদালতের লিখিত যুক্তিপত্র হিসেবে বিবেচিত হয়। এই নথিতে থাকে প্রতিটি দলের আইনি অবস্থান, যুক্তি ও প্রমাণের বিশ্লেষণ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আইন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত থেকে প্রতিযোগীদের উৎসাহ জোগান।

কঠিন লড়াই, তীক্ষ্ণ যুক্তি

৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয় প্রিলিমিনারি ও কোয়ার্টার ফাইনাল রাউন্ড। মোট ২৬ দলের মধ্য থেকে সেরা আটটি দল হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নেয়। প্রতিটি রাউন্ডে শিক্ষার্থীরা ধারালো যুক্তি, বিভিন্ন আইনি ব্যাখ্যা এবং নির্ভুল তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপনের মাধ্যমে বিচারকদের মুগ্ধ করেন।

বিজয়ী দল ও সদস্যরা

৭ নভেম্বর এআইইউবি অডিটরিয়ামে জমকালো পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় সেমিফাইনাল ও ফাইনাল রাউন্ড। চূড়ান্ত পর্বে মুখোমুখি হয় ‘টিম ৬০৯’ ও ‘টিম ৬১৯’। দুই দলের যুক্তি ও বাগ্মিতা দর্শক-বিচারকদের মন জয় করে। তবে উৎকৃষ্ট আইনি বিশ্লেষণ ও নিখুঁত উপস্থাপনায় শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করে চ্যাম্পিয়ন হয় টিম ৬০৯, আর রানার্সআপ হয় টিম ৬১৯। চ্যাম্পিয়ন টিম ৬০৯-এর সদস্যরা হলেন প্রথম ওরালিস্ট মালিহা গুলরুক মুজিব রিমঝিম, দ্বিতীয় ওরালিস্ট মো. মুনতাসির নিবির এবং রিসার্চার মো. নাইম মোল্যা।

রানার্সআপ টিম ৬১৯-এর সদস্যরা ছিলেন প্রথম ওরালিস্ট আহনাফ আকিফ খান, দ্বিতীয় ওরালিস্ট মো. ঐশীউজ্জামান এবং রিসার্চার নুসরাত জাহান নিশিতা।

ফাইনাল রাউন্ডে বিচারক ছিলেন দেশের প্রথিতযশা আইনবিদ ও উচ্চ আদালতের বিচারপতিরা। তাঁরা হলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ড. খালেদ এইচ চৌধুরী, বিচারপতি মো. সগীর হোসেন, বিচারপতি সিকদার মাহমুদুর রাজি এবং বিচারপতি জাফর আহমেদ। তাঁদের উপস্থিতি প্রতিযোগিতার মান ও গুরুত্বকে আরও সমৃদ্ধ করে।

চ্যাম্পিয়ন দলের রিসার্চার মো. নাইম মোল্যা বলেন, ‘এই অর্জন শুধু আমাদের নয়, এটি শিক্ষকদের অনুপ্রেরণা ও নির্দেশনার ফল। প্রতিটি যুক্তি ও প্রমাণকে আমাদের বারবার যাচাই করার চেষ্টা ছিল, যেন আমাদের উপস্থাপনা নিখুঁত হয়। এই অভিজ্ঞতা ভবিষ্যৎ আইনজীবী জীবনে আমাদের পথ দেখাবে।’

বিচারপতি জাফর আহমেদ শিক্ষার্থীদের উপস্থাপনায় মুগ্ধ হয়ে বলেন, ‘তাদের যুক্তি, গবেষণা ও আত্মবিশ্বাস প্রমাণ করে যে দেশের আইন শিক্ষা কতটা এগিয়েছে। এই প্রজন্মের অধ্যবসায় বিচারব্যবস্থাকে আরও মানবিক ও শক্তিশালী করে তুলবে।’

পুরস্কার বিতরণ ও সমাপনী

ফাইনাল রাউন্ড শেষে অনুষ্ঠিত হয় পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান। এতে উপস্থিত ছিলেন এআইইউবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল ইসলাম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রহমান, আইন বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক ড. রোবায়েত ফেরদৌস সাঈদ এবং অন্য শিক্ষকেরা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রভাষক ব্যারিস্টার ফাহিম ফয়সাল খান আলাবি।

চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দল ছাড়াও দেওয়া হয় শ্রেষ্ঠ রিসার্চার, শ্রেষ্ঠ মুটার ও শ্রেষ্ঠ মেমোরিয়াল পুরস্কার। পাশাপাশি প্রশংসাপত্র দেওয়া হয় সব অংশগ্রহণকারী এবং স্বেচ্ছাসেবককে। উৎসবমুখর অডিটরিয়ামে শিক্ষার্থীদের মুখে তখন গর্ব, আনন্দ আর ভবিষ্যৎ নিয়ে উচ্ছ্বাসের ঝলক।

