যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষার জন্য স্কুল-কলেজ থেকে প্রস্তুতি

যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা অনেকেরই স্বপ্ন। তবে কিছু ভুল পদক্ষেপের কারণে অনেকের সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপান্তর করা হয়ে ওঠে না। শেষ সময়ে অ্যাপ্লিকেশন করতে গিয়ে অনেকে উপলব্ধি করে, আসলে যেভাবে স্কুলজীবনে প্রস্তুতি নেওয়ার দরকার  ছিল তার উল্টোটা করা হয়েছে। এতে প্রচণ্ড প্রতিযোগিতার ভিড়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা আর হয়ে ওঠে না। তাই স্কুলজীবন থেকে কেউ যদি আমেরিকায় উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতি নিতে চায়, তার জন্য গাইডলাইনস্বরূপ দুই পর্বের ধারাবাহিক লেখার আজ প্রথম পর্ব। আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আবেদন করতে যা প্রয়োজন

• অনলাইন আবেদন ফরম পূরণ।
• অন্তত তিনটি রিকমেন্ডেশন লেটার (দুটি দুজন শিক্ষকের কাছ থেকে। একটি কাউন্সিলরের কাছ থেকে)।
• SAT/ACT পরীক্ষার স্কোর (যদিও কিছু কিছু ইউনিভার্সিটিতে এগুলো ছাড়াও আবেদন করা যায়, এগুলোর ভালো নম্বর দিয়ে আবেদন করলে চান্স পাওয়ার সুযোগ অনেক বেড়ে যায়)।
• TOEFL/IELTS এই পরীক্ষাগুলো হলো ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার পরীক্ষা এবং প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালেই এগুলো দিয়ে আবেদন করা বাধ্যতামূলক।
• কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয় DET এক্সামও গ্রহণ করে।  
• ব্যক্তিগত প্রবন্ধ (Personal Essay) আবেদনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ।
• সহশিক্ষা কার্যক্রম (Extracurricular Activities) আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যেটা না থাকার কারণে অনেকে পিছিয়ে পড়ে ভর্তির দৌড়ে।
• চার বছরের একাডেমিক রেজাল্ট (নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার)।
• প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোর বিস্তারিত তথ্য যেখানে পাওয়া যাবে প্রতিটি বিষয়েই খুব গভীরভাবে অনুসন্ধান করতে হবে। শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলাদেশে অনেকগুলো কমিউনিটি রয়েছে, যারা এগুলো সম্পর্কে দক্ষ এবং অনুসন্ধানী শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে সাহায্য করে। এ রকম কিছু কমিউনিটি হলো:
  
  1. School Success with Talha (Facebook: http://fb.com/TalhaaBlogs; Website: http://schoolsuccess.blog/)
  2. Bangladeshis Beyond Border (https://www.facebook.com/groups/BdBeyondBorder) 
  3. Undergraduate Playlist by Bristy Sikder (https://youtu.be/5y6Ypbo9Djc) 
  4. Undergraduate Playlists by Seeam Shahid Noor (https://www.youtube.com/c/SeeamShahidNoor/playlists)

আমেরিকায় পড়ার জন্য ব্যাংক লেনদেন
আমেরিকায় পড়ার জন্য কয়েক কোটি টাকা দেখাতে হবে! প্রশ্নটা অনেক স্বাভাবিকভাবেই আসে অনেকের মনে।  উত্তরটা হচ্ছে, নির্ভর করে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে যারা উচ্চশিক্ষার জন্য আমেরিকায় যায় তারা বৃত্তি এবং আর্থিক অনুদান নিয়ে যায় এবং অনেক ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ফ্রিতে পড়ার সুযোগ পায়। এ রকম একজনের উদাহরণ আমি নিজেই। আমার এখানে পড়ার জন্য প্রায় তেমন কোনো খরচ নেই বললেই চলে। থাকা-খাওয়া থেকে, টিউশন ফি পুরোটাই আমার ইউনিভার্সিটি বহন করে। আমার মতো শত শত শিক্ষার্থী এভাবে বৃত্তি নিয়ে বাংলাদেশ থেকে যায় প্রতিবছর। তাদের ব্যাংকে শুধু ওই পরিমাণ টাকাই দেখাতে হয় যতটা বৃত্তি ও আর্থিক অনুদান পাওয়ার পর বাকি থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো খরচ থেকে।
  
প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করতে হবে
আমেরিকার ইউনিভার্সিটিতে আবেদন করতে যেগুলো লাগে, যেমন SAT, TOEFL/IELTS, Extracurricular Activities ইত্যাদির প্রস্তুতি নির্ভর করে কে কতটুকু ভালো, এসব বিষয়ে আগেই। কারও যদি অনেক Extracurricular Activities থাকে, তাহলে তার কম প্রিপারেশনেই হয়ে যায়। কেউ যদি ইংরেজিতে দক্ষ থাকে, তাহলে কয়েক মাসের প্রস্তুতিতেই SAT ও TOEFL/IELTS-এ ভালো করতে পারে।  

৯ম-১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা যেভাবে প্রস্তুতি নেবে

• যে ক্লাসেই পড়ালেখা করুক না কেন, কিছু অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে;
• নিয়মিত ইংরেজি বই ও আর্টিকেল পড়ার অভ্যাস করা।
• স্কুলে ও স্কুলের বাইরে সহশিক্ষা কার্যক্রম, যেমন অলিম্পিয়াড, সায়েন্স ফেয়ার, প্রোগ্রামিং, ডিবেটিং ইত্যাদিতে অংশ নেওয়া। যেটা ভালো লাগে, তাতে অনেক বেশি করে অংশ নেওয়া এবং দেখানোর মতো পুরস্কার অথবা দক্ষতা অথবা প্রজেক্ট অর্জন করা।
• ইংরেজিতে লেখালেখির অভ্যাস করা।
• স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষাগুলোতে ভালো নম্বর অর্জন করা।
• কিছু শিক্ষকের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা, যাঁরা রিকমেন্ডেশন লেটার দিতে পারেন যখন দরকার হবে।
• একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে উঠলে SAT ও TOEFL or IELTS-এর প্রস্তুতি শুরু করা।

তালহা চৌধুরী, প্রেসিডেন্সিয়াল ফুল ফ্রি স্কলারশিপ, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড মিউজিক, বেনিংটন কলেজ, ইউএসএ

ফুল ফ্রি স্কলারশিপ সম্পর্কিত পড়ুন:

• সিঙ্গাপুরে ফুল-ফ্রি স্কলারশিপ
• যুক্তরাজ্যে ফুল-ফ্রি স্কলারশিপ
• কুইন এলিজাবেথ কমনওয়েলথ স্কলারশিপ
• এমবিএ স্কলারশিপ