উপাচার্য ড. মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এআইইউবির মুট কোর্ট প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের বাস্তব আইনচর্চায় সম্পৃক্ত করে। এটি তাদের আইন বিশ্লেষণ, গবেষণা ও বিচারিক দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি করে, যা একজন সফল আইনজীবীর জন্য অপরিহার্য।’

প্রতিবছর এই আয়োজন এআইইউবির আইন শিক্ষার্থীদের জন্য হয়ে উঠছে আত্মপ্রকাশের মঞ্চ। যুক্তি, প্রজ্ঞা ও মানবিকতার সেতুবন্ধনে গড়ে ওঠা এই প্রতিযোগিতা আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমা ছাড়িয়ে দেশের আইন শিক্ষা এবং বিচারের চেতনা বিকাশে রাখছে অনন্য ভূমিকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বইয়ের ঘ্রাণে মিমের স্বপ্ন বোনা

মুহাম্মদ শফিকুর রহমান 
বইয়ের ঘ্রাণে মিমের স্বপ্ন বোনা

নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার বৃ-চাপিলা গ্রামের মেয়ে মেহেরুন্নেছা মিম। পাঁচ-সাত বছর আগে যেখানে বিদ্যুতের আলো পৌঁছায়নি, সেখান থেকে উঠে এসেছেন তিনি। এখন পড়ালেখা করছেন বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে। শুধু পড়াশোনা নয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে তিনি চালাচ্ছেন ভ্রাম্যমাণ বইয়ের দোকান।

ছোটবেলা থেকে বই পড়ার নেশা ছিল তাঁর। গোপাল ভাঁড়ের গল্প থেকে শুরু করে একসময় তিনি ডুব দেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরিতে। প্রতি সপ্তাহে মাত্র একটি বই পাওয়া যেত, কিন্তু মিম এক সপ্তাহে তিন-চারটি বই শেষ করতেন। ফলে বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকেও বই ধার নিয়ে পড়তেন। এই সাহিত্য ও জ্ঞানপিপাসার টান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর শরৎ উৎসবে বই প্রদর্শনীর পরিকল্পনা করেছিলেন। যদিও নানা কারণে তা সম্ভব হয়নি, তবে তিনি থেমে থাকেননি।

মাথায় আসে বই বিক্রির চিন্তা। ঢাকার প্রকাশকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তিনি বই আনেন এবং ২০২৪ সালের ৮ নভেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে প্রথম দোকান নিয়ে বসেন। প্রথম দিনে বিক্রি হয় ৩৭টি বই। সেই অভিজ্ঞতা তাঁকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে এবং নতুন পরিকল্পনার দিকে এগোতে সাহস জোগায়।

মিম প্রতি শুক্র ও শনিবার বেলা ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ বইয়ের দোকান নিয়ে বসেন। মাঝে মাঝে সিঅ্যান্ডবি মোড়েও দোকান বসান, যেখানে ভালো সাড়া পান। তাঁর দোকানে রয়েছে অনুবাদ সাহিত্য, ইংরেজি বই, উপন্যাস, থ্রিলার, কিশোর উপন্যাসসহ বিভিন্ন ধরনের বই। বর্তমানে তাঁর সংগ্রহে আছে ৪০০-৫০০ বই।

ভবিষ্যতে স্থায়ী দোকান খোলার পাশাপাশি অন্যান্য ব্যবসায়ও যুক্ত হওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। তবে মিমের কাছে এটি ব্যবসা নয়; আনন্দ এবং ভালোবাসার জায়গা। বইয়ের ঘ্রাণ, পাঠকের হাতে বই পৌঁছানো, পাতার ওলটানো—সবই তাঁকে অনুপ্রাণিত করে। তিনি ছোট ছোট পাঠক সমাবেশও আয়োজন করেন, যেখানে শিশু ও কিশোরেরা নতুন বইয়ের সঙ্গে পরিচিত হয় এবং পড়ার প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। মিম বিশ্বাস করেন, বই শুধু বিক্রি নয়, এটি মানুষের চিন্তাভাবনা ও মনন সমৃদ্ধ করার মাধ্যম। বিশেষভাবে চেষ্টা করেন এমন বই বেছে নিতে, যা শিক্ষামূলক, সৃজনশীলতা বৃদ্ধি করে এবং নৈতিক শিক্ষা দেয়।

তবে এই পথে আসা তাঁর সহজ ছিল না। সহপাঠীদের একাংশ কটূক্তি করত, ‘তোকে বুঝি বই বেচেই খেতে হবে?’ কিন্তু মিম দমে যাননি। স্পষ্টভাবে উত্তর দিয়েছেন, ‘হ্যাঁ, আমি বই বেচেই খেতে চাই। কারণ, আমি জ্ঞান বিতরণ করতে চাই।’ তাঁর বিশ্বাস, জ্ঞান ও বইয়ের আলো ছড়িয়ে দেওয়াই প্রকৃত তৃপ্তি। পরিবার থেকেও মা সব সময় পাশে ছিলেন, উৎসাহ দিয়েছেন, আর বাবা নীরব হলেও মনে মনে সমর্থন দিয়েছেন বলে মিম মনে করেন।

মিম পড়াশোনা আর ব্যবসার মধ্যে ভারসাম্য রাখার চেষ্টা করেন। পরীক্ষা বা একাডেমিক চাপের সময়ে কাজের চাপ কমিয়ে দেন। তিনি চান, তাঁর শিক্ষা ও স্বপ্ন—দুটো যেন একসঙ্গে এগোতে পারে। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বই-সংক্রান্ত তথ্য ভাগাভাগি করেন, নতুন প্রকাশনা

ও লেখকদের পরিচয় তুলে ধরেন। নিয়মিত ছোট লেখা ও রিভিউ পোস্ট করে তরুণদের পড়ার আগ্রহ আরও বাড়ান।

আজকের তরুণ প্রজন্ম যেখানে প্রযুক্তির মোহে হারিয়ে যাচ্ছে, সেখানে মেহেরুন্নেছা বইয়ের প্রতি আকর্ষণ ফিরিয়ে আনছেন নতুনভাবে। তাঁর ভ্রাম্যমাণ দোকান শুধু বই বিক্রির জায়গা নয়, এটি জ্ঞানচর্চার এক মুক্ত প্ল্যাটফর্ম। রাজশাহীর তরুণদের কাছে তিনি এক অনুপ্রেরণার নাম হয়ে উঠেছেন। বইয়ের আলোয় মিম শুধু নিজের পথ আলোকিত করছেন না, আশপাশের মানুষকেও টেনে নিচ্ছেন পাঠাভ্যাসের জগতে। এ ছাড়া নতুন প্রজন্মকে চিন্তা করার এবং সৃজনশীল হওয়ার দিকে উৎসাহিত করে যাচ্ছেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চবি ক্যাম্পাসে শীতের আগমনী বার্তা

আব্দুল্লাহ আল নাঈম
চবি ক্যাম্পাসে শীতের আগমনী বার্তা

শীতের সকাল মানে কুয়াশার চাদরে মোড়ানো প্রকৃতি। সেই প্রকৃতির হিমেল হাওয়া যেন প্রতিদিন শীতের আগমনী বার্তা দিচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে। পাহাড়ে ঘেরা এই সবুজ ক্যাম্পাসে অর্ধরাত পেরিয়ে ভোর হতেই তাপমাত্রা কমতে শুরু করে। এখন ভোরের প্রথম আলোয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে কুয়াশার চাদর দেখা যায়।

দেশে সাধারণত শীত শুরু হয় ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে। কিন্তু পাহাড়-ঝরনা আর সবুজে ঘেরা এই ক্যাম্পাস যেন সে নিয়ম মানছে না। ঋতুবদলের আগেই বদলাতে শুরু করে এখানে প্রকৃতি।

বর্তমানে ক্যাম্পাসের জিরো পয়েন্ট, কাটা পাহাড়, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ, শহীদ মিনার, লেডিস ঝুপড়ি, দক্ষিণ ক্যাম্পাসের পুরো এলাকা, ডাকঘর থেকে গ্রন্থাগার, চাকসু ভবন থেকে বিজ্ঞান অনুষদ এবং উত্তরের শাহজালাল, আমানত, এ এফ রহমান, আলাওল ও সোহরাওয়ার্দী হল—সব জায়গা তীব্র কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে।

কুয়াশায় আচ্ছন্ন বিভিন্ন স্থানে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক হল থেকে অন্য হল কিংবা এক একাডেমিক ভবন থেকে অন্য ভবন ভালোমতো দেখা যায় না। গাছের পাতায় ও ঘাসের ডগায় জমে রয়েছে শিশির, বইতে শুরু করেছে শৈত্যপ্রবাহ। শীতকে কেন্দ্র করে কেউ কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ও লোগোসংবলিত টি-শার্ট ও পোশাক তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী কারিশমা ইরিন বলেন, ‘প্রকৃতির রানিখ্যাত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বরাবরই ঋতুরাজ শীত ধরা দেয় নানা রূপে। তবে এখানকার শীতের আগমন একটু ভিন্ন। ছাতিমের মনমাতানো গন্ধ, কুয়াশা ঘেরা কাটা পাহাড়, ভোরের পাখির কিচিরমিচির, সঙ্গে শিউলি ঝরা সুন্দর সকাল—সব মিলিয়ে এক মায়াময় পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে ওঠে শান্ত, সুন্দর ও মনোরম।’

শাহজালাল হলের নিরাপত্তাকর্মী শাহিন মিয়া জানান, রাতে পুরো হলপাড়া কুয়াশায় ঢাকা ছিল।

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিব বলেন, ‘শীত মৌসুম ঘনিয়ে আসায় পাখিরাও ধীরে ধীরে ভিড় জমাচ্ছে চবি ক্যাম্পাসে। প্রকৃতি, প্রাণবৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ এ ক্যাম্পাস যেন এক জীবন্ত পাঠশালা, যেখানে শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন শুধু পাঠে নয়, প্রকৃতির কাছ থেকেও শেখে সহাবস্থানের পাঠ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কানাডার কনকর্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি

শিক্ষা ডেস্ক
কানাডার কনকর্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি

কানাডার কনকর্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয় বৃত্তির আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছে। বিশ্বের যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। বৃত্তিটির আওতায় ২০২৬-২৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা দেশটির কনকর্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক, স্নাতকোত্তর বা পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তি হতে পারবেন। যেসব আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি বৈশ্বিক শিক্ষার অভিজ্ঞতা অর্জনে আগ্রহী, এটা তাঁদের জন্য দারুণ সুযোগ।

কানাডার মন্ট্রিয়ল শহরে অবস্থিত কনকর্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয় দেশটির অন্যতম শীর্ষস্থানীয় গবেষণামূলক ও আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি। ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে ১৫০টির বেশি দেশ থেকে আসা শিক্ষার্থীদের নিয়ে এক বহু সাংস্কৃতিক শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করেছে। শিক্ষার পাশাপাশি উদ্ভাবন, গবেষণা ও বাস্তবমুখী জ্ঞানের ওপর জোর দেওয়ার জন্যও প্রতিষ্ঠানটি বিশেষভাবে বিখ্যাত।

সুযোগ-সুবিধা

২০২৬ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়টি কয়েকটি নতুন ও আকর্ষণীয় বৃত্তি চালু করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: টপ কনকর্ডিয়ান আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ও গ্র্যাজুয়েট এন্ট্রান্স স্কলারশিপ। যার মূল্য ১০ হাজার মার্কিন ডলার। কনকর্ডিয়া ইউনিভার্সিটি ডক্টরাল গ্র্যাজুয়েট ফেলোশিপ। এটি প্রতিবছর ১৪ হাজার মার্কিন ডলার করে চার বছরের জন্য। এ ছাড়া রয়েছে কনকর্ডিয়া মেরিট স্কলারশিপ। যার মূল্য ১০ হাজার মার্কিন ডলার।

আবেদনের যোগ্যতা

কনকর্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি পেতে আবেদনকারীদের কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতা পূরণ করতে হবে। এগুলো হলো আবেদনকারীকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হতে হবে। আবেদনকারীকে পড়াশোনার পুরো সময়জুড়ে পূর্ণকালীন কোনো ডিগ্রি প্রোগ্রামে ভর্তি থাকতে হবে। আবেদনকারীর ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা থাকতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত ইংরেজি ভাষার যোগ্যতার মানদণ্ড পূরণ করতে হবে।

অধ্যয়নের ক্ষেত্রসমূহ

কনকর্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তির আওতায় স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি পর্যায়ে বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। এগুলো হলো আর্টস অ্যান্ড মিউজিক, থিওলজি ও ধর্মতত্ত্ববিষয়ক শিক্ষা, প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা বিজ্ঞান, যোগাযোগ (কমিউনিকেশন), অর্থনীতি ও রাজনীতি, পরিবেশ পরিকল্পনা ও নকশা, পরিবেশ ও টেকসই উন্নয়ন, মানবিক বিজ্ঞান, স্বাস্থ্যবিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, আইন (ল), লাইফ সায়েন্সস, সমাজবিজ্ঞান।

আবেদন পদ্ধতি

আগ্রহী প্রার্থীরা ক্লিক করে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামে আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনের শেষ সময়: আগামী ১৫ জানুয়ারি, ২০২৬।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